শব্দের ১০ গুণ গতির ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তুত: পুতিনের হুঁশিয়ারি

  • ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্র শব্দের চেয়ে ১০ গুণ বেশি গতিতে উড়ে যেতে পারে।
  • এ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা যায় না।
  • যুক্তরাষ্ট্রের কাছে থাড ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা চায় ইউক্রেন।
আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯: ৪২
আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০: ০২
ভ্লাদিমির পুতিন। ফাইল ছবি

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, তাঁর দেশের হাতে ‘ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত’ নতুন ধরনের শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র মজুত আছে। এই ‘ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্র’কে বাধা দেওয়া যায় না। ইউক্রেনের নিপ্রো শহরে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার এক দিন পর গত শুক্রবার এক অনির্ধারিত টেলিভিশন ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ওরেশনিক হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র শব্দের চেয়ে ১০ গুণ বেশি গতিতে উড়ে যেতে পারে এবং তিনি এর উৎপাদনের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। /

এর আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রুশ প্রেসিডেন্টকে ‘সমুচিত জবাব’ দিতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে করে তিনি তাঁর কর্মকাণ্ডের সত্যিকার পরিণতি অনুধাবন করতে পারেন। একই সঙ্গে পশ্চিমাদের কাছ থেকে কিয়েভের জন্য আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা চেয়েছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট। বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স-ইউক্রেন জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সর্বাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা টার্মিনাল হাই অলটিটিউড এরিয়া ডিফেন্স (থাড) চেয়েছে কিয়েভ।

অন্যদিকে ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে নতুন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালানোর কথা বলেছিলেন পুতিন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের কথার লড়াইয়ের মধ্যেই সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ায় হামলা চালায় ইউক্রেন।

বিবিসি জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার নিপ্রোতে যে হামলা হয়েছে, তাকে প্রত্যক্ষদর্শীরা অস্বাভাবিক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এবং এর ফলে যে বিস্ফোরণ হয়েছে তিন ঘণ্টা পর্যন্ত তার রেশ দেখা গেছে। ক্ষেপণাস্ত্রসহ ওই হামলা ছিল খুবই শক্তিশালী। হামলার পর ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এটি ছিল আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মতো।

রিস্ক অ্যাডভাইজরি কোম্পানি সিবিলাইনের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও জাস্টিন ক্রাম্প বিবিসিকে বলেন, মস্কো সতর্কতা হিসেবে ওই হামলা করে থাকতে পারে। তাঁর মতে, যে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে তা এত দ্রুতগামী ও আধুনিক যে, ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে মারাত্মকভাবে চ্যালেঞ্জ করতে পারে।

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলতি সপ্তাহের এই উত্তেজনাকর অবস্থা নিয়ে সতর্ক করেছেন বিশ্বনেতাদের অনেকে। পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক বলেছেন, যুদ্ধ এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং এতে বৈশ্বিক দ্বন্দ্বের সত্যিকার ঝুঁকি রয়েছে। হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান বলেছেন, পশ্চিমাদের উচিত ভ্লাদিমির পুতিনের সতর্কতাকে গুরুত্ব দেওয়া। কারণ রাশিয়া সামরিক শক্তির ওপর নির্ভর করেই তার নীতি ঠিক করে। আর উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকি আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি বলে উল্লেখ করেছেন।

উত্তর কোরিয়া রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধে অংশ নিতে কয়েক হাজার সেনা পাঠিয়েছে। কুরস্ক অঞ্চলে তাদের সঙ্গে ইউক্রেনের সেনাদের লড়াইয়ের খবর পাওয়া গেছে। কুরস্কে ইউক্রেনের সেনারা রাশিয়ার কিছু ভূখণ্ড দখল করে রেখেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, উত্তর কোরীয় সেনাদের যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য মস্কোকে জবাব দিতে তিনি ইউক্রেনকে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলার জন্য দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন।

২০২২ সালে ইউক্রেনে কথিত বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এখন আগামী জানুয়ারিতে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার আগে উভয় দেশ নিজেদের সুবিধাজনক অবস্থানে দেখতে চাইছে। ইতিপূর্বে ট্রাম্প যুদ্ধ বন্ধের কথা বললেও কীভাবে করবেন, তার কোনো ব্যাখ্যা দেননি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত