মাসুদ রানা
আজকের পত্রিকা: দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কেমন বুঝছেন?
আবু আলম মো. শহিদ খান: দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখন খুব ঘোলাটে এবং সংঘাতময়। দেশের রাজনীতিতে এখন স্থিতিশীলতা নেই। পরস্পরের বিরুদ্ধে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে দেশের দুটি প্রধান রাজনৈতিক দল। ফলে জনগণের মধ্যে আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। কত দিন পর্যন্ত দেশটা শান্তিপূর্ণভাবে থাকবে, সেটা নিয়ে জনগণ বেশ চিন্তিত।
আজকের পত্রিকা: এর কারণ কী বলে মনে করেন?
শহিদ খান: কারণ তো একটাই—সেটা হলো রাজনীতি। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ৫২ বছরেও আমরা একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে পারছি না। কীভাবে নির্বাচন করলে সেটা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য হবে, তা নিয়ে আমরা ভাবিনি। নির্বাচন তো একটা পদ্ধতি। আমরা এখনো একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পদ্ধতি প্রতিষ্ঠিত করতে পারিনি।
এটা না করতে পারার কারণে কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছে না। ফলে পাঁচ বছর পরপর যখন জাতীয় নির্বাচনের সময় আসে, তখন যে দল ক্ষমতায় থাকে তারা একভাবে নির্বাচন করতে চায়, আর যে দল ক্ষমতার বাইরে থাকে, তারা নিরপেক্ষ বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীন ছাড়া নির্বাচনে যেতে চায় না। এটাই হলো বিরোধের মূল জায়গা। তাই ‘পয়েন্ট অব নো রিটার্নে’ আছে দুই দল। শাসক দলও সংবিধান সংশোধন করে এর বাইরে যাবে না। আর বিরোধী ২৯টি দল আছে (৪৪টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে), তাদের সবার বক্তব্য হলো, তারা এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেবে না। সরকারি দল তো নির্বাচন করার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে। তারা নির্বাচনের মধ্যে ঢুকে গেছে। আর নির্বাচন কমিশনও নির্বাচন করার জন্য প্রস্তুত আছে। তারা ইতিমধ্যে নির্বাচনের তফসিলও ঘোষণা করেছে।
আজকের পত্রিকা: তফসিল ঘোষণার পর বিএনপির এক দফা দাবির আন্দোলন সফল হবে বলে আপনি মনে করেন?
শহিদ খান: এটা তো বিএনপির নেতারা ভালো বলতে পারবেন। কারণ আমি তো জ্যোতিষী নই যে এ নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করব। তবে যেকোনো আন্দোলন, সেটা এক দফা বা দশ দফার হোক, তার একটা পর্যায় থাকে। যখন এই আন্দোলনে ব্যাপক জনগণ অংশগ্রহণ করে, তখন একটা পরিবর্তনের সূচনা হয়। সেটা একটা পথ হতে পারে। আর একটা পথ হতে পারে, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা। রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে চেষ্টা করা উচিত। কিন্তু এই চেষ্টাটা দুই দলের কারও মধ্যেই দেখা যাচ্ছে না।
আজকের পত্রিকা: যুক্তরাষ্ট্র তিনটি দলকে শর্তহীন সংলাপে বসার কথা বলেছিল। এতে কি রাজনৈতিক সংকট নিরসন হতো?
শহিদ খান: প্রথম কথা হলো, যুক্তরাষ্ট্রকে কেন এই পত্র দিতে হবে। রাজনীতি, নির্বাচন ও গণতন্ত্র আমাদের রক্তের মধ্যে আছে। আমরা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছি, গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছি। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়ার বিষয়টি সব রাজনৈতিক দল এবং নাগরিকের জন্য লজ্জাজনক বিষয়। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা জাতিসংঘসহ পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলো যখন আমাদের নির্বাচন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার নিয়ে কথা বলে, তখন আমরা লজ্জা পাই এবং লজ্জা পাওয়া উচিত; বিশেষ করে রাজনৈতিক দলের নেতাদের বেশি করে লজ্জা পাওয়া উচিত।
রাজনীতিবিদেরা ৫২ বছরে কী করলেন, যে কারণে অন্য দেশের পক্ষ থেকে চিঠিপত্র দিতে হয়? যে কারণে চিঠি, সেই কারণগুলো তো আমরাই সৃষ্টি করেছি। আমরা যদি ভালো একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশে, শান্তিপূর্ণ, উৎসবমুখর, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে পারতাম, তাহলে হয়তো এ ধরনের চিঠি পেতাম না। আর চিঠির মধ্য দিয়ে যে সব সমস্যার সমাধান হবে, এ রকমটা মনে করার কোনো কারণ নেই। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি আপনার বা যারা অংশীজন, নিজেরা সমস্যার সমাধান করতে চাইবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত এসব চিঠি দিয়ে কোনো সমাধান করা যাবে বলে আমার মনে হয় না। তবে চিঠিটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
আজকের পত্রিকা: চিঠিটা কী কারণে গুরুত্বপূর্ণ?
শহিদ খান: তিন দলকে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে, আপনারা শর্তহীন আলোচনায় বসেন। আর চিঠিটা গুরুত্বপূর্ণ এ জন্য যে তারা নির্দিষ্ট তিনটি দলকে চিঠি দিয়েছে। এমন নয় যে তারা এমনিতেই কোনো বিবৃতি দিয়েছে। এটা একটা ডকুমেন্ট। কোনো একটা পদ্ধতির মধ্য দিয়ে এই ডকুমেন্টটা থাকবে।
আজকের পত্রিকা: ডোনাল্ড লুর চিঠির কোনো প্রভাব তফসিলের ওপর না পড়ার কথা বলেছেন একজন নির্বাচন কমিশনার। আপনি কী মনে করেন?
শহিদ খান: এই চিঠি দেওয়ার পরেও নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করেছে। এটাই প্রমাণ করে, এই চিঠির কোনো প্রভাব পড়েনি। নির্বাচন কমিশনের সাহস ও দৃঢ়তা আছে বলেই তারা ডোনাল্ড লুর চিঠিকে কোনো পাত্তা দেয়নি।
আজকের পত্রিকা: বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ না নেয়, তাহলে কি নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে?
শহিদ খান: যে দল দেশের মানুষের একটি উল্লেখযোগ্য অংশকে প্রতিনিধিত্ব করে এবং যে দলের প্রতি জনসমর্থন আছে, সে রকম রাজনৈতিক দল যদি নির্বাচনে অংশ না নেয়, তাহলে তো নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন ওঠা এবং বিতর্ক হওয়াই স্বাভাবিক। গত দুটি নির্বাচন নিয়ে তো বিতর্ক আছে। সর্বশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে তো তুমুল একটা বিতর্ক এখনো চলমান আছে। এবারের নির্বাচনও বিতর্কিত হওয়ার আশঙ্কামুক্ত নয়।
আজকের পত্রিকা: ভূ-রাজনৈতিক কারণে যুক্তরাষ্ট্র কি ভারতের অবস্থানকে উপেক্ষা করতে পারবে?
শহিদ খান: ভারতের অবস্থানকে উপেক্ষা করতে পারবে কি না, তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো, বাংলাদেশের অবস্থানকে উপেক্ষা করতে পারবে কি না। আমার মনে হয়, বাংলাদেশের অবস্থানকে যুক্তরাষ্ট্র উপেক্ষা করতে পারবে না। উপেক্ষা করতে পারবে না বলেই যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো বাংলাদেশে একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু রাখতে বেশ উৎসাহী। কারণ দেশে যদি গণতন্ত্র বিরাজমান থাকে, সংবিধানসম্মতভাবে সবকিছু ঘটে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যদি নির্বাচন হয়, জনগণের অধিকার ঠিকভাবে বজায় থাকে, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকে, তাহলে বাংলাদেশ কারও জন্য মাথাব্যথার কারণ হবে না। আর যদি দেশে গণতন্ত্র না থাকে, তাহলে বাংলাদেশে অনেক কিছুই ঘটবে। ফলে শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, অন্য দেশের স্বার্থকে বিনষ্ট করতে পারে।
ধরা যাক, এ দেশে আফগানিস্তানের মতো অবস্থা দাঁড়াল। তাহলে এর জন্য তো পুরো পৃথিবীকে মূল্য দিতে হবে। সে কারণে বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক ব্যাপারটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর বাংলাদেশ এখন ইন্দো-প্যাসিফিক জোনে অবস্থান করছে। এটা এখন শুধু ভূ-রাজনৈতিক নয়, ভূ-সমরনীতির কেন্দ্রবিন্দু। সেটা একটা বড় ইস্যু। সেই ইস্যুর কারণে বাংলাদেশ তো গুরুত্বপূর্ণ সবার কাছেই। ভারত, চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের দেশগুলোর কাছেও বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ।
আজকের পত্রিকা: দেশের নির্বাচনকেন্দ্রিক রাজনৈতিক সংকট নিরসনে আপনার কোনো পরামর্শ আছে?
শহিদ খান: যেহেতু এটা রাজনৈতিক সংকট, সেহেতু এর সমাধান রাজনীতিবিদদেরই বের করতে হবে। প্রথমত, এ জন্য তাঁদের আন্তরিকতা দরকার। আর তাঁদের প্রশ্ন করা উচিত, তাঁরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন কি না। আগে তাঁদের মধ্যে গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস থাকা দরকার। ক্ষমতা কারও জন্য চিরস্থায়ী নয়। একবার ক্ষমতা পেলে আর না ছাড়ার জেদ যদি রাজনৈতিক দলগুলোকে পেয়ে বসে, তাহলে কোনো দিনও সমস্যার সমাধান হবে না। আমাদের দেশের রাজনীতির মূল সমস্যাই হলো কেউ ক্ষমতা পেলে আর ছাড়তে চায় না।
স্বৈরশাসক হলেও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছিলেন। এরপর আর কেউ কিন্তু এ ধরনের দুঃসাহস দেখাতে পারেননি।
আজকের পত্রিকা: দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কেমন বুঝছেন?
আবু আলম মো. শহিদ খান: দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখন খুব ঘোলাটে এবং সংঘাতময়। দেশের রাজনীতিতে এখন স্থিতিশীলতা নেই। পরস্পরের বিরুদ্ধে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে দেশের দুটি প্রধান রাজনৈতিক দল। ফলে জনগণের মধ্যে আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। কত দিন পর্যন্ত দেশটা শান্তিপূর্ণভাবে থাকবে, সেটা নিয়ে জনগণ বেশ চিন্তিত।
আজকের পত্রিকা: এর কারণ কী বলে মনে করেন?
শহিদ খান: কারণ তো একটাই—সেটা হলো রাজনীতি। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ৫২ বছরেও আমরা একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে পারছি না। কীভাবে নির্বাচন করলে সেটা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য হবে, তা নিয়ে আমরা ভাবিনি। নির্বাচন তো একটা পদ্ধতি। আমরা এখনো একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পদ্ধতি প্রতিষ্ঠিত করতে পারিনি।
এটা না করতে পারার কারণে কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছে না। ফলে পাঁচ বছর পরপর যখন জাতীয় নির্বাচনের সময় আসে, তখন যে দল ক্ষমতায় থাকে তারা একভাবে নির্বাচন করতে চায়, আর যে দল ক্ষমতার বাইরে থাকে, তারা নিরপেক্ষ বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীন ছাড়া নির্বাচনে যেতে চায় না। এটাই হলো বিরোধের মূল জায়গা। তাই ‘পয়েন্ট অব নো রিটার্নে’ আছে দুই দল। শাসক দলও সংবিধান সংশোধন করে এর বাইরে যাবে না। আর বিরোধী ২৯টি দল আছে (৪৪টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে), তাদের সবার বক্তব্য হলো, তারা এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেবে না। সরকারি দল তো নির্বাচন করার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে। তারা নির্বাচনের মধ্যে ঢুকে গেছে। আর নির্বাচন কমিশনও নির্বাচন করার জন্য প্রস্তুত আছে। তারা ইতিমধ্যে নির্বাচনের তফসিলও ঘোষণা করেছে।
আজকের পত্রিকা: তফসিল ঘোষণার পর বিএনপির এক দফা দাবির আন্দোলন সফল হবে বলে আপনি মনে করেন?
শহিদ খান: এটা তো বিএনপির নেতারা ভালো বলতে পারবেন। কারণ আমি তো জ্যোতিষী নই যে এ নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করব। তবে যেকোনো আন্দোলন, সেটা এক দফা বা দশ দফার হোক, তার একটা পর্যায় থাকে। যখন এই আন্দোলনে ব্যাপক জনগণ অংশগ্রহণ করে, তখন একটা পরিবর্তনের সূচনা হয়। সেটা একটা পথ হতে পারে। আর একটা পথ হতে পারে, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা। রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে চেষ্টা করা উচিত। কিন্তু এই চেষ্টাটা দুই দলের কারও মধ্যেই দেখা যাচ্ছে না।
আজকের পত্রিকা: যুক্তরাষ্ট্র তিনটি দলকে শর্তহীন সংলাপে বসার কথা বলেছিল। এতে কি রাজনৈতিক সংকট নিরসন হতো?
শহিদ খান: প্রথম কথা হলো, যুক্তরাষ্ট্রকে কেন এই পত্র দিতে হবে। রাজনীতি, নির্বাচন ও গণতন্ত্র আমাদের রক্তের মধ্যে আছে। আমরা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছি, গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছি। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়ার বিষয়টি সব রাজনৈতিক দল এবং নাগরিকের জন্য লজ্জাজনক বিষয়। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা জাতিসংঘসহ পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলো যখন আমাদের নির্বাচন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার নিয়ে কথা বলে, তখন আমরা লজ্জা পাই এবং লজ্জা পাওয়া উচিত; বিশেষ করে রাজনৈতিক দলের নেতাদের বেশি করে লজ্জা পাওয়া উচিত।
রাজনীতিবিদেরা ৫২ বছরে কী করলেন, যে কারণে অন্য দেশের পক্ষ থেকে চিঠিপত্র দিতে হয়? যে কারণে চিঠি, সেই কারণগুলো তো আমরাই সৃষ্টি করেছি। আমরা যদি ভালো একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশে, শান্তিপূর্ণ, উৎসবমুখর, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে পারতাম, তাহলে হয়তো এ ধরনের চিঠি পেতাম না। আর চিঠির মধ্য দিয়ে যে সব সমস্যার সমাধান হবে, এ রকমটা মনে করার কোনো কারণ নেই। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি আপনার বা যারা অংশীজন, নিজেরা সমস্যার সমাধান করতে চাইবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত এসব চিঠি দিয়ে কোনো সমাধান করা যাবে বলে আমার মনে হয় না। তবে চিঠিটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
আজকের পত্রিকা: চিঠিটা কী কারণে গুরুত্বপূর্ণ?
শহিদ খান: তিন দলকে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে, আপনারা শর্তহীন আলোচনায় বসেন। আর চিঠিটা গুরুত্বপূর্ণ এ জন্য যে তারা নির্দিষ্ট তিনটি দলকে চিঠি দিয়েছে। এমন নয় যে তারা এমনিতেই কোনো বিবৃতি দিয়েছে। এটা একটা ডকুমেন্ট। কোনো একটা পদ্ধতির মধ্য দিয়ে এই ডকুমেন্টটা থাকবে।
আজকের পত্রিকা: ডোনাল্ড লুর চিঠির কোনো প্রভাব তফসিলের ওপর না পড়ার কথা বলেছেন একজন নির্বাচন কমিশনার। আপনি কী মনে করেন?
শহিদ খান: এই চিঠি দেওয়ার পরেও নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করেছে। এটাই প্রমাণ করে, এই চিঠির কোনো প্রভাব পড়েনি। নির্বাচন কমিশনের সাহস ও দৃঢ়তা আছে বলেই তারা ডোনাল্ড লুর চিঠিকে কোনো পাত্তা দেয়নি।
আজকের পত্রিকা: বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ না নেয়, তাহলে কি নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে?
শহিদ খান: যে দল দেশের মানুষের একটি উল্লেখযোগ্য অংশকে প্রতিনিধিত্ব করে এবং যে দলের প্রতি জনসমর্থন আছে, সে রকম রাজনৈতিক দল যদি নির্বাচনে অংশ না নেয়, তাহলে তো নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন ওঠা এবং বিতর্ক হওয়াই স্বাভাবিক। গত দুটি নির্বাচন নিয়ে তো বিতর্ক আছে। সর্বশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে তো তুমুল একটা বিতর্ক এখনো চলমান আছে। এবারের নির্বাচনও বিতর্কিত হওয়ার আশঙ্কামুক্ত নয়।
আজকের পত্রিকা: ভূ-রাজনৈতিক কারণে যুক্তরাষ্ট্র কি ভারতের অবস্থানকে উপেক্ষা করতে পারবে?
শহিদ খান: ভারতের অবস্থানকে উপেক্ষা করতে পারবে কি না, তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো, বাংলাদেশের অবস্থানকে উপেক্ষা করতে পারবে কি না। আমার মনে হয়, বাংলাদেশের অবস্থানকে যুক্তরাষ্ট্র উপেক্ষা করতে পারবে না। উপেক্ষা করতে পারবে না বলেই যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো বাংলাদেশে একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু রাখতে বেশ উৎসাহী। কারণ দেশে যদি গণতন্ত্র বিরাজমান থাকে, সংবিধানসম্মতভাবে সবকিছু ঘটে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যদি নির্বাচন হয়, জনগণের অধিকার ঠিকভাবে বজায় থাকে, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকে, তাহলে বাংলাদেশ কারও জন্য মাথাব্যথার কারণ হবে না। আর যদি দেশে গণতন্ত্র না থাকে, তাহলে বাংলাদেশে অনেক কিছুই ঘটবে। ফলে শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, অন্য দেশের স্বার্থকে বিনষ্ট করতে পারে।
ধরা যাক, এ দেশে আফগানিস্তানের মতো অবস্থা দাঁড়াল। তাহলে এর জন্য তো পুরো পৃথিবীকে মূল্য দিতে হবে। সে কারণে বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক ব্যাপারটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর বাংলাদেশ এখন ইন্দো-প্যাসিফিক জোনে অবস্থান করছে। এটা এখন শুধু ভূ-রাজনৈতিক নয়, ভূ-সমরনীতির কেন্দ্রবিন্দু। সেটা একটা বড় ইস্যু। সেই ইস্যুর কারণে বাংলাদেশ তো গুরুত্বপূর্ণ সবার কাছেই। ভারত, চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের দেশগুলোর কাছেও বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ।
আজকের পত্রিকা: দেশের নির্বাচনকেন্দ্রিক রাজনৈতিক সংকট নিরসনে আপনার কোনো পরামর্শ আছে?
শহিদ খান: যেহেতু এটা রাজনৈতিক সংকট, সেহেতু এর সমাধান রাজনীতিবিদদেরই বের করতে হবে। প্রথমত, এ জন্য তাঁদের আন্তরিকতা দরকার। আর তাঁদের প্রশ্ন করা উচিত, তাঁরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন কি না। আগে তাঁদের মধ্যে গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস থাকা দরকার। ক্ষমতা কারও জন্য চিরস্থায়ী নয়। একবার ক্ষমতা পেলে আর না ছাড়ার জেদ যদি রাজনৈতিক দলগুলোকে পেয়ে বসে, তাহলে কোনো দিনও সমস্যার সমাধান হবে না। আমাদের দেশের রাজনীতির মূল সমস্যাই হলো কেউ ক্ষমতা পেলে আর ছাড়তে চায় না।
স্বৈরশাসক হলেও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছিলেন। এরপর আর কেউ কিন্তু এ ধরনের দুঃসাহস দেখাতে পারেননি।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৭ ঘণ্টা আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৭ ঘণ্টা আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৮ ঘণ্টা আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৮ ঘণ্টা আগে