রজত কান্তি রায়
গান, ব্যবসা, ভ্রমণ, শিল্পচর্চা—এই সব মিলিয়ে গত এক যুগ যদি ফিরে দেখেন, কী মনে হয়? এমন একটা প্রশ্ন দিয়ে আজকের সকাল শুরু হয়েছিল। আজ কণ্ঠশিল্পী, উদ্যোক্তা এবং পর্যটক কনক আদিত্যের জন্মদিন। শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি প্রাসঙ্গিকভাবে প্রশ্নটা তাঁকেই করা, সকাল বেলা। ফোনের ও-প্রান্ত থেকে উত্তর এল, ‘জীবনটাকে নিংড়ে উপভোগ করার সময় ছিল সেটা। গোল্ডেন টাইম যাকে বলে।’
কনক আদিত্যের কথা বললে ব্যক্তিগতভাবে আমি ফিরে যাই প্রায় বারো বছর আগে। আমার তখন বাড়বাড়ন্ত বেলা, স্ট্রাগল পিরিয়ড। এই ঢাকা শহরে আম কিংবা খাজা কাঁঠালের বিলাসিতা তো নয়ই, দু-বেলা কী খাব তারও ঠিকঠিকানা নেই। এক অনির্দিষ্ট ভবিষ্যৎ। কিন্তু কেমন যেন একটা বোহিমিয়ান স্বভাবে পেয়ে বসেছিল। পকেটে পাঁচ টাকা নিয়ে ঘোরাটা ঠিক বিপ্লব নয়, একটা অন্যরকম ব্যাপার মনে হতো। জগৎ-সংসার আমাদের দিয়ে উপকৃত হবে, সে রকম কোনো আশা নেই। আবার আমরা যেসব কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম, সেগুলো যে এক সময় জাতির উপকারে লাগবে (!), সে রকম একটা হাস্যকর ভাবনাও কাজ করত। সব মিলিয়ে সে সময়টাকে একটু ‘অন্যরকম ব্যাপার’ বলা চলে। প্রায় এক যুগ আগের কথা ভেবে এখন সে রকমই মনে হয় বটে।
২০০৭ সালের একেবারে শেষের দিকে ‘বাংলাদেশের তাঁত শিল্প’ নামের একটি প্রকল্পে আমি সহকারী হিসেবে যোগ দিই শিল্পী ও গবেষক শাওন আকন্দের সঙ্গে। উদ্দাম সময় কাটাব, টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া ঘুরব, তাঁতের মতো একটি আদি শিল্পের সঙ্গে যোগাযোগ হবে—সেটাই ছিল আমার কাছে মূল বিষয়। আমি তখনো জানতাম না, প্রকল্পটির পেছনে আছেন কনক আদিত্য এবং তাঁর প্রতিষ্ঠান দেশাল। কিন্তু ততদিনে আমরা রাহুল-কনকের কণ্ঠে ‘বকুল ফুল বকুল ফুল’ শুনছি আর দুলে উঠছি। আমাদের ভালো লেগেছিল ‘বকুল ফুলে’র ছন্দোবদ্ধ দুলে ওঠা। আমাদের ভালো লেগেছিল ‘জলের গান’ নামের নতুন একটি গানের দলের পারফরম্যান্স।
২০০৬ সালে ