অনলাইন ডেস্ক
শ্রীলঙ্কা ছাড়াও এশিয়ার কয়েকটি দেশ একই রকম সংকটে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল–আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, শ্রীলঙ্কার দশা হতে পারে লাওস, মালদ্বীপ, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা গত শনিবার বিবিসিকে বলেন, ‘যেসব দেশের ঋণের পরিমাণ বেশি এবং নীতিনির্ধারণী সক্ষমতা কম সেসব দেশ অতিরিক্ত চাপের মুখে পড়বে। সতর্কতা হিসেবে বলা যায় এই দেশগুলোর অবস্থা শ্রীলঙ্কার চেয়ে খুব একটা ভালো নয়।’
আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরও বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোর পুঁজি টানা চার মাস ধরে একই হারে বাইরে চলে যাচ্ছে। এর ফলে, এই দেশগুলোর উন্নত অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার স্বপ্ন ঝুঁকিতে পড়ছে।
শ্রীলঙ্কা বর্তমানে তার ২ কোটি ২০ লাখ মানুষের জন্য জরুরি খাদ্যসামগ্রী, জ্বালানি এবং ওষুধ আমদানি করতে হিমশিম খাচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রার ভয়াবহ সংকটে দেশটি। মূল্যস্ফীতি প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে, আগের বছরের তুলনায় খাদ্যের দাম ৮০ শতাংশ বেশি। মার্কিন ডলারের বিপরীতে শ্রীলঙ্কান রুপির বিনিময় হারে রেকর্ড পতন হয়েছে। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বৈশ্বিক অন্যান্য মুদ্রার দরপতন।
অনেকে এর জন্য পলাতক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের ভুল নীতিকে দোষ দিচ্ছেন। তাঁর সরকারের নীতির ব্যর্থতা প্রকাশ পায় কেবল করোনা মহামারির সময়। এর আগে বড় বড় প্রকল্প দেখিয়ে দেশবাসীকে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল তাঁর সরকার। বহু মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে গত কয়েক বছরে শ্রীলঙ্কা অস্বাভাবিক বৈদেশিক ঋণ নিয়েছে। গত মাসে দেশটি এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ২০ বছরের মধ্যে প্রথম দেউলিয়া দেশে পরিণত হয়। বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করার মতো অবস্থায় নেই সেটিও আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দিয়েছে।
কর্মকর্তারা অর্থনীতির উদ্ধার তহবিল হিসেবে আইএমএফের কাছ থেকে ৩০০ কোটি ডলার ঋণ পেতে দেনদরবার চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু এর মধ্যে ভয়াবহ রাজনৈতিক সংকটের কারণে সেই আলোচনা স্থবির হয়ে গেছে।
বিশ্বব্যাপী একই ধরনের সংকট—মূল্যস্ফীতি, সুদের হার বৃদ্ধি, মুদ্রার দরপতন, বিপুল ঋণ এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে টান এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অন্য দেশগুলোকেও ঝুঁকির মুখে ফেলেছে।
এসব উন্নয়নশীল দেশের অন্যতম ঋণদাতা দেশ চীন। ফলে এই সংকট মুহূর্তে তাদের ভাগ্য নিয়ন্তার অবস্থানেও চীনই রয়েছে বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে। তবে এই ঋণ পুনর্গঠন বা ঋণের শর্ত পুনর্বিবেচনায় বেইজিং কী ধরনের পদক্ষেপ নেবে সেটি এখনো পরিষ্কার নয়।
আইএমএফ জানিয়েছে, শ্রীলঙ্কা চূড়ান্ত সংকটে পড়ার আগে যেসব লক্ষণ দেখা গিয়েছিল এসব দেশেও সেসব লক্ষণের অনেকগুলোই স্পষ্ট। সংস্থাটি যে চারটি দেশের নাম উল্লেখ করেছে তার মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়াও রয়েছে লাওস, মালদ্বীপ এবং পাকিস্তান।
বাংলাদেশ
বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—চলতি বছরের মে নাগাদ বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি ছিল প্রায় সাড়ে ৭ শতাংশ (৭.৪২)। যা গত ৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
তবে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার রিজার্ভ হ্রাস হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় দ্রব্য আমদানি কমিয়েছে। রেমিট্যান্স পাঠানোর বিষয়ে প্রবাসীদের আকৃষ্ট করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। সরকারি কর্মকর্তাদের অপ্রয়োজনীয় বিদেশ সফর কমিয়েছে।
মার্কিন ক্রেডিট রেটিং সংস্থা এস অ্যান্ড পি গ্লোবাল রেটিংয়ের বিশ্লেষক কিম অ্যাং তান বলেছেন, ‘বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ায় বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলো ভর্তুকি বৃদ্ধির মতো বিষয় নিয়ে বড় ধরনের মাথাব্যথার মধ্যে রয়েছে। পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা এরই মধ্যে সংকট কাটাতে অর্থনৈতিক সহায়তার জন্য আইএমএফের দ্বারস্থ হয়েছে।’
কিম অ্যাং তান আরও বলেছেন, ‘বাংলাদেশকে সরকারি ব্যয় এবং ভোক্তা কার্যক্রম হ্রাস বিষয়ে নতুন করে ভাবতে হবে।’
লাওস
৭৫ লাখ মানুষের ভূ-বেষ্টিত দেশ লাওস বিগত কয়েক মাস ধরেই বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ ব্যর্থ হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এরই মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি ও খাদ্যসংকট দেশটির অর্থনীতিতে বড় ধরনের আঘাত হেনেছে। বর্তমানে দেশটির এক-তৃতীয়াংশ লোক দারিদ্র্যসীমার নিচ বাস করছে।
দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর খবর—দেশটিতে এখনই জ্বালানি তেল, খাদ্য কিনতে শ্রীলঙ্কার মতো লম্বা লাইন নিয়মিতই দেখা যাচ্ছে। অনেকে আবারও প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যও কিনতে পারছে না। দেশটির মুদ্রা কিপের দাম ডলারের বিপরীতে প্রায় ৩ গুণ কমেছে। মুদ্রার অবমূল্যায়নের ফলে ডলারে ঋণ পরিশোধ করা দেশটির জন্য কষ্টকর করে তুলেছে। এ ছাড়া আমদানিও পড়েছে ঝুঁকির মুখে।
বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে—গত বছরেরই ডিসেম্বর মাসে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল মাত্র ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে তা স্বাভাবিকভাবেই কমে যাওয়ার কথা। কিন্তু আশঙ্কার বিষয় হলো, লাওস প্রতিবছর যে পরিমাণ ঋণ পরিশোধ করে তার পরিমাণই ওই রিজার্ভের সমপরিমাণ। ২০২৫ সাল পর্যন্ত এই হারে ঋণ পরিশোধ করার কথা রয়েছে দেশটির।
নিউইয়র্কভিত্তিক বিনিয়োগ গবেষণা প্রতিষ্ঠান মুডি’স লাওসের অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতর প্রেক্ষাপটে দেশটিকে ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে ‘উচ্চ ঝুঁকির’ মধ্যে রয়েছে বলে ঘোষণা করেছে। বিগত কয়েক বছরে চীন লাওসে বেশ কয়েকটি প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্য কেবল গত বছরই ৮১৩টি প্রকল্পে চীনা বিনিয়োগের পরিমাণ ১৬ বিলিয়ন ডলার। বিশ্বব্যাংকের দেওয়া তথ্যমতে, লাওসের মোট ঋণের পরিমাণ দেশটির ২০২১ সালে মোট দেশজ উৎপাদনের ৮৮ শতাংশেরও বেশি।
পাকিস্তান
গত মে নাগাদ পাকিস্তানের জ্বালানি তেলের মূল্য ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেশটি খাদ্যদ্রব্যেরও উচ্চমূল্যের সঙ্গে লড়াই করছে। গত জুন মাসেও দেশটির মূল্যস্ফীতি ছিল ২১ শতাংশেরও বেশি। যা বিগত ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
পাকিস্তানও শ্রীলঙ্কা এবং লাওসের মতো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকটে ভুগছে। দেশটি ব্যয়ের সঙ্গে আয়ের তফাত ঘুচাতে ভারী শিল্পগুলোর ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ করের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে। যদিও এটি ছিল আইএমএফ প্রদত্ত শর্ত।
বৈশ্বিক বাজার বিশ্লেষক অ্যান্ড্রু উড বিবিসিকে বলেছেন, ‘আইএমএফের শর্ত পূরণের পরও যদি আইএমএফ ঋণ না দেয় সে ক্ষেত্রে পাকিস্তানের ত্রাতা হতে পারে সৌদি ও আরব আমিরাতের মতো দেশগুলো।’
মালদ্বীপ
সাম্প্রতিক বছরগুলো মালদ্বীপের মোট ঋণ এতই বেড়েছে যে তা দেশটির মোট জিডিপির সমান। শ্রীলঙ্কার মতো মালদ্বীপের প্রধান আয়ের খাত পর্যটন করোনা মহামারির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিশ্বব্যাংক বলেছে, পর্যটন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ছাড়াও এই দেশটি জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে সবচেয়ে বেশি ভুগবে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান জেপি মরগান বলেছে, ২০২৩ সাল নাগাদ মালদ্বীপ ঋণখেলাপি হতে পারে।
শ্রীলঙ্কা ছাড়াও এশিয়ার কয়েকটি দেশ একই রকম সংকটে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল–আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, শ্রীলঙ্কার দশা হতে পারে লাওস, মালদ্বীপ, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা গত শনিবার বিবিসিকে বলেন, ‘যেসব দেশের ঋণের পরিমাণ বেশি এবং নীতিনির্ধারণী সক্ষমতা কম সেসব দেশ অতিরিক্ত চাপের মুখে পড়বে। সতর্কতা হিসেবে বলা যায় এই দেশগুলোর অবস্থা শ্রীলঙ্কার চেয়ে খুব একটা ভালো নয়।’
আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরও বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোর পুঁজি টানা চার মাস ধরে একই হারে বাইরে চলে যাচ্ছে। এর ফলে, এই দেশগুলোর উন্নত অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার স্বপ্ন ঝুঁকিতে পড়ছে।
শ্রীলঙ্কা বর্তমানে তার ২ কোটি ২০ লাখ মানুষের জন্য জরুরি খাদ্যসামগ্রী, জ্বালানি এবং ওষুধ আমদানি করতে হিমশিম খাচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রার ভয়াবহ সংকটে দেশটি। মূল্যস্ফীতি প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে, আগের বছরের তুলনায় খাদ্যের দাম ৮০ শতাংশ বেশি। মার্কিন ডলারের বিপরীতে শ্রীলঙ্কান রুপির বিনিময় হারে রেকর্ড পতন হয়েছে। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বৈশ্বিক অন্যান্য মুদ্রার দরপতন।
অনেকে এর জন্য পলাতক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের ভুল নীতিকে দোষ দিচ্ছেন। তাঁর সরকারের নীতির ব্যর্থতা প্রকাশ পায় কেবল করোনা মহামারির সময়। এর আগে বড় বড় প্রকল্প দেখিয়ে দেশবাসীকে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল তাঁর সরকার। বহু মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে গত কয়েক বছরে শ্রীলঙ্কা অস্বাভাবিক বৈদেশিক ঋণ নিয়েছে। গত মাসে দেশটি এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ২০ বছরের মধ্যে প্রথম দেউলিয়া দেশে পরিণত হয়। বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করার মতো অবস্থায় নেই সেটিও আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দিয়েছে।
কর্মকর্তারা অর্থনীতির উদ্ধার তহবিল হিসেবে আইএমএফের কাছ থেকে ৩০০ কোটি ডলার ঋণ পেতে দেনদরবার চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু এর মধ্যে ভয়াবহ রাজনৈতিক সংকটের কারণে সেই আলোচনা স্থবির হয়ে গেছে।
বিশ্বব্যাপী একই ধরনের সংকট—মূল্যস্ফীতি, সুদের হার বৃদ্ধি, মুদ্রার দরপতন, বিপুল ঋণ এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে টান এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অন্য দেশগুলোকেও ঝুঁকির মুখে ফেলেছে।
এসব উন্নয়নশীল দেশের অন্যতম ঋণদাতা দেশ চীন। ফলে এই সংকট মুহূর্তে তাদের ভাগ্য নিয়ন্তার অবস্থানেও চীনই রয়েছে বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে। তবে এই ঋণ পুনর্গঠন বা ঋণের শর্ত পুনর্বিবেচনায় বেইজিং কী ধরনের পদক্ষেপ নেবে সেটি এখনো পরিষ্কার নয়।
আইএমএফ জানিয়েছে, শ্রীলঙ্কা চূড়ান্ত সংকটে পড়ার আগে যেসব লক্ষণ দেখা গিয়েছিল এসব দেশেও সেসব লক্ষণের অনেকগুলোই স্পষ্ট। সংস্থাটি যে চারটি দেশের নাম উল্লেখ করেছে তার মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়াও রয়েছে লাওস, মালদ্বীপ এবং পাকিস্তান।
বাংলাদেশ
বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—চলতি বছরের মে নাগাদ বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি ছিল প্রায় সাড়ে ৭ শতাংশ (৭.৪২)। যা গত ৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
তবে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার রিজার্ভ হ্রাস হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় দ্রব্য আমদানি কমিয়েছে। রেমিট্যান্স পাঠানোর বিষয়ে প্রবাসীদের আকৃষ্ট করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। সরকারি কর্মকর্তাদের অপ্রয়োজনীয় বিদেশ সফর কমিয়েছে।
মার্কিন ক্রেডিট রেটিং সংস্থা এস অ্যান্ড পি গ্লোবাল রেটিংয়ের বিশ্লেষক কিম অ্যাং তান বলেছেন, ‘বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ায় বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলো ভর্তুকি বৃদ্ধির মতো বিষয় নিয়ে বড় ধরনের মাথাব্যথার মধ্যে রয়েছে। পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা এরই মধ্যে সংকট কাটাতে অর্থনৈতিক সহায়তার জন্য আইএমএফের দ্বারস্থ হয়েছে।’
কিম অ্যাং তান আরও বলেছেন, ‘বাংলাদেশকে সরকারি ব্যয় এবং ভোক্তা কার্যক্রম হ্রাস বিষয়ে নতুন করে ভাবতে হবে।’
লাওস
৭৫ লাখ মানুষের ভূ-বেষ্টিত দেশ লাওস বিগত কয়েক মাস ধরেই বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ ব্যর্থ হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এরই মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি ও খাদ্যসংকট দেশটির অর্থনীতিতে বড় ধরনের আঘাত হেনেছে। বর্তমানে দেশটির এক-তৃতীয়াংশ লোক দারিদ্র্যসীমার নিচ বাস করছে।
দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর খবর—দেশটিতে এখনই জ্বালানি তেল, খাদ্য কিনতে শ্রীলঙ্কার মতো লম্বা লাইন নিয়মিতই দেখা যাচ্ছে। অনেকে আবারও প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যও কিনতে পারছে না। দেশটির মুদ্রা কিপের দাম ডলারের বিপরীতে প্রায় ৩ গুণ কমেছে। মুদ্রার অবমূল্যায়নের ফলে ডলারে ঋণ পরিশোধ করা দেশটির জন্য কষ্টকর করে তুলেছে। এ ছাড়া আমদানিও পড়েছে ঝুঁকির মুখে।
বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে—গত বছরেরই ডিসেম্বর মাসে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল মাত্র ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে তা স্বাভাবিকভাবেই কমে যাওয়ার কথা। কিন্তু আশঙ্কার বিষয় হলো, লাওস প্রতিবছর যে পরিমাণ ঋণ পরিশোধ করে তার পরিমাণই ওই রিজার্ভের সমপরিমাণ। ২০২৫ সাল পর্যন্ত এই হারে ঋণ পরিশোধ করার কথা রয়েছে দেশটির।
নিউইয়র্কভিত্তিক বিনিয়োগ গবেষণা প্রতিষ্ঠান মুডি’স লাওসের অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতর প্রেক্ষাপটে দেশটিকে ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে ‘উচ্চ ঝুঁকির’ মধ্যে রয়েছে বলে ঘোষণা করেছে। বিগত কয়েক বছরে চীন লাওসে বেশ কয়েকটি প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্য কেবল গত বছরই ৮১৩টি প্রকল্পে চীনা বিনিয়োগের পরিমাণ ১৬ বিলিয়ন ডলার। বিশ্বব্যাংকের দেওয়া তথ্যমতে, লাওসের মোট ঋণের পরিমাণ দেশটির ২০২১ সালে মোট দেশজ উৎপাদনের ৮৮ শতাংশেরও বেশি।
পাকিস্তান
গত মে নাগাদ পাকিস্তানের জ্বালানি তেলের মূল্য ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেশটি খাদ্যদ্রব্যেরও উচ্চমূল্যের সঙ্গে লড়াই করছে। গত জুন মাসেও দেশটির মূল্যস্ফীতি ছিল ২১ শতাংশেরও বেশি। যা বিগত ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
পাকিস্তানও শ্রীলঙ্কা এবং লাওসের মতো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকটে ভুগছে। দেশটি ব্যয়ের সঙ্গে আয়ের তফাত ঘুচাতে ভারী শিল্পগুলোর ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ করের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে। যদিও এটি ছিল আইএমএফ প্রদত্ত শর্ত।
বৈশ্বিক বাজার বিশ্লেষক অ্যান্ড্রু উড বিবিসিকে বলেছেন, ‘আইএমএফের শর্ত পূরণের পরও যদি আইএমএফ ঋণ না দেয় সে ক্ষেত্রে পাকিস্তানের ত্রাতা হতে পারে সৌদি ও আরব আমিরাতের মতো দেশগুলো।’
মালদ্বীপ
সাম্প্রতিক বছরগুলো মালদ্বীপের মোট ঋণ এতই বেড়েছে যে তা দেশটির মোট জিডিপির সমান। শ্রীলঙ্কার মতো মালদ্বীপের প্রধান আয়ের খাত পর্যটন করোনা মহামারির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিশ্বব্যাংক বলেছে, পর্যটন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ছাড়াও এই দেশটি জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে সবচেয়ে বেশি ভুগবে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান জেপি মরগান বলেছে, ২০২৩ সাল নাগাদ মালদ্বীপ ঋণখেলাপি হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারের সদস্যদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন প্রায় ৯০ জন ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা। অধিকৃত ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনবিরোধী সহিংসতার অভিযোগে গতকাল বৃহস্পতিবার এক চিঠিতে তাঁরা এ আহ্বান জানান। বার্তা
২৭ মিনিট আগেশ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনূঢ়া কুমারা দিসানায়েকের নেতৃত্বে বামপন্থী দল ন্যাশনাল পিপল পাওয়ার (এনপিপি) আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় লাভ করেছে। এই জয়ের মার্ক্সবাদী প্রেসিডেন্ট দিসানায়েকে কঠোর ব্যয় সংকোচন নীতি শিথিল করার জন্য ম্যান্ডেট পেয়েছেন
১ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র ও বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের ইলন মাস্ক জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে গোপনে সাক্ষাৎ করেছেন। চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে তাঁরা সাক্ষাৎ করেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস ইরানের দুটি সূত্রের বরাত দিয়ে
২ ঘণ্টা আগেইসরায়েল অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে যেসব প্রাকৃতিক সম্পদ আছে সেগুলোর সার্বভৌম মালিকানা ফিলিস্তিনি জনগণের। এই বিষয়টির স্বীকৃতি দিয়ে জাতিসংঘে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। প্রস্তাবটিতে পশ্চিমা বিশ্বের অনেকগুলো দেশ সমর্থন দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বৈঠকে এই প্রস্তাব পাস হয়
৩ ঘণ্টা আগে