যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বারপ্রান্তে ইসরায়েল ও লেবানন

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০০: ৩৫
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতির শর্তে রাজি হয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েল ও লেবানন একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির কাছাকাছি রয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলি ও মার্কিন কর্মকর্তারা। মঙ্গলবার ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা এই চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য একটি বৈঠক করবে।

সোমবার রাতে বিবিসি জানিয়েছে, ৬০ দিনের একটি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব করা হয়েছে। এমন হলে ইরান-সমর্থিত লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী এবং মিলিশিয়া এবং ইসরায়েলের মধ্যে সংঘর্ষ বন্ধ হবে। এর ফলে ইসরায়েলি সেনাদের দক্ষিণ লেবানন থেকে প্রত্যাহার করা হবে এবং ওই অঞ্চলে হিজবুল্লাহ যোদ্ধারাও অবস্থান করতে পারবে না।

এর আগে যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে অনেক আলোচনা হলেও সংঘর্ষ প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। গতকালও (রোববার) লেবানন থেকে ইসরায়েলের দিকে প্রায় ২৫০টি রকেট ছোড়া হয়। তবে এসব রকেটের বেশির ভাগই প্রতিরোধ করে ইসরায়েল। অন্যদিকে ইসরায়েলি বাহিনীও লেবাননের বৈরুতসহ বিভিন্ন স্থানে থাকা হিজবুল্লাহর ঘাঁটি ও অস্ত্রভান্ডার টার্গেট করে বিমান হামলা চালিয়েছে।

একজন পশ্চিমা কূটনীতিক জানিয়েছেন, চুক্তির আওতায় ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর খালি করা এলাকায় লেবাননের সেনাবাহিনীর উপস্থিতি বাড়ানো হবে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু চুক্তিতে সম্মত হয়েছেন। আর লেবাননের উপ-সংসদীয় স্পিকার এলিয়াস বউ সাআব জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতিতে এখন আর গুরুতর কোনো বাধা নেই।

কোন পক্ষ যুদ্ধ বিরতির চুক্তি পর্যবেক্ষণ করবে, এটি নিয়ে আগে বিরোধ ছিল। তবে পাঁচটি দেশের একটি কমিটি গঠনের মাধ্যমে তারও সমাধান হয়েছে। এই কমিটি যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পরিচালিত হবে এবং এতে ফ্রান্স অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

তবে ইসরায়েলের দাবি—যদি হিজবুল্লাহ লিটানি নদীর দক্ষিণে ফিরে আসে বা আক্রমণের প্রস্তুতি নেয়, তবে তারা পুনরায় সেখানে অভিযান চালাবে। এই শর্তটিতে হিজবুল্লাহ এবং লেবানন সরকারের কিছুটা আপত্তি ছিল।

এদিকে ইসরায়েলের উগ্র ডানপন্থী জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন গিভির এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিরোধিতা করে একে ‘গুরুতর ভুল’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি মত দিয়েছেন, বর্তমানে হিজবুল্লাহ সামরিকভাবে দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। তাই তাদের ধ্বংস করার ঐতিহাসিক সুযোগটি মিস করা উচিত হবে না।

গত বছরের ৮ অক্টোবর হিজবুল্লাহ গাজার হামাসের সমর্থনে ইসরায়েলের ওপর রকেট হামলা শুরু করলে সংঘর্ষ দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। সম্প্রতি ইসরায়েল হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযান শুরু করে। এতে হিজবুল্লাহর অবকাঠামো ধ্বংস এবং তাদের নেতা হাসান নাসরুল্লাহসহ শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নিহত হয়েছেন।

লেবানন কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, অক্টোবর ২০২৩ থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় লেবাননে ৩ হাজার ৭৫০ জন নিহত এবং ১৫ হাজার ৬০০ জন আহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছে ১০ লাখেরও বেশি মানুষ।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত