আল আমিন রাজু, ঢাকা
রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার অন্যতম জনপ্রিয় রেস্তোরাঁ ভূতেরবাড়ি। এ রেস্তোরাঁটি পছন্দের কারণ ভেতরের ভৌতিক নকশা এবং খাবারের স্বাদ। এই খাবার যাঁর হাত দিয়ে তৈরি হয়, তিনি বেল্লাল খন্দকার। জীবনের শুরুতে দিনের পর দিন অনাহার ও অর্ধাহারে বেড়ে ওঠা বেল্লাল এখন রান্না করেন শত শত মানুষের। তাঁর রান্না করা বাহারি স্বাদের খাবারে মন জুড়িয়ে যায় খাদ্যরসিকদের।
বেল্লালের সঙ্গে যখন কথা বলতে যাই,তখন রেস্তোরাঁটিতে একটি জন্মদিনের পার্টির আয়োজন চলছে। রান্নাঘরে বেল্লালের ব্যস্ততা অনেকখানি। সেই সঙ্গে তাঁর সহকর্মীরা গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী সাজসজ্জায় ব্যস্ত। এই ব্যস্ততার ফাঁক গলে জীবন-স্মৃতির পাতা
ওলটান বেল্লাল খন্দকার।
বেল্লালের জন্ম বরগুনার বেতাগী উপজেলা সদরের একটি গ্রামে। তিন ভাইবোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। শৈশবের দিনের কথা বলতে গিয়ে কথার খেই হারিয়ে ফেলেন বেল্লাল। বলেন, ‘বাবা ছিলেন দিনমজুর। মা অন্যের বাড়িতে কাজ করতেন। তাঁদের দুজনের সামান্য আয়ে আমাদের সংসার চলত। ঠিকমতো তিন বেলা ভাত খেতে পারতাম না। পরিবারে অর্থসংকটের কারণে স্কুলের যাওয়া হয়নি।
বাধ্য হয়ে শৈশবেই শুরু হয় খাবার সংগ্রহের যুদ্ধ। অন্যের বাড়িতে কাজ করা, গাছের সুপারি পাড়াসহ নানা কাজ করতে হয়েছে দুবেলা দুমুঠো খাবার জোগাতে।’ প্রতিবেশীদের ফেলে দেওয়া আমের ছাল খেয়ে আম খাওয়ার সাধ মেটাতে হয়েছে বেল্লালদের। একটি শীতের পোশাক দুই ভাই ভাগাভাগি করে পরে শীত কাটাতে হয়েছে। পলেস্টারের লুঙ্গি পরতে হতো। কারণ নতুন কাপড় চাইলে বাবা বকা দিতেন।
এরপর ২০০৭ সালে কাজের সন্ধানে প্রথমে সিলেট যান বেল্লাল খন্দকার। সেখানে একটি রেস্তোরাঁয় বাসন মাজার কাজ নেন। দীর্ঘদিন সেই কাজ করেন। রেস্তোরাঁর থালাবাসন ধোয়ার কারণে হাত সাদা হয়ে যেত বেল্লালের। শরীর থেকে গন্ধ বের হতো। কেউ কাছে আসত না। মাত্র ১ হাজার ৬০০ টাকায় ২০০৯ সাল পর্যন্ত সে রেস্তোরাঁয় বাসন মাজার কাজ করেন বেল্লাল। এরপর রেস্তোরাঁর শেফের সহকারী হিসেবে চাঁদপুর, ঢাকার মিরপুর, মগবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় কাজ করেন।
ছোটবেলা থেকে দারিদ্র্যের সঙ্গে বেড়ে উঠেছেন বেল্লাল খন্দকার। সে জীবনে আছে ক্ষুধার্ত থাকার গল্প। একসময় জীবনের অদ্ভুত নিয়মে নিজেই হয়ে গেলেন শেফ! তিনিই এখন রান্না করেন শত শত মানুষের।
২০১৩ সাল থেকে পুরোপুরি শেফ হিসেবে কাজ শুরু করেন বেল্লাল। এ কাজ করতে গিয়ে মানুষের মারধর, বকা আর অসহযোগিতা ছিল নিত্যসঙ্গী। তবুও নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে ভেবে শত অপমান আর লাঞ্ছনা সহ্য করে লড়াই চালিয়ে যান। বেল্লাল জানান, সে কঠিন পথ পাড়ি দেওয়ার একমাত্র উৎসাহ ছিল শৈশবের খাবারের কষ্টের দিনগুলোর স্মৃতি।
