রিমন রহমান, রাজশাহী
রাবেয়া বেগম এবং তাঁর মেয়ে আয়েশা খাতুনের সারা দিনই কাটে রান্নাঘরে। রাবেয়ার দুই ছেলে গোলাম রাব্বানী আর রবিউল মিয়া ব্যস্ত থাকেন খাবার পরিবেশনে। আর হোটেলের সামনে চেয়ার-টেবিল পেতে বসে খাবারের মূল্য নিতে থাকেন মানিক মিয়া। এই হোটেলে যাঁরা খাওয়াদাওয়া করেন, তাঁরা ভরপেট খেয়ে মানিক মিয়ার হাতে তুলে দেন মাত্র ২৫ টাকা!
হোটেলটির নাম ‘মাদারীপুর হোটেল’। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) স্টেশন মার্কেটসংলগ্ন এলাকায় এর অবস্থান। হোটেলটিতে ছয় পদের তরকারি, ডাল আর দেড় প্লেট ভাত খাওয়া যায় মাত্র ২৫ টাকায়! বছরের পর বছর রাবির শিক্ষার্থীরা অল্প টাকায় এই সিস্টেম খেয়ে আসছেন। রোজ দুপুর ও রাতে গড়ে ৮০০ জন খেতে যান এ হোটেলে!
হোটেল ঘরটির মালিক মানিক মিয়ার শ্বশুর লালু মিয়া। আগে মাদারীপুরের এক ব্যক্তি দোকানটি ভাড়া নিয়ে খাবারের হোটেল চালু করেন। তখন তিনিই হোটেলটির নাম দেন ‘মাদারীপুর হোটেল’। প্রায় ৩৫ বছর আগে হোটেল বন্ধ করে তিনি চলে যান। তখন রাজশাহী এসে আবার হোটেলটি চালু করেন কুমিল্লার মানুষ মানিক মিয়া। তিনি আর হোটেলটির নাম বদলাননি। তবে বদল আনেন খাবারের মেন্যুতে। মানিক মিয়া জানতেন, শিক্ষার্থীরা খুব বেশি টাকায় খেতে পারবেন না। সে জন্য তিনি অল্প টাকায় মানসম্মত খাবার খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর সেই ভাবনা থেকেই হোটেলের খাবারের মেন্যুতে আসে সিস্টেম বা সিক্স আইটেম।
হোটেলে গিয়ে কেউ সিস্টেম অর্ডার করলেই চলে আসে এক প্লেট ভাত আর অন্য আরেক প্লেটে সাজানো ছয় পদের তরকারি। এগিয়ে দেওয়া হয় পাতলা ডালের পাত্র। সিস্টেমে ছয় পদের তরকারির মধ্যে থাকে অর্ধেক ডিম। অন্য পাঁচটির মধ্যে থাকে আলু ও ডালের ভর্তা।
বাকি তিন পদের মধ্যে থাকে আলুভাজি, শাক ও পটোল, শিম বা বেগুনভাজা। এক প্লেটের পর আরও প্রয়োজন হলে দেওয়া হয় আরও আধা প্লেট ভাত। সব মিলিয়ে বিল ২৫ টাকা। পরেরবার ভাত না নিলেও বিল ২৫ টাকা। সম্প্রতি এক সন্ধ্যায় হোটেলে গিয়ে কথা হয় মানিক মিয়ার সঙ্গে। ঠিক কত বছর আগে হোটেল ব্যবসায় নেমেছেন, তা মনে করতে পারলেন না। বললেন, ‘এরশাদ সরকারের আমলে এই হোটেল চালু করি। শুরুতে সিস্টেম ছিল ৬ টাকা। বেশ কয়েক বছর পর দাম বাড়িয়ে ১২ টাকা করা হয়। তারপর ২০ টাকা। এবার করোনার পর ৫ টাকা বাড়িয়ে ২৫ করা হয়েছে।’
৩০ বছর আগে যখন ছয় পদের খাবার পরিবেশন শুরু হয়, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এর নাম দেন ‘সিক্স আইটেম’। পরে এই ‘সিক্স আইটেম’ মুখে মুখে হয়ে যায় ‘সিস্টেম’।
মানিক মিয়ার হোটেলে একসঙ্গে ৪০ জন বসে খেতে পারেন। রোজ বেলা ১১টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত খোলা থাকে হোটেলটি। ঘড়ির কাঁটা ১২টায় উঠলেই শিক্ষার্থীদের লাইন লেগে যায় হোটেলে। এমন ভিড় থাকে ৩টা পর্যন্ত। আবার রাত ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত হোটেল সরগরম। টাকা নিতে নিতে তখন কথা বলার ফুরসত থাকে না মানিক মিয়ার।
মানিক মিয়া জানান, ২৫ টাকায় ছয় পদের তরকারি, ডাল আর দেড় প্লেট ভাত দিয়ে লাভ খুব একটা হয় না। অবশ্য সিস্টেমের বাইরে কেউ মাছ-মাংস খেলে কিছুটা লাভ হয়। তখন সেটা সমন্বয় হয়। লাভ না হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অল্প পয়সায় বাড়ির মতো ভালো খাওয়াচ্ছেন, এতেই তাঁর শান্তি। তিনি জানান, হোটেলের রান্নাঘরে আছেন তাঁর স্ত্রী রাবেয়া বেগম আর মেয়ে আয়েশা খাতুন। খাবার পরিবেশনে ব্যস্ত থাকা ছেলে রবিউল মিয়াকে দেখিয়ে বললেন, ‘ওই যে, সে ছোট ছেলে। বড় ছেলে গোলাম রাব্বানীও এখানে কাজ করে। আর আমি বিল নিই। এই হোটেলই তো আমাদের বাড়ি! তাই খাবারে বাড়ির স্বাদটাই দেওয়ার চেষ্টা করি। খাওয়ার পর কেউ খারাপ বলে না।’
অন্যান্য খাবারের দরদাম
সিস্টেমের বাইরে এ হোটেলে এক প্লেট ভাত ১৫ টাকা, খিচুড়ি ২০ টাকা, পোলাও ৪০ টাকা, বিভিন্ন ধরনের মাছ ৪০ থেকে ১০০ টাকা, মুরগির মাংস ৫০ থেকে ১২০ টাকা এবং গরুর মাংস হাফ ৬০ ও ফুল ১২০ টাকায় পাওয়া যায়। তবে বেশি চাহিদা থাকে সিস্টেমেরই।
রাবেয়া বেগম এবং তাঁর মেয়ে আয়েশা খাতুনের সারা দিনই কাটে রান্নাঘরে। রাবেয়ার দুই ছেলে গোলাম রাব্বানী আর রবিউল মিয়া ব্যস্ত থাকেন খাবার পরিবেশনে। আর হোটেলের সামনে চেয়ার-টেবিল পেতে বসে খাবারের মূল্য নিতে থাকেন মানিক মিয়া। এই হোটেলে যাঁরা খাওয়াদাওয়া করেন, তাঁরা ভরপেট খেয়ে মানিক মিয়ার হাতে তুলে দেন মাত্র ২৫ টাকা!
হোটেলটির নাম ‘মাদারীপুর হোটেল’। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) স্টেশন মার্কেটসংলগ্ন এলাকায় এর অবস্থান। হোটেলটিতে ছয় পদের তরকারি, ডাল আর দেড় প্লেট ভাত খাওয়া যায় মাত্র ২৫ টাকায়! বছরের পর বছর রাবির শিক্ষার্থীরা অল্প টাকায় এই সিস্টেম খেয়ে আসছেন। রোজ দুপুর ও রাতে গড়ে ৮০০ জন খেতে যান এ হোটেলে!
হোটেল ঘরটির মালিক মানিক মিয়ার শ্বশুর লালু মিয়া। আগে মাদারীপুরের এক ব্যক্তি দোকানটি ভাড়া নিয়ে খাবারের হোটেল চালু করেন। তখন তিনিই হোটেলটির নাম দেন ‘মাদারীপুর হোটেল’। প্রায় ৩৫ বছর আগে হোটেল বন্ধ করে তিনি চলে যান। তখন রাজশাহী এসে আবার হোটেলটি চালু করেন কুমিল্লার মানুষ মানিক মিয়া। তিনি আর হোটেলটির নাম বদলাননি। তবে বদল আনেন খাবারের মেন্যুতে। মানিক মিয়া জানতেন, শিক্ষার্থীরা খুব বেশি টাকায় খেতে পারবেন না। সে জন্য তিনি অল্প টাকায় মানসম্মত খাবার খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর সেই ভাবনা থেকেই হোটেলের খাবারের মেন্যুতে আসে সিস্টেম বা সিক্স আইটেম।
হোটেলে গিয়ে কেউ সিস্টেম অর্ডার করলেই চলে আসে এক প্লেট ভাত আর অন্য আরেক প্লেটে সাজানো ছয় পদের তরকারি। এগিয়ে দেওয়া হয় পাতলা ডালের পাত্র। সিস্টেমে ছয় পদের তরকারির মধ্যে থাকে অর্ধেক ডিম। অন্য পাঁচটির মধ্যে থাকে আলু ও ডালের ভর্তা।
বাকি তিন পদের মধ্যে থাকে আলুভাজি, শাক ও পটোল, শিম বা বেগুনভাজা। এক প্লেটের পর আরও প্রয়োজন হলে দেওয়া হয় আরও আধা প্লেট ভাত। সব মিলিয়ে বিল ২৫ টাকা। পরেরবার ভাত না নিলেও বিল ২৫ টাকা। সম্প্রতি এক সন্ধ্যায় হোটেলে গিয়ে কথা হয় মানিক মিয়ার সঙ্গে। ঠিক কত বছর আগে হোটেল ব্যবসায় নেমেছেন, তা মনে করতে পারলেন না। বললেন, ‘এরশাদ সরকারের আমলে এই হোটেল চালু করি। শুরুতে সিস্টেম ছিল ৬ টাকা। বেশ কয়েক বছর পর দাম বাড়িয়ে ১২ টাকা করা হয়। তারপর ২০ টাকা। এবার করোনার পর ৫ টাকা বাড়িয়ে ২৫ করা হয়েছে।’
৩০ বছর আগে যখন ছয় পদের খাবার পরিবেশন শুরু হয়, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এর নাম দেন ‘সিক্স আইটেম’। পরে এই ‘সিক্স আইটেম’ মুখে মুখে হয়ে যায় ‘সিস্টেম’।
মানিক মিয়ার হোটেলে একসঙ্গে ৪০ জন বসে খেতে পারেন। রোজ বেলা ১১টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত খোলা থাকে হোটেলটি। ঘড়ির কাঁটা ১২টায় উঠলেই শিক্ষার্থীদের লাইন লেগে যায় হোটেলে। এমন ভিড় থাকে ৩টা পর্যন্ত। আবার রাত ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত হোটেল সরগরম। টাকা নিতে নিতে তখন কথা বলার ফুরসত থাকে না মানিক মিয়ার।
মানিক মিয়া জানান, ২৫ টাকায় ছয় পদের তরকারি, ডাল আর দেড় প্লেট ভাত দিয়ে লাভ খুব একটা হয় না। অবশ্য সিস্টেমের বাইরে কেউ মাছ-মাংস খেলে কিছুটা লাভ হয়। তখন সেটা সমন্বয় হয়। লাভ না হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অল্প পয়সায় বাড়ির মতো ভালো খাওয়াচ্ছেন, এতেই তাঁর শান্তি। তিনি জানান, হোটেলের রান্নাঘরে আছেন তাঁর স্ত্রী রাবেয়া বেগম আর মেয়ে আয়েশা খাতুন। খাবার পরিবেশনে ব্যস্ত থাকা ছেলে রবিউল মিয়াকে দেখিয়ে বললেন, ‘ওই যে, সে ছোট ছেলে। বড় ছেলে গোলাম রাব্বানীও এখানে কাজ করে। আর আমি বিল নিই। এই হোটেলই তো আমাদের বাড়ি! তাই খাবারে বাড়ির স্বাদটাই দেওয়ার চেষ্টা করি। খাওয়ার পর কেউ খারাপ বলে না।’
অন্যান্য খাবারের দরদাম
সিস্টেমের বাইরে এ হোটেলে এক প্লেট ভাত ১৫ টাকা, খিচুড়ি ২০ টাকা, পোলাও ৪০ টাকা, বিভিন্ন ধরনের মাছ ৪০ থেকে ১০০ টাকা, মুরগির মাংস ৫০ থেকে ১২০ টাকা এবং গরুর মাংস হাফ ৬০ ও ফুল ১২০ টাকায় পাওয়া যায়। তবে বেশি চাহিদা থাকে সিস্টেমেরই।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে