ইশতিয়াক হাসান
এই বিশ্বে দ্বীপের অভাব নেই। তবে আকারে বড় দ্বীপের সংখ্যা খুব বেশি নয়। কয়েক হাজার দ্বীপ মিলিয়ে গড়ে উঠেছে এমন দেশও যেমন আছে; আবার একটি দ্বীপ নিয়ে গড়ে উঠেছে এমন দেশও আছে।
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দ্বীপ কোনটি, তা নিয়ে ধোঁয়াশা আছে। দ্বীপের সংজ্ঞা বিবেচনা করলে অস্ট্রেলিয়াও একটি দ্বীপ হওয়ার কথা। কারণ কোনো ধরনের ভূভাগের সঙ্গে যোগাযোগ নেই এর। তবে একে একটি মহাদেশ হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। তাই আমাদের তালিকায় থাকছে না এটি। চলুন তবে পরিচিত হওয়া যাক আয়তনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ১০ দ্বীপের সঙ্গে।
গ্রিনল্যান্ড
বিশ্বের সবচেয়ে বড় দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডের আয়তন ২১ লাখ ৬৬ হাজার ৮৬ বর্গকিলোমিটার। ইউরোপের দেশ ডেনমার্কের অন্তর্গত গ্রিনল্যান্ডের অবশ্য অভ্যন্তরীণ বিষয় দেখভালের জন্য একটি স্বায়ত্তশাসিত সরকার আছে।
উত্তর আটলান্টিক মহাসাগর ও আর্কটিক মহাসাগরের মধ্যে অবস্থিত এলাকাটি মহাদেশের মর্যাদা না পাওয়ার একটি কারণ হতে পারে এর জনসংখ্যা। আয়তনে বিশাল হলেও এর জনসংখ্যা মোটে ৫৫ হাজার। তাদের বেশির ভাগই ইনুইট আদিবাসী। শীতল এলাকায় বাস করা এই জাতিগোষ্ঠীর মানুষের দেখা মেলে কানাডা ও আলাস্কায়। ইনুইটরা এস্কিমো নামেও পরিচিত।
গ্রিনল্যান্ডের বেশির ভাগ অংশজুড়েই আছে হিমবাহ। মেরু এলাকার বাইরে এত বিশাল সব হিমবাহ পাবেন না আর কোথাও। দ্বীপটির প্রধান শহরগুলোর মধ্যে সংযোগ স্থাপন করেছে এমন কোনো সড়কও পাবেন না। মাছ ও সিল ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন এখানকার অধিবাসীদের বড় একটি অংশ। বিভিন্ন দেশের মানুষ বিশ্বের সবচেয়ে বড় জাতীয় উদ্যান নর্থইস্ট গ্রিনল্যান্ড ন্যাশনাল পার্ক দর্শনে যান।
নিউগিনি
৮ লাখ ২১ হাজার ৪০০ বর্গকিলোমিটারের বিশাল এই দ্বীপ পড়েছে দুই দেশের সীমানায়। এগুলো হলো ইন্দোনেশিয়া ও পাপুয়া নিউগিনি। বছরে ৩০০ ইঞ্চির বেশি বৃষ্টিপাতের কারণে এখানে গভীর অরণ্য এবং নানা জাতের বন্যপ্রাণীর দেখা মেলে। তবে সে তুলনায় জনসংখ্যা কম।
৪০ হাজার বছরেরও বেশি আগে এখানে প্রথম মানব বসতি গড়ে ওঠে বলে ধারণা করা হয়। তামা ও সোনার বিশাল মজুতের জন্য সাগর পেরিয়ে বারবারই এখানে অনুসন্ধান চালাতে এসেছে বিশ্বের নানা প্রান্তের মানুষ।
বোর্নিও
সবচেয়ে বড় দ্বীপের তালিকায় বোর্নিওর অবস্থান ৩–এ। এর আয়তন ৭ লাখ ৪৮ হাজার ১৬৮ বর্গকিলোমিটার। এটি বিশ্বের একমাত্র, দ্বীপ যা অঞ্চলভেদে নিয়ন্ত্রণ করে তিনটি দেশ— ব্রুনেই, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া।
গভীর অরণ্যে আচ্ছাদিত দ্বীপটিতে নানা প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেখা মেলে। যেমন: বোর্নিও ওরাংওটাং এবং দায়াক ফলখেকো বাদুড়ের দেখা মিলবে শুধু এই দ্বীপেই। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য বন্যপ্রাণীর মধ্যে আছে— সান্দ্রা মেঘলা চিতা ও বোর্নিও পিগমি হাতি। বিশ্বের সবচেয়ে বড় আকারের ফুলের দেখা মেলে দ্বীপটিতে। পৃথিবীর সবচেয়ে পুরোনো চিরসবুজ বন, যা ১০ কোটি বছরের পুরোনো, বাড়িয়েছে জায়গাটির মর্যাদা।
অরণ্যময় এলাকা হিসেবে বোর্নিও দ্বীপের জনসংখ্যা একেবারে কম নয়। ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউ জানাচ্ছে, দ্বীপে বাস ২ কোটি ১২ লাখ ৫৮ হাজার মানুষের।
মাদাগাস্কার
বিচিত্র সব বন্যপ্রাণী ও গাছপালার জন্য বিখ্যাত মাদাগাস্কার দ্বীপের অবস্থান বৃহত্তম দ্বীপের তালিকায় ৪–এ। এর আয়তন ৫ লাখ ৮৭ হাজার ২৯৫ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা ৩ কোটি ২০ লাখের মতো।
আফ্রিকার পূর্ব উপকূলে ভারত মহাসাগরের মাঝখানে এ দ্বীপের অবস্থান। প্রায় আড়াই লাখ প্রজাতির বন্যপ্রাণীর বাস এখানে। মজার ঘটনা, এগুলোর তিন ভাগের দুই ভাগই পৃথিবীর আর কোথাও পাওয়া যায় না। পৃথিবীতে যে ৪০ প্রজাতির লেমুর আছে, এর সবগুলোই আছে মাদাগাস্কারে। এখানে জানিয়ে রাখা ভালো, লেমুর হলো গাছে বাস করা লোমশ একধরনের স্তন্যপায়ী প্রাণী। মানুষ ও বানরের মতো এরাও প্রাইমেট বর্গের।
মাদাগাস্কারের প্রবাল রাজ্যও মুগ্ধ করে মানুষকে। ভারত মহাসাগরের উষ্ণ জলে সাঁতার কাটা এবং প্রবালের অসাধারণ সৌন্দর্য দেখার জন্য পর্যটক ও ডুবুরিদের প্রিয় জায়গা এটি।
বাফিন
উত্তর আমেরিকার দেশ কানাডার সবচেয়ে বড় দ্বীপ বাফিন বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপের তালিকায় আছে ৫–এ। আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থিত দ্বীপটির আয়তন ৫ লাখ ৭ হাজার ৪৫১ বর্গকিলোমিটার।
সতেরো শতকের ব্রিটিশ অভিযাত্রী উইলিয়াম বাফিনের নামে নামকরণ করা দ্বীপটি পড়েছে উত্তর কানাডার নুনাভাট অঞ্চলে। উপকূলীয় কিছু ছোট গ্রাম ছাড়া মোটামুটি জনবসতিহীন এলাকা এটি। দ্বীপের মোট জনসংখ্যা ১৩ হাজারের কিছু বেশি।
সামুদ্রিক খাঁড়ি, স্বাদু পানির হ্রদ ও হিমবাহে ভরপুর জাতীয় উদ্যান মিলিয়ে জায়গাটি দেখার মতো! তবে চরমভাবাপন্ন জলবায়ুর কারণে দ্বীপটি মানুষের বসবাসের জন্য বৈরী। এখানকার গড় বার্ষিক তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আর্কটিক সার্কেলের কাছেই এই দ্বীপের অবস্থান। এ কারণে নর্দার্ন লাইট, আর্কটিক নেকড়ে, মেরু ভালুক দেখার জন্য এখানে পাড়ি জমান কোনো কোনো পর্যটক।
সুমাত্রা
বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম দ্বীপ সুমাত্রার আয়তন ৪ লাখ ৪৩ হাজার ৬৬ বর্গকিলোমিটার। এটি এমন এক জায়গায় অবস্থিত, যেখানে ইন্দো–অস্ট্রেলিয়ান ও ইউরেশিয়ান টেকটনিক প্লেট একটি আরেকটিকে অতিক্রম করে গেছে। এ কারণে এখানে ভূমিকম্প ও সুনামি বলতে গেলে স্বাভাবিক ঘটনা!