রান্নায় বড় বড় ডিগ্রিধারী শেফদের সঙ্গে সমান টক্কর দিয়েই তাঁকে এগিয়ে নিতে হয়েছে নিজের ক্যারিয়ার। শিক্ষা ও অভিজ্ঞতায় এগিয়ে থাকা শেফদের হারিয়ে চাকরি পেয়েছেন ভূতেরবাড়ি রেস্তোরাঁর রান্নাঘরে। এখন বেল্লালের পরিবারে অভাব নেই। মাসে ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় তাঁর। বাবা-মাকে নিয়ে সুখের সংসার। ছোট ভাইকে নিজে হাতে ধরে রান্না শিখিয়েছেন। সেই ছোট ভাইও এখন একটি রেস্তোরাঁর প্রধান শেফ। বাড়িতে টিভি, ফ্রিজসহ কোনো কিছুর কমতি নেই। অভাবের অন্ধকারের দীর্ঘ পথ পেরিয়ে সুখের সংসার। বাবা-মাকে এখন আর কোনো কাজ করতে হয় না।
অধ্যবসায় আর নিজের অদম্য মনোবলের কারণে স্কুলের গণ্ডি না পেরোনো বেল্লাল রান্না করতে পারেন অন্তত পাঁচটি দেশের কয়েক শ পদ। যেকোনো খাবার রান্না করায় সিদ্ধহস্ত বেল্লাল একাই সামলান ভূতেরবাড়ির মতো জনপ্রিয় রেস্তোরাঁর রান্নাঘর। প্রতিদিন তাঁর হাতে রান্না হয় শত মানুষের পছন্দের বাহারি সব খাবার। তাঁর হাতের রান্না করা খাবার খেয়ে মুগ্ধতা ছড়িয়ে পড়ে গ্রাহকদের মুখে মুখে। সে কারণে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রান্নার ডাক পান বেল্লাল। নিজের মেধা আর অভিজ্ঞতা দিয়ে রান্নার হাতেই খুশি করেন খাদ্যরসিক সব মানুষদের।
বেল্লাল বলেন, ‘একটা সময় একটু ভালো খাবারের আশায় কত কিছুই না করেছি। আর এখন আমার সামনে খাবারের অভাব নেই। কিন্তু খেতে ইচ্ছে করে না। তবে আমি চেষ্টা করি মানুষের পাশে থাকার। সব সময় চেষ্টা করি ক্ষুধার্ত মানুষের মুখে হাসি ফোটাবার।’ বেল্লাল বিশ্বাস করেন, রান্না একটি শিল্প। রান্না দিয়ে জীবনে সফলতার গল্প লিখতে চান তিনি।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার অন্যতম জনপ্রিয় রেস্তোরাঁ ভূতেরবাড়ি। এ রেস্তোরাঁটি পছন্দের কারণ ভেতরের ভৌতিক নকশা এবং খাবারের স্বাদ। এই খাবার যাঁর হাত দিয়ে তৈরি হয়, তিনি বেল্লাল খন্দকার। জীবনের শুরুতে দিনের পর দিন অনাহার ও অর্ধাহারে বেড়ে ওঠা বেল্লাল এখন রান্না করেন শত শত মানুষের। তাঁর রান্না করা বাহারি স্বাদের খাবারে মন জুড়িয়ে যায় খাদ্যরসিকদের।
বেল্লালের সঙ্গে যখন কথা বলতে যাই,তখন রেস্তোরাঁটিতে একটি জন্মদিনের পার্টির আয়োজন চলছে। রান্নাঘরে বেল্লালের ব্যস্ততা অনেকখানি। সেই সঙ্গে তাঁর সহকর্মীরা গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী সাজসজ্জায় ব্যস্ত। এই ব্যস্ততার ফাঁক গলে জীবন-স্মৃতির পাতা
ওলটান বেল্লাল খন্দকার।
বেল্লালের জন্ম বরগুনার বেতাগী উপজেলা সদরের একটি গ্রামে। তিন ভাইবোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। শৈশবের দিনের কথা বলতে গিয়ে কথার খেই হারিয়ে ফেলেন বেল্লাল। বলেন, ‘বাবা ছিলেন দিনমজুর। মা অন্যের বাড়িতে কাজ করতেন। তাঁদের দুজনের সামান্য আয়ে আমাদের সংসার চলত। ঠিকমতো তিন বেলা ভাত খেতে পারতাম না। পরিবারে অর্থসংকটের কারণে স্কুলের যাওয়া হয়নি।
বাধ্য হয়ে শৈশবেই শুরু হয় খাবার সংগ্রহের যুদ্ধ। অন্যের বাড়িতে কাজ করা, গাছের সুপারি পাড়াসহ নানা কাজ করতে হয়েছে দুবেলা দুমুঠো খাবার জোগাতে।’ প্রতিবেশীদের ফেলে দেওয়া আমের ছাল খেয়ে আম খাওয়ার সাধ মেটাতে হয়েছে বেল্লালদের। একটি শীতের পোশাক দুই ভাই ভাগাভাগি করে পরে শীত কাটাতে হয়েছে। পলেস্টারের লুঙ্গি পরতে হতো। কারণ নতুন কাপড় চাইলে বাবা বকা দিতেন।
এরপর ২০০৭ সালে কাজের সন্ধানে প্রথমে সিলেট যান বেল্লাল খন্দকার। সেখানে একটি রেস্তোরাঁয় বাসন মাজার কাজ নেন। দীর্ঘদিন সেই কাজ করেন। রেস্তোরাঁর থালাবাসন ধোয়ার কারণে হাত সাদা হয়ে যেত বেল্লালের। শরীর থেকে গন্ধ বের হতো। কেউ কাছে আসত না। মাত্র ১ হাজার ৬০০ টাকায় ২০০৯ সাল পর্যন্ত সে রেস্তোরাঁয় বাসন মাজার কাজ করেন বেল্লাল। এরপর রেস্তোরাঁর শেফের সহকারী হিসেবে চাঁদপুর, ঢাকার মিরপুর, মগবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় কাজ করেন।
ছোটবেলা থেকে দারিদ্র্যের সঙ্গে বেড়ে উঠেছেন বেল্লাল খন্দকার। সে জীবনে আছে ক্ষুধার্ত থাকার গল্প। একসময় জীবনের অদ্ভুত নিয়মে নিজেই হয়ে গেলেন শেফ! তিনিই এখন রান্না করেন শত শত মানুষের।
২০১৩ সাল থেকে পুরোপুরি শেফ হিসেবে কাজ শুরু করেন বেল্লাল। এ কাজ করতে গিয়ে মানুষের মারধর, বকা আর অসহযোগিতা ছিল নিত্যসঙ্গী। তবুও নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে ভেবে শত অপমান আর লাঞ্ছনা সহ্য করে লড়াই চালিয়ে যান। বেল্লাল জানান, সে কঠিন পথ পাড়ি দেওয়ার একমাত্র উৎসাহ ছিল শৈশবের খাবারের কষ্টের দিনগুলোর স্মৃতি।
রান্নায় বড় বড় ডিগ্রিধারী শেফদের সঙ্গে সমান টক্কর দিয়েই তাঁকে এগিয়ে নিতে হয়েছে নিজের ক্যারিয়ার। শিক্ষা ও অভিজ্ঞতায় এগিয়ে থাকা শেফদের হারিয়ে চাকরি পেয়েছেন ভূতেরবাড়ি রেস্তোরাঁর রান্নাঘরে। এখন বেল্লালের পরিবারে অভাব নেই। মাসে ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় তাঁর। বাবা-মাকে নিয়ে সুখের সংসার। ছোট ভাইকে নিজে হাতে ধরে রান্না শিখিয়েছেন। সেই ছোট ভাইও এখন একটি রেস্তোরাঁর প্রধান শেফ। বাড়িতে টিভি, ফ্রিজসহ কোনো কিছুর কমতি নেই। অভাবের অন্ধকারের দীর্ঘ পথ পেরিয়ে সুখের সংসার। বাবা-মাকে এখন আর কোনো কাজ করতে হয় না।
অধ্যবসায় আর নিজের অদম্য মনোবলের কারণে স্কুলের গণ্ডি না পেরোনো বেল্লাল রান্না করতে পারেন অন্তত পাঁচটি দেশের কয়েক শ পদ। যেকোনো খাবার রান্না করায় সিদ্ধহস্ত বেল্লাল একাই সামলান ভূতেরবাড়ির মতো জনপ্রিয় রেস্তোরাঁর রান্নাঘর। প্রতিদিন তাঁর হাতে রান্না হয় শত মানুষের পছন্দের বাহারি সব খাবার। তাঁর হাতের রান্না করা খাবার খেয়ে মুগ্ধতা ছড়িয়ে পড়ে গ্রাহকদের মুখে মুখে। সে কারণে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রান্নার ডাক পান বেল্লাল। নিজের মেধা আর অভিজ্ঞতা দিয়ে রান্নার হাতেই খুশি করেন খাদ্যরসিক সব মানুষদের।
বেল্লাল বলেন, ‘একটা সময় একটু ভালো খাবারের আশায় কত কিছুই না করেছি। আর এখন আমার সামনে খাবারের অভাব নেই। কিন্তু খেতে ইচ্ছে করে না। তবে আমি চেষ্টা করি মানুষের পাশে থাকার। সব সময় চেষ্টা করি ক্ষুধার্ত মানুষের মুখে হাসি ফোটাবার।’ বেল্লাল বিশ্বাস করেন, রান্না একটি শিল্প। রান্না দিয়ে জীবনে সফলতার গল্প লিখতে চান তিনি।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে