আজকের পত্রিকা: পুরো শিক্ষাব্যবস্থাকে মানসম্পন্ন অবস্থায় আনার জন্য কোন ধরনের পরিবর্তন আনা দরকার এবং কী করা উচিত?
আবুল মোমেন: বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা ব্রিটিশরা চালু করেছিল প্রায় ২০০ বছর আগে। যদিও সেই সময় ছাত্র-শিক্ষকের সংখ্যা বেশি ছিল না। তারা যে কারিকুলাম তৈরি করেছিল তার মধ্য দিয়ে একটা এনলাইটেনমেন্টের সূচনা হয়েছিল। স্বভাবতই ধীরে ধীরে, বিশেষভাবে আমাদের স্বাধীনতার পরে ছাত্রসংখ্যা বাড়তে থাকে।
আশির দশক থেকে আন্তর্জাতিকভাবে সবার জন্য শিক্ষার নীতি গুরুত্ব পেতে থাকে। এ সময় থেকে ছাত্রসংখ্যা বাড়তে থাকল, কিন্তু অবকাঠামো সেভাবে তৈরি করা হয়নি। এরপরে এল সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা। তখন থেকে প্রাথমিকে সবার অন্তর্ভুক্তি অগ্রাধিকার পেয়েছে। কিন্তু শিক্ষার্থী বৃত্তির সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষকের যে ভূমিকাটা আগে ছিল, অর্থাৎ শিক্ষকতাকে পেশা এবং জীবনের ব্রত হিসেবে গ্রহণ করা, সেই জায়গা থেকে ক্রমেই শিক্ষকেরা সরে গেলেন। আবার এত বেশি ছাত্রের কারণে ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাতটাও একেবারে কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলল। একটা সময় আমরা দেখলাম, স্কুল থেকে শিক্ষা কোচিং সেন্টারে চলে গেল, পাঠ্যবইয়ের বদলে নোট-গাইড বই, ক্লাসরুম টিচিংয়ের চেয়ে পরীক্ষা এবং বই পড়ার চেয়ে নোট মুখস্থ করা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল।
এভাবে স্কুল শিক্ষাব্যবস্থা প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়ল। এখান থেকে ফিরে আসতে হলে প্রথমত, শিক্ষার্থীদের জন্য পঠন-পাঠনের গুরুত্ব বাড়াতে হবে, পরীক্ষা ও মুখস্থ নয়। তাদের চিন্তা করা ও তা প্রকাশের সুযোগ দিতে হবে। পড়তে, লিখতে, শুনতে ও বলতে পারার যাবতীয় দক্ষতাকে প্রাইমারি পর্যায়েই সম্পন্ন করতে হবে। সে সবের জন্য ছাত্র-শিক্ষকের যে সরাসরি সম্পর্ক, সেই সুযোগটা তৈরি করতে হবে। এ জন্য নিচের দিকে একজন শিক্ষকের সঙ্গে ২৫-৩০ জনের বেশি শিক্ষার্থী রাখা যাবে না। তারপর যখন একটু বড় হবে তার দক্ষতা ও যোগ্যতা বাড়বে, তখন ৪০-৪৫ জনের শ্রেণিকক্ষ হতে পারে। এখন তো আমরা শুনি একটা শ্রেণিকক্ষে ১০০ বা তারও বেশি শিক্ষার্থীকে পড়ানো হয়। এতে মুখস্থ ও পরীক্ষার মাধ্যমে কেবল মুখস্থ করার শক্তিই যাচাই করা যায়, শিক্ষার্থীর মৌলিক চিন্তাশক্তি বা তা বলে ও লিখে প্রকাশের সামর্থ্য বিচার করা যায় না। শিক্ষার আসল কাজই বাদ পড়ে যায়।
আর মানসম্পন্ন শিক্ষার জন্য মেধাবী শিক্ষকদের এ পেশায় আনতে হবে। তার জন্য স্কুলশিক্ষকদের বেতন-ভাতা বাড়াতে হবে। বেতন-ভাতা এমনভাবে দিতে হবে, যাতে মেধাবীরা আকৃষ্ট হন। আরও একটা বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দেশে প্রশাসনিক ক্ষেত্রে শিক্ষকদের অবস্থান খুবই নিচের দিকে হওয়ায় তাঁদের সামাজিক মর্যাদাও ক্ষুণ্ন হচ্ছে। তাঁদের সামাজিক ও প্রশাসনিক মর্যাদা ওপরের দিকে রাখতে হবে। কারণ, তাঁরা তো মানুষ গড়ার কারিগর। তাঁদের বহু কর্তৃপক্ষের অধীন করে রাখা শিক্ষার দিক থেকে সুষ্ঠু চিন্তা বলে মনে করি না।
আজকের পত্রিকা: সৃজনশীল শিক্ষাব্যবস্থা ব্যর্থ হওয়ার পর নতুন শিক্ষাক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এটা কতটুকু সফল হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে আপনি মনে করেন?
আবুল মোমেন: কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা হবে তাতে সন্দেহ নেই। কারণ, কোনো নতুন পরীক্ষা-নিরীক্ষা সমস্যা ব্যতিরেকে সমাধান হবে না। স্কুলে অনেক ঘাটতি আছে আর ক্ষমতাবানদের অনেক অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ ঘটে আমাদের দেশে। এসব বন্ধ করে স্কুলে মেধাবী তরুণদের আনতে হবে, তাদের প্রশিক্ষণ ও মোটিভেশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
আজকের পত্রিকা: শিক্ষাব্যবস্থায় ধস নেমেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা হয় না—এ রকম বিস্তর অভিযোগ আছে। শিক্ষার্থীরাও পড়াশোনার চেয়ে অন্যান্য দিকে বেশি ব্যস্ত। এ অবস্থায় শিক্ষায়তন থেকে ভালো কিছু আশা করব কীভাবে?
আবুল মোমেন: উচ্চশিক্ষাব্যবস্থায় যে ধস নেমেছে, সেটা বহু বছরের অপরিকল্পিত পথ চলার পুঞ্জীভূত পরিণাম। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যখন বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠা করলেন, তখন তাঁকে একজন জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কাকে বলে?’ তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, ‘যেখানে বিদ্যা উৎপন্ন হয়।’ মানে যেখানে নতুন নতুন জ্ঞান চর্চা হবে এবং সৃষ্টি হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সত্যেন বোস তো আইনস্টাইনের সঙ্গে গবেষণা করেছেন। একসময় তো কাজ হয়েছে। কিন্তু ৩০-৪০ বছর ধরে তেমন উল্লেখযোগ্য কিছু হচ্ছে না।
সবাইকে কেন অনার্স পড়তে হবে, এমএ পাস করতে হবে। এ রকম অপরিকল্পিতভাবে উচ্চশিক্ষা হতে পারে না। আমরা লক্ষ করছি, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে তো ‘যাহা চাই তাহা পাই না, যাহা পাই তাহা চাই না’ এমন অবস্থা বা অব্যবস্থা চলছে। অর্থনীতি পড়তে ইচ্ছুককে দর্শন আর দর্শন পড়তে ইচ্ছুককে পড়তে হচ্ছে চারুকলা! এমন হ-য-ব-র-ল অবস্থায় উচ্চশিক্ষার বেহাল দশাই বাস্তবতা। এই যে একটা অদ্ভুত কাণ্ড যা পড়তে চাই, তা আমি পড়ি না এবং যা পড়তে চাই না, তা-ই পড়তে হয়—এটা তো এমনিতেই ডি-মোটিভেটেড করে দেয়। তারপর এ বিষয়ে কেন ডিগ্রি নিচ্ছে, সেটাও সে জানে না। এসবের সঙ্গে তাদের থাকার ব্যবস্থার ঠিক নেই। আমার ধারণা, ৩০-৪০ হাজার ছাত্র একক প্রশাসনের মাধ্যমে চালানো যায় না। কোনোভাবে পরীক্ষা নিয়ে সনদ দিয়ে, ঘটা করে সমাবর্তন করে অস্তিত্বটা টিকিয়ে রাখা হয়েছে। তাই পুরোটাই অর্থহীন, তাৎপর্যহীন হয়ে পড়েছে। ছাত্ররা ব্যবস্থা ও প্রতিষ্ঠানের ওপর আস্থা ও শ্রদ্ধা হারিয়েছে বলেই তাদের আচরণও সংগতিপূর্ণ হয় না।
এখন আমরা দেখছি, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এক-একটা দুর্গের মতো দাঁড়িয়ে আছে। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে, তখন তাদের ছাত্রসংগঠনের একচেটিয়া প্রতিপত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। আজকাল এ প্রবণতা একই সঙ্গে ছাত্র ও শিক্ষকদের মধ্যে দেখা যায়।
আজকের পত্রিকা: আমরা এখান থেকে কীভাবে উত্তরণ পেতে পারি?
আবুল মোমেন: বিদেশি শিক্ষাব্যবস্থায় যেমন ‘এ’ এবং ‘ও’ লেভেল আছে, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায়ও তেমনি উচ্চমাধ্যমিক বা মাধ্যমিক পর্যায়কে সাজানো যায়। দেখতে হবে সবাই যেন এক মানে শিক্ষা অর্জন করতে পারে। মানসম্পন্নভাবে সবাই এসএসসি-এইচএসসি পাস করতে পারলে নানা ধরনের সুযোগ তাদের জন্য থাকবে। বিভিন্ন কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা নিয়ে তারা ডিগ্রি, ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট কোর্স করবে। যেকোনো বিষয়ে একটা কোর্স সমাপ্ত করে বিভিন্ন ধরনের পেশা বেছে নেবে। আর যারা প্রকৃত জ্ঞান অর্জনে উৎসাহী, তার জন্য প্রস্তুত, তারা পছন্দের বিষয়ে অনার্স-মাস্টার্স করবে—এটাই হলো সহজ হিসাব।
‘এইচএসসি’র একটা স্ট্যান্ডার্ড সিলেবাস দাঁড় করাতে হবে। তার সুষ্ঠুপাঠ সম্পন্ন করার দায়িত্ব নিতে হবে রাষ্ট্রকে। এভাবে দাঁড় করাতে পারলে এ পর্যায় শেষ করতে করতে শিক্ষার্থীরা বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞানের বিষয়গুলো সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান অর্জন করতে পারবে। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমাজ, ইতিহাস, শিল্পকলাসহ নানা বিদ্যাচর্চা ও খেলাধুলাসহ অন্যান্য সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সুযোগ ও এর জন্য উৎসাহব্যঞ্জক পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে। এ বিষয়গুলো আগে নিশ্চিত করা জরুরি। এসব করতে পারলে শিক্ষা নিয়ে পণ্ডশ্রম ও অদ্ভুত কাণ্ড রোধ করা যাবে বলে আমি আশাবাদী।
এখন তো কেউ কেউ পেশা-সম্পর্কিত কিছু বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকে। এসব প্রশিক্ষণের জন্য আলাদা ইনস্টিটিউট তৈরি করতে হবে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চতর পড়াশোনার পাশাপাশি এ রকম পেশা-সম্পর্কিত বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে পারে। মানুষ তো প্রচুর টাকা খরচ করে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ও প্রাইভেট মেডিকেলে সন্তানদের পড়াচ্ছে। কিন্তু এ সবের অধিকাংশ জায়গায় প্রকৃত শিক্ষা নিশ্চিত হচ্ছে না। ফলে এসব নিয়ে একটা পরিকল্পনা করতে হবে। সরকারের যেমন অর্থের অপচয় বন্ধ করতে হবে, তেমনি মানুষেরও টাকা, সময়, শ্রম ও প্রতিভার অপচয় রোধ করতে হবে।
কথা হলো আমি আমার জাতিকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছি। তাদের জন্য প্রথম ‘কোয়ালিটি এডুকেশনের’ ভিত্তি নিশ্চিত করতে হবে। পুরো জাতির জন্য এইচএসসি পর্যন্ত—এটা নিশ্চিত করতে হবে। এ পর্যন্ত আগে সাজাতে হবে, তারপর ওপরের দিকে নজর দিলে ফল মিলবে।
আজকের পত্রিকা: আপনাদের ‘ফুলকি’ নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল, সেটা কতটা সফল হয়েছে বলে মনে করেন?
আবুল মোমেন: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যদি ধরি, তাহলে এটা ক্ষুদ্র একটা প্রতিষ্ঠান। এ দেশে এখন সাড়ে চার কোটি স্কুলগামী শিশু আছে। আর আমাদের প্রতিষ্ঠানে মাত্র হাজারখানেক শিশু পড়াশোনা করে। আমাদের সাংস্কৃতিক স্কুলে আরও শপাঁচেক শিশু আছে। আমরা মূলত শিশুশিক্ষা ও শিশুর বিকাশ নিয়ে একটা কনসেপ্ট বা ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। আমরা ছাত্র-শিক্ষক অনুপাতের কথা তুলেছি, মূল্যায়নের কথা বলেছি, শিক্ষার সঙ্গে সংস্কৃতিচর্চার গুরুত্ব তুলে ধরেছি।
আমাদের কথা হলো, পড়াশোনার সঙ্গে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড অঙ্গাঙ্গিভাবে থাকতে হবে। বিজ্ঞান শিক্ষার সঙ্গে ল্যাবরেটরির ব্যবহার প্রাইমারি পর্যায় থেকেই থাকা দরকার। এ নিয়ে আমরা কথা বলছি। সরকারও নানা সংস্কারের কথা ভাবছে। আমরা ১৯৮১ সাল থেকে বলে আসছি, অন্তত প্রাথমিক পর্যন্ত পরীক্ষা ও ১ম, ২য় স্থান নির্ধারণ ঠিক না। কারণ এ পর্যায়ে তারা মাত্র তৈরি হচ্ছে। এখন পরীক্ষা নিয়ে স্থান নির্ধারণ করে দেওয়া বাতুলতা। তবে ধারাবাহিক মূল্যায়ন থাকতে হবে, যা প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য করণীয় নির্ধারণে শিক্ষককে সহায়তা দেবে। আমরা কোনো শিশুকে খারাপ বলি না। বলি তোমাকে আরও ভালো করতে হবে। প্রথম পর্যায়ে অধিকাংশ স্কুলের প্রধান শিক্ষক, অভিভাবক, সংশ্লিষ্টরা এভাবে মূল্যায়ন করাটাকে গ্রহণ করতে পারতেন না। এখন কিন্তু গ্রহণ করা হচ্ছে।
সরকারের নতুন শিক্ষাক্রমে তো আমাদের ভাবনার অনেক প্রতিফলন দেখতে পাই। শিক্ষাটা ছাত্রকেন্দ্রিক করতে হবে, কোনোভাবেই শিক্ষককেন্দ্রিক না। শিক্ষক ক্লাসের অধিপতি হয়ে ছাত্রদের নির্দেশ দিতে থাকবেন আর ছাত্ররা সেটা অনুসরণ করবে, তা ঠিক নয়। সে জন্য আমরা প্রথম থেকেই শ্রেণি কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর চেষ্টা করেছি। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড যে জরুরি, সেটা বর্তমানে সরকারও স্বীকার করছে।
কিন্তু সবকিছু একবারে হয়ে যাবে, সেটা তো সম্ভব নয়। ভালো শিক্ষকের অভাব ও কাঠামোগত সমস্যা তো আছেই। সব দিকে নজর দিতে হবে। শেষ কথা বলি যে শিক্ষার উন্নয়নের জন্য পদ্মা সেতুর মতোই একটি মেগা প্রকল্প দরকার। সরকারের কাছে সেই দাবিটিই জানাব।
আজকের পত্রিকা: সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আবুল মোমেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।
আজকের পত্রিকা: পুরো শিক্ষাব্যবস্থাকে মানসম্পন্ন অবস্থায় আনার জন্য কোন ধরনের পরিবর্তন আনা দরকার এবং কী করা উচিত?
আবুল মোমেন: বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা ব্রিটিশরা চালু করেছিল প্রায় ২০০ বছর আগে। যদিও সেই সময় ছাত্র-শিক্ষকের সংখ্যা বেশি ছিল না। তারা যে কারিকুলাম তৈরি করেছিল তার মধ্য দিয়ে একটা এনলাইটেনমেন্টের সূচনা হয়েছিল। স্বভাবতই ধীরে ধীরে, বিশেষভাবে আমাদের স্বাধীনতার পরে ছাত্রসংখ্যা বাড়তে থাকে।
আশির দশক থেকে আন্তর্জাতিকভাবে সবার জন্য শিক্ষার নীতি গুরুত্ব পেতে থাকে। এ সময় থেকে ছাত্রসংখ্যা বাড়তে থাকল, কিন্তু অবকাঠামো সেভাবে তৈরি করা হয়নি। এরপরে এল সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা। তখন থেকে প্রাথমিকে সবার অন্তর্ভুক্তি অগ্রাধিকার পেয়েছে। কিন্তু শিক্ষার্থী বৃত্তির সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষকের যে ভূমিকাটা আগে ছিল, অর্থাৎ শিক্ষকতাকে পেশা এবং জীবনের ব্রত হিসেবে গ্রহণ করা, সেই জায়গা থেকে ক্রমেই শিক্ষকেরা সরে গেলেন। আবার এত বেশি ছাত্রের কারণে ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাতটাও একেবারে কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলল। একটা সময় আমরা দেখলাম, স্কুল থেকে শিক্ষা কোচিং সেন্টারে চলে গেল, পাঠ্যবইয়ের বদলে নোট-গাইড বই, ক্লাসরুম টিচিংয়ের চেয়ে পরীক্ষা এবং বই পড়ার চেয়ে নোট মুখস্থ করা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল।
এভাবে স্কুল শিক্ষাব্যবস্থা প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়ল। এখান থেকে ফিরে আসতে হলে প্রথমত, শিক্ষার্থীদের জন্য পঠন-পাঠনের গুরুত্ব বাড়াতে হবে, পরীক্ষা ও মুখস্থ নয়। তাদের চিন্তা করা ও তা প্রকাশের সুযোগ দিতে হবে। পড়তে, লিখতে, শুনতে ও বলতে পারার যাবতীয় দক্ষতাকে প্রাইমারি পর্যায়েই সম্পন্ন করতে হবে। সে সবের জন্য ছাত্র-শিক্ষকের যে সরাসরি সম্পর্ক, সেই সুযোগটা তৈরি করতে হবে। এ জন্য নিচের দিকে একজন শিক্ষকের সঙ্গে ২৫-৩০ জনের বেশি শিক্ষার্থী রাখা যাবে না। তারপর যখন একটু বড় হবে তার দক্ষতা ও যোগ্যতা বাড়বে, তখন ৪০-৪৫ জনের শ্রেণিকক্ষ হতে পারে। এখন তো আমরা শুনি একটা শ্রেণিকক্ষে ১০০ বা তারও বেশি শিক্ষার্থীকে পড়ানো হয়। এতে মুখস্থ ও পরীক্ষার মাধ্যমে কেবল মুখস্থ করার শক্তিই যাচাই করা যায়, শিক্ষার্থীর মৌলিক চিন্তাশক্তি বা তা বলে ও লিখে প্রকাশের সামর্থ্য বিচার করা যায় না। শিক্ষার আসল কাজই বাদ পড়ে যায়।
আর মানসম্পন্ন শিক্ষার জন্য মেধাবী শিক্ষকদের এ পেশায় আনতে হবে। তার জন্য স্কুলশিক্ষকদের বেতন-ভাতা বাড়াতে হবে। বেতন-ভাতা এমনভাবে দিতে হবে, যাতে মেধাবীরা আকৃষ্ট হন। আরও একটা বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দেশে প্রশাসনিক ক্ষেত্রে শিক্ষকদের অবস্থান খুবই নিচের দিকে হওয়ায় তাঁদের সামাজিক মর্যাদাও ক্ষুণ্ন হচ্ছে। তাঁদের সামাজিক ও প্রশাসনিক মর্যাদা ওপরের দিকে রাখতে হবে। কারণ, তাঁরা তো মানুষ গড়ার কারিগর। তাঁদের বহু কর্তৃপক্ষের অধীন করে রাখা শিক্ষার দিক থেকে সুষ্ঠু চিন্তা বলে মনে করি না।
আজকের পত্রিকা: সৃজনশীল শিক্ষাব্যবস্থা ব্যর্থ হওয়ার পর নতুন শিক্ষাক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এটা কতটুকু সফল হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে আপনি মনে করেন?
আবুল মোমেন: কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা হবে তাতে সন্দেহ নেই। কারণ, কোনো নতুন পরীক্ষা-নিরীক্ষা সমস্যা ব্যতিরেকে সমাধান হবে না। স্কুলে অনেক ঘাটতি আছে আর ক্ষমতাবানদের অনেক অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ ঘটে আমাদের দেশে। এসব বন্ধ করে স্কুলে মেধাবী তরুণদের আনতে হবে, তাদের প্রশিক্ষণ ও মোটিভেশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
আজকের পত্রিকা: শিক্ষাব্যবস্থায় ধস নেমেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা হয় না—এ রকম বিস্তর অভিযোগ আছে। শিক্ষার্থীরাও পড়াশোনার চেয়ে অন্যান্য দিকে বেশি ব্যস্ত। এ অবস্থায় শিক্ষায়তন থেকে ভালো কিছু আশা করব কীভাবে?
আবুল মোমেন: উচ্চশিক্ষাব্যবস্থায় যে ধস নেমেছে, সেটা বহু বছরের অপরিকল্পিত পথ চলার পুঞ্জীভূত পরিণাম। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যখন বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠা করলেন, তখন তাঁকে একজন জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কাকে বলে?’ তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, ‘যেখানে বিদ্যা উৎপন্ন হয়।’ মানে যেখানে নতুন নতুন জ্ঞান চর্চা হবে এবং সৃষ্টি হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সত্যেন বোস তো আইনস্টাইনের সঙ্গে গবেষণা করেছেন। একসময় তো কাজ হয়েছে। কিন্তু ৩০-৪০ বছর ধরে তেমন উল্লেখযোগ্য কিছু হচ্ছে না।
সবাইকে কেন অনার্স পড়তে হবে, এমএ পাস করতে হবে। এ রকম অপরিকল্পিতভাবে উচ্চশিক্ষা হতে পারে না। আমরা লক্ষ করছি, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে তো ‘যাহা চাই তাহা পাই না, যাহা পাই তাহা চাই না’ এমন অবস্থা বা অব্যবস্থা চলছে। অর্থনীতি পড়তে ইচ্ছুককে দর্শন আর দর্শন পড়তে ইচ্ছুককে পড়তে হচ্ছে চারুকলা! এমন হ-য-ব-র-ল অবস্থায় উচ্চশিক্ষার বেহাল দশাই বাস্তবতা। এই যে একটা অদ্ভুত কাণ্ড যা পড়তে চাই, তা আমি পড়ি না এবং যা পড়তে চাই না, তা-ই পড়তে হয়—এটা তো এমনিতেই ডি-মোটিভেটেড করে দেয়। তারপর এ বিষয়ে কেন ডিগ্রি নিচ্ছে, সেটাও সে জানে না। এসবের সঙ্গে তাদের থাকার ব্যবস্থার ঠিক নেই। আমার ধারণা, ৩০-৪০ হাজার ছাত্র একক প্রশাসনের মাধ্যমে চালানো যায় না। কোনোভাবে পরীক্ষা নিয়ে সনদ দিয়ে, ঘটা করে সমাবর্তন করে অস্তিত্বটা টিকিয়ে রাখা হয়েছে। তাই পুরোটাই অর্থহীন, তাৎপর্যহীন হয়ে পড়েছে। ছাত্ররা ব্যবস্থা ও প্রতিষ্ঠানের ওপর আস্থা ও শ্রদ্ধা হারিয়েছে বলেই তাদের আচরণও সংগতিপূর্ণ হয় না।
এখন আমরা দেখছি, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এক-একটা দুর্গের মতো দাঁড়িয়ে আছে। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে, তখন তাদের ছাত্রসংগঠনের একচেটিয়া প্রতিপত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। আজকাল এ প্রবণতা একই সঙ্গে ছাত্র ও শিক্ষকদের মধ্যে দেখা যায়।
আজকের পত্রিকা: আমরা এখান থেকে কীভাবে উত্তরণ পেতে পারি?
আবুল মোমেন: বিদেশি শিক্ষাব্যবস্থায় যেমন ‘এ’ এবং ‘ও’ লেভেল আছে, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায়ও তেমনি উচ্চমাধ্যমিক বা মাধ্যমিক পর্যায়কে সাজানো যায়। দেখতে হবে সবাই যেন এক মানে শিক্ষা অর্জন করতে পারে। মানসম্পন্নভাবে সবাই এসএসসি-এইচএসসি পাস করতে পারলে নানা ধরনের সুযোগ তাদের জন্য থাকবে। বিভিন্ন কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা নিয়ে তারা ডিগ্রি, ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট কোর্স করবে। যেকোনো বিষয়ে একটা কোর্স সমাপ্ত করে বিভিন্ন ধরনের পেশা বেছে নেবে। আর যারা প্রকৃত জ্ঞান অর্জনে উৎসাহী, তার জন্য প্রস্তুত, তারা পছন্দের বিষয়ে অনার্স-মাস্টার্স করবে—এটাই হলো সহজ হিসাব।
‘এইচএসসি’র একটা স্ট্যান্ডার্ড সিলেবাস দাঁড় করাতে হবে। তার সুষ্ঠুপাঠ সম্পন্ন করার দায়িত্ব নিতে হবে রাষ্ট্রকে। এভাবে দাঁড় করাতে পারলে এ পর্যায় শেষ করতে করতে শিক্ষার্থীরা বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞানের বিষয়গুলো সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান অর্জন করতে পারবে। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমাজ, ইতিহাস, শিল্পকলাসহ নানা বিদ্যাচর্চা ও খেলাধুলাসহ অন্যান্য সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সুযোগ ও এর জন্য উৎসাহব্যঞ্জক পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে। এ বিষয়গুলো আগে নিশ্চিত করা জরুরি। এসব করতে পারলে শিক্ষা নিয়ে পণ্ডশ্রম ও অদ্ভুত কাণ্ড রোধ করা যাবে বলে আমি আশাবাদী।
এখন তো কেউ কেউ পেশা-সম্পর্কিত কিছু বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকে। এসব প্রশিক্ষণের জন্য আলাদা ইনস্টিটিউট তৈরি করতে হবে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চতর পড়াশোনার পাশাপাশি এ রকম পেশা-সম্পর্কিত বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে পারে। মানুষ তো প্রচুর টাকা খরচ করে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ও প্রাইভেট মেডিকেলে সন্তানদের পড়াচ্ছে। কিন্তু এ সবের অধিকাংশ জায়গায় প্রকৃত শিক্ষা নিশ্চিত হচ্ছে না। ফলে এসব নিয়ে একটা পরিকল্পনা করতে হবে। সরকারের যেমন অর্থের অপচয় বন্ধ করতে হবে, তেমনি মানুষেরও টাকা, সময়, শ্রম ও প্রতিভার অপচয় রোধ করতে হবে।
কথা হলো আমি আমার জাতিকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছি। তাদের জন্য প্রথম ‘কোয়ালিটি এডুকেশনের’ ভিত্তি নিশ্চিত করতে হবে। পুরো জাতির জন্য এইচএসসি পর্যন্ত—এটা নিশ্চিত করতে হবে। এ পর্যন্ত আগে সাজাতে হবে, তারপর ওপরের দিকে নজর দিলে ফল মিলবে।
আজকের পত্রিকা: আপনাদের ‘ফুলকি’ নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল, সেটা কতটা সফল হয়েছে বলে মনে করেন?
আবুল মোমেন: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যদি ধরি, তাহলে এটা ক্ষুদ্র একটা প্রতিষ্ঠান। এ দেশে এখন সাড়ে চার কোটি স্কুলগামী শিশু আছে। আর আমাদের প্রতিষ্ঠানে মাত্র হাজারখানেক শিশু পড়াশোনা করে। আমাদের সাংস্কৃতিক স্কুলে আরও শপাঁচেক শিশু আছে। আমরা মূলত শিশুশিক্ষা ও শিশুর বিকাশ নিয়ে একটা কনসেপ্ট বা ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। আমরা ছাত্র-শিক্ষক অনুপাতের কথা তুলেছি, মূল্যায়নের কথা বলেছি, শিক্ষার সঙ্গে সংস্কৃতিচর্চার গুরুত্ব তুলে ধরেছি।
আমাদের কথা হলো, পড়াশোনার সঙ্গে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড অঙ্গাঙ্গিভাবে থাকতে হবে। বিজ্ঞান শিক্ষার সঙ্গে ল্যাবরেটরির ব্যবহার প্রাইমারি পর্যায় থেকেই থাকা দরকার। এ নিয়ে আমরা কথা বলছি। সরকারও নানা সংস্কারের কথা ভাবছে। আমরা ১৯৮১ সাল থেকে বলে আসছি, অন্তত প্রাথমিক পর্যন্ত পরীক্ষা ও ১ম, ২য় স্থান নির্ধারণ ঠিক না। কারণ এ পর্যায়ে তারা মাত্র তৈরি হচ্ছে। এখন পরীক্ষা নিয়ে স্থান নির্ধারণ করে দেওয়া বাতুলতা। তবে ধারাবাহিক মূল্যায়ন থাকতে হবে, যা প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য করণীয় নির্ধারণে শিক্ষককে সহায়তা দেবে। আমরা কোনো শিশুকে খারাপ বলি না। বলি তোমাকে আরও ভালো করতে হবে। প্রথম পর্যায়ে অধিকাংশ স্কুলের প্রধান শিক্ষক, অভিভাবক, সংশ্লিষ্টরা এভাবে মূল্যায়ন করাটাকে গ্রহণ করতে পারতেন না। এখন কিন্তু গ্রহণ করা হচ্ছে।
সরকারের নতুন শিক্ষাক্রমে তো আমাদের ভাবনার অনেক প্রতিফলন দেখতে পাই। শিক্ষাটা ছাত্রকেন্দ্রিক করতে হবে, কোনোভাবেই শিক্ষককেন্দ্রিক না। শিক্ষক ক্লাসের অধিপতি হয়ে ছাত্রদের নির্দেশ দিতে থাকবেন আর ছাত্ররা সেটা অনুসরণ করবে, তা ঠিক নয়। সে জন্য আমরা প্রথম থেকেই শ্রেণি কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর চেষ্টা করেছি। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড যে জরুরি, সেটা বর্তমানে সরকারও স্বীকার করছে।
কিন্তু সবকিছু একবারে হয়ে যাবে, সেটা তো সম্ভব নয়। ভালো শিক্ষকের অভাব ও কাঠামোগত সমস্যা তো আছেই। সব দিকে নজর দিতে হবে। শেষ কথা বলি যে শিক্ষার উন্নয়নের জন্য পদ্মা সেতুর মতোই একটি মেগা প্রকল্প দরকার। সরকারের কাছে সেই দাবিটিই জানাব।
আজকের পত্রিকা: সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আবুল মোমেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৮ ঘণ্টা আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৮ ঘণ্টা আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৮ ঘণ্টা আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৯ ঘণ্টা আগে