মোটরসাইকেলে চাপলে ‘দানব হয়ে ওঠে’ ছেলে, তাই পুড়িয়ে দিলেন বাবা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৬: ১৫

গভীর রাতে মোটরসাইকেল নিয়ে রেসে মেতে ওঠে ছেলে। বাবার আশঙ্কা যেকোনো সময় এতে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনায় পড়তে পারে সে। উপায়ন্তর না দেখে শেষমেশ মোটরসাইকেলটি পুড়িয়েই দিলেন তিনি।

ঘটনাটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ার। কুয়ালালামপুরের পাশেই অবস্থিত শাহ আলম শহরের ওই ব্যক্তি নিজেই টিকটিকে ছেলের মোটরসাইকেল আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার ভিডিওটি দেন। ১০ লাখের বেশিবার দেখা হয় এটি।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সিন চিও ডেইলির সূত্রে হংকংয়ের গণমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানিয়েছে, বাবাই ছেলেকে মোটরসাইকেলটি কিনে দিয়েছিলেন। তিনি ভেবেছিলেন এটি ছেলের স্কুলে যাওয়া সহজ করে দেবে। কিন্তু এর বদলে আবিষ্কার করেন, ছেলে ক্রমেই দুই চাকার যানটির প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে। কখনো কখনো মোটরসাইকেল রেসে অংশ নিয়ে রাতে দেরি করেও বাসায় ফিরতে শুরু করে।

বাইক রেসে অংশ না নিতে বোঝালেও কর্ণপাত করেনি ছেলে। বাধ্য হয়ে মোটরসাইকেলটি পুড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তাঁর মনে হয়, দুর্ঘটনায় ছেলের মৃত্যু দেখার চেয়ে অন্তত এটি ভালো হবে।

‘আমি ছেলেকে চিরতরে হারাতে চাইনি,’ টিকটকের ভিডিওটিতে নিজের ভয়ের কথা উল্লেখ করে বলেন বাবা, ‘তেমনি মোটরসাইকেল রেসে অংশ নেওয়ার অভিযোগে আমার ছেলেকে আটক করা হয়েছে, এমন কোনো ফোনকলও আমি পুলিশের কাছ থেকে পেতে চাইনি।’

তবে ওই বাবা কিংবা ছেলের নাম এবং মোটরসাইকেল পোড়ানোর পর ছেলের অনুভূতি কী ছিল তা জানা সম্ভব হয়নি।

তিনি দর্শকদের তাঁর এই কাণ্ডকে ছেলেকে রক্ষার জন্য মরিয়া বাবার পদক্ষেপ হিসেবে দেখার অনুরোধ করেন।

‘আমি আমার সন্তানের জন্য এটা করেছি। ছেলেকে হারানোর আগে মোটরবাইক পোড়ানোই কারও জন্য সেরা ওষুধ বলে মনে হয়েছে আমার,’ বলেন তিনি, ‘এই মোটরবাইকে চেপে বসলে আমার ছেলে যেন দানবে পরিণত হতো।’

ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের মধ্যে বিপুল তর্ক-বিতর্কের জন্ম দেয়। বুঝতেই পারছেন দুটি পক্ষে ভাগ হয়ে পড়েছিলেন তাঁরা।

একজন বলেন, ‘এই বাবার সঙ্গে আমি একমত। সন্তানের নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তা থেকেই এটা করেছেন তিনি। ছেলের জীবন বাঁচিয়েছেন তিনি। আর অর্থ দিয়ে জীবন কেনা যায় না।’

আরেকজন লিখেন, ‘আমি আশা করব, ছেলে বাবার ভালোবাসাটা অনুভব করতে পারবে।’

তবে কেউ কেউ আবার বাবার এই সিদ্ধান্তের আলোকিত দিকটা গুরুত্ব দেননি। একজন যেমন লেখেন, ‘তাঁর পদ্ধতিটি সহিংস। ছেলের সঙ্গে শত্রু নয় বন্ধুর মতো আচরণ করা উচিত ছিল তাঁর। আপনার ব্যবহার সমস্যার সমাধান তো দেবেই না, বরং দুজনের সম্পর্কের অবনতি ঘটাবে।’

আরেকজন লিখেছেন, ‘মোটরসাইকেলটি বিক্রি করলেন না কেন? এটি বেঁচে কিছু টাকাও পেতেন।’

মোটরসাইকেল পারিবারিক কলহের মধ্যবিন্দু হওয়ার খবর সংবাদপত্রে শিরোনাম হয়েছে চীনেও। গত জুনে দক্ষিণ গুয়াংদংয়ের এক বাবা ছেলের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেন। আগুন ছড়িয়ে পড়লে বাধ্য হয়ে পুলিশে খবর দেয় পরিবারটি। তদন্তের জন্য ওই বাবাকে পুলিশ স্টেশনেও নেওয়া হয়।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত