ডা. ফরিদা ইয়াসমিন সুমি
কোনো দম্পতি এক বছর বা তার বেশি সময় ধরে চেষ্টা করেও গর্ভধারণে ব্যর্থ হলে সেটি বন্ধ্যত্ব। প্রতি ১০০ দম্পতির মধ্যে ৮ জন দম্পতি বন্ধ্যত্বের শিকার হয়ে থাকে। বর্তমানে জীবনযাপন প্রণালি পরিবর্তনের কারণে বন্ধ্যত্বের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বন্ধ্যত্বের জন্য নারী ও পুরুষ উভয়ই দায়ী
সাধারণত নারীদের ক্ষেত্রে ৩০ বছর বয়সের পর থেকে ডিম্বাণুর সংখ্যা কমতে থাকে। আর পুরুষের ক্ষেত্রে ৪০ বছর বয়সের পর থেকে শুক্রাণুর উৎপাদন কমতে থাকে। এ জন্য বেশি বয়সে বিয়ে বন্ধ্যত্বের অন্যতম কারণ। বন্ধ্যত্বের জন্য ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে নারীর সমস্যা, ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে পুরুষের সমস্যা এবং ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে দুজনের সমস্যা দায়ী। কিন্তু ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে সমস্যা থাকে অজানা।
নারীর বন্ধ্যাত্বের কারণ
পলিসিস্টিক ওভারি: এতে অনিয়মিতভাবে ডিম্ব স্ফোটন হয় বা ডিম্ব স্ফোটন একেবারেই হয় না, অর্থাৎ ওভ্যুলেশন ব্যাহত হয়।
ওভারির রিজার্ভ কমে যাওয়া: মেয়েদের ক্ষেত্রে ৩০ বছরের পর ওভারির রিজার্ভ কমে যাওয়া বা ডিমিনিশড ওভারিয়ান রিজার্ভ বা প্রিম্যাচিউর ওভারিয়ান ফেইলিওর হতে পারে। অনেকের অল্প বয়সে ডিম্বাণুর রিজার্ভ কমে যায়। পরিবেশদূষণ, হরমোন অটো অ্যান্টিবডি রিজার্ভ কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ।
অ্যান্ডোমেট্রিয়োসিস: এই রোগ বন্ধ্যাত্বের অন্যতম কারণ। এতে জরায়ুর অভ্যন্তরীণ স্তর ডিম্বাশয়সহ জরায়ুর বাইরে অবস্থান করে।
পিআইডি বা প্রজননতন্ত্রে সংক্রমণ: সাধারণত যৌনবাহিত সংক্রমণের কারণে এটি হয়ে থাকে।
হরমোনজনিত সমস্যা: থাইরয়েড, প্রোল্যাকটিন অথবা পিটুইটারি গ্রন্থির সমস্যা ইত্যাদি কারণে বন্ধ্যাত্ব হতে পারে।
এ ছাড়া ফ্যালোপিয়ান টিউব বা ডিম্বনালিতে ত্রুটি বা ডিম্বনালি বন্ধ থাকা এবং জরায়ুতে টিউমার বা জন্মগত ত্রুটির কারণেও বন্ধ্যাত্ব হতে পারে।
পুরুষের বন্ধ্যত্বের কারণ
» প্রজননতন্ত্রের সংক্রমণ।
» অণ্ডকোষে শুক্রাণু বহনকারী টিউবে বাধা বা বন্ধ থাকা।
» শুক্রাণু তৈরি না হওয়া।
» বীর্যপাত করতে না পারা।
» বিভিন্ন হরমোনজনিত সমস্যায় শুক্রাণু কমে যাওয়া।
» অস্বাভাবিক গঠনের শুক্রাণু বেশি থাকে।
নারীর মতো পুরুষেরও শুক্রাণুর গুণগত মান এবং সংখ্যা ৪০ বছর বয়সের পর থেকে কমতে থাকে। তাই এরপর বন্ধ্যত্ব যেমন বাড়তে থাকে, তেমনি ত্রুটিযুক্ত শিশুর জন্মের আশঙ্কাও বেড়ে যায়।
বন্ধ্যত্বের লক্ষণ
কোনো দম্পতির মেডিকেল হিস্ট্রি এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বন্ধ্যত্বের কারণ নির্ণয় করা হয়। নারীদের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য লক্ষণগুলো হলো—
» অনিয়মিত মাসিক, মাসিকে অতিরিক্ত ব্যথা ও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ।
» শারীরিক মিলনে ব্যথা হওয়া।
» ওজন অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়া।
» শরীরে অস্বাভাবিক লোম হওয়া ইত্যাদি।
পুরুষের ক্ষেত্রে
» অণ্ডকোষে ভ্যারিকোসিটি।
» শারীরিক মিলনে অক্ষমতা, দ্রুত শুক্রপাত বা শুক্রপাতে ব্যর্থ হওয়া ইত্যাদি।
বন্ধ্যত্বের চিকিৎসা
» নারী-পুরুষ উভয়ের শরীরের অস্বাভাবিক কম বা বেশি ওজন স্বাভাবিকের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে।
» হরমোনজনিত সমস্যার সমাধান করা।
» মাসিকের অষ্টম দিন থেকে ২২তম দিন পর্যন্ত গর্ভধারণের উর্বর সময় ধরা হয়। এ সময় এক দিন পরপর শারীরিক মিলন করতে হবে।
» ওভ্যুলেশন ইনডাকশন: ডিম্বাণু বড় করার এবং ডিম্ব স্ফোটনের ওষুধ মুখে খাওয়ার বা ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রয়োগ করা হয়।
» আইইউআই: এই পদ্ধতিতে সিমেন ওয়াশ করে সক্ষম স্পার্ম আলাদা করে ক্যাথেটারের সাহায্যে সরাসরি স্ত্রীর জরায়ুতে প্রবেশ করানো হয়। পুরুষের শুক্রজনিত সমস্যা এবং স্ত্রীর জরায়ুমুখের সমস্যাজনিত বন্ধ্যত্বের সমাধানে কার্যকর পদ্ধতি।
» ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন বা আইভিএফ: এ ক্ষেত্রে শরীরের বাইরে ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর মিলন ঘটিয়ে ফার্টিলাইজেশনের মাধ্যমে জাইগোট তৈরি করে জরায়ুর ভেতর স্থাপন করা হয়।
বর্তমানে আমাদের জীবনযাপনের পদ্ধতি, পরিবেশদূষণসহ বিভিন্ন কারণে বন্ধ্যত্বের হার ক্রমে বেড়ে চলেছে। তবে আশার কথা, এর অনেক অত্যাধুনিক চিকিৎসাও আবিষ্কৃত হয়েছে। বন্ধ্যত্বের কারণ নির্ণয় করে সময়মতো সঠিক চিকিৎসা নিলে এ সমস্যা থেকে উত্তরণ সম্ভব।
ডা. ফরিদা ইয়াসমিন সুমি, সহকারী অধ্যাপক (গাইনি), চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ
কোনো দম্পতি এক বছর বা তার বেশি সময় ধরে চেষ্টা করেও গর্ভধারণে ব্যর্থ হলে সেটি বন্ধ্যত্ব। প্রতি ১০০ দম্পতির মধ্যে ৮ জন দম্পতি বন্ধ্যত্বের শিকার হয়ে থাকে। বর্তমানে জীবনযাপন প্রণালি পরিবর্তনের কারণে বন্ধ্যত্বের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বন্ধ্যত্বের জন্য নারী ও পুরুষ উভয়ই দায়ী
সাধারণত নারীদের ক্ষেত্রে ৩০ বছর বয়সের পর থেকে ডিম্বাণুর সংখ্যা কমতে থাকে। আর পুরুষের ক্ষেত্রে ৪০ বছর বয়সের পর থেকে শুক্রাণুর উৎপাদন কমতে থাকে। এ জন্য বেশি বয়সে বিয়ে বন্ধ্যত্বের অন্যতম কারণ। বন্ধ্যত্বের জন্য ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে নারীর সমস্যা, ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে পুরুষের সমস্যা এবং ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে দুজনের সমস্যা দায়ী। কিন্তু ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে সমস্যা থাকে অজানা।
নারীর বন্ধ্যাত্বের কারণ
পলিসিস্টিক ওভারি: এতে অনিয়মিতভাবে ডিম্ব স্ফোটন হয় বা ডিম্ব স্ফোটন একেবারেই হয় না, অর্থাৎ ওভ্যুলেশন ব্যাহত হয়।
ওভারির রিজার্ভ কমে যাওয়া: মেয়েদের ক্ষেত্রে ৩০ বছরের পর ওভারির রিজার্ভ কমে যাওয়া বা ডিমিনিশড ওভারিয়ান রিজার্ভ বা প্রিম্যাচিউর ওভারিয়ান ফেইলিওর হতে পারে। অনেকের অল্প বয়সে ডিম্বাণুর রিজার্ভ কমে যায়। পরিবেশদূষণ, হরমোন অটো অ্যান্টিবডি রিজার্ভ কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ।
অ্যান্ডোমেট্রিয়োসিস: এই রোগ বন্ধ্যাত্বের অন্যতম কারণ। এতে জরায়ুর অভ্যন্তরীণ স্তর ডিম্বাশয়সহ জরায়ুর বাইরে অবস্থান করে।
পিআইডি বা প্রজননতন্ত্রে সংক্রমণ: সাধারণত যৌনবাহিত সংক্রমণের কারণে এটি হয়ে থাকে।
হরমোনজনিত সমস্যা: থাইরয়েড, প্রোল্যাকটিন অথবা পিটুইটারি গ্রন্থির সমস্যা ইত্যাদি কারণে বন্ধ্যাত্ব হতে পারে।
এ ছাড়া ফ্যালোপিয়ান টিউব বা ডিম্বনালিতে ত্রুটি বা ডিম্বনালি বন্ধ থাকা এবং জরায়ুতে টিউমার বা জন্মগত ত্রুটির কারণেও বন্ধ্যাত্ব হতে পারে।
পুরুষের বন্ধ্যত্বের কারণ
» প্রজননতন্ত্রের সংক্রমণ।
» অণ্ডকোষে শুক্রাণু বহনকারী টিউবে বাধা বা বন্ধ থাকা।
» শুক্রাণু তৈরি না হওয়া।
» বীর্যপাত করতে না পারা।
» বিভিন্ন হরমোনজনিত সমস্যায় শুক্রাণু কমে যাওয়া।
» অস্বাভাবিক গঠনের শুক্রাণু বেশি থাকে।
নারীর মতো পুরুষেরও শুক্রাণুর গুণগত মান এবং সংখ্যা ৪০ বছর বয়সের পর থেকে কমতে থাকে। তাই এরপর বন্ধ্যত্ব যেমন বাড়তে থাকে, তেমনি ত্রুটিযুক্ত শিশুর জন্মের আশঙ্কাও বেড়ে যায়।
বন্ধ্যত্বের লক্ষণ
কোনো দম্পতির মেডিকেল হিস্ট্রি এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বন্ধ্যত্বের কারণ নির্ণয় করা হয়। নারীদের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য লক্ষণগুলো হলো—
» অনিয়মিত মাসিক, মাসিকে অতিরিক্ত ব্যথা ও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ।
» শারীরিক মিলনে ব্যথা হওয়া।
» ওজন অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়া।
» শরীরে অস্বাভাবিক লোম হওয়া ইত্যাদি।
পুরুষের ক্ষেত্রে
» অণ্ডকোষে ভ্যারিকোসিটি।
» শারীরিক মিলনে অক্ষমতা, দ্রুত শুক্রপাত বা শুক্রপাতে ব্যর্থ হওয়া ইত্যাদি।
বন্ধ্যত্বের চিকিৎসা
» নারী-পুরুষ উভয়ের শরীরের অস্বাভাবিক কম বা বেশি ওজন স্বাভাবিকের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে।
» হরমোনজনিত সমস্যার সমাধান করা।
» মাসিকের অষ্টম দিন থেকে ২২তম দিন পর্যন্ত গর্ভধারণের উর্বর সময় ধরা হয়। এ সময় এক দিন পরপর শারীরিক মিলন করতে হবে।
» ওভ্যুলেশন ইনডাকশন: ডিম্বাণু বড় করার এবং ডিম্ব স্ফোটনের ওষুধ মুখে খাওয়ার বা ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রয়োগ করা হয়।
» আইইউআই: এই পদ্ধতিতে সিমেন ওয়াশ করে সক্ষম স্পার্ম আলাদা করে ক্যাথেটারের সাহায্যে সরাসরি স্ত্রীর জরায়ুতে প্রবেশ করানো হয়। পুরুষের শুক্রজনিত সমস্যা এবং স্ত্রীর জরায়ুমুখের সমস্যাজনিত বন্ধ্যত্বের সমাধানে কার্যকর পদ্ধতি।
» ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন বা আইভিএফ: এ ক্ষেত্রে শরীরের বাইরে ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর মিলন ঘটিয়ে ফার্টিলাইজেশনের মাধ্যমে জাইগোট তৈরি করে জরায়ুর ভেতর স্থাপন করা হয়।
বর্তমানে আমাদের জীবনযাপনের পদ্ধতি, পরিবেশদূষণসহ বিভিন্ন কারণে বন্ধ্যত্বের হার ক্রমে বেড়ে চলেছে। তবে আশার কথা, এর অনেক অত্যাধুনিক চিকিৎসাও আবিষ্কৃত হয়েছে। বন্ধ্যত্বের কারণ নির্ণয় করে সময়মতো সঠিক চিকিৎসা নিলে এ সমস্যা থেকে উত্তরণ সম্ভব।
ডা. ফরিদা ইয়াসমিন সুমি, সহকারী অধ্যাপক (গাইনি), চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ
অ্যাজমা বা হাঁপানিতে আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে শিশুদের স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার সম্পর্ক রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এক গবেষণায় এমন তথ্য জানা যায়।
১ দিন আগেবিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যগত অসমতা ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। চারটি দেশে ডায়াবেটিস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা মিলিয়ে বৈশ্বিক ডায়াবেটিসের অর্ধেকেরও বেশি। ২০২২ সালে ভারতে ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যা ২১ কোটি ২০ লাখ, যা বৈশ্বিক হিসাবের চার ভাগের এক ভাগ।
১ দিন আগেশারীরিক পুনর্বাসন চিকিৎসার গুরুত্ব তুলে ধরতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) আজ বুধবার ‘আন্তর্জাতিক শারীরিক পুনর্বাসন চিকিৎসা (পিএমআর) দিবস ২০২৪’ উদযাপিত হয়েছে। বাংলাদেশ সোসাইটি অফ ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন (বিএসপিএমআর) এবং বিএসএমএমইউ-এর ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড
২ দিন আগেস্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম এবং ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ছাত্র-জনতার চিকিৎসা ব্যবস্থা পরিদর্শন করেছেন।
২ দিন আগে