মৃত্যুঞ্জয় রায়
বর্ষাকাল তো চলেই এসেছে, এখন গাছের চারা লাগানোর মৌসুম। এ সময় গাছের চারা লাগালে বাঁচে বেশি। মাটি বর্ষায় সিক্ত হয়, লাগানো গাছের চারা পায় জল, পায় বেঁচে ওঠার রসদ। তা ছাড়া আবহাওয়া আর্দ্র ও উষ্ণ থাকায় শিকড় ও ডালপাতার বৃদ্ধি ভালো হয়, লাগানো গাছের চারা দ্রুত বাড়তে থাকে। আবার শীত ও শুকনো মৌসুম এলে সেই বৃদ্ধিতে কিছুটা ভাটা পড়ে। তাই প্রতিবছর ঘটা করে এই সময়কে গাছের চারা লাগানোর জন্য বেছে নেওয়া হয়, বাড়ে গাছের চারা লাগানোর হিড়িক।
দেশে এ সময়ে দুটি খবর আমাদের নিঃসন্দেহে আনন্দিত করেছে। প্রথম খবরটি হলো—এ বছর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সারা দেশে ৮ কোটি ৩৩ লাখ ২৭ হাজার গাছের চারা লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দ্বিতীয় খবরটি হলো—মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এ বছরই প্রথম সারা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিকল্পিত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি গ্রহণ এবং যথাযথভাবে তা বাস্তবায়নের জন্য এক নোটিশ জারি করেছে। দেশের প্রতি দুই জন মিলে একটা করে গাছ লাগালেই তো আট কোটি গাছের চারা লাগানোর লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়ে যায়। কিন্তু সমস্যাটা হলো, সেই সব গাছের চারা লাগাব কোথায়? দেশে কী পরিমাণ গাছের চারা লাগানোর মতো খালি জায়গা পড়ে আছে, সে জায়গাগুলো কোথায়? দিনে দিনে দেশে মানুষ বাড়ছে, সেই সব মানুষের বাড়তি খাদ্যচাহিদা পূরণের জন্য প্রতিবছর কৃষিজমির দরকার হচ্ছে। কাজেই কৃষিজমিকে গাছের চারা লাগানোর জন্য বেছে নেওয়া যাচ্ছে না।
শহরগুলোতে বাড়ছে মানুষের চাপ, দিনে দিনে শহরগুলো অতি ঘনবসতিপূর্ণ হয়ে পড়ায় সেখানেও গাছের চারা লাগানোর মতো খালি জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। কলকারখানা, ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট নির্মাণের জন্য জমি দিতে হচ্ছে। তাই চাইলেই হুট করে গাছের চারা লাগানোর জায়গা পাওয়া যাবে না। বসতবাড়িগুলোতেও বাড়ছে মানুষ, দরকার পড়ছে বাড়তি ঘরের। দিনে দিনে তাই গাছের চারা লাগানোর জায়গা সংকুচিত হয়ে আসছে। তাই এখন গাছের চারা লাগানোর জন্য তাকাতে হচ্ছে উপকূলীয় পোল্ডার বাঁধ, রাস্তার দুই পাশ, সরকারি খাস পতিত জমি, নদী ও খালপাড়, পাহাড়ের ঢাল, বিল ও বিলপাড় ইত্যাদি স্থানের দিকে। এ ছাড়া সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী যদি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কিছু গাছের চারা রোপণ করা হয়, তাহলে সহজেই এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণে তা সহায়ক হবে। চাইলে আমাদের শিক্ষালয়গুলো আমরাই সবুজ করতে পারি। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোথায় গাছ লাগানোর সুযোগ আছে, তা জরিপ করে আমরা সেখানে সেই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে নিয়েই গাছের চারা লাগাতে পারি।
নিসর্গী দ্বিজেন শর্মা গ্রামের স্কুলগুলোতে পাঁচ রকমের গাছ লাগিয়ে পঞ্চবটী গড়ে তোলার কথা বলেছিলেন। এসব গাছ হতে পারে বট/অশ্বত্থ, কৃষ্ণচূড়া/জারুল/কনকচূড়া, জাম/আমলকী/কুল, সেগুন/মেহগনি/ছাতিম ও বাঁশ। তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের আনন্দ, ছায়া, স্কুলে ব্যবহারের উপযোগিতা ইত্যাদি বিবেচনা করে এরূপ প্রস্তাব করেছিলেন। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে এবারই প্রথম ‘ওয়াইল্ডলাইফ অলিম্পিয়াড’-এর আয়োজন করা হয়েছে, তেমনি উদ্ভিদ অলিম্পিয়াডেরও আয়োজন করা যায়।
স্বীকার করতে দোষ নেই, জনবসতি যেসব জায়গায় রয়েছে, সেসব গ্রামে ও নগরে ধীরে ধীরে গাছের চারা লাগানোর সুযোগ কমে আসছে। ঢাকা শহরে দিনে দিনে গাছ ও বৃক্ষ আচ্ছাদিত ভূমির পরিমাণ কমে আসছে। তাই ব্যাপক বনায়নের সুযোগ আছে এ দেশের বনাঞ্চলে। অনেক বনকে বাইরে থেকে যতটা ঘন মনে হয়, ভেতরে ঢুকলে অনেক বনের মধ্যেই অনেক ফাঁকা জায়গা চোখে পড়ে। বনভূমিকে তার স্বরূপে ফিরিয়ে আনার এ এক মহাসুযোগ। বনের ভেতরে থাকা ফাঁকা জায়গাগুলো সেই সব বনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ গাছের চারা লাগিয়ে দ্রুত পূরণ করতে হবে। ইন সিটু বা এক্স সিটু পদ্ধতিতে সেখানে বন রিজেনারেশনের ব্যবস্থা করা জরুরি। বনভূমি কমছে, সেই সঙ্গে বনের বৃক্ষের ঘনত্ব কমে যাক, তা মোটেই কাম্য নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যাপক বনায়নের জন্য সবাইকে আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, বাড়ির আনাচে-কানাচে, পতিত ও প্রান্তিক ভূমিতে, সড়কের ধারে ও সড়কদ্বীপে, বাড়ির ছাদে, শহর-বন্দরনির্বিশেষে সব উন্মুক্ত স্থানে ব্যাপকভাবে বনায়ন করতে হবে।
স্লোগান বা কথা নয়, এখন আমাদের বেঁচে থাকার জন্যই গাছের চারা লাগাতে হবে। কিন্তু কী কী গাছের চারা আমরা লাগাব? অথবা যেকোনো জায়গায় কি যেকোনো গাছের চারা লাগানো যাবে? এ জন্য হাতের কাছে যেকোনো গাছের চারা পেলেই তা লাগানো উচিত হবে না। গাছের চারা লাগানোর আগে একটা পরিকল্পনা করতে হবে। গাছের চারা লাগানোর পর অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় সেই সব চারা মরে
যায় বা বাঁচলেও ঠিকমতো বাড়ে না। মনে রাখা উচিত, বনবিদ্যা ও উদ্ভিদবিদ্যা একটি বিজ্ঞান। এখানেও প্রযুক্তি আছে।
তাই বিজ্ঞানভিত্তিক নিয়ম মেনেই চারা লাগাতে হবে।
এবার রিমাল ঝড়ে ঢাকা শহরের অনেক গাছপালা উপড়ে গেছে। এর অন্যতম প্রধান কারণ হলো, যেসব চারা লাগানো হয়েছিল, হয়তো সেসব পলিব্যাগে বা মাটির ছোট পাত্রে উৎপাদিত হওয়ায় চারার শিকড়ের বৃদ্ধি ছিল কম। তা ছাড়া অনেক ক্ষেত্রে বড় চারা লাগাতে গিয়ে গাছের মূল শিকড় কাটা পড়ে। আমরা যেমন পায়ের ওপর ভর করে দাঁড়িয়ে থাকি, গাছেরাও শিকড়ের ওপর ভর করে মাটির ওপর দাঁড়িয়ে থাকে। সাধারণত একটা বৃক্ষের ডালপালা চারপাশে যতটা ছড়ায়, মাটির নিচে শিকড়ও তত দূর পর্যন্ত ছড়ায়। বৃক্ষ যতটা লম্বা হয়, মাটির নিচে শিকড়ও ততটা প্রবেশ করে। তাই লাগানোর সময় মূল শিকড় কাটা পড়লে সেই সব গাছ বড় হলে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। এতে ঝড়-বাতাসে সহজে হেলে পড়ে বা উপড়ে যায়।
তাই গাছের চারা লাগানোর সময় আদর্শ চারা কোনটি, কত বয়সের চারা লাগানো ভালো, তা জেনে নিতে হবে। গাছের চারা ছোট হলে তাকে রক্ষা করা কঠিন হয়—এই অজুহাতে অনেকেই বড় চারা লাগাতে চান। আর সে ক্ষেত্রেই এরূপ বিপত্তিগুলো ঘটে। বরং গর্ত করে সেই গর্তের মাটিতে যদি সরাসরি বীজ পুঁতে গাছ জন্মানো যায়, সেই সব চারার গাছ হয় সুঠাম-সবল এবং অধিকতর টেকসই। সব সময় স্থান ও পরিবেশ উপযোগী গাছের চারা নির্বাচন করতে হবে। এক কোদাল মাটি তুলে গর্ত করে চারা লাগিয়ে দিলেই হলো না, গাছের বৃদ্ধির ধরন বুঝে সেই মাপের গর্ত পরিকল্পনামতো আগেই করে সার-মাটি দিয়ে ভরে রাখতে হবে। এরপর আদর্শ চারা সেখানে লাগিয়ে তা রক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। সব ক্ষেত্রেই সরকারি কার্যক্রমের অংশীজন হিসেবে এলাকার লোকদের সম্পৃক্ততা দরকার, না হলে গাছের চারা লাগানো হলেও সেগুলো টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে।
বিশ্ব পরিবেশ দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য বিষয়ের একটি অংশ রয়েছে—‘রুখব মরুময়তা’। মরুভূমির বৈশিষ্ট্য হলো উত্তপ্ত ভূমি আর বৃক্ষহীন পরিবেশ। গাছের চারা লাগিয়ে স্বদেশকে মরুময়তার হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।
মৃত্যুঞ্জয় রায়, কৃষিবিদ ও প্রকৃতিবিষয়ক লেখক
বর্ষাকাল তো চলেই এসেছে, এখন গাছের চারা লাগানোর মৌসুম। এ সময় গাছের চারা লাগালে বাঁচে বেশি। মাটি বর্ষায় সিক্ত হয়, লাগানো গাছের চারা পায় জল, পায় বেঁচে ওঠার রসদ। তা ছাড়া আবহাওয়া আর্দ্র ও উষ্ণ থাকায় শিকড় ও ডালপাতার বৃদ্ধি ভালো হয়, লাগানো গাছের চারা দ্রুত বাড়তে থাকে। আবার শীত ও শুকনো মৌসুম এলে সেই বৃদ্ধিতে কিছুটা ভাটা পড়ে। তাই প্রতিবছর ঘটা করে এই সময়কে গাছের চারা লাগানোর জন্য বেছে নেওয়া হয়, বাড়ে গাছের চারা লাগানোর হিড়িক।
দেশে এ সময়ে দুটি খবর আমাদের নিঃসন্দেহে আনন্দিত করেছে। প্রথম খবরটি হলো—এ বছর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সারা দেশে ৮ কোটি ৩৩ লাখ ২৭ হাজার গাছের চারা লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দ্বিতীয় খবরটি হলো—মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এ বছরই প্রথম সারা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিকল্পিত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি গ্রহণ এবং যথাযথভাবে তা বাস্তবায়নের জন্য এক নোটিশ জারি করেছে। দেশের প্রতি দুই জন মিলে একটা করে গাছ লাগালেই তো আট কোটি গাছের চারা লাগানোর লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়ে যায়। কিন্তু সমস্যাটা হলো, সেই সব গাছের চারা লাগাব কোথায়? দেশে কী পরিমাণ গাছের চারা লাগানোর মতো খালি জায়গা পড়ে আছে, সে জায়গাগুলো কোথায়? দিনে দিনে দেশে মানুষ বাড়ছে, সেই সব মানুষের বাড়তি খাদ্যচাহিদা পূরণের জন্য প্রতিবছর কৃষিজমির দরকার হচ্ছে। কাজেই কৃষিজমিকে গাছের চারা লাগানোর জন্য বেছে নেওয়া যাচ্ছে না।
শহরগুলোতে বাড়ছে মানুষের চাপ, দিনে দিনে শহরগুলো অতি ঘনবসতিপূর্ণ হয়ে পড়ায় সেখানেও গাছের চারা লাগানোর মতো খালি জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। কলকারখানা, ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট নির্মাণের জন্য জমি দিতে হচ্ছে। তাই চাইলেই হুট করে গাছের চারা লাগানোর জায়গা পাওয়া যাবে না। বসতবাড়িগুলোতেও বাড়ছে মানুষ, দরকার পড়ছে বাড়তি ঘরের। দিনে দিনে তাই গাছের চারা লাগানোর জায়গা সংকুচিত হয়ে আসছে। তাই এখন গাছের চারা লাগানোর জন্য তাকাতে হচ্ছে উপকূলীয় পোল্ডার বাঁধ, রাস্তার দুই পাশ, সরকারি খাস পতিত জমি, নদী ও খালপাড়, পাহাড়ের ঢাল, বিল ও বিলপাড় ইত্যাদি স্থানের দিকে। এ ছাড়া সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী যদি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কিছু গাছের চারা রোপণ করা হয়, তাহলে সহজেই এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণে তা সহায়ক হবে। চাইলে আমাদের শিক্ষালয়গুলো আমরাই সবুজ করতে পারি। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোথায় গাছ লাগানোর সুযোগ আছে, তা জরিপ করে আমরা সেখানে সেই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে নিয়েই গাছের চারা লাগাতে পারি।
নিসর্গী দ্বিজেন শর্মা গ্রামের স্কুলগুলোতে পাঁচ রকমের গাছ লাগিয়ে পঞ্চবটী গড়ে তোলার কথা বলেছিলেন। এসব গাছ হতে পারে বট/অশ্বত্থ, কৃষ্ণচূড়া/জারুল/কনকচূড়া, জাম/আমলকী/কুল, সেগুন/মেহগনি/ছাতিম ও বাঁশ। তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের আনন্দ, ছায়া, স্কুলে ব্যবহারের উপযোগিতা ইত্যাদি বিবেচনা করে এরূপ প্রস্তাব করেছিলেন। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে এবারই প্রথম ‘ওয়াইল্ডলাইফ অলিম্পিয়াড’-এর আয়োজন করা হয়েছে, তেমনি উদ্ভিদ অলিম্পিয়াডেরও আয়োজন করা যায়।
স্বীকার করতে দোষ নেই, জনবসতি যেসব জায়গায় রয়েছে, সেসব গ্রামে ও নগরে ধীরে ধীরে গাছের চারা লাগানোর সুযোগ কমে আসছে। ঢাকা শহরে দিনে দিনে গাছ ও বৃক্ষ আচ্ছাদিত ভূমির পরিমাণ কমে আসছে। তাই ব্যাপক বনায়নের সুযোগ আছে এ দেশের বনাঞ্চলে। অনেক বনকে বাইরে থেকে যতটা ঘন মনে হয়, ভেতরে ঢুকলে অনেক বনের মধ্যেই অনেক ফাঁকা জায়গা চোখে পড়ে। বনভূমিকে তার স্বরূপে ফিরিয়ে আনার এ এক মহাসুযোগ। বনের ভেতরে থাকা ফাঁকা জায়গাগুলো সেই সব বনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ গাছের চারা লাগিয়ে দ্রুত পূরণ করতে হবে। ইন সিটু বা এক্স সিটু পদ্ধতিতে সেখানে বন রিজেনারেশনের ব্যবস্থা করা জরুরি। বনভূমি কমছে, সেই সঙ্গে বনের বৃক্ষের ঘনত্ব কমে যাক, তা মোটেই কাম্য নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যাপক বনায়নের জন্য সবাইকে আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, বাড়ির আনাচে-কানাচে, পতিত ও প্রান্তিক ভূমিতে, সড়কের ধারে ও সড়কদ্বীপে, বাড়ির ছাদে, শহর-বন্দরনির্বিশেষে সব উন্মুক্ত স্থানে ব্যাপকভাবে বনায়ন করতে হবে।
স্লোগান বা কথা নয়, এখন আমাদের বেঁচে থাকার জন্যই গাছের চারা লাগাতে হবে। কিন্তু কী কী গাছের চারা আমরা লাগাব? অথবা যেকোনো জায়গায় কি যেকোনো গাছের চারা লাগানো যাবে? এ জন্য হাতের কাছে যেকোনো গাছের চারা পেলেই তা লাগানো উচিত হবে না। গাছের চারা লাগানোর আগে একটা পরিকল্পনা করতে হবে। গাছের চারা লাগানোর পর অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় সেই সব চারা মরে
যায় বা বাঁচলেও ঠিকমতো বাড়ে না। মনে রাখা উচিত, বনবিদ্যা ও উদ্ভিদবিদ্যা একটি বিজ্ঞান। এখানেও প্রযুক্তি আছে।
তাই বিজ্ঞানভিত্তিক নিয়ম মেনেই চারা লাগাতে হবে।
এবার রিমাল ঝড়ে ঢাকা শহরের অনেক গাছপালা উপড়ে গেছে। এর অন্যতম প্রধান কারণ হলো, যেসব চারা লাগানো হয়েছিল, হয়তো সেসব পলিব্যাগে বা মাটির ছোট পাত্রে উৎপাদিত হওয়ায় চারার শিকড়ের বৃদ্ধি ছিল কম। তা ছাড়া অনেক ক্ষেত্রে বড় চারা লাগাতে গিয়ে গাছের মূল শিকড় কাটা পড়ে। আমরা যেমন পায়ের ওপর ভর করে দাঁড়িয়ে থাকি, গাছেরাও শিকড়ের ওপর ভর করে মাটির ওপর দাঁড়িয়ে থাকে। সাধারণত একটা বৃক্ষের ডালপালা চারপাশে যতটা ছড়ায়, মাটির নিচে শিকড়ও তত দূর পর্যন্ত ছড়ায়। বৃক্ষ যতটা লম্বা হয়, মাটির নিচে শিকড়ও ততটা প্রবেশ করে। তাই লাগানোর সময় মূল শিকড় কাটা পড়লে সেই সব গাছ বড় হলে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। এতে ঝড়-বাতাসে সহজে হেলে পড়ে বা উপড়ে যায়।
তাই গাছের চারা লাগানোর সময় আদর্শ চারা কোনটি, কত বয়সের চারা লাগানো ভালো, তা জেনে নিতে হবে। গাছের চারা ছোট হলে তাকে রক্ষা করা কঠিন হয়—এই অজুহাতে অনেকেই বড় চারা লাগাতে চান। আর সে ক্ষেত্রেই এরূপ বিপত্তিগুলো ঘটে। বরং গর্ত করে সেই গর্তের মাটিতে যদি সরাসরি বীজ পুঁতে গাছ জন্মানো যায়, সেই সব চারার গাছ হয় সুঠাম-সবল এবং অধিকতর টেকসই। সব সময় স্থান ও পরিবেশ উপযোগী গাছের চারা নির্বাচন করতে হবে। এক কোদাল মাটি তুলে গর্ত করে চারা লাগিয়ে দিলেই হলো না, গাছের বৃদ্ধির ধরন বুঝে সেই মাপের গর্ত পরিকল্পনামতো আগেই করে সার-মাটি দিয়ে ভরে রাখতে হবে। এরপর আদর্শ চারা সেখানে লাগিয়ে তা রক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। সব ক্ষেত্রেই সরকারি কার্যক্রমের অংশীজন হিসেবে এলাকার লোকদের সম্পৃক্ততা দরকার, না হলে গাছের চারা লাগানো হলেও সেগুলো টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে।
বিশ্ব পরিবেশ দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য বিষয়ের একটি অংশ রয়েছে—‘রুখব মরুময়তা’। মরুভূমির বৈশিষ্ট্য হলো উত্তপ্ত ভূমি আর বৃক্ষহীন পরিবেশ। গাছের চারা লাগিয়ে স্বদেশকে মরুময়তার হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।
মৃত্যুঞ্জয় রায়, কৃষিবিদ ও প্রকৃতিবিষয়ক লেখক
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে