গুজরাটের মেডিকেলে তিন ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে র‍্যাগিং, হাসপাতালে নেওয়ার আগেই মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১১: ০৪
প্রতীকী ছবি

ভারতের গুজরাট রাজ্যের পাটন জেলার ধরপুরে অবস্থিত জিএমইআরএস মেডিকেল কলেজে র‍্যাগিংয়ের শিকার এক ছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। কলেজের প্রথম বর্ষের এক ছাত্র, ১৮ বছরের অনিল নটবরভাই মেথানিয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যুতে তদন্তের দাবি তুলেছে তাঁর পরিবার। অভিযোগ উঠেছে, সিনিয়র ছাত্রদের র‍্যাগিংয়ের শিকার হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

সুরেন্দ্রনগরের বাসিন্দা অনিল মেথানিয়া সম্প্রতি ডাক্তারি পড়ার জন্য জিএমইআরএস মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। গত শনিবার রাতে তাঁকে এবং আরও কয়েকজন প্রথম বর্ষের ছাত্রকে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে সিনিয়র ছাত্রদের পক্ষ থেকে ডেকে পাঠানো হয়।

অভিযোগ উঠেছে, সিনিয়ররা তাঁদের একটানা তিন ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখেন এবং পরিচয় জানতে চান। এই সময়েই অনিল মাথা ঘুরে মাটিতে পড়ে যান। সহপাঠীরা তাঁকে তৎক্ষণাৎ কলেজের হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলেও, চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

অনিলের পরিবারের দাবি, র‍্যাগিংয়ের কারণেই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। তাঁরা উপযুক্ত তদন্ত ও দোষীদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনিলের এক সহপাঠী গণমাধ্যমকে বলেন, শনিবার রাত ১০টা নাগাদ আমাদের অন্তত ১০-১২ জন প্রথম বর্ষের ছাত্রকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। দুই থেকে তিন ঘণ্টা ধরে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এরপর আমাদের পরিচয় দিতে বলা হয়। অনিল দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে হঠাৎ সংজ্ঞা হারিয়ে পড়ে যায়।

কলেজের ডিন হার্দিক শাহ জানান, অ্যান্টি র‍্যাগিং কমিটি ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে। র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হলে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

পাটনের পুলিশ সুপার রবীন্দ্র প্যাটেল জানান, অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে। কলেজের অ্যান্টি র‍্যাগিং কমিটির কাছ থেকে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ভারতের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে র‍্যাগিং রোধে কড়া আইন রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের কলেজ থেকে বহিষ্কারসহ ফৌজদারি মামলা রুজু হতে পারে।

এই ঘটনার পর গুজরাটের শিক্ষামহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই কলেজগুলোতে র‍্যাগিং বন্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপের দাবি করেছেন। একই সঙ্গে, প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

অনিল মেথানিয়ার মৃত্যুতে তাঁর পরিবার এবং বন্ধুবান্ধব শোকাহত। এই ঘটনা র‍্যাগিংয়ের ভয়াবহ পরিণতির আরেকটি উদাহরণ হিসেবে উঠে এসেছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত