গাজা যুদ্ধবিরতির চেষ্টায় ইসরায়েলে ব্লিঙ্কেন

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২৪, ০৯: ৩৭

গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি চুক্তি চূড়ান্ত করার সর্বসাম্প্রতিক চেষ্টায় ইসরায়েলে পৌঁছেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। গতকাল রোববার তেল-আবিবে পৌঁছান তিনি। মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, যুদ্ধবিরতির চুক্তি সম্পন্ন করতে নতুন করে আশার সঞ্চার হচ্ছে।  

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। 

দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠক করছেন তিনি। গত বছরের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরাইলে শীর্ষ মার্কিন কূটনীতিকের দশম সফর এটি।

গত বছরের অক্টোবরে গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলে এটি ব্লিঙ্কেনের নবম সফর। গাজায় যুদ্ধবিরতি করা নিয়ে ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে দীর্ঘদিনের ব্যবধান কমিয়ে আনার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র একটি সংশোধিত প্রস্তাব উপস্থাপনের কয়েকদিন পর ব্লিঙ্কেন এই সফরে গেলেন।

প্রস্তাবটি নিয়ে গত সপ্তাহে কাতারের দোহায় আরেলাচনা শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল উভয়েই একটি চুক্তি হওয়া নিয়ে আশাবাদ প্রকাশ করেছে। তবে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস বলছে, তাঁরা এ বিষয়ে আগ্রগতি হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী নয়।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গতকাল রোববার হামাসকে গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির আলোচনায় বাধা হিসেবে অভিযুক্ত করেন। তিনি এই সপ্তাহের শেষে নতুন আলোচনা শুরুর আগে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের ওপর আরো চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।

ব্লিঙ্কেনের সফরসঙ্গী এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শীর্ষ মার্কিন কূটনীতিক সোমবার ইসরায়েলের নেতানিয়াহু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট ও প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজোগের সঙ্গে আলাদাভাবে দেখা করবেন। এরপর মঙ্গলবার মিসরে যাত্রা করবেন বলে পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে।

চুক্তিতে মতভেদ থাকা বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে আছে গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা পুরোপুরি সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি। হামাস সেনা সরিয়ে নেওয়ার ওপর জোর দিচ্ছে। তবে ইসরায়েল সেটি করবে কি না, প্রশ্ন আছে তা নিয়ে।

তবে ব্লিঙ্কেন ইসরায়েল সফরে যাওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানো যেতে পারে বলে আশা প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘আমরা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে যুদ্ধবিরতি চুক্তির সবচেয়ে কাছাকাছি পৌঁছেছি।’

চুক্তিটি চূড়ান্ত করার চেষ্টায় বাইডেন তাঁর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেনকে ইসরায়েলে পাঠিয়েছেন বলেও জানিয়েছিলেন।

গতবছর ৭ অক্টোবরে ইসরায়েলে ঢুকে পড়ে হামাসের হামলায় ১২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জন জিম্মি হওয়ার দিন থেকেই গাজায় যুদ্ধ শুরু করেছে ইসরায়েল। তখন থেকে এখন পর্যন্ত গাজার স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের হিসাবে নিহত হয়েছে ৪০ হাজারের বেশি মানুষ।

এর মধ্যে কেবল গত বছরের নভেম্বরে একবার এক সপ্তাহের একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় ২৪০ ফিলিস্তিনি বন্দি ইসরায়েলের জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার বিনিময়ে হামাস ১০৫ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছিল। এখনো হামাসের হাতে ১১১ জিম্মি আছেন বলে দাবি ইসরায়েলের, যাদের ৩৯ জনই মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সর্বসাম্প্রতিক এক যৌথ বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসর জানায়, তারা একটি যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি প্রস্তাব উত্থাপন করেছে, যা হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে ব্যবধান কমাতে সহায়ক।

যুদ্ধবিরতি নিয়ে দোহায় সর্বশেষ আলোচনার পর মধ্যস্থতাকারীরা বলছেন, গত দুই দিনের আলোচনা গঠনমূলক এবং ইতিবাচক পরিবেশে পরিচালিত হয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত