রজত কান্তি রায়, ঢাকা
পাকোড়া কিংবা চটপটি আমাদের এ অঞ্চল অর্থাৎ ভারত উপমহাদেশের খাবার। এখান থেকে এই সুস্বাদু খাবারগুলো বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বারো শতকের কিছু বইয়ে পাকোড়ার উল্লেখ পাওয়া গেলেও চটপটি ঠিক কত প্রাচীন, তা জানা যায় না।
এখনকার বিকেলগুলো বেশ ভয়ংকর হয়ে উঠেছে! একে তো পৌষ মাস। দুপুরের পর থেকেই মনে হয়, এই শীতে ধরল! তার ওপর আছে চোখ আর নাকে দর্শন ও ঘ্রাণজনিত অত্যাচার। পাড়ার মোড়ে মোড়ে কেমন বেকুবের মতো বসে গেছে চটপটির গাড়ি, পাকোড়ার ঠেলা!কোনটা ছেড়ে কোনটা খাই ভাবতে ভাবতে কখন যে নির্লজ্জের মতো চটপটির গাড়ির সামনে হাজির হয়ে যাই, বোঝা বড় দায়।
এক প্লেট উবে যাওয়ার পর কঠিন ডায়েট মেনে চলা মগজ সিগন্যাল পাঠাতে শুরু করে—এবার থাম বৎস। আর অমনি চোখে পড়ে পাশের দোকানের বড় থালায় নামছে গরমাগরম তাজা শাক বা সবজির পাকোড়া। মগজের কথা বাদ দিয়ে তখন হৃদয়ের কথা শুনি। বে-তমিজ দিল একটার পর একটা পাকোড়া খাওয়ার সাজেশন পাঠিয়েই যায়, পাঠিয়েই যায়! আমি তখন নিরুপায়। অবশেষে ক্লান্ত হয়ে গেলে, পৌষের হিম হয়ে নামে কাক। আমি তখন অবাক!
শীত এলে স্বাদ কোড়কগুলো কেমন যেন ডানা মেলতে শুরু করে। তাদের আর দোষ কী। তাজা খাবারদাবার দেখে কারবা মাথা ঠিক থাকে। তবে হ্যাঁ, এখানে হালকা পেঁপে কালারের মতো হালকা বিজ্ঞান জড়িত। শীতের দিনে সূর্যের আলো কম থাকায় শরীরে সেরোটোনিন নামের হরমোনটির মাত্রা কমে যায়। সেরোটোনিন একটি নিউরো ট্রান্সমিটার, যা প্রাকৃতিকভাবে আমাদের ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে। অন্যদিকে, চর্বিজাতীয় খাবারে থাকা ট্রিপ্টোফ্যান সেরোটোনিন বৃদ্ধি করে। ফলে শরীরের ভারসাম্য রক্ষার জন্য আমাদের চর্বিজাতীয় খাবার খেতে ইচ্ছে হয়। তাই এসব চটপটি বা পাকোড়ার মতো খাবারের ছবি চোখে ভাসে সারাক্ষণ।
যাহোক, এসব বিজ্ঞান-টিজ্ঞানের ধার না ধেরে মনের আনন্দে না হলেও জিভের আনন্দে খেয়ে যান। যা বলছিলাম, চটপটি না পাকোড়া এ দুইয়ের মধ্যে কোনো একটিকে বেছে নেওয়া আমার পক্ষে কঠিন। সুসিদ্ধ ডাল কিংবা মটরশুঁটি আর আলুর ওপর অভ্র চূর্ণের মতো ডিমের ফালি, তার ওপর কুচি কুচি করে কেটে দেওয়া সবুজ তাজা মরিচ, বিট লবণ আর ছিটিয়ে দেওয়া ধনেপাতার হাতছানি উপেক্ষা করা আমার পক্ষে কঠিন। ঠিক তেমনি বেসনের ব্যাটারে তাজা সবজি বা শাক কেটে দিয়ে ডুবো তেলে ছেঁকে তোলা গাঢ় খয়েরি পাকোড়ার ইশারা উপেক্ষা করাও আমার পক্ষে কঠিন। সঙ্গে যদি থাকে একটুখানি টক বা ঝাল চাটনি, তাহলে এই ডিসেম্বরের শীতে ব্রহ্মপুত্রে স্নান করাও আমার পক্ষে অসম্ভব কিছু নয়! পাকোড়ার একটি দেশীয় সংস্করণ আছে। সেটা বানানো হয় লম্বা লম্বা মরিচ বা পুরো ধনেগাছ বেসনের ব্যাটারে ডুবিয়ে ডুবে তেলে ভেজে নিয়ে। সব জায়গায় পাওয়া যায় না অবশ্য। দিনাজপুরের একটি হাটে প্রথম খেয়েছিলাম এটি।তারপর আর ছাড়া হয়নি।
তবে হ্যাঁ, বিষয় হলো, যতটা সম্ভব তাজা আর স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া যায়, ততই ভালো। মৌসুমি শাকসবজি ব্যবহার করে এই খাবারগুলোকে বেশ খানিকটা স্বাস্থ্যকর করে তোলা যায়।
মটরশুঁটির চটপটি
উপকরণ
মটরশুঁটি ১ কেজি, আলু ৫০০ গ্রাম, সেদ্ধ ডিম ২টি, তেঁতুল ৫০ গ্রাম, লেবু ১টি, লবণ স্বাদমতো, কাঁচা মরিচ ৩-৪টি, গোলমরিচ ২ চা-চামচ, চিনি ২ চা-চামচ, ফুচকা ১০-১২টি, সালাদের জন্য ধনেপাতা, টমেটো, শসা ও গাজরকুচি ১ বাটি, ধনের গুঁড়ো, জিরা, কালোজিরা, শুকনো মরিচের গুঁড়ে ৪ টেবিল চামচ বা স্বাদমতো, বিট লবণ পরিমাণমতো।
প্রণালি
আলু ও ডিম সেদ্ধ করে নিন। মটরশুঁটি ছুলে নিয়ে লবণ ও অর্ধেক পরিমাণ মসলা দিয়ে সেদ্ধ করে নিন। মটরশুঁটি আধা সেদ্ধ হয়ে গেলে আলু চটকে তাতে দিয়ে দিন। তেঁতুল গুলে তাতে অল্প করে ভাজা মসলা, লবণ ও চিনি দিন। মটরশুঁটি ও আলু সেদ্ধ হয়ে মাখামাখি হয়ে এলে স্বাদমতো বাকি মসলা ও তেঁতুলের পানি দিয়ে দিন। সালাদে কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ ও লেবুর রস মিশিয়ে নিন। সেদ্ধ ডিম কুচি করে কেটে নিন। এবার একটি বাটিতে মটরশুঁটি, আলু সেদ্ধ, সালাদ, ডিমের টুকরো ও ফুচকা দিয়ে পরিবেশন করুন।
রেসিপি: সোনিয়া নাছরিন সিমি
সরিষা ফুলের পাকোড়া
উপকরণ
পরিমাণমতো সরিষা ফুল, দুটো পেঁয়াজকুচি, ৪-৫টি কাঁচা মরিচকুচি, স্বাদমতো লবণ, ১ চা-চামচ মরিচের গুঁড়ো, সামান্য জিরার গুঁড়ো, ১ টেবিল চামচ বেসন, ১ টেবিল চামচ কর্নফ্লাওয়ার বা চালের গুঁড়ো।
প্রণালি
সব একসঙ্গে মাখিয়ে নিয়ে গোল আকার দিন। এরপর ফ্রাই প্যানে তেল গরম করে মাঝারি আঁচে ভেজে নিন। ডুবো তেলে ভাজা যাবে না। লাল হয়ে এলে নামিয়ে ফেলুন। টমেটো চাকা করে কেটে সাজিয়ে নিয়ে পরিবেশন করুন।
রেসিপি: হেলমি রশিদ
পাকোড়া কিংবা চটপটি আমাদের এ অঞ্চল অর্থাৎ ভারত উপমহাদেশের খাবার। এখান থেকে এই সুস্বাদু খাবারগুলো বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বারো শতকের কিছু বইয়ে পাকোড়ার উল্লেখ পাওয়া গেলেও চটপটি ঠিক কত প্রাচীন, তা জানা যায় না।
এখনকার বিকেলগুলো বেশ ভয়ংকর হয়ে উঠেছে! একে তো পৌষ মাস। দুপুরের পর থেকেই মনে হয়, এই শীতে ধরল! তার ওপর আছে চোখ আর নাকে দর্শন ও ঘ্রাণজনিত অত্যাচার। পাড়ার মোড়ে মোড়ে কেমন বেকুবের মতো বসে গেছে চটপটির গাড়ি, পাকোড়ার ঠেলা!কোনটা ছেড়ে কোনটা খাই ভাবতে ভাবতে কখন যে নির্লজ্জের মতো চটপটির গাড়ির সামনে হাজির হয়ে যাই, বোঝা বড় দায়।
এক প্লেট উবে যাওয়ার পর কঠিন ডায়েট মেনে চলা মগজ সিগন্যাল পাঠাতে শুরু করে—এবার থাম বৎস। আর অমনি চোখে পড়ে পাশের দোকানের বড় থালায় নামছে গরমাগরম তাজা শাক বা সবজির পাকোড়া। মগজের কথা বাদ দিয়ে তখন হৃদয়ের কথা শুনি। বে-তমিজ দিল একটার পর একটা পাকোড়া খাওয়ার সাজেশন পাঠিয়েই যায়, পাঠিয়েই যায়! আমি তখন নিরুপায়। অবশেষে ক্লান্ত হয়ে গেলে, পৌষের হিম হয়ে নামে কাক। আমি তখন অবাক!
শীত এলে স্বাদ কোড়কগুলো কেমন যেন ডানা মেলতে শুরু করে। তাদের আর দোষ কী। তাজা খাবারদাবার দেখে কারবা মাথা ঠিক থাকে। তবে হ্যাঁ, এখানে হালকা পেঁপে কালারের মতো হালকা বিজ্ঞান জড়িত। শীতের দিনে সূর্যের আলো কম থাকায় শরীরে সেরোটোনিন নামের হরমোনটির মাত্রা কমে যায়। সেরোটোনিন একটি নিউরো ট্রান্সমিটার, যা প্রাকৃতিকভাবে আমাদের ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে। অন্যদিকে, চর্বিজাতীয় খাবারে থাকা ট্রিপ্টোফ্যান সেরোটোনিন বৃদ্ধি করে। ফলে শরীরের ভারসাম্য রক্ষার জন্য আমাদের চর্বিজাতীয় খাবার খেতে ইচ্ছে হয়। তাই এসব চটপটি বা পাকোড়ার মতো খাবারের ছবি চোখে ভাসে সারাক্ষণ।
যাহোক, এসব বিজ্ঞান-টিজ্ঞানের ধার না ধেরে মনের আনন্দে না হলেও জিভের আনন্দে খেয়ে যান। যা বলছিলাম, চটপটি না পাকোড়া এ দুইয়ের মধ্যে কোনো একটিকে বেছে নেওয়া আমার পক্ষে কঠিন। সুসিদ্ধ ডাল কিংবা মটরশুঁটি আর আলুর ওপর অভ্র চূর্ণের মতো ডিমের ফালি, তার ওপর কুচি কুচি করে কেটে দেওয়া সবুজ তাজা মরিচ, বিট লবণ আর ছিটিয়ে দেওয়া ধনেপাতার হাতছানি উপেক্ষা করা আমার পক্ষে কঠিন। ঠিক তেমনি বেসনের ব্যাটারে তাজা সবজি বা শাক কেটে দিয়ে ডুবো তেলে ছেঁকে তোলা গাঢ় খয়েরি পাকোড়ার ইশারা উপেক্ষা করাও আমার পক্ষে কঠিন। সঙ্গে যদি থাকে একটুখানি টক বা ঝাল চাটনি, তাহলে এই ডিসেম্বরের শীতে ব্রহ্মপুত্রে স্নান করাও আমার পক্ষে অসম্ভব কিছু নয়! পাকোড়ার একটি দেশীয় সংস্করণ আছে। সেটা বানানো হয় লম্বা লম্বা মরিচ বা পুরো ধনেগাছ বেসনের ব্যাটারে ডুবিয়ে ডুবে তেলে ভেজে নিয়ে। সব জায়গায় পাওয়া যায় না অবশ্য। দিনাজপুরের একটি হাটে প্রথম খেয়েছিলাম এটি।তারপর আর ছাড়া হয়নি।
তবে হ্যাঁ, বিষয় হলো, যতটা সম্ভব তাজা আর স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া যায়, ততই ভালো। মৌসুমি শাকসবজি ব্যবহার করে এই খাবারগুলোকে বেশ খানিকটা স্বাস্থ্যকর করে তোলা যায়।
মটরশুঁটির চটপটি
উপকরণ
মটরশুঁটি ১ কেজি, আলু ৫০০ গ্রাম, সেদ্ধ ডিম ২টি, তেঁতুল ৫০ গ্রাম, লেবু ১টি, লবণ স্বাদমতো, কাঁচা মরিচ ৩-৪টি, গোলমরিচ ২ চা-চামচ, চিনি ২ চা-চামচ, ফুচকা ১০-১২টি, সালাদের জন্য ধনেপাতা, টমেটো, শসা ও গাজরকুচি ১ বাটি, ধনের গুঁড়ো, জিরা, কালোজিরা, শুকনো মরিচের গুঁড়ে ৪ টেবিল চামচ বা স্বাদমতো, বিট লবণ পরিমাণমতো।
প্রণালি
আলু ও ডিম সেদ্ধ করে নিন। মটরশুঁটি ছুলে নিয়ে লবণ ও অর্ধেক পরিমাণ মসলা দিয়ে সেদ্ধ করে নিন। মটরশুঁটি আধা সেদ্ধ হয়ে গেলে আলু চটকে তাতে দিয়ে দিন। তেঁতুল গুলে তাতে অল্প করে ভাজা মসলা, লবণ ও চিনি দিন। মটরশুঁটি ও আলু সেদ্ধ হয়ে মাখামাখি হয়ে এলে স্বাদমতো বাকি মসলা ও তেঁতুলের পানি দিয়ে দিন। সালাদে কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ ও লেবুর রস মিশিয়ে নিন। সেদ্ধ ডিম কুচি করে কেটে নিন। এবার একটি বাটিতে মটরশুঁটি, আলু সেদ্ধ, সালাদ, ডিমের টুকরো ও ফুচকা দিয়ে পরিবেশন করুন।
রেসিপি: সোনিয়া নাছরিন সিমি
সরিষা ফুলের পাকোড়া
উপকরণ
পরিমাণমতো সরিষা ফুল, দুটো পেঁয়াজকুচি, ৪-৫টি কাঁচা মরিচকুচি, স্বাদমতো লবণ, ১ চা-চামচ মরিচের গুঁড়ো, সামান্য জিরার গুঁড়ো, ১ টেবিল চামচ বেসন, ১ টেবিল চামচ কর্নফ্লাওয়ার বা চালের গুঁড়ো।
প্রণালি
সব একসঙ্গে মাখিয়ে নিয়ে গোল আকার দিন। এরপর ফ্রাই প্যানে তেল গরম করে মাঝারি আঁচে ভেজে নিন। ডুবো তেলে ভাজা যাবে না। লাল হয়ে এলে নামিয়ে ফেলুন। টমেটো চাকা করে কেটে সাজিয়ে নিয়ে পরিবেশন করুন।
রেসিপি: হেলমি রশিদ
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে