ভারতে পার্লামেন্টের অভ্যন্তরে সাম্প্রতিক নিরাপত্তা লঙ্ঘনের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিবৃতির দাবিতে বিক্ষোভ করায় ভারতীয় লোকসভা এবং রাজ্যসভার মোট ৯২ জন বিরোধী দলীয় এমপিকে বরখাস্ত করা হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল সোমবারও রাজ্যসভার ৪৫ জন এমপিকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

গত সপ্তাহে ভারতীয় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় চার স্তরের নিরাপত্তা বলয় ভেদ করে অধিবেশন কক্ষে ঢুকে পড়ে দুই বিক্ষোভকারী। এ সময় তাঁরা অধিবেশন কক্ষে রঙিন ধোঁয়া ছোড়েন ও বিক্ষোভ করে বিভিন্ন স্লোগান দেন। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের জবাবদিহি চেয়ে লাগাতার বিক্ষোভের অভিযোগে লোকসভার ৩৩ সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়। এর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরই পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় শীতকালীন অধিবেশনের সময় ৪৫ জন এমপিকে বরখাস্ত কর হয়। গত সপ্তাহে বিরোধীদলীয় ১৪ এমপিকেও বরখাস্ত করা হয়েছিল।

বরখাস্ত হওয়া এমপিদের মধ্যে লোকসভার বিরোধীদলীয় নেতা এবং কংগ্রেসের অন্যতম মুখপাত্র অধীর রঞ্জন চৌধুরী এবং উপনেতা গৌরব গগৈও রয়েছেন। কংগ্রেসের তিন সংসদ সদস্য কে জয়কুমার, বিজয় বসন্ত এবং আবদুল খালেকের বিরুদ্ধে স্পিকারের মঞ্চে উঠে স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁদের বিষয়টি বিশেষাধিকার কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে এবং তাঁদের বরখাস্তের সময়কালের ব্যাপারে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, ১৩ ডিসেম্বর ভারতের লোকসভায় অধিবেশন চলাকালে চার স্তরের নিরাপত্তাবেষ্টনী ভেদ করে অধিবেশনে ঢুকে পড়েছিলেন দুই ব্যক্তি। তবে পুরো বিষয়টির সঙ্গে দুজন নন, আরও চারজন, অর্থাৎ মোট ছয় ব্যক্তি জড়িত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে পাঁচজনকেই পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। 

ওই পাঁচ অভিযুক্ত জানিয়েছেন, তাঁরা বেকারত্ব, কৃষকদের সমস্যা, মণিপুর সহিংসতাসহ ভারতের বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারের ওপর বিরক্ত। তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁরা অধিবেশনস্থলে রঙিন ধোঁয়া ব্যবহার করে মূলত এসব ইস্যুতে লোকসভার সদস্যদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালিয়েছেন, যাতে তাঁরা এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। 

এ ঘটনার জের ধরে পার্লামেন্টের বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর জবাবদিহি চেয়ে দাবি করেন যে অমিত শাহকে পার্লামেন্ট অধিবেশনে এ ব্যাপারে বক্তব্য দিতে হবে। অধিবেশনে প্ল্যাকার্ড প্রদর্শনের অভিযোগে গত শনিবার ১৩ এমপিকে শীতকালীন অধিবেশন থেকে বরখাস্ত করেছিলেন ওম বিড়লা। 

এর আগে রোববার এক ভাষণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, বোমা হামলার এই ঘটনায় পার্লামেন্টে ক্ষোভ প্রকাশ না করে তদন্তের দাবি তোলা উচিত বিরোধী এমপিদের।