ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে কঠিন হয়ে পড়েছে জনজীবন। একটু স্বস্তির আশায় মানুষ নানা উপায় খুঁজে বেড়াচ্ছে। কেউ কেউ বাতলে দিচ্ছেন এই গরমে করণীয় ও বর্জনীয়। গত ২১ এপ্রিল ‘আলকেমি-Alchemy’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে এমনই একটি সচেতনতামূলক পোস্ট দেওয়া হয়। পোস্টটিতে বেশ কিছু করণীয় ও বর্জনীয় কাজের একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রথমেই উল্লেখ করা হয়েছে, ‘তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছালে খুব ঠান্ডা পানি পান করতে নিষেধ করেন চিকিৎসকগণ। কারণ এতে রক্তনালি সংকুচিত হয়ে হঠাৎ স্ট্রোক হতে পারে।’ যদিও ফেসবুক পেজের এই পোস্টে কোনো তথ্যসূত্র উল্লেখ করা হয়নি।
আবার ‘Ashik Ahamed’ নামের একটি ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে গত ২৭ এপ্রিল (শনিবার) একটি ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হয়, ‘হিট স্ট্রোক থেকে রক্ষা পেতে হলে ঠান্ডা পানি পান করা যাবে না। এই গরমে হঠাৎ করে ঠান্ডা পানি পান করলে জীবন শেষ হয়ে যেতে পারে। এই তীব্র গরমে দাবদাহের সময় কাউকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়ার জন্য ঠান্ডা পানি যথেষ্ট।’ ৩ মিনিট ২৭ সেকেন্ডের ভিডিওটি আজ বুধবার (১ মে) বেলা ৩টা পর্যন্ত ৪৩ লাখ বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটি শেয়ার হয়েছে ৫৬ হাজারের বেশি।
ঠান্ডা পানি পানে কি আসলেই স্ট্রোকের ঝুঁকি আছে বা ঠান্ডা পানি পান কি হিট স্ট্রোকের কারণ? খুঁজে দেখেছে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ।
ঠান্ডা পানি পানে কি আসলেই স্ট্রোকের ঝুঁকি আছে?
এই প্রশ্নের উত্তরের খুঁজে দেখা যায়, তীব্র গরমে ‘করণীয় ও পরিত্যাজ্য’ দাবিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল পোস্টগুলোতে থাকা পরামর্শগুলো ইতিপূর্বে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ভাষায় এবং বিভিন্ন দেশ যেমন, ফিলিপাইন, ভারত, শ্রীলঙ্কায় প্রচার হয়েছে।
যেমন, ২০২৩ সালে ফিলিপাইনে প্রচলিত অন্যতম ভাষা ‘তাগালোগ’ ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রায় সমজাতীয় কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়। এখানে দাবি করা হয়, ‘চিকিৎসকেরা বলছেন, যখন তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে, তখনই খুব ঠান্ডা পানি পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ এমন তাপমাত্রায় ঠান্ডা পানি পানে দেহের ক্ষুদ্র রক্তনালিগুলো ফেটে যেতে পারে।’
তবে ফিলিপাইন কলেজ অব ইমার্জেন্সি মেডিসিনের সভাপতি ডা. রিচার্ড স্যান্টোস বার্তা সংস্থা এএফপির ফ্যাক্টচেক বিভাগকে বলেন, পোস্টটিতে কিছু তথ্য ঠিক থাকলেও এটি স্ট্রোক এবং গরম আবহাওয়ায় ঠান্ডা পানি খাওয়ার মধ্যে একটি ভুল সংযোগ তৈরি করেছে। তিনি বলেন, ‘পোস্টটিতে উল্লেখিত কিছু দাবি সঠিক। ঠান্ডা পানি রক্তনালিকে সরু করে দেয় এটাও সত্য। কারণ, ঠান্ডার সংস্পর্শে এলে ওই তাপমাত্রার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া শরীরের স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রতিক্রিয়া। তবে গরম থেকে এসে ঠান্ডা পানি পান করলে সরাসরি স্ট্রোক ঘটবে এমন কোনো তথ্যের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’
রিচার্ড স্যান্টোস আরও বলেন, আগে থেকেই শারীরিক জটিলতায় ভোগা মানুষদের জন্য ঠান্ডা পানি পান বিপজ্জনক হতে পারে। তবে এটি খুব বিরল!
ফিলিপাইনের নিউরোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও স্নায়ু বিশেষজ্ঞ ডা. হোসে প্যাকিয়ানো রেয়েস দেশটির সংবাদমাধ্যম র্যাপলারকে বলেন, গরমে ঠান্ডা পানি পান বা ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করা সাধারণত সুস্থ মানুষদের জন্য ক্ষতিকর নয়। বরং ঠান্ডা পানি পানের উপকারিতা রয়েছে: যেমন, শরীর ঠান্ডা করা, অতিরিক্ত তাপ প্রতিরোধ করা এবং জ্বালাপোড়া কমানো। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, হৃদরোগের মতো নির্দিষ্ট কিছু রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে উচ্চ-তাপমাত্রার পরিবেশ থেকে আসা মাত্রই ঠান্ডা পানি পান করা উচিত নয়। কারণ এতে তাদের হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
একই দাবি ভারতের সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে ছড়ালে এই বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে ভারতের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান দ্য কুইন্ট এবং ফ্যাক্টলি।
দ্য কুইন্ট ২০২৩ সালে একটি প্রতিবেদনে জানায়, খুব ঠান্ডা পানি পান করলে রক্তনালি সংকুচিত হয়ে হঠাৎ স্ট্রোক হতে পারে—দাবিটি নতুন কিছু নয়। ২০১৯ সালেও একই দাবি ইন্টারনেটে ছড়িয়েছিল। দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে দ্য কুইন্ট ভারতের ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালের ইন্টারনাল মেডিসিনের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. সুরঞ্জিত চ্যাটার্জির বরাত দিয়ে জানায়, উচ্চ তাপমাত্রার পরিবেশ থেকে আসা মাত্রই ঠান্ডা পানি খাওয়া উচিত নয়।
কারণ, হুট করে শরীর ঠান্ডার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে না। শরীরের তাপমাত্রা এবং ঠান্ডা পানির তাপমাত্রার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে এবং ঠান্ডা পানি খাওয়ার আগে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করা ভালো। সর্বোপরি এটি বিপজ্জনক নয় এবং কোনো রক্তনালীও এতে ফেটে যাবে না বা সংকুচিত হবে না।
ফ্যাক্টলি জানায়, গরম পরিবেশ থেকে এসে ঠান্ডা পানি পান বা ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করাতে রক্তনালি ফেটে বা সংকুচিত হয়ে স্ট্রোক বা অন্য কোনো স্বাস্থ্যগত জটিল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার মতো কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)’ র মিডিয়া কনসালটেন্ট এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত আধেয় লেখক ডা. কার্লা রবিনসন দেশটির সংবাদমাধ্যম ডব্লিউসিএনসিকে বলেন, গরম সংক্রান্ত অসুস্থতায় আক্রান্ত হয়ে বা হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে কেউ আমাদের কাছে আসলে আমরা তাদেরকে দ্রুত ঠান্ডা করার মাধ্যমে চিকিৎসা করি। আর এসব ক্ষেত্রে ঠান্ডা পানি পান করানো বা ঠান্ডা পানির মাধ্যমে কারও শরীরের তাপমাত্রা কমানো হচ্ছে প্রতিষেধক।
ওপরে উল্লেখিত বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে এটি স্পষ্ট, গরম থেকে এসে ঠান্ডা পানি করলেই রক্তনালি ফেটে বা সংকুচিত হয়ে হঠাৎ স্ট্রোক হবে-এমন দাবি বিভ্রান্তিকর।
হিট স্ট্রোক কেন হয়?
‘Ashik Ahamed’ নামের একটি ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজটিতে দাবি করা হয়, হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে হলে ঠান্ডা পানি পান করা যাবে না।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)’র ওয়েবসাইট সূত্রে জানা যায়, হিট স্ট্রোক হচ্ছে গরমজনিত সবচেয়ে গুরুতর অসুস্থতা। যখন শরীরের তাপমাত্রা আর নিয়ন্ত্রণে থাকে না তখন হিট স্ট্রোক ঘটে। এই অবস্থায় শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বাড়তে থাকে, শরীর ঘাম তৈরি করার কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে এবং শরীর শীতল হতে পারে না। এই অবস্থায় শরীরের তাপমাত্রা ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে ১০৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে ওঠে যেতে পারে।
হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তির প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে সিডিসি জানায়, কেউ হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে প্রথম কাজ হচ্ছে ওই ব্যক্তির শরীরের তাপমাত্রা কমানো। এ জন্য সম্ভব হলে তাঁকে ঠান্ডা পানি বা বরফ দিয়ে গোসল করানো, শরীরের ত্বক ভিজিয়ে দেওয়া, ত্বকে ভেজা কাপড় জড়িয়ে দেওয়া ইত্যাদি কৌশল অবলম্বন করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের অলাভজনক চিকিৎসাকেন্দ্র মায়ো ক্লিনিক হিট স্ট্রোকের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে, গরম আর্দ্র পরিবেশে দীর্ঘ সময় অবস্থান, কঠোর পরিশ্রমের কাজ, গরমে অতিরিক্ত পোশাক পরা, অ্যালকোহল পান এবং পানি শূন্যতায় ভোগাকে। দেশটির আরেকটি অলাভজনক চিকিৎসাকেন্দ্র ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের ওয়েবসাইটে হিট স্ট্রোক সংক্রান্ত আলোচনায় এর সঙ্গে ঠান্ডা পানি পানের কোনো সম্পর্ক পাওয়া যায়নি।
অর্থাৎ হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে হলে ঠান্ডা পানি পান করা যাবে না—দাবিটি ভিত্তিহীন।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে কঠিন হয়ে পড়েছে জনজীবন। একটু স্বস্তির আশায় মানুষ নানা উপায় খুঁজে বেড়াচ্ছে। কেউ কেউ বাতলে দিচ্ছেন এই গরমে করণীয় ও বর্জনীয়। গত ২১ এপ্রিল ‘আলকেমি-Alchemy’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে এমনই একটি সচেতনতামূলক পোস্ট দেওয়া হয়। পোস্টটিতে বেশ কিছু করণীয় ও বর্জনীয় কাজের একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রথমেই উল্লেখ করা হয়েছে, ‘তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছালে খুব ঠান্ডা পানি পান করতে নিষেধ করেন চিকিৎসকগণ। কারণ এতে রক্তনালি সংকুচিত হয়ে হঠাৎ স্ট্রোক হতে পারে।’ যদিও ফেসবুক পেজের এই পোস্টে কোনো তথ্যসূত্র উল্লেখ করা হয়নি।
আবার ‘Ashik Ahamed’ নামের একটি ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে গত ২৭ এপ্রিল (শনিবার) একটি ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হয়, ‘হিট স্ট্রোক থেকে রক্ষা পেতে হলে ঠান্ডা পানি পান করা যাবে না। এই গরমে হঠাৎ করে ঠান্ডা পানি পান করলে জীবন শেষ হয়ে যেতে পারে। এই তীব্র গরমে দাবদাহের সময় কাউকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়ার জন্য ঠান্ডা পানি যথেষ্ট।’ ৩ মিনিট ২৭ সেকেন্ডের ভিডিওটি আজ বুধবার (১ মে) বেলা ৩টা পর্যন্ত ৪৩ লাখ বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটি শেয়ার হয়েছে ৫৬ হাজারের বেশি।
ঠান্ডা পানি পানে কি আসলেই স্ট্রোকের ঝুঁকি আছে বা ঠান্ডা পানি পান কি হিট স্ট্রোকের কারণ? খুঁজে দেখেছে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ।
ঠান্ডা পানি পানে কি আসলেই স্ট্রোকের ঝুঁকি আছে?
এই প্রশ্নের উত্তরের খুঁজে দেখা যায়, তীব্র গরমে ‘করণীয় ও পরিত্যাজ্য’ দাবিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল পোস্টগুলোতে থাকা পরামর্শগুলো ইতিপূর্বে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ভাষায় এবং বিভিন্ন দেশ যেমন, ফিলিপাইন, ভারত, শ্রীলঙ্কায় প্রচার হয়েছে।
যেমন, ২০২৩ সালে ফিলিপাইনে প্রচলিত অন্যতম ভাষা ‘তাগালোগ’ ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রায় সমজাতীয় কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়। এখানে দাবি করা হয়, ‘চিকিৎসকেরা বলছেন, যখন তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে, তখনই খুব ঠান্ডা পানি পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ এমন তাপমাত্রায় ঠান্ডা পানি পানে দেহের ক্ষুদ্র রক্তনালিগুলো ফেটে যেতে পারে।’
তবে ফিলিপাইন কলেজ অব ইমার্জেন্সি মেডিসিনের সভাপতি ডা. রিচার্ড স্যান্টোস বার্তা সংস্থা এএফপির ফ্যাক্টচেক বিভাগকে বলেন, পোস্টটিতে কিছু তথ্য ঠিক থাকলেও এটি স্ট্রোক এবং গরম আবহাওয়ায় ঠান্ডা পানি খাওয়ার মধ্যে একটি ভুল সংযোগ তৈরি করেছে। তিনি বলেন, ‘পোস্টটিতে উল্লেখিত কিছু দাবি সঠিক। ঠান্ডা পানি রক্তনালিকে সরু করে দেয় এটাও সত্য। কারণ, ঠান্ডার সংস্পর্শে এলে ওই তাপমাত্রার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া শরীরের স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রতিক্রিয়া। তবে গরম থেকে এসে ঠান্ডা পানি পান করলে সরাসরি স্ট্রোক ঘটবে এমন কোনো তথ্যের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’
রিচার্ড স্যান্টোস আরও বলেন, আগে থেকেই শারীরিক জটিলতায় ভোগা মানুষদের জন্য ঠান্ডা পানি পান বিপজ্জনক হতে পারে। তবে এটি খুব বিরল!
ফিলিপাইনের নিউরোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও স্নায়ু বিশেষজ্ঞ ডা. হোসে প্যাকিয়ানো রেয়েস দেশটির সংবাদমাধ্যম র্যাপলারকে বলেন, গরমে ঠান্ডা পানি পান বা ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করা সাধারণত সুস্থ মানুষদের জন্য ক্ষতিকর নয়। বরং ঠান্ডা পানি পানের উপকারিতা রয়েছে: যেমন, শরীর ঠান্ডা করা, অতিরিক্ত তাপ প্রতিরোধ করা এবং জ্বালাপোড়া কমানো। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, হৃদরোগের মতো নির্দিষ্ট কিছু রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে উচ্চ-তাপমাত্রার পরিবেশ থেকে আসা মাত্রই ঠান্ডা পানি পান করা উচিত নয়। কারণ এতে তাদের হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
একই দাবি ভারতের সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে ছড়ালে এই বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে ভারতের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান দ্য কুইন্ট এবং ফ্যাক্টলি।
দ্য কুইন্ট ২০২৩ সালে একটি প্রতিবেদনে জানায়, খুব ঠান্ডা পানি পান করলে রক্তনালি সংকুচিত হয়ে হঠাৎ স্ট্রোক হতে পারে—দাবিটি নতুন কিছু নয়। ২০১৯ সালেও একই দাবি ইন্টারনেটে ছড়িয়েছিল। দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে দ্য কুইন্ট ভারতের ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালের ইন্টারনাল মেডিসিনের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. সুরঞ্জিত চ্যাটার্জির বরাত দিয়ে জানায়, উচ্চ তাপমাত্রার পরিবেশ থেকে আসা মাত্রই ঠান্ডা পানি খাওয়া উচিত নয়।
কারণ, হুট করে শরীর ঠান্ডার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে না। শরীরের তাপমাত্রা এবং ঠান্ডা পানির তাপমাত্রার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে এবং ঠান্ডা পানি খাওয়ার আগে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করা ভালো। সর্বোপরি এটি বিপজ্জনক নয় এবং কোনো রক্তনালীও এতে ফেটে যাবে না বা সংকুচিত হবে না।
ফ্যাক্টলি জানায়, গরম পরিবেশ থেকে এসে ঠান্ডা পানি পান বা ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করাতে রক্তনালি ফেটে বা সংকুচিত হয়ে স্ট্রোক বা অন্য কোনো স্বাস্থ্যগত জটিল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার মতো কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)’ র মিডিয়া কনসালটেন্ট এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত আধেয় লেখক ডা. কার্লা রবিনসন দেশটির সংবাদমাধ্যম ডব্লিউসিএনসিকে বলেন, গরম সংক্রান্ত অসুস্থতায় আক্রান্ত হয়ে বা হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে কেউ আমাদের কাছে আসলে আমরা তাদেরকে দ্রুত ঠান্ডা করার মাধ্যমে চিকিৎসা করি। আর এসব ক্ষেত্রে ঠান্ডা পানি পান করানো বা ঠান্ডা পানির মাধ্যমে কারও শরীরের তাপমাত্রা কমানো হচ্ছে প্রতিষেধক।
ওপরে উল্লেখিত বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে এটি স্পষ্ট, গরম থেকে এসে ঠান্ডা পানি করলেই রক্তনালি ফেটে বা সংকুচিত হয়ে হঠাৎ স্ট্রোক হবে-এমন দাবি বিভ্রান্তিকর।
হিট স্ট্রোক কেন হয়?
‘Ashik Ahamed’ নামের একটি ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজটিতে দাবি করা হয়, হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে হলে ঠান্ডা পানি পান করা যাবে না।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)’র ওয়েবসাইট সূত্রে জানা যায়, হিট স্ট্রোক হচ্ছে গরমজনিত সবচেয়ে গুরুতর অসুস্থতা। যখন শরীরের তাপমাত্রা আর নিয়ন্ত্রণে থাকে না তখন হিট স্ট্রোক ঘটে। এই অবস্থায় শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বাড়তে থাকে, শরীর ঘাম তৈরি করার কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে এবং শরীর শীতল হতে পারে না। এই অবস্থায় শরীরের তাপমাত্রা ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে ১০৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে ওঠে যেতে পারে।
হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তির প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে সিডিসি জানায়, কেউ হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে প্রথম কাজ হচ্ছে ওই ব্যক্তির শরীরের তাপমাত্রা কমানো। এ জন্য সম্ভব হলে তাঁকে ঠান্ডা পানি বা বরফ দিয়ে গোসল করানো, শরীরের ত্বক ভিজিয়ে দেওয়া, ত্বকে ভেজা কাপড় জড়িয়ে দেওয়া ইত্যাদি কৌশল অবলম্বন করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের অলাভজনক চিকিৎসাকেন্দ্র মায়ো ক্লিনিক হিট স্ট্রোকের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে, গরম আর্দ্র পরিবেশে দীর্ঘ সময় অবস্থান, কঠোর পরিশ্রমের কাজ, গরমে অতিরিক্ত পোশাক পরা, অ্যালকোহল পান এবং পানি শূন্যতায় ভোগাকে। দেশটির আরেকটি অলাভজনক চিকিৎসাকেন্দ্র ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের ওয়েবসাইটে হিট স্ট্রোক সংক্রান্ত আলোচনায় এর সঙ্গে ঠান্ডা পানি পানের কোনো সম্পর্ক পাওয়া যায়নি।
অর্থাৎ হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে হলে ঠান্ডা পানি পান করা যাবে না—দাবিটি ভিত্তিহীন।
বাংলাদেশে এক হিন্দু নারীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে দাবিতে মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে ১৮ সেকেন্ডের ভিডিও ঘুরে বেড়াচ্ছে। এতে দেখা যাচ্ছে, রক্তাক্ত এক নারীকে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য কোথাও নিয়ে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দীপক শর্মা নামের একটি ভারতীয় এক্স হ্যান্ডল থেকে ভিডিওটি টুইট করে দাবি করা হয়, ‘ভিড
১ দিন আগেআওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য সাবরিনা চৌধুরী নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় এমন দাবিতে স্ক্রিনশটটি পোস্ট করে লেখেন, ‘Sabnam Faria কিছুক্ষণ আগে একটা পোস্ট করলেন ৫ মিনিট পর ডিলিট করে দিলেন।’
২ দিন আগেএলিস থমাস নামের এক ওপেন সোর্স ইন্টেলিজেন্স গবেষকের বরাত দিয়ে জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে জানিয়েছে, ট্রাম্পকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে সাহায্য করেছে এআই পরিচালিত বট নেটওয়ার্ক।
৩ দিন আগেগত বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) ‘প্রবাসী জীবন’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। পোস্টটি আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক শেয়ার হয়েছে। রিয়েকশন পড়েছে ৪ হাজারের বেশি। ভিডিওটি দেখা হয়েছে ৪২ হাজার বার।
৩ দিন আগে