লিনা আকতার
খাদ্যের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্য ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আমরা যা খাই তা মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে। অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, বয়সজনিত সমস্যা, দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন রোগ ইত্যাদি কারণে মানসিক চাপ হতে পারে। সে জন্য শরীরে কর্টিসল, অ্যাড্রেনালিন ও নরডেনালাইন নামে কয়েকটি হরমোনের ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়। এই হরমোনগুলো ঘুম, উদ্বেগ, বিষণ্নতা, সাইক্রোসিসহ বেশ কয়েকটি বিপাকীয় কাজ এবং মানসিক স্বাস্থ্যকে আরও খারাপ করে তুলতে পারে। এ ছাড়া মানসিক চাপ অন্ত্র ও পরিপাকতন্ত্রকেও বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে।
মানসিক চাপ এবং ক্ষুধার মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপের কারণে নির্দিষ্ট ধরনের নিউরোট্রান্সমিটার বেশি তৈরি হয়, যা ক্ষুধা বাড়াতে পারে। এতে আপনি অতৃপ্তি বোধ করতে পারেন। ফলে পরে কর্টিসল হরমোন বেড়ে যাবে। আবার মানসিক চাপের কারণে অনেকে খাবার খাওয়ার কথা ভুলে যেতে পারেন। তাতে অ্যানোরেক্টিক প্রভাব সৃষ্টি হয়, যা ক্ষুধার অনুভূতি কমিয়ে দেয় এবং কম খাবার গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে।
শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট
আমাদের মস্তিষ্ক প্রতিদিনের শক্তি এবং অন্যান্য পুষ্টির ২০ শতাংশ গ্রহণ করে শর্করা থেকে। তবে খাওয়ার জন্য জটিল শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট বেছে নিতে হবে। কারণ এটি শরীরে ট্রিপটোফ্যানের শোষণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে সেরোটোনিন উৎপাদন বেড়ে যায় এবং মন-মেজাজ ঠিক রাখতে সহায়তা করে। শর্করার সঙ্গে পর্যাপ্ত আঁশ খেলে যেমন পুষ্টির শোষণ নিশ্চিত হবে, তেমনি অন্ত্রের স্বাস্থ্য ঠিক থাকবে।
জটিল শর্করাজাতীয় খাবার
গোটা শস্য, যেমন লাল আটা, ওটস, বার্লি, মসুর ডাল, ছোলা, সয়াবিন, ফল ও সবজি, গাজর, মটরশুঁটি, পেঁয়াজ, ব্রকলি ইত্যাদি।
প্রোটিন
প্রোটিন শরীরকে টাইরোসিন নামের একটি নির্দিষ্ট ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিড সরবরাহ করে। পরে টাইরোসিন আরও ভেঙে ডোপামিন নামের আরও একটি নিউরোট্রান্সমিটার তৈরি করে। ডোপামিন আমাদের মস্তিষ্কের অনুপ্রেরণা এবং আনন্দের অনুভূতি তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। টাইরোসিনসমৃদ্ধ খাবার খেলে মস্তিষ্ক ডোপামিন সংশ্লেষণ করতে সক্ষম হবে।
টাইরোসিন-সমৃদ্ধ খাবার
স্যামন, সার্ডিন ও ম্যাকরেল মাছ, ঘাস খাওয়নো গবাদিপশুর মাংস, ডিম, কম চর্বিযুক্ত দুধ ও দুধ দিয়ে তৈরি খাবার।
অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার
স্মৃতিশক্তি ও রোগ প্রতিরোধে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের প্রভাব গুরুত্বপূর্ণ। এ ধরনের খাবারের মধ্যে ভিটামিন এ, ই, সি, সেলেনিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন ই আলঝেইমার ও ডিমেনশিয়া রোগ বিলম্বিত করে। এ ছাড়া ভিটামিন সি কর্টিসল ও স্ট্রেস হরমোন কমায়। এ জন্য খাদ্যতালিকায় বিভিন্ন রঙিন শাকসবজি, যেমন গাজর, মিষ্টিকুমড়া, পালংশাক, বেরিজাতীয় খাবার, লেবু, আমড়া ইত্যাদি রাখতে হবে।
ওমেগা-৩
সুস্থ স্নায়ুকোষ তৈরির জন্য মস্তিষ্কের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড প্রয়োজন। এটি বিষণ্নতা ও মানসিক অসুস্থতা কমায়। এটি সেরোটোনিন উৎপন্নকারী জিনকে চালু করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সেরোটোনিন হরমোন মন-মেজাজ ভালো রাখতে ভূমিকা পালন করে।
এ জন্য ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডকে অ্যান্টিডিপ্রেশনও বলা হয়। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের উৎস হিসেবে খেতে হবে তেলযুক্ত
মাছ, আখরোট, বিভিন্ন রকমের বীজজাতীয় খাবার, যেমন চিয়াবীজ, তিসিবীজ ইত্যাদি।
ভিটামিন বি কমপ্লেক্স
ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের মধ্যে ফলিক অ্যাসিড থাকে। এটি মানসিক চাপ, উদ্বেগ, আতঙ্ক ও বিষণ্নতা থেকে মুক্তি দেয়। এ ছাড়া ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের মধ্যে ভিটামিন বি৫-কে অ্যান্টিস্ট্রেস ভিটামিন বলা হয়। এ জন্য খেতে হবে গাঢ় রঙের সবুজ শাকসবজি, গোটা শস্য, মাছ, মাংস, চিনাবাদাম ইত্যাদি।
এল-থেনাইন
এটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা মস্তিষ্কের আলফা তরঙ্গ বাড়ায়। ফলে মানসিক চাপ কমে। এ জন্য খেতে হবে চা, বিশেষ করে কালো ও সবুজ চা।
গাট হেলথ
হজম প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শোষণকৃত পুষ্টি মস্তিষ্কে পৌঁছায়। তাই গাট হেলথ ঠিক না থাকলে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব পড়ে। এ জন্য খাদ্যতালিকায় প্রোবায়োটিকস ও প্রিবায়োটিকস-সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে। এসব খাবারের মধ্যে দই অন্যতম।
লিনা আকতার, পুষ্টিবিদ, রায়হান হেলথ কেয়ার হাসপাতাল, অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার, দিনাজপুর
খাদ্যের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্য ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আমরা যা খাই তা মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে। অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, বয়সজনিত সমস্যা, দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন রোগ ইত্যাদি কারণে মানসিক চাপ হতে পারে। সে জন্য শরীরে কর্টিসল, অ্যাড্রেনালিন ও নরডেনালাইন নামে কয়েকটি হরমোনের ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়। এই হরমোনগুলো ঘুম, উদ্বেগ, বিষণ্নতা, সাইক্রোসিসহ বেশ কয়েকটি বিপাকীয় কাজ এবং মানসিক স্বাস্থ্যকে আরও খারাপ করে তুলতে পারে। এ ছাড়া মানসিক চাপ অন্ত্র ও পরিপাকতন্ত্রকেও বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে।
মানসিক চাপ এবং ক্ষুধার মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপের কারণে নির্দিষ্ট ধরনের নিউরোট্রান্সমিটার বেশি তৈরি হয়, যা ক্ষুধা বাড়াতে পারে। এতে আপনি অতৃপ্তি বোধ করতে পারেন। ফলে পরে কর্টিসল হরমোন বেড়ে যাবে। আবার মানসিক চাপের কারণে অনেকে খাবার খাওয়ার কথা ভুলে যেতে পারেন। তাতে অ্যানোরেক্টিক প্রভাব সৃষ্টি হয়, যা ক্ষুধার অনুভূতি কমিয়ে দেয় এবং কম খাবার গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে।
শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট
আমাদের মস্তিষ্ক প্রতিদিনের শক্তি এবং অন্যান্য পুষ্টির ২০ শতাংশ গ্রহণ করে শর্করা থেকে। তবে খাওয়ার জন্য জটিল শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট বেছে নিতে হবে। কারণ এটি শরীরে ট্রিপটোফ্যানের শোষণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে সেরোটোনিন উৎপাদন বেড়ে যায় এবং মন-মেজাজ ঠিক রাখতে সহায়তা করে। শর্করার সঙ্গে পর্যাপ্ত আঁশ খেলে যেমন পুষ্টির শোষণ নিশ্চিত হবে, তেমনি অন্ত্রের স্বাস্থ্য ঠিক থাকবে।
জটিল শর্করাজাতীয় খাবার
গোটা শস্য, যেমন লাল আটা, ওটস, বার্লি, মসুর ডাল, ছোলা, সয়াবিন, ফল ও সবজি, গাজর, মটরশুঁটি, পেঁয়াজ, ব্রকলি ইত্যাদি।
প্রোটিন
প্রোটিন শরীরকে টাইরোসিন নামের একটি নির্দিষ্ট ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিড সরবরাহ করে। পরে টাইরোসিন আরও ভেঙে ডোপামিন নামের আরও একটি নিউরোট্রান্সমিটার তৈরি করে। ডোপামিন আমাদের মস্তিষ্কের অনুপ্রেরণা এবং আনন্দের অনুভূতি তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। টাইরোসিনসমৃদ্ধ খাবার খেলে মস্তিষ্ক ডোপামিন সংশ্লেষণ করতে সক্ষম হবে।
টাইরোসিন-সমৃদ্ধ খাবার
স্যামন, সার্ডিন ও ম্যাকরেল মাছ, ঘাস খাওয়নো গবাদিপশুর মাংস, ডিম, কম চর্বিযুক্ত দুধ ও দুধ দিয়ে তৈরি খাবার।
অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার
স্মৃতিশক্তি ও রোগ প্রতিরোধে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের প্রভাব গুরুত্বপূর্ণ। এ ধরনের খাবারের মধ্যে ভিটামিন এ, ই, সি, সেলেনিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন ই আলঝেইমার ও ডিমেনশিয়া রোগ বিলম্বিত করে। এ ছাড়া ভিটামিন সি কর্টিসল ও স্ট্রেস হরমোন কমায়। এ জন্য খাদ্যতালিকায় বিভিন্ন রঙিন শাকসবজি, যেমন গাজর, মিষ্টিকুমড়া, পালংশাক, বেরিজাতীয় খাবার, লেবু, আমড়া ইত্যাদি রাখতে হবে।
ওমেগা-৩
সুস্থ স্নায়ুকোষ তৈরির জন্য মস্তিষ্কের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড প্রয়োজন। এটি বিষণ্নতা ও মানসিক অসুস্থতা কমায়। এটি সেরোটোনিন উৎপন্নকারী জিনকে চালু করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সেরোটোনিন হরমোন মন-মেজাজ ভালো রাখতে ভূমিকা পালন করে।
এ জন্য ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডকে অ্যান্টিডিপ্রেশনও বলা হয়। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের উৎস হিসেবে খেতে হবে তেলযুক্ত
মাছ, আখরোট, বিভিন্ন রকমের বীজজাতীয় খাবার, যেমন চিয়াবীজ, তিসিবীজ ইত্যাদি।
ভিটামিন বি কমপ্লেক্স
ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের মধ্যে ফলিক অ্যাসিড থাকে। এটি মানসিক চাপ, উদ্বেগ, আতঙ্ক ও বিষণ্নতা থেকে মুক্তি দেয়। এ ছাড়া ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের মধ্যে ভিটামিন বি৫-কে অ্যান্টিস্ট্রেস ভিটামিন বলা হয়। এ জন্য খেতে হবে গাঢ় রঙের সবুজ শাকসবজি, গোটা শস্য, মাছ, মাংস, চিনাবাদাম ইত্যাদি।
এল-থেনাইন
এটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা মস্তিষ্কের আলফা তরঙ্গ বাড়ায়। ফলে মানসিক চাপ কমে। এ জন্য খেতে হবে চা, বিশেষ করে কালো ও সবুজ চা।
গাট হেলথ
হজম প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শোষণকৃত পুষ্টি মস্তিষ্কে পৌঁছায়। তাই গাট হেলথ ঠিক না থাকলে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব পড়ে। এ জন্য খাদ্যতালিকায় প্রোবায়োটিকস ও প্রিবায়োটিকস-সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে। এসব খাবারের মধ্যে দই অন্যতম।
লিনা আকতার, পুষ্টিবিদ, রায়হান হেলথ কেয়ার হাসপাতাল, অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার, দিনাজপুর
বিশ্বে প্রথমবারের মতো সফলভাবে স্টেম সেল প্রতিস্থাপন করে তিনজন ব্যক্তির চোখের ঝাপসা দৃষ্টি সারিয়ে ফেলেছেন জাপানের গবেষকেরা। চোখের কর্নিয়ার গুরুতর ক্ষতির কারণে তাদের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে গিয়েছিল। এই গবেষণামূলক চিকিৎসা পদ্ধতিটি আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
৪ ঘণ্টা আগেঅ্যাজমা বা হাঁপানিতে আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে শিশুদের স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার সম্পর্ক রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এক গবেষণায় এমন তথ্য জানা যায়।
১ দিন আগেবিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যগত অসমতা ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। চারটি দেশে ডায়াবেটিস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা মিলিয়ে বৈশ্বিক ডায়াবেটিসের অর্ধেকেরও বেশি। ২০২২ সালে ভারতে ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যা ২১ কোটি ২০ লাখ, যা বৈশ্বিক হিসাবের চার ভাগের এক ভাগ।
১ দিন আগেশারীরিক পুনর্বাসন চিকিৎসার গুরুত্ব তুলে ধরতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) আজ বুধবার ‘আন্তর্জাতিক শারীরিক পুনর্বাসন চিকিৎসা (পিএমআর) দিবস ২০২৪’ উদযাপিত হয়েছে। বাংলাদেশ সোসাইটি অফ ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন (বিএসপিএমআর) এবং বিএসএমএমইউ-এর ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড
২ দিন আগে