যুক্তরাষ্ট্রের আশা, হামাস মানলে ইসরায়েলও গ্রহণ করবে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২৪, ১৬: ১১

গাজায় চলমান যুদ্ধ বন্ধে তিন দফার প্রস্তাব দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হামাস যদি এই প্রস্তাব মেনে নেয়, তাহলে ইসরায়েলও তা গ্রহণ করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কারবি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপস্থাপিত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ছিল তিনটি ধাপ। প্রথম ধাপে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছে। ওই সময়ে গাজা থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে ইসরায়েলি সৈন্যদের। দেওয়া হবে মানবিক সহায়তা। একই সঙ্গে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে বন্দী ও জিম্মি বিনিময়ের কথাও আছে পরিকল্পনায়।

রাফাহে যখন ইসরায়েলি সৈন্যরা জোরালো বিমান হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন দেওয়া এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ভালো চোখে দেখছেন না ইসরায়েল মন্ত্রিসভার কয়েকজন। তাঁরা এই প্রস্তাবের কঠোর সমালোচনা করেছেন।

ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য কাজ করা জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর দেওয়া তথ্যমতে, হামলার মুখে বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার পর রাফাহের ৩৬টি আশ্রয়কেন্দ্রের সব কটি এখন খালি পড়ে আছে। অন্যদিকে, খান ইউনিস ও মধ্য গাজার কিছু অংশে আরও ১৭ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

গতকাল রোববার সকালে এবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকার জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কারবি বলেন, ‘হামাস এই প্রস্তাব মেনে নিলে ইসরায়েলও তাতে হ্যাঁ বলবে বলে প্রত্যাশা যুক্তরাষ্ট্রের। আমরা হামাসের কাছ থেকে একটি আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষা করছি।’ তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আশা করেছে, উভয় পক্ষই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পরিকল্পনার প্রথম ধাপ শুরু করতে সম্মত হবে।

মার্কিন এই মুখপাত্র আরও প্রত্যাশা করেন, প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতির ছয় সপ্তাহে দুই পক্ষ বসে দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি কেমন হবে এবং কখন শুরু হতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করবে।

গতকাল মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট এবং যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সদস্য বেনি গ্যান্টজের সঙ্গে পৃথক ফোনকলে নতুন এই প্রস্তাব নিয়ে কথা বলেছেন।

এর আগে এই প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ইসরায়েলি দুই ডানপন্থী মন্ত্রী হুমকি দিয়ে বলেছিলেন যে, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই প্রস্তাবে রাজি হলে ক্ষমতাসীন জোট ভেঙে দেবেন তাঁরা।

এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ এবং জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী ইতামার বেন-গাভির বলেছেন যে, হামাসকে নির্মূলের আগে যুদ্ধবিরতির যেকোনো চুক্তিতে তাঁরা স্বাক্ষরের বিরোধী।

একই স্বরে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু জোর দিয়ে বলেছেন, হামাসের সামরিক ও শাসনক্ষমতা ধ্বংস না হওয়া এবং সব জিম্মি মুক্ত না করা পর্যন্ত কোনো যুদ্ধবিরতিতে যাবেন না তাঁরা।

এ দফায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে হামাস রাজি হবে উল্লেখ করে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র কারবি বলেন, মার্কিন গোয়েন্দাদের তথ্যমতে, হামাস এখন সামরিকভাবে আগের চেয়ে অনেকটাই দুর্বল। কাজেই তাঁরা গত ৭ অক্টোবরের মতো আরেকটি হামলার পুনরাবৃত্তি করতে পারবে না।

কারবি বলেন, ‘আমরা বলছি না যে, তারা (হামাস) এখন ইসরায়েলি জনগণের জন্য হুমকি নয়। অবশ্যই তারা হুমকি। কিন্তু তারা যা করেছে, তা করার সক্ষমতা আর তাদের নেই।’

হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত গাজাজুড়ে ৩৬ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত