ডা. মোহাম্মদ আলী
কাঁধব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে একে আমরা ফ্রোজেন শোল্ডার বলে থাকি। ফ্রোজেন শোল্ডার ছাড়া অন্যান্য কারণেও কাঁধব্যথা হতে পারে। বিষয়টি বুঝতে কাঁধের গঠন ও রোগের উপসর্গগুলো জানা জরুরি।আমাদের কাঁধের গঠন বেশ জটিল।
কাঁধে আছে মোট চারটি সন্ধি বা জয়েন্ট। এগুলোর মধ্যে একটি সন্ধিকে গ্লেনোহিউমেরাল জয়েন্ট বলে। এটি আকারে বেশ বড় ও গুরুত্বপূর্ণ। বাকি তিনটি সন্ধি ছোট হলেও কাঁধের নড়াচড়ায় বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অন্যদিকে কাঁধে সন্ধি ছাড়াও রয়েছে বেশ কিছু লিগামেন্ট, ক্যাপসুল। এ সবকিছুই মাংসপেশি দিয়ে ঢাকা থাকে।
কাঁধব্যথার কারণ
কাঁধের ব্যথার কারণগুলো দুই ভাগে ভাগ করা যায়। এর একটি হলো অভ্যন্তরীণ কারণ, অন্যটি বাহ্যিক বা বাইরের কারণ। বাহ্যিক কারণগুলোর মধ্যে ঘাড়ের সমস্যা, ফুসফুসের টিউমার ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এই ব্যথা কাঁধের বাইরে থেকে কাঁধে ছড়িয়ে পড়ে বলে এদের বাহ্যিক বা বহিরাগত সমস্যা বলা হয়।
অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলোর কারণেই কাঁধে বেশি ব্যথা হতে দেখা যায়। অভ্যন্তরীণ কারণ আবার দুই ধরনের। একটির উৎপত্তিস্থল ছোট সন্ধিগুলো বা আশপাশের মাংসপেশি ও লিগামেন্ট। অন্য কারণগুলো আসে বড় জয়েন্ট থেকে।
কাঁধের নড়াচড়ার জন্য এর বড় সন্ধিটি বেশি কাজে লাগে। এই বড় সন্ধিতেই তৈরি হয় এডহেসিভ ক্যাপসুলাইটিস বা ফ্রোজেন শোল্ডার।সহজ ভাষায় বললে, বড় জয়েন্ট বা গ্লেনোহিউমেরাল জয়েন্ট ঘিরে যে ক্যাপসুল থাকে, তাতে প্রদাহ সৃষ্টি হলে ফ্রোজেন শোল্ডার হয়। তবে বড় জয়েন্টে ব্যথার আরও একটি কারণ হলো, জয়েন্টের হাড়ের ক্ষয় বা অস্টিও আর্থ্রাইটিস।
ফ্রোজেন শোল্ডার থেকে অন্য কাঁধব্যথা আলাদা করা কঠিন নয়। ফ্রোজেন শোল্ডারের মূল লক্ষণ হলো রোগী তার হাত পাশে বা সামনে-পেছনে নাড়াতে পারে না। কোমরে হাত দিতে বা পিঠ চুলকাতে কষ্ট হয়। এ ধরনের রোগীরা অন্যের সাহায্য নিয়েও হাত ওপরে তুলতে পারে না। কিন্তু কাঁধব্যথার অন্য কারণগুলোয় সাধারণত রোগীরা কমপক্ষে অন্যের সাহায্য নিয়ে হাত ওপরে তুলতে পারে। তবে পুঙ্খানুপুঙ্খ কারণ নির্ণয়ে শোল্ডারের এমআরআই করা হয়ে থাকে। এর মাধ্যমে ঠিক কোন জায়গাটি আক্রান্ত, তা জানা যায়।
কী চিকিৎসা আছে
কাঁধব্যথার চিকিৎসা সহজ নয়। অনেকে যেকোনো কাঁধব্যথাকে ফ্রোজেন শোল্ডার মনে করে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। এই প্রক্রিয়া অনেক সময় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যেমন রোটেটর কাফ মাসলের ক্ষয়ের কারণে যদি কারও কাঁধে ব্যথা হয় এবং তাকে বলপ্রয়োগের ব্যায়াম বা স্ট্রেচিং করানো হয়, তবে ব্যথা ভালো না হয়ে উল্টো মাংসপেশি ছিঁড়ে যেতে পারে। এ কারণেই চিকিৎসা শুরুর আগে নিশ্চিত হতে হবে, কাঁধব্যথার সঠিক উৎস কোনটি এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে হবে।
ফিজিওথেরাপি, স্টেরয়েড ও সার্জারি
ফ্রোজেন শোল্ডারের চিকিৎসায় ফিজিওথেরাপি খুব ভালো কাজ করে। ইলেকট্রোথেরাপিসহ থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ ও ম্যানিপুলেশনের মাধ্যমে ফ্রোজেন শোল্ডার থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। সঠিকভাবে এবং সঠিক সময়ে লোকাল স্টেরয়েডও ক্যাপসুলের প্রদাহ দ্রুত কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া রোটেটর কাফ সিনড্রোমেও ফিজিওথেরাপি ভালো কাজ করে। তবে মারাত্মক আকারের হাড় ক্ষয় থেকে যদি কাঁধব্যথা হয়, সে ক্ষেত্রে অনেক সময় অপারেশন করাতে হতে পারে।
মনে রাখা জরুরি
যেসব রোগীর কো-মরবিডিটি আছে, অর্থাৎ যারা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, বৃক্কের বা লিভারের রোগে আক্রান্ত, তাদের জন্য চিকিৎসা প্রয়োগে বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন। যেমন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ফ্রোজেন শোল্ডার রোগীর ক্ষেত্রে লোকাল স্টেরয়েড কাজ করে না। সে ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি ফিজিওথেরাপির পরিকল্পনা প্রয়োজন হয়।
পরামর্শ দিয়েছেন: ডা. মোহাম্মদ আলী, বিভাগীয় প্রধানফিজিওথেরাপি ও রিহ্যাব বিভাগ, উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
কাঁধব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে একে আমরা ফ্রোজেন শোল্ডার বলে থাকি। ফ্রোজেন শোল্ডার ছাড়া অন্যান্য কারণেও কাঁধব্যথা হতে পারে। বিষয়টি বুঝতে কাঁধের গঠন ও রোগের উপসর্গগুলো জানা জরুরি।আমাদের কাঁধের গঠন বেশ জটিল।
কাঁধে আছে মোট চারটি সন্ধি বা জয়েন্ট। এগুলোর মধ্যে একটি সন্ধিকে গ্লেনোহিউমেরাল জয়েন্ট বলে। এটি আকারে বেশ বড় ও গুরুত্বপূর্ণ। বাকি তিনটি সন্ধি ছোট হলেও কাঁধের নড়াচড়ায় বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অন্যদিকে কাঁধে সন্ধি ছাড়াও রয়েছে বেশ কিছু লিগামেন্ট, ক্যাপসুল। এ সবকিছুই মাংসপেশি দিয়ে ঢাকা থাকে।
কাঁধব্যথার কারণ
কাঁধের ব্যথার কারণগুলো দুই ভাগে ভাগ করা যায়। এর একটি হলো অভ্যন্তরীণ কারণ, অন্যটি বাহ্যিক বা বাইরের কারণ। বাহ্যিক কারণগুলোর মধ্যে ঘাড়ের সমস্যা, ফুসফুসের টিউমার ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এই ব্যথা কাঁধের বাইরে থেকে কাঁধে ছড়িয়ে পড়ে বলে এদের বাহ্যিক বা বহিরাগত সমস্যা বলা হয়।
অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলোর কারণেই কাঁধে বেশি ব্যথা হতে দেখা যায়। অভ্যন্তরীণ কারণ আবার দুই ধরনের। একটির উৎপত্তিস্থল ছোট সন্ধিগুলো বা আশপাশের মাংসপেশি ও লিগামেন্ট। অন্য কারণগুলো আসে বড় জয়েন্ট থেকে।
কাঁধের নড়াচড়ার জন্য এর বড় সন্ধিটি বেশি কাজে লাগে। এই বড় সন্ধিতেই তৈরি হয় এডহেসিভ ক্যাপসুলাইটিস বা ফ্রোজেন শোল্ডার।সহজ ভাষায় বললে, বড় জয়েন্ট বা গ্লেনোহিউমেরাল জয়েন্ট ঘিরে যে ক্যাপসুল থাকে, তাতে প্রদাহ সৃষ্টি হলে ফ্রোজেন শোল্ডার হয়। তবে বড় জয়েন্টে ব্যথার আরও একটি কারণ হলো, জয়েন্টের হাড়ের ক্ষয় বা অস্টিও আর্থ্রাইটিস।
ফ্রোজেন শোল্ডার থেকে অন্য কাঁধব্যথা আলাদা করা কঠিন নয়। ফ্রোজেন শোল্ডারের মূল লক্ষণ হলো রোগী তার হাত পাশে বা সামনে-পেছনে নাড়াতে পারে না। কোমরে হাত দিতে বা পিঠ চুলকাতে কষ্ট হয়। এ ধরনের রোগীরা অন্যের সাহায্য নিয়েও হাত ওপরে তুলতে পারে না। কিন্তু কাঁধব্যথার অন্য কারণগুলোয় সাধারণত রোগীরা কমপক্ষে অন্যের সাহায্য নিয়ে হাত ওপরে তুলতে পারে। তবে পুঙ্খানুপুঙ্খ কারণ নির্ণয়ে শোল্ডারের এমআরআই করা হয়ে থাকে। এর মাধ্যমে ঠিক কোন জায়গাটি আক্রান্ত, তা জানা যায়।
কী চিকিৎসা আছে
কাঁধব্যথার চিকিৎসা সহজ নয়। অনেকে যেকোনো কাঁধব্যথাকে ফ্রোজেন শোল্ডার মনে করে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। এই প্রক্রিয়া অনেক সময় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যেমন রোটেটর কাফ মাসলের ক্ষয়ের কারণে যদি কারও কাঁধে ব্যথা হয় এবং তাকে বলপ্রয়োগের ব্যায়াম বা স্ট্রেচিং করানো হয়, তবে ব্যথা ভালো না হয়ে উল্টো মাংসপেশি ছিঁড়ে যেতে পারে। এ কারণেই চিকিৎসা শুরুর আগে নিশ্চিত হতে হবে, কাঁধব্যথার সঠিক উৎস কোনটি এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে হবে।
ফিজিওথেরাপি, স্টেরয়েড ও সার্জারি
ফ্রোজেন শোল্ডারের চিকিৎসায় ফিজিওথেরাপি খুব ভালো কাজ করে। ইলেকট্রোথেরাপিসহ থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ ও ম্যানিপুলেশনের মাধ্যমে ফ্রোজেন শোল্ডার থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। সঠিকভাবে এবং সঠিক সময়ে লোকাল স্টেরয়েডও ক্যাপসুলের প্রদাহ দ্রুত কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া রোটেটর কাফ সিনড্রোমেও ফিজিওথেরাপি ভালো কাজ করে। তবে মারাত্মক আকারের হাড় ক্ষয় থেকে যদি কাঁধব্যথা হয়, সে ক্ষেত্রে অনেক সময় অপারেশন করাতে হতে পারে।
মনে রাখা জরুরি
যেসব রোগীর কো-মরবিডিটি আছে, অর্থাৎ যারা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, বৃক্কের বা লিভারের রোগে আক্রান্ত, তাদের জন্য চিকিৎসা প্রয়োগে বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন। যেমন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ফ্রোজেন শোল্ডার রোগীর ক্ষেত্রে লোকাল স্টেরয়েড কাজ করে না। সে ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি ফিজিওথেরাপির পরিকল্পনা প্রয়োজন হয়।
পরামর্শ দিয়েছেন: ডা. মোহাম্মদ আলী, বিভাগীয় প্রধানফিজিওথেরাপি ও রিহ্যাব বিভাগ, উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
বিশ্বে প্রথমবারের মতো সফলভাবে স্টেম সেল প্রতিস্থাপন করে তিনজন ব্যক্তির চোখের ঝাপসা দৃষ্টি সারিয়ে ফেলেছেন জাপানের গবেষকেরা। চোখের কর্নিয়ার গুরুতর ক্ষতির কারণে তাদের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে গিয়েছিল। এই গবেষণামূলক চিকিৎসা পদ্ধতিটি আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
৪০ মিনিট আগেঅ্যাজমা বা হাঁপানিতে আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে শিশুদের স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার সম্পর্ক রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এক গবেষণায় এমন তথ্য জানা যায়।
১ দিন আগেবিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যগত অসমতা ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। চারটি দেশে ডায়াবেটিস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা মিলিয়ে বৈশ্বিক ডায়াবেটিসের অর্ধেকেরও বেশি। ২০২২ সালে ভারতে ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যা ২১ কোটি ২০ লাখ, যা বৈশ্বিক হিসাবের চার ভাগের এক ভাগ।
১ দিন আগেশারীরিক পুনর্বাসন চিকিৎসার গুরুত্ব তুলে ধরতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) আজ বুধবার ‘আন্তর্জাতিক শারীরিক পুনর্বাসন চিকিৎসা (পিএমআর) দিবস ২০২৪’ উদযাপিত হয়েছে। বাংলাদেশ সোসাইটি অফ ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন (বিএসপিএমআর) এবং বিএসএমএমইউ-এর ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড
২ দিন আগে