নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
দেশে মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে মানুষের কষ্ট বাড়াচ্ছে লোডশেডিং। কয়েক দিন ধরে রাজধানীতেই লোডশেডিং হচ্ছে ঘন ঘন। সরকারি তথ্যমতে, ঢাকায় লোডশেডিং হচ্ছে দিনে ৪-৫ ঘণ্টা। ঢাকার বাইরে বিদ্যুতের জন্য হাপিত্যেশ করতে হচ্ছে মানুষকে। একটি জেলা শহরেই গত বুধবার রাতভর বিদ্যুৎ ছিল না। অপর এক জেলার একটি উপজেলার এক গ্রাহক জানান, সেখানে দিনে ১২-১৪ বার লোডশেডিং হয়। কয়লার অভাবে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দ্বিতীয় ইউনিটে উৎপাদন সোমবার বন্ধ হয়ে গেলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) জানিয়েছে, সারা দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ১৫ হাজার মেগাওয়াটের বেশি। কিন্তু সর্বোচ্চ উৎপাদন আছে ১২ হাজার মেগাওয়াটের মতো। গতকাল শনিবার সারা দেশে সাড়ে ৩ হাজার মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং করা হয়েছে। যদিও সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় গতকাল তুলনামূলকভাবে কম চাহিদা ছিল।
পিডিবির কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, ডলার-সংকটের কারণে কয়লা কিনতে না পারায় পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট বন্ধ হলে লোডশেডিং আরও তীব্র হবে।
পিডিবির একাধিক কর্মকর্তা জানান, বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে সরকারের অগ্রাধিকার থাকে রাজধানী ঢাকা। তিন দিন ধরে ঢাকায় লোডশেডিং করা হয়েছে দৈনিক ৪-৫ ঘণ্টা। ঢাকার বাইরে গড়ে ১০-১২ ঘণ্টা করে লোডশেডিং করা হচ্ছে।
তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে কৃষিজমিতে ঠিকমতো সেচ দিতে না পারায় আউশ ধানের ফলন নিয়ে কৃষকের চিন্তা বেড়েছে।
লোডশেডিংয়ের কারণে মানুষের দুর্ভোগ হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বর্তমানে প্রায় ১ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং চলছে। ফলে মানুষের দুর্ভোগ হচ্ছে। এ কারণে আমরা দুঃখিত।’ তিনি আরও বলেন, ‘পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট বন্ধ রয়েছে। ৫ জুন দ্বিতীয় ইউনিটও জ্বালানি সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে যাবে। নতুন করে কয়লা আমদানি করতে আরও ২০-২৫ দিন লাগবে। ডলার-সংকটের কারণে কয়লা আমদানি ও পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ করতে না পারায় কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে লোডশেডিং বেড়েছে।’
ঢাকায় ৪-৫ ঘণ্টা লোডশেডিং
ঢাকায় বিদ্যুতের সরবরাহ দিন দিন কমছে। ফলে বাড়ছে লোডশেডিং। ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) ও ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, গতকাল ঢাকায় ৭০০ মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং ছিল। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত পালাক্রমে লোডশেডিং করতে হয়েছে।
ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কাওসার আমীর আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার এলাকায় গতকাল চাহিদা ছিল ১ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট, কিন্তু সরবরাহ দেওয়া হয়েছে ১ হাজার মেগাওয়াটের মতো। প্রচণ্ড এই গরমের মধ্যে ২৭০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ ঘাটতি ব্যবস্থাপনা করা কঠিন। আমরা বাধ্য হয়ে এখন ৪-৫ ঘণ্টা লোডশেডিং করছি কোনো কোনো এলাকায়।’
অন্যদিকে ডিপিডিসির এক কর্মকর্তা বলেন, গতকাল ডিপিডিসিভুক্ত এলাকায় বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১ হাজার ৮৫০ মেগাওয়াট, কিন্তু সরবরাহ ছিল ১ হাজার ৫০০ মেগাওয়াটের কম। গতকাল ৩৫০-৪০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে হয়েছে।
অপরিকল্পিত লোডশেডিংয়ে বাড়ছে ভোগান্তি
গত বছর জ্বালানি সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হলে সরকার পরিকল্পিত লোডশেডিং শুরু করে। ঈদের সময় এবং রমজান মাসেও লোডশেডিং ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের পরিকল্পনা পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল বিতরণ সংস্থাগুলোর কাছে। কিন্তু এখন সরকার লোডশেডিং নিয়ে কোনো পরিকল্পনা না দেওয়ায় বিপাকে পড়েছে বিতরণ সংস্থাগুলো।
ঢাকার একাংশে বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্বে থাকা এক শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা বলেন, ‘চলমান লোডশেডিং নিয়ে আমরা এখনো কোনো পরিকল্পনা পাইনি। লোডশেডিং নিয়ে শিডিউল করা থাকলে গ্রাহকেরা বুঝতে পারেন, কখন বিদ্যুৎ থাকবে না। সেইভাবে তাঁরা পরিকল্পনা করতে পারেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘যখন যেমন বিদ্যুৎ পাওয়া যায়, তার ওপর এখন লোডশেডিং নির্ভর করছে। আমাদের কাছে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই যে আগামীকাল বিদ্যুতের কত লোড পাব।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘আমরা রমজান ও ঈদের সময় লোডশেডিং ভালোভাবেই ব্যবস্থাপনা করতে পেরেছি একটা পরিকল্পনার মাধ্যমে। কাল (রোববার) অফিস খুললে তখন হয়তো মিটিং হবে চলমান লোডশেডিং নিয়ে। তখন একটা ধারণা পাওয়া যাবে।’
গ্রামে বিদ্যুৎ থাকে না ১০-১২ ঘণ্টা
সরকার ঢাকাসহ বড় মেট্রোপলিটন শহরগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহে অগ্রাধিকার দেওয়ায় গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। আজকের পত্রিকার প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গ্রামে বিদ্যুৎ থাকে না দিনের বেশির ভাগ সময়। গড়ে লোডশেডিং হচ্ছে ১০-১২ ঘণ্টা।
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় কৃষকেরা বিদ্যুতের অভাবে ঠিকমতো কৃষিজমিতে সেচ দিতে পারছেন না। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে দ্রুত শুকিয়ে যাচ্ছে মাঠ-ঘাটসহ কৃষিজমি। তার মধ্যে লোডশেডিংয়ের কারণে ঠিকমতো সেচ দিতে না পারায় আউশ ধান নিয়ে চিন্তায় আছেন কৃষকেরা। গাংনী উপজেলার কৃষক সালাউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘সার-ডিজেলের দাম বেড়েছে। ঠিকমতো জমিতে পানি দিতে পারছি না লোডশেডিংয়ের কারণে। ধানের জমি ফেটে যাচ্ছে।’
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় দিনরাত মিলিয়ে ১২-১৪ বার লোডশেডিং করা হয়েছে। ফরিদগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম প্রকৌশলী মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘বিদ্যুতের ৩৪ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে আমরা মাত্র ১৭-১৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাচ্ছি। ফলে বারবার লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।’
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী হানিফ মোল্লা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দিনে ৮-১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকছে। তারপরও ভৌতিক বা অনুমাননির্ভর বিলের যন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছে।
তথ্য নিয়ে লুকোচুরি
লোডশেডিংয়ের তথ্য নিয়েও লুকোচুরি খেলছে কর্তৃপক্ষ। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির ন্যাশনাল লোড ডিসপ্যাস সেন্টার (এনএলডিসি) দিচ্ছে এক রকম তথ্য; অন্যদিকে প্রতিমন্ত্রী বলছেন আরেক কথা। পিডিবির বয়ানে জানা যাচ্ছে ভিন্ন তথ্য।
এনএলডিসির বিদ্যুৎ উৎপাদন ও লোডশেডিংয়ের হিসাবে দেখা যায়, গতকাল সারা দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৪ হাজার ৯১১ মেগাওয়াট। সম্ভাব্য লোডশেডিং ধরা হয়েছে ৮৬০ মেগাওয়াট। গতকাল সাভারে এক অনুষ্ঠান শেষে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, দেশে লোডশেডিং আছে ১ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট।
লোডশেডিংয়ের প্রকৃত তথ্য জানতে পিডিবির তিন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা জানান, সারা দেশে গতকাল ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং ছিল।
বিদ্যুৎ উৎপাদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পিডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, গতকাল দুপুর ১২টার দিকে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৪ হাজার ১৯২ মেগাওয়াট। তখন সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল ১০ হাজার ৬৮৩ মেগাওয়াট। দুপুর ১২টার দিকে সারা দেশে ৩ হাজার ৫০৯ মেগাওয়াট লোডশেডিং ছিল।
দেশে মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে মানুষের কষ্ট বাড়াচ্ছে লোডশেডিং। কয়েক দিন ধরে রাজধানীতেই লোডশেডিং হচ্ছে ঘন ঘন। সরকারি তথ্যমতে, ঢাকায় লোডশেডিং হচ্ছে দিনে ৪-৫ ঘণ্টা। ঢাকার বাইরে বিদ্যুতের জন্য হাপিত্যেশ করতে হচ্ছে মানুষকে। একটি জেলা শহরেই গত বুধবার রাতভর বিদ্যুৎ ছিল না। অপর এক জেলার একটি উপজেলার এক গ্রাহক জানান, সেখানে দিনে ১২-১৪ বার লোডশেডিং হয়। কয়লার অভাবে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দ্বিতীয় ইউনিটে উৎপাদন সোমবার বন্ধ হয়ে গেলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) জানিয়েছে, সারা দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ১৫ হাজার মেগাওয়াটের বেশি। কিন্তু সর্বোচ্চ উৎপাদন আছে ১২ হাজার মেগাওয়াটের মতো। গতকাল শনিবার সারা দেশে সাড়ে ৩ হাজার মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং করা হয়েছে। যদিও সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় গতকাল তুলনামূলকভাবে কম চাহিদা ছিল।
পিডিবির কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, ডলার-সংকটের কারণে কয়লা কিনতে না পারায় পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট বন্ধ হলে লোডশেডিং আরও তীব্র হবে।
পিডিবির একাধিক কর্মকর্তা জানান, বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে সরকারের অগ্রাধিকার থাকে রাজধানী ঢাকা। তিন দিন ধরে ঢাকায় লোডশেডিং করা হয়েছে দৈনিক ৪-৫ ঘণ্টা। ঢাকার বাইরে গড়ে ১০-১২ ঘণ্টা করে লোডশেডিং করা হচ্ছে।
তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে কৃষিজমিতে ঠিকমতো সেচ দিতে না পারায় আউশ ধানের ফলন নিয়ে কৃষকের চিন্তা বেড়েছে।
লোডশেডিংয়ের কারণে মানুষের দুর্ভোগ হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বর্তমানে প্রায় ১ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং চলছে। ফলে মানুষের দুর্ভোগ হচ্ছে। এ কারণে আমরা দুঃখিত।’ তিনি আরও বলেন, ‘পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট বন্ধ রয়েছে। ৫ জুন দ্বিতীয় ইউনিটও জ্বালানি সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে যাবে। নতুন করে কয়লা আমদানি করতে আরও ২০-২৫ দিন লাগবে। ডলার-সংকটের কারণে কয়লা আমদানি ও পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ করতে না পারায় কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে লোডশেডিং বেড়েছে।’
ঢাকায় ৪-৫ ঘণ্টা লোডশেডিং
ঢাকায় বিদ্যুতের সরবরাহ দিন দিন কমছে। ফলে বাড়ছে লোডশেডিং। ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) ও ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, গতকাল ঢাকায় ৭০০ মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং ছিল। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত পালাক্রমে লোডশেডিং করতে হয়েছে।
ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কাওসার আমীর আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার এলাকায় গতকাল চাহিদা ছিল ১ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট, কিন্তু সরবরাহ দেওয়া হয়েছে ১ হাজার মেগাওয়াটের মতো। প্রচণ্ড এই গরমের মধ্যে ২৭০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ ঘাটতি ব্যবস্থাপনা করা কঠিন। আমরা বাধ্য হয়ে এখন ৪-৫ ঘণ্টা লোডশেডিং করছি কোনো কোনো এলাকায়।’
অন্যদিকে ডিপিডিসির এক কর্মকর্তা বলেন, গতকাল ডিপিডিসিভুক্ত এলাকায় বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১ হাজার ৮৫০ মেগাওয়াট, কিন্তু সরবরাহ ছিল ১ হাজার ৫০০ মেগাওয়াটের কম। গতকাল ৩৫০-৪০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে হয়েছে।
অপরিকল্পিত লোডশেডিংয়ে বাড়ছে ভোগান্তি
গত বছর জ্বালানি সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হলে সরকার পরিকল্পিত লোডশেডিং শুরু করে। ঈদের সময় এবং রমজান মাসেও লোডশেডিং ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের পরিকল্পনা পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল বিতরণ সংস্থাগুলোর কাছে। কিন্তু এখন সরকার লোডশেডিং নিয়ে কোনো পরিকল্পনা না দেওয়ায় বিপাকে পড়েছে বিতরণ সংস্থাগুলো।
ঢাকার একাংশে বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্বে থাকা এক শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা বলেন, ‘চলমান লোডশেডিং নিয়ে আমরা এখনো কোনো পরিকল্পনা পাইনি। লোডশেডিং নিয়ে শিডিউল করা থাকলে গ্রাহকেরা বুঝতে পারেন, কখন বিদ্যুৎ থাকবে না। সেইভাবে তাঁরা পরিকল্পনা করতে পারেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘যখন যেমন বিদ্যুৎ পাওয়া যায়, তার ওপর এখন লোডশেডিং নির্ভর করছে। আমাদের কাছে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই যে আগামীকাল বিদ্যুতের কত লোড পাব।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘আমরা রমজান ও ঈদের সময় লোডশেডিং ভালোভাবেই ব্যবস্থাপনা করতে পেরেছি একটা পরিকল্পনার মাধ্যমে। কাল (রোববার) অফিস খুললে তখন হয়তো মিটিং হবে চলমান লোডশেডিং নিয়ে। তখন একটা ধারণা পাওয়া যাবে।’
গ্রামে বিদ্যুৎ থাকে না ১০-১২ ঘণ্টা
সরকার ঢাকাসহ বড় মেট্রোপলিটন শহরগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহে অগ্রাধিকার দেওয়ায় গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। আজকের পত্রিকার প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গ্রামে বিদ্যুৎ থাকে না দিনের বেশির ভাগ সময়। গড়ে লোডশেডিং হচ্ছে ১০-১২ ঘণ্টা।
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় কৃষকেরা বিদ্যুতের অভাবে ঠিকমতো কৃষিজমিতে সেচ দিতে পারছেন না। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে দ্রুত শুকিয়ে যাচ্ছে মাঠ-ঘাটসহ কৃষিজমি। তার মধ্যে লোডশেডিংয়ের কারণে ঠিকমতো সেচ দিতে না পারায় আউশ ধান নিয়ে চিন্তায় আছেন কৃষকেরা। গাংনী উপজেলার কৃষক সালাউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘সার-ডিজেলের দাম বেড়েছে। ঠিকমতো জমিতে পানি দিতে পারছি না লোডশেডিংয়ের কারণে। ধানের জমি ফেটে যাচ্ছে।’
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় দিনরাত মিলিয়ে ১২-১৪ বার লোডশেডিং করা হয়েছে। ফরিদগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম প্রকৌশলী মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘বিদ্যুতের ৩৪ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে আমরা মাত্র ১৭-১৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাচ্ছি। ফলে বারবার লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।’
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী হানিফ মোল্লা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দিনে ৮-১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকছে। তারপরও ভৌতিক বা অনুমাননির্ভর বিলের যন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছে।
তথ্য নিয়ে লুকোচুরি
লোডশেডিংয়ের তথ্য নিয়েও লুকোচুরি খেলছে কর্তৃপক্ষ। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির ন্যাশনাল লোড ডিসপ্যাস সেন্টার (এনএলডিসি) দিচ্ছে এক রকম তথ্য; অন্যদিকে প্রতিমন্ত্রী বলছেন আরেক কথা। পিডিবির বয়ানে জানা যাচ্ছে ভিন্ন তথ্য।
এনএলডিসির বিদ্যুৎ উৎপাদন ও লোডশেডিংয়ের হিসাবে দেখা যায়, গতকাল সারা দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৪ হাজার ৯১১ মেগাওয়াট। সম্ভাব্য লোডশেডিং ধরা হয়েছে ৮৬০ মেগাওয়াট। গতকাল সাভারে এক অনুষ্ঠান শেষে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, দেশে লোডশেডিং আছে ১ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট।
লোডশেডিংয়ের প্রকৃত তথ্য জানতে পিডিবির তিন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা জানান, সারা দেশে গতকাল ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং ছিল।
বিদ্যুৎ উৎপাদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পিডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, গতকাল দুপুর ১২টার দিকে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৪ হাজার ১৯২ মেগাওয়াট। তখন সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল ১০ হাজার ৬৮৩ মেগাওয়াট। দুপুর ১২টার দিকে সারা দেশে ৩ হাজার ৫০৯ মেগাওয়াট লোডশেডিং ছিল।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে