জিয়াউল হক, যশোর
‘চার বছর আগে আমি ৩ লাখ টাকা সঞ্চয় করি পল্লী অর্থনৈতিক উন্নয়ন সংস্থায় (পিডো)। সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে জমি ও গরু বিক্রি করে টাকা জমা দিয়েছিলাম। স্ট্যাম্পে লিখিত দিয়েছিল, দ্বিগুণ লাভ দেবে। কিন্তু সংস্থাটি এখন উধাও হয়ে গেছে। অফিসে তালা ঝুলছে। আমার এখন কী হবে?’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন যশোর সদরের রুপদিয়ার গৃহবধূ সালমা বেগম।
সমাজসেবা অধিদপ্তর ও এনজিও ব্যুরোর অনুমোদিত পিডোতে লাভের আশায় টাকা সঞ্চয় করেছিলেন তিনি। কিন্তু গ্রাহকের টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে সংস্থাটি। অধিক লাভের কথা বলে যশোরের বিভিন্ন এলাকার মানুষের কাছ থেকে টাকা নেয় সংস্থাটির সভাপতি মাছুদুর রহমান। সংস্থার প্রধান কার্যালয়সহ সবগুলো শাখা কার্যালয় এখন বন্ধ।
ফলে সালমা বেগমের মতো মজিবর রহমান, মালতী দেবীসহ হাজারের অধিক গ্রাহক প্রতারণার শিকার হয়েছেন। অথচ এ সংস্থাটি ঋণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অনুমোদন পেয়েছিল মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি থেকে। শুধু তা-ই নয়, অনুমোদন ছিল সমাজসেবা অধিদপ্তর ও এনজিও ব্যুরো প্রতিষ্ঠানেরও। কিন্তু প্রতারণার শিকার গ্রাহকদের দায়িত্ব নিতে গড়িমসি করছে অনুমোদন দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো। নির্বিকার প্রশাসনও।
গ্রাহক সামলা বেগম বলেন, ‘সরকার সংস্থাটির অনুমোদন দিয়েছে। অনুমোদনের কাগজপত্রও আমাদের দেখানো হয়েছে। এরপরও আমরা বুঝব কীভাবে তারা প্রতারক?’
জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে স্বেচ্ছামূলক সমাজকল্যাণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে সমাজসেবা অধিদপ্তরের নিবন্ধনভুক্ত হয় পিডো। সংস্থার নিবন্ধন নম্বর-৬২০/৯৯। পিডোর প্রধান কার্যালয় সদর উপজেলার রুপদিয়ায়। সে সময় সংস্থাটি শুধু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিসেবেই কাজ করত। ২০১২ সালে এনজিও ব্যুরোর নিবন্ধনভুক্ত হয় সংস্থাটি। যার নিবন্ধন নম্বর-২৬৯৩।
স্থানীয়রা জানান, দুটি নিবন্ধন পাওয়ার পর পিডো সীমিত পরিসরে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম শুরু করে। তখন স্থানীয়রা বাধা দিলে কিছুদিনের জন্য কার্যক্রম বন্ধ রাখে সংস্থাটি। ২০১৫ সালে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি ক্ষুদ্রঋণ পরিচালনার জন্য সাময়িক অনুমোদন দেয়। ঋণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি স্মারক নম্বরও দেয় সংস্থাটিকে; যা ৫৩.০১. ০০০০.০১০. ০১.০০১. ২০১৫-৭৭৮ (৮)। এরপর থেকে শুরু হয় সঞ্চয়ের নামে টাকা সংগ্রহ।
ভুক্তভোগী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘গত বছরের জুন মাসে আমার সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ শেষ হয়। এরপর অফিসে গেলে টালবাহানা শুরু করেন কর্মকর্তারা। ইতি সেন, পল্লবী রায়, মুজিবর রহমানকেও লাভসহ সঞ্চয়ের টাকা ফেরত দিতে একাধিকবার দিন দিলেও টাকা দেয়নি।’
নরেন্দ্রপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোদাচ্ছের আলী বলেন, ‘মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে পিডোর সভাপতি মাসুদুর রহমান নরেন্দ্রপুর ও বসুন্দিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি শাখা খোলেন। সেখানে নিয়োগ দেন অর্ধশতাধিক নারী কর্মীকে। এরপর তাঁদের মাধ্যমে গ্রাহক জোগাড় করেন। তিনটি সরকারি দপ্তরের অনুমোদন থাকায় আমরাও তখন বিষয়টিকে স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছিলাম। কিন্তু দুই-তিন বছর যেতে না যেতেই গ্রাহকেরা হয়রানির অভিযোগ দিতে শুরু করেন। তখন কয়েকটি অভিযোগ সমাধানও করেছি আমরা। কিন্তু এরপর হঠাৎ করেই গত বছর গা ঢাকা দেন সভাপতি।’
যশোর সমাজসেবা অধিদপ্তরের সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. সাঈদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কাছে পিডোর প্রতারণার বিষয়ে একটি অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি আমরা দেখছি। যদি অভিযোগ সত্য হয়, তাহলে নিবন্ধন বাতিল করা হবে।’
মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির উপপরিচালক মো. মিজানুর রহমান খান বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত কমিটি গঠন করি। ওই কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী পিডোর কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপরও সংস্থাটি আবারও অনুমোদন চাইলে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। আর আমরা কেবলই অনুমোদন বাতিল করতে পারি।’
ইতিমধ্যে পিডোর কার্যক্রম বন্ধের জন্য যশোরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি।
যশোর জজ কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী শেখ তাজ হোসেন তাজু বলেন, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী যে কেউই ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে কাজ করতে পারে না। এ জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু নীতিমালা রয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তা না মেনেই অনেক প্রতিষ্ঠান ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে কাজ করছে। তারা কীভাবে এর অনুমোদন পায় তা বোঝা মুশকিল। তেমনি অনুমোদনহীন প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপারে প্রশাসনের ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ।
‘চার বছর আগে আমি ৩ লাখ টাকা সঞ্চয় করি পল্লী অর্থনৈতিক উন্নয়ন সংস্থায় (পিডো)। সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে জমি ও গরু বিক্রি করে টাকা জমা দিয়েছিলাম। স্ট্যাম্পে লিখিত দিয়েছিল, দ্বিগুণ লাভ দেবে। কিন্তু সংস্থাটি এখন উধাও হয়ে গেছে। অফিসে তালা ঝুলছে। আমার এখন কী হবে?’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন যশোর সদরের রুপদিয়ার গৃহবধূ সালমা বেগম।
সমাজসেবা অধিদপ্তর ও এনজিও ব্যুরোর অনুমোদিত পিডোতে লাভের আশায় টাকা সঞ্চয় করেছিলেন তিনি। কিন্তু গ্রাহকের টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে সংস্থাটি। অধিক লাভের কথা বলে যশোরের বিভিন্ন এলাকার মানুষের কাছ থেকে টাকা নেয় সংস্থাটির সভাপতি মাছুদুর রহমান। সংস্থার প্রধান কার্যালয়সহ সবগুলো শাখা কার্যালয় এখন বন্ধ।
ফলে সালমা বেগমের মতো মজিবর রহমান, মালতী দেবীসহ হাজারের অধিক গ্রাহক প্রতারণার শিকার হয়েছেন। অথচ এ সংস্থাটি ঋণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অনুমোদন পেয়েছিল মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি থেকে। শুধু তা-ই নয়, অনুমোদন ছিল সমাজসেবা অধিদপ্তর ও এনজিও ব্যুরো প্রতিষ্ঠানেরও। কিন্তু প্রতারণার শিকার গ্রাহকদের দায়িত্ব নিতে গড়িমসি করছে অনুমোদন দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো। নির্বিকার প্রশাসনও।
গ্রাহক সামলা বেগম বলেন, ‘সরকার সংস্থাটির অনুমোদন দিয়েছে। অনুমোদনের কাগজপত্রও আমাদের দেখানো হয়েছে। এরপরও আমরা বুঝব কীভাবে তারা প্রতারক?’
জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে স্বেচ্ছামূলক সমাজকল্যাণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে সমাজসেবা অধিদপ্তরের নিবন্ধনভুক্ত হয় পিডো। সংস্থার নিবন্ধন নম্বর-৬২০/৯৯। পিডোর প্রধান কার্যালয় সদর উপজেলার রুপদিয়ায়। সে সময় সংস্থাটি শুধু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিসেবেই কাজ করত। ২০১২ সালে এনজিও ব্যুরোর নিবন্ধনভুক্ত হয় সংস্থাটি। যার নিবন্ধন নম্বর-২৬৯৩।
স্থানীয়রা জানান, দুটি নিবন্ধন পাওয়ার পর পিডো সীমিত পরিসরে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম শুরু করে। তখন স্থানীয়রা বাধা দিলে কিছুদিনের জন্য কার্যক্রম বন্ধ রাখে সংস্থাটি। ২০১৫ সালে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি ক্ষুদ্রঋণ পরিচালনার জন্য সাময়িক অনুমোদন দেয়। ঋণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি স্মারক নম্বরও দেয় সংস্থাটিকে; যা ৫৩.০১. ০০০০.০১০. ০১.০০১. ২০১৫-৭৭৮ (৮)। এরপর থেকে শুরু হয় সঞ্চয়ের নামে টাকা সংগ্রহ।
ভুক্তভোগী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘গত বছরের জুন মাসে আমার সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ শেষ হয়। এরপর অফিসে গেলে টালবাহানা শুরু করেন কর্মকর্তারা। ইতি সেন, পল্লবী রায়, মুজিবর রহমানকেও লাভসহ সঞ্চয়ের টাকা ফেরত দিতে একাধিকবার দিন দিলেও টাকা দেয়নি।’
নরেন্দ্রপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোদাচ্ছের আলী বলেন, ‘মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে পিডোর সভাপতি মাসুদুর রহমান নরেন্দ্রপুর ও বসুন্দিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি শাখা খোলেন। সেখানে নিয়োগ দেন অর্ধশতাধিক নারী কর্মীকে। এরপর তাঁদের মাধ্যমে গ্রাহক জোগাড় করেন। তিনটি সরকারি দপ্তরের অনুমোদন থাকায় আমরাও তখন বিষয়টিকে স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছিলাম। কিন্তু দুই-তিন বছর যেতে না যেতেই গ্রাহকেরা হয়রানির অভিযোগ দিতে শুরু করেন। তখন কয়েকটি অভিযোগ সমাধানও করেছি আমরা। কিন্তু এরপর হঠাৎ করেই গত বছর গা ঢাকা দেন সভাপতি।’
যশোর সমাজসেবা অধিদপ্তরের সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. সাঈদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কাছে পিডোর প্রতারণার বিষয়ে একটি অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি আমরা দেখছি। যদি অভিযোগ সত্য হয়, তাহলে নিবন্ধন বাতিল করা হবে।’
মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির উপপরিচালক মো. মিজানুর রহমান খান বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত কমিটি গঠন করি। ওই কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী পিডোর কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপরও সংস্থাটি আবারও অনুমোদন চাইলে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। আর আমরা কেবলই অনুমোদন বাতিল করতে পারি।’
ইতিমধ্যে পিডোর কার্যক্রম বন্ধের জন্য যশোরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি।
যশোর জজ কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী শেখ তাজ হোসেন তাজু বলেন, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী যে কেউই ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে কাজ করতে পারে না। এ জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু নীতিমালা রয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তা না মেনেই অনেক প্রতিষ্ঠান ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে কাজ করছে। তারা কীভাবে এর অনুমোদন পায় তা বোঝা মুশকিল। তেমনি অনুমোদনহীন প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপারে প্রশাসনের ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২ ঘণ্টা আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২ ঘণ্টা আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
২ ঘণ্টা আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ ঘণ্টা আগে