বন্যপ্রাণীর বৈচিত্র্যের জন্য নাম আছে সুমাত্রা দ্বীপের। সুমাত্রা বাঘ, সুমাত্রা গন্ডার ও সুমাত্রা ওরাংওটাং এখানকার উল্লেখযোগ্য বন্যপ্রাণী। জনসংখ্যার ঘনত্ব খুব বেশি না হলেও অরণ্য এলাকা হিসেবে একেবারে কমও নয়। দ্বীপটিতে ৬ কোটির মতো মানুষের বাস।
হনশু
জাপানের মূল চারটি দ্বীপের মধ্যে বৃহত্তম হনশু। জাপান সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যে অবস্থিত হনশুর আয়তন ২ লাখ ২৭ হাজার ৮৯৮ বর্গকিলোমিটার।
গোটা জাপানের অর্ধেকের বেশি জায়গা দখল করে থাকা হনশু দ্বীপের মধ্যে পড়েছে টোকিও, হিরোশিমা ও ওসাকার মতো বিখ্যাত শহর। দ্বীপটিতে ১০ কোটি ৩০ লাখের মতো মানুষের বাস। জাপানের উচ্চতম পর্বত মাউন্ট ফিজি এবং সবচেয়ে বড় হ্রদ বিওয়ার অবস্থানও এই দ্বীপে।
ভিক্টোরিয়া
২ লাখ ১৭ হাজার ২৯১ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ভিক্টোরিয়া কানাডীয় আর্কটিক দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে অবস্থিত। এই দ্বীপপুঞ্জের অন্তর্গত দ্বীপগুলোর মধ্যে এর চেয়ে বড় কেবল বাফিন দ্বীপ।
রানি ভিক্টোরিয়ার নামে নামকরণ করা দ্বীপটির স্থায়ী জনসংখ্যা ২ হাজারের কিছু বেশি। আর্কটিক অভিযাত্রী টমাস সিম্পসন ১৮৩৮ সালে দ্বীপটি আবিষ্কার করেন।
গ্রেট ব্রিটেন
ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড এবং ওয়েলস—এই তিন দেশ নিয়ে গ্রেট ব্রিটেন। দ্বীপটির আয়তন ২ লাখ ৯ হাজার ৩৩১ বর্গকিলোমিটার। ইউনাইটেড কিংডমের অন্তর্গত দ্বীপটি। এটি বিশ্বের নবম বৃহত্তম এবং ইউনাইটেড কিংডমের (যুক্তরাজ্য) সবচেয়ে বড় দ্বীপ।
ইউরোপের বৃহত্তম এই দ্বীপকে মহাদেশের মূল ভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে ইংলিশ চ্যানেল ও উত্তর সাগর। দ্বীপটির পুরোনো ইতিহাসের চিহ্ন পাবেন স্টোনহেঞ্জ ও মধ্যযুগীয় সব দুর্গে। ইউরোপের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা গ্রেট ব্রিটেনের জনসংখ্যা ৬ কোটি ৯০ লাখের বেশি।
এলেসমেরে
তালিকায় ১০–এ থাকা দ্বীপ এলেসমেরের আয়তন ১ লাখ ৯৬ হাজার ২৩৬ বর্গকিলোমিটার। কানাডীয় আর্কটিক দ্বীপপুঞ্জে অবস্থিত এই দ্বীপটির নামকরণ হয় ১৮৫২ সালে, এলেসমেরর প্রথম আর্ল ফ্রান্সিস এগারটনের প্রতি সম্মান জানিয়ে। ধারণা করা হয়, দশম শতাব্দীতে ভাইকিংরা দ্বীপটিতে আসেন।
দুর্গম ভূপ্রকৃতি ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে জায়গাটিতে বাস করা কঠিন। মাত্র ১৪৪ জন মানুষের বাস কানাডার নুনাভাট অঞ্চলের অন্তর্গত এই দ্বীপে। বাফিন উপসাগর ও আর্কটিক মহাসাগরের মধ্যে অবস্থিত এলেসমেরের বেশির ভাগ এলাকাজুড়েই ঢেউ খেলানো পাহাড় আর বরফের রাজত্ব।
সূত্র: ব্রিটানিকা, ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউ, ট্যুরোপিয়া, উইকিপিডিয়া, ট্রাভেল ডট আর্থ
এই বিশ্বে দ্বীপের অভাব নেই। তবে আকারে বড় দ্বীপের সংখ্যা খুব বেশি নয়। কয়েক হাজার দ্বীপ মিলিয়ে গড়ে উঠেছে এমন দেশও যেমন আছে; আবার একটি দ্বীপ নিয়ে গড়ে উঠেছে এমন দেশও আছে।
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দ্বীপ কোনটি, তা নিয়ে ধোঁয়াশা আছে। দ্বীপের সংজ্ঞা বিবেচনা করলে অস্ট্রেলিয়াও একটি দ্বীপ হওয়ার কথা। কারণ কোনো ধরনের ভূভাগের সঙ্গে যোগাযোগ নেই এর। তবে একে একটি মহাদেশ হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। তাই আমাদের তালিকায় থাকছে না এটি। চলুন তবে পরিচিত হওয়া যাক আয়তনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ১০ দ্বীপের সঙ্গে।
গ্রিনল্যান্ড
বিশ্বের সবচেয়ে বড় দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডের আয়তন ২১ লাখ ৬৬ হাজার ৮৬ বর্গকিলোমিটার। ইউরোপের দেশ ডেনমার্কের অন্তর্গত গ্রিনল্যান্ডের অবশ্য অভ্যন্তরীণ বিষয় দেখভালের জন্য একটি স্বায়ত্তশাসিত সরকার আছে।
উত্তর আটলান্টিক মহাসাগর ও আর্কটিক মহাসাগরের মধ্যে অবস্থিত এলাকাটি মহাদেশের মর্যাদা না পাওয়ার একটি কারণ হতে পারে এর জনসংখ্যা। আয়তনে বিশাল হলেও এর জনসংখ্যা মোটে ৫৫ হাজার। তাদের বেশির ভাগই ইনুইট আদিবাসী। শীতল এলাকায় বাস করা এই জাতিগোষ্ঠীর মানুষের দেখা মেলে কানাডা ও আলাস্কায়। ইনুইটরা এস্কিমো নামেও পরিচিত।
গ্রিনল্যান্ডের বেশির ভাগ অংশজুড়েই আছে হিমবাহ। মেরু এলাকার বাইরে এত বিশাল সব হিমবাহ পাবেন না আর কোথাও। দ্বীপটির প্রধান শহরগুলোর মধ্যে সংযোগ স্থাপন করেছে এমন কোনো সড়কও পাবেন না। মাছ ও সিল ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন এখানকার অধিবাসীদের বড় একটি অংশ। বিভিন্ন দেশের মানুষ বিশ্বের সবচেয়ে বড় জাতীয় উদ্যান নর্থইস্ট গ্রিনল্যান্ড ন্যাশনাল পার্ক দর্শনে যান।
নিউগিনি
৮ লাখ ২১ হাজার ৪০০ বর্গকিলোমিটারের বিশাল এই দ্বীপ পড়েছে দুই দেশের সীমানায়। এগুলো হলো ইন্দোনেশিয়া ও পাপুয়া নিউগিনি। বছরে ৩০০ ইঞ্চির বেশি বৃষ্টিপাতের কারণে এখানে গভীর অরণ্য এবং নানা জাতের বন্যপ্রাণীর দেখা মেলে। তবে সে তুলনায় জনসংখ্যা কম।
৪০ হাজার বছরেরও বেশি আগে এখানে প্রথম মানব বসতি গড়ে ওঠে বলে ধারণা করা হয়। তামা ও সোনার বিশাল মজুতের জন্য সাগর পেরিয়ে বারবারই এখানে অনুসন্ধান চালাতে এসেছে বিশ্বের নানা প্রান্তের মানুষ।
বোর্নিও
সবচেয়ে বড় দ্বীপের তালিকায় বোর্নিওর অবস্থান ৩–এ। এর আয়তন ৭ লাখ ৪৮ হাজার ১৬৮ বর্গকিলোমিটার। এটি বিশ্বের একমাত্র, দ্বীপ যা অঞ্চলভেদে নিয়ন্ত্রণ করে তিনটি দেশ— ব্রুনেই, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া।
গভীর অরণ্যে আচ্ছাদিত দ্বীপটিতে নানা প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেখা মেলে। যেমন: বোর্নিও ওরাংওটাং এবং দায়াক ফলখেকো বাদুড়ের দেখা মিলবে শুধু এই দ্বীপেই। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য বন্যপ্রাণীর মধ্যে আছে— সান্দ্রা মেঘলা চিতা ও বোর্নিও পিগমি হাতি। বিশ্বের সবচেয়ে বড় আকারের ফুলের দেখা মেলে দ্বীপটিতে। পৃথিবীর সবচেয়ে পুরোনো চিরসবুজ বন, যা ১০ কোটি বছরের পুরোনো, বাড়িয়েছে জায়গাটির মর্যাদা।
অরণ্যময় এলাকা হিসেবে বোর্নিও দ্বীপের জনসংখ্যা একেবারে কম নয়। ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউ জানাচ্ছে, দ্বীপে বাস ২ কোটি ১২ লাখ ৫৮ হাজার মানুষের।
মাদাগাস্কার
বিচিত্র সব বন্যপ্রাণী ও গাছপালার জন্য বিখ্যাত মাদাগাস্কার দ্বীপের অবস্থান বৃহত্তম দ্বীপের তালিকায় ৪–এ। এর আয়তন ৫ লাখ ৮৭ হাজার ২৯৫ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা ৩ কোটি ২০ লাখের মতো।
আফ্রিকার পূর্ব উপকূলে ভারত মহাসাগরের মাঝখানে এ দ্বীপের অবস্থান। প্রায় আড়াই লাখ প্রজাতির বন্যপ্রাণীর বাস এখানে। মজার ঘটনা, এগুলোর তিন ভাগের দুই ভাগই পৃথিবীর আর কোথাও পাওয়া যায় না। পৃথিবীতে যে ৪০ প্রজাতির লেমুর আছে, এর সবগুলোই আছে মাদাগাস্কারে। এখানে জানিয়ে রাখা ভালো, লেমুর হলো গাছে বাস করা লোমশ একধরনের স্তন্যপায়ী প্রাণী। মানুষ ও বানরের মতো এরাও প্রাইমেট বর্গের।
মাদাগাস্কারের প্রবাল রাজ্যও মুগ্ধ করে মানুষকে। ভারত মহাসাগরের উষ্ণ জলে সাঁতার কাটা এবং প্রবালের অসাধারণ সৌন্দর্য দেখার জন্য পর্যটক ও ডুবুরিদের প্রিয় জায়গা এটি।
বাফিন
উত্তর আমেরিকার দেশ কানাডার সবচেয়ে বড় দ্বীপ বাফিন বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপের তালিকায় আছে ৫–এ। আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থিত দ্বীপটির আয়তন ৫ লাখ ৭ হাজার ৪৫১ বর্গকিলোমিটার।
সতেরো শতকের ব্রিটিশ অভিযাত্রী উইলিয়াম বাফিনের নামে নামকরণ করা দ্বীপটি পড়েছে উত্তর কানাডার নুনাভাট অঞ্চলে। উপকূলীয় কিছু ছোট গ্রাম ছাড়া মোটামুটি জনবসতিহীন এলাকা এটি। দ্বীপের মোট জনসংখ্যা ১৩ হাজারের কিছু বেশি।
সামুদ্রিক খাঁড়ি, স্বাদু পানির হ্রদ ও হিমবাহে ভরপুর জাতীয় উদ্যান মিলিয়ে জায়গাটি দেখার মতো! তবে চরমভাবাপন্ন জলবায়ুর কারণে দ্বীপটি মানুষের বসবাসের জন্য বৈরী। এখানকার গড় বার্ষিক তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আর্কটিক সার্কেলের কাছেই এই দ্বীপের অবস্থান। এ কারণে নর্দার্ন লাইট, আর্কটিক নেকড়ে, মেরু ভালুক দেখার জন্য এখানে পাড়ি জমান কোনো কোনো পর্যটক।
সুমাত্রা
বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম দ্বীপ সুমাত্রার আয়তন ৪ লাখ ৪৩ হাজার ৬৬ বর্গকিলোমিটার। এটি এমন এক জায়গায় অবস্থিত, যেখানে ইন্দো–অস্ট্রেলিয়ান ও ইউরেশিয়ান টেকটনিক প্লেট একটি আরেকটিকে অতিক্রম করে গেছে। এ কারণে এখানে ভূমিকম্প ও সুনামি বলতে গেলে স্বাভাবিক ঘটনা!
বন্যপ্রাণীর বৈচিত্র্যের জন্য নাম আছে সুমাত্রা দ্বীপের। সুমাত্রা বাঘ, সুমাত্রা গন্ডার ও সুমাত্রা ওরাংওটাং এখানকার উল্লেখযোগ্য বন্যপ্রাণী। জনসংখ্যার ঘনত্ব খুব বেশি না হলেও অরণ্য এলাকা হিসেবে একেবারে কমও নয়। দ্বীপটিতে ৬ কোটির মতো মানুষের বাস।
হনশু
জাপানের মূল চারটি দ্বীপের মধ্যে বৃহত্তম হনশু। জাপান সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যে অবস্থিত হনশুর আয়তন ২ লাখ ২৭ হাজার ৮৯৮ বর্গকিলোমিটার।
গোটা জাপানের অর্ধেকের বেশি জায়গা দখল করে থাকা হনশু দ্বীপের মধ্যে পড়েছে টোকিও, হিরোশিমা ও ওসাকার মতো বিখ্যাত শহর। দ্বীপটিতে ১০ কোটি ৩০ লাখের মতো মানুষের বাস। জাপানের উচ্চতম পর্বত মাউন্ট ফিজি এবং সবচেয়ে বড় হ্রদ বিওয়ার অবস্থানও এই দ্বীপে।
ভিক্টোরিয়া
২ লাখ ১৭ হাজার ২৯১ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ভিক্টোরিয়া কানাডীয় আর্কটিক দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে অবস্থিত। এই দ্বীপপুঞ্জের অন্তর্গত দ্বীপগুলোর মধ্যে এর চেয়ে বড় কেবল বাফিন দ্বীপ।
রানি ভিক্টোরিয়ার নামে নামকরণ করা দ্বীপটির স্থায়ী জনসংখ্যা ২ হাজারের কিছু বেশি। আর্কটিক অভিযাত্রী টমাস সিম্পসন ১৮৩৮ সালে দ্বীপটি আবিষ্কার করেন।
গ্রেট ব্রিটেন
ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড এবং ওয়েলস—এই তিন দেশ নিয়ে গ্রেট ব্রিটেন। দ্বীপটির আয়তন ২ লাখ ৯ হাজার ৩৩১ বর্গকিলোমিটার। ইউনাইটেড কিংডমের অন্তর্গত দ্বীপটি। এটি বিশ্বের নবম বৃহত্তম এবং ইউনাইটেড কিংডমের (যুক্তরাজ্য) সবচেয়ে বড় দ্বীপ।
ইউরোপের বৃহত্তম এই দ্বীপকে মহাদেশের মূল ভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে ইংলিশ চ্যানেল ও উত্তর সাগর। দ্বীপটির পুরোনো ইতিহাসের চিহ্ন পাবেন স্টোনহেঞ্জ ও মধ্যযুগীয় সব দুর্গে। ইউরোপের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা গ্রেট ব্রিটেনের জনসংখ্যা ৬ কোটি ৯০ লাখের বেশি।
এলেসমেরে
তালিকায় ১০–এ থাকা দ্বীপ এলেসমেরের আয়তন ১ লাখ ৯৬ হাজার ২৩৬ বর্গকিলোমিটার। কানাডীয় আর্কটিক দ্বীপপুঞ্জে অবস্থিত এই দ্বীপটির নামকরণ হয় ১৮৫২ সালে, এলেসমেরর প্রথম আর্ল ফ্রান্সিস এগারটনের প্রতি সম্মান জানিয়ে। ধারণা করা হয়, দশম শতাব্দীতে ভাইকিংরা দ্বীপটিতে আসেন।
দুর্গম ভূপ্রকৃতি ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে জায়গাটিতে বাস করা কঠিন। মাত্র ১৪৪ জন মানুষের বাস কানাডার নুনাভাট অঞ্চলের অন্তর্গত এই দ্বীপে। বাফিন উপসাগর ও আর্কটিক মহাসাগরের মধ্যে অবস্থিত এলেসমেরের বেশির ভাগ এলাকাজুড়েই ঢেউ খেলানো পাহাড় আর বরফের রাজত্ব।
সূত্র: ব্রিটানিকা, ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউ, ট্যুরোপিয়া, উইকিপিডিয়া, ট্রাভেল ডট আর্থ
তুলসী গ্যাবার্ডকে মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান হিসেবে বেছে নিয়েছেন সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিবিসি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে। তুলসী গ্যাবার্ড কে? নিয়োগ পেলে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক হওয়া প্রথম হিন্দু নারী। সাবেক এই মার্কিন সেনা একসময় রাজনীতি করেছ
৮ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এক দিন পর থেকেই আভাস পাওয়া যাচ্ছিল, এবার মার্কিন আইনসভা কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণও যাচ্ছে রিপাবলিকানদের হাতে। শেষমেশ তা-ই হলো। গত বুধবার মার্কিন গণমাধ্যমগুলো নিশ্চিত করেছে, এই হাউসের নিয়ন্ত্রণও পেল নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের
৯ ঘণ্টা আগেহিজাব আইন অমান্যকারীদের মানসিক রোগী হিসেবে বিবেচনার ঘোষণা দিয়েছে ইরান। এমন নারীদের জন্য ‘মানসিক চিকিৎসা কেন্দ্র’ চালুর ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সরকার। ইরানের নারী ও পরিবার বিভাগের নীতি ও অনৈতিকতা প্রতিরোধ দপ্তরের প্রধান মেহরি তালেবি দারেস্তানি গত মঙ্গলবার এ ঘোষণা দেন।
১১ ঘণ্টা আগেজনগণের ভোটাধিকার হরণ, অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার ও সংবিধানের ২৬তম সংশোধনী পাসের প্রতিবাদে ২৪ নভেম্বর (বুধবার) দেশব্যাপী ‘চূড়ান্ত’ বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন কারান্তরীণ পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তাঁর দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) তাঁর মুক্তি ও নির্বাচনে কথিত কারচুপির বিরুদ্ধে বিক্ষ
১৩ ঘণ্টা আগে