মুলাদীতে গত ২৫ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৫০ শতাংশের বেশি। তারপরও স্বাস্থ্যবিধি মানায় অনীহা মানুষের। মাস্ক ছাড়াই ইচ্ছেমতো চলাচল করছেন তাঁরা। সচেতনতার অভাবের পাশাপাশি প্রশাসনের তদারকি না থাকায় স্বাস্থ্যবিধি উধাও হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে। এতে বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঝুঁকি।

মুলাদী হাসপাতালের করোনা পরীক্ষা ইউনিট থেকে জানা যায়, গতকাল সোমবার ১৯ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ২৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় এই রোগী শনাক্ত হয়। আক্রান্তদের মধ্যে ১৬ মাসের এক শিশু, ১১ জন পুরুষ এবং সাতজন নারী। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার প্রায় ৬৫.৫২ শতাংশ, যা আগের দিনের তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ বেশি। এ নিয়ে টানা ছয় দিন ৫০ শতাংশের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে।

হাসপাতালের স্যানিটারি পরিদর্শক জাহানারা বেগম জানান, গত ২৫ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত (শুক্রবার পরীক্ষা হয়নি) নমুনা পরীক্ষায় ৫০ শতাংশের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে নারীর তুলনায় পুরুষের হার বেশি। এর আগে নারীর সংখ্যা বেশি ছিল। করোনার তৃতীয় ঢেউ শুরুর পরে মুলাদীতে পুরুষ রোগী শনাক্তের সংখ্যা বাড়ছে।

জাহানারা বেগম আরও জানান, করোনা উপসর্গ নিয়ে যারা হাসপাতালে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন শুধু তাঁরাই পরীক্ষা করান। অনেক রোগীই করোনা পরীক্ষা করাতে চান না। সোমবার পাঁচ-ছয়জন নারীকে চিকিৎসক করোনা পরীক্ষা দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা পরীক্ষা না করেই চলে গেছেন। জ্বর, হাঁচি, কাশিসহ করোনার অন্যান্য উপসর্গ যাদের আছে তারা পরীক্ষা করালে শনাক্তের সংখ্যা আরও বাড়বে।

গতকাল সোমবার সরেজমিন মুলাদী সিনেমা হলের সামনে দেখা গেছে, অধিকাংশ মানুষের মাস্ক নেই। দু-এক জনের মাস্ক থাকলেও মুখের নিচে নামানো রয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছেন না কেউ।

সিনেমা হলের সামনের ব্যবসায়ী আরিফ হোসেন বলেন, সাধারণ মানুষ করোনাকে এখন কিছুই মনে করছে না। বিশেষ করে সবাই করোনা ভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টকে অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকিপূর্ণ মনে করে। তাই কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানতে চান না। এতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. সাইয়েদুর রহমান বলেন, সচেতনতা না বাড়লে করোনা সংক্রমণ বাড়তেই থাকবে। এভাবে সংক্রমণ বাড়লে এবং পরীক্ষা না করিয়ে যথাসময়ে চিকিৎসা নিতে ব্যর্থ হলে মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যাবে। তাই সংক্রমিত হলে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হতে হবে এবং চিকিৎসা নিতে হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ হোসাইনী বলেন, করোনা সচেতনতায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন এবং মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের মাধ্যমে প্রচার চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কয়েকজনকে জরিমানা করেছেন।