শামীম রেজা, রাজবাড়ী
তাঁতযন্ত্রের পাদানিতে একবার করে পাড়া দিচ্ছিলেন আর হাতে থাকা কাচের বোতল দিয়ে বুনন করে চলা সুতার ওপর দিচ্ছিলেন চাপ। এভাবেই নিমগ্ন চিত্তে গামছা বুনন করছিলেন ৬০ বছর বয়সী ছবেলা বেগম। একটি গামছা তৈরি করতে দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় লাগে। খরচ পড়ে প্রায় ১০০ টাকা। অথচ বিক্রি হয় মাত্র ১৩০ টাকায়। মাত্র ৩০ টাকা লাভের জন্য এভাবে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে হয়।
রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের চরসিলোকা গ্রামের নুর ইসলামের স্ত্রী ছবেলা বেগম বলেন, নুর ইসলামের সঙ্গে কম বয়সেই তাঁর বিয়ে হয়েছিল। তখন তাঁদের ১০টি তাঁত ছিল। দিনভর তাঁত বুনে গামছা, লুঙ্গি, শাড়ি তৈরি করে রাজবাড়ী, কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করতেন। তাঁতই ছিল তাঁদের জীবন জীবিকা।
বছর দশেক আগে তাঁদের উৎপাদিত পণ্যের চাহিদা কমতে শুরু করে। একই সঙ্গে বাড়তে থাকে রং ও সুতার দাম। যে কারণে তাঁর স্বামী তাঁত ব্যবসা ছেড়ে রাজমিস্ত্রির কাজ শুরু করেন। এখন একটিমাত্র তাঁত আছে। যেটিতে তিনি কাজ করেন সংসারে একটু বাড়তি উপার্জনের জন্য।
জানা গেছে, শুধু নুর ইসলাম নন। রং-সুতার দাম বৃদ্ধির সঙ্গে লাভজনক না হওয়ায় অনেকেই এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গেছেন। কালুখালী উপজেলার চরসিলোকা, পুরান কালুখালী, বহরের কালুখালী, মৃগী, পাড়া বেলগাছি, হামরাট, সরিষাডাঙ্গাসহ ১২টি গ্রামে দেড় হাজারেরও বেশি তাঁত ছিল। বিপুলসংখ্যক শ্রমিক এ পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। যাঁদের কেউ এখন ভ্যান চালান, কেউ কৃষিকাজ করে আবার কেউ রাজমিস্ত্রির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। বর্তমানে হাতেগোনা কয়েকটি তাঁত রয়েছে এ উপজেলায়। পরিবার পরিজন নিয়ে জীবনসংগ্রাম করে বেঁচে আছেন তাঁরা।
বর্তমানে তাঁত শিল্পে জড়িতরা বলেন, তাঁদের বাপ-দাদার এ পেশা টিকিয়ে রাখা খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। আয়-রোজগারের বিকল্প কোনো পথ পাচ্ছেন না। কেউ ভ্যান চালাচ্ছেন, কেউ মাঠে কাজ করছেন। তাঁতকলে কাজ করা শ্রমিকেরা মাসিক বেতনে, আবার কেউ কেউ চুক্তিভিত্তিক কাজ করে সংসার চালাতেন। বর্তমানে এসব শ্রমিকেরা পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
তাঁদের দাবি, সরকার থেকে সহজ শর্তে ঋণ বা কোনো সহযোগিতা করলে তাঁরা আবার বন্ধ হয়ে যাওয়া তাঁতকলগুলো চালু করতে পারতেন। এখনো যে কয়টা তাঁতকল চালু আছে সেগুলোতে কাপড়ের উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব হতো। তা না হলে বর্তমানে চালু থাকা তাঁতগুলোও বন্ধ হয়ে যাবে।
উপজেলার চরসিলোকা গ্রামের ৮৫ বছর বয়সী আবু জাফর বলেন, এটি তাঁর বাপ-দাদার পেশা। তাঁদের অনেকগুলো তাঁত ছিল। তখন ব্যবসা ছিল রমরমা। লুঙ্গি, গামছা তৈরি করে হাটে নিয়ে গেলেই বিক্রি হয়ে যেত। বাড়িতে এসে অনেক মহাজন তাঁদের উৎপাদিত পণ্য কিনে নিয়ে যেতেন। খুবই লাভজনক ছিল এ ব্যবসা। তাঁর অধীনে অনেক শ্রমিক কাজ করে ভালোভাবে সংসার চালিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, যে সুতার দাম ৪০০-৫০০ টাকা ছিল, তা এখন আড়াই হাজার টাকা। কিন্তু তাঁদের উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়েনি। তাঁত বুনে বাজারে বিক্রি করে যা লাভ হয় তা দিয়ে এখন আর সংসার চলে না। চাহিদাও নেই খুব একটা। এ কারণে তিনি অনেক আগেই এ ব্যবসা বাদ দিয়েছেন। তাঁর ছেলেরা অন্য পেশায় চলে গেছেন। তারপরও এ পেশার মায়া ছাড়তে পারেন না। তাই একটি তাঁতকল রেখে দিয়েছেন। মাঝে মধ্যে অবসরে দু-একটি লুঙ্গি-গামছা বোনেন।
একই কথা বলেন মোফাজ্জেল হোসেন, রশিদুল ইসলামসহ অনেকে। তাঁরা বলেন, এ পেশার সঙ্গে যেসব শ্রমিক জড়িত ছিলেন, তাঁরা অনেকেই এখন ভ্যান চালান, নয়তো মাঠে শ্রমিকের কাজ করছেন।
কালুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম বলেন, সরকারের অনেকগুলো বিভাগ আছে; যারা এসব নিয়ে কাজ করে এবং ঋণ দেয়। তাঁতিরা ঋণের আওতায় আসতে চাইলে অবশ্যই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।
তাঁতযন্ত্রের পাদানিতে একবার করে পাড়া দিচ্ছিলেন আর হাতে থাকা কাচের বোতল দিয়ে বুনন করে চলা সুতার ওপর দিচ্ছিলেন চাপ। এভাবেই নিমগ্ন চিত্তে গামছা বুনন করছিলেন ৬০ বছর বয়সী ছবেলা বেগম। একটি গামছা তৈরি করতে দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় লাগে। খরচ পড়ে প্রায় ১০০ টাকা। অথচ বিক্রি হয় মাত্র ১৩০ টাকায়। মাত্র ৩০ টাকা লাভের জন্য এভাবে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে হয়।
রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের চরসিলোকা গ্রামের নুর ইসলামের স্ত্রী ছবেলা বেগম বলেন, নুর ইসলামের সঙ্গে কম বয়সেই তাঁর বিয়ে হয়েছিল। তখন তাঁদের ১০টি তাঁত ছিল। দিনভর তাঁত বুনে গামছা, লুঙ্গি, শাড়ি তৈরি করে রাজবাড়ী, কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করতেন। তাঁতই ছিল তাঁদের জীবন জীবিকা।
বছর দশেক আগে তাঁদের উৎপাদিত পণ্যের চাহিদা কমতে শুরু করে। একই সঙ্গে বাড়তে থাকে রং ও সুতার দাম। যে কারণে তাঁর স্বামী তাঁত ব্যবসা ছেড়ে রাজমিস্ত্রির কাজ শুরু করেন। এখন একটিমাত্র তাঁত আছে। যেটিতে তিনি কাজ করেন সংসারে একটু বাড়তি উপার্জনের জন্য।
জানা গেছে, শুধু নুর ইসলাম নন। রং-সুতার দাম বৃদ্ধির সঙ্গে লাভজনক না হওয়ায় অনেকেই এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গেছেন। কালুখালী উপজেলার চরসিলোকা, পুরান কালুখালী, বহরের কালুখালী, মৃগী, পাড়া বেলগাছি, হামরাট, সরিষাডাঙ্গাসহ ১২টি গ্রামে দেড় হাজারেরও বেশি তাঁত ছিল। বিপুলসংখ্যক শ্রমিক এ পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। যাঁদের কেউ এখন ভ্যান চালান, কেউ কৃষিকাজ করে আবার কেউ রাজমিস্ত্রির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। বর্তমানে হাতেগোনা কয়েকটি তাঁত রয়েছে এ উপজেলায়। পরিবার পরিজন নিয়ে জীবনসংগ্রাম করে বেঁচে আছেন তাঁরা।
বর্তমানে তাঁত শিল্পে জড়িতরা বলেন, তাঁদের বাপ-দাদার এ পেশা টিকিয়ে রাখা খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। আয়-রোজগারের বিকল্প কোনো পথ পাচ্ছেন না। কেউ ভ্যান চালাচ্ছেন, কেউ মাঠে কাজ করছেন। তাঁতকলে কাজ করা শ্রমিকেরা মাসিক বেতনে, আবার কেউ কেউ চুক্তিভিত্তিক কাজ করে সংসার চালাতেন। বর্তমানে এসব শ্রমিকেরা পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
তাঁদের দাবি, সরকার থেকে সহজ শর্তে ঋণ বা কোনো সহযোগিতা করলে তাঁরা আবার বন্ধ হয়ে যাওয়া তাঁতকলগুলো চালু করতে পারতেন। এখনো যে কয়টা তাঁতকল চালু আছে সেগুলোতে কাপড়ের উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব হতো। তা না হলে বর্তমানে চালু থাকা তাঁতগুলোও বন্ধ হয়ে যাবে।
উপজেলার চরসিলোকা গ্রামের ৮৫ বছর বয়সী আবু জাফর বলেন, এটি তাঁর বাপ-দাদার পেশা। তাঁদের অনেকগুলো তাঁত ছিল। তখন ব্যবসা ছিল রমরমা। লুঙ্গি, গামছা তৈরি করে হাটে নিয়ে গেলেই বিক্রি হয়ে যেত। বাড়িতে এসে অনেক মহাজন তাঁদের উৎপাদিত পণ্য কিনে নিয়ে যেতেন। খুবই লাভজনক ছিল এ ব্যবসা। তাঁর অধীনে অনেক শ্রমিক কাজ করে ভালোভাবে সংসার চালিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, যে সুতার দাম ৪০০-৫০০ টাকা ছিল, তা এখন আড়াই হাজার টাকা। কিন্তু তাঁদের উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়েনি। তাঁত বুনে বাজারে বিক্রি করে যা লাভ হয় তা দিয়ে এখন আর সংসার চলে না। চাহিদাও নেই খুব একটা। এ কারণে তিনি অনেক আগেই এ ব্যবসা বাদ দিয়েছেন। তাঁর ছেলেরা অন্য পেশায় চলে গেছেন। তারপরও এ পেশার মায়া ছাড়তে পারেন না। তাই একটি তাঁতকল রেখে দিয়েছেন। মাঝে মধ্যে অবসরে দু-একটি লুঙ্গি-গামছা বোনেন।
একই কথা বলেন মোফাজ্জেল হোসেন, রশিদুল ইসলামসহ অনেকে। তাঁরা বলেন, এ পেশার সঙ্গে যেসব শ্রমিক জড়িত ছিলেন, তাঁরা অনেকেই এখন ভ্যান চালান, নয়তো মাঠে শ্রমিকের কাজ করছেন।
কালুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম বলেন, সরকারের অনেকগুলো বিভাগ আছে; যারা এসব নিয়ে কাজ করে এবং ঋণ দেয়। তাঁতিরা ঋণের আওতায় আসতে চাইলে অবশ্যই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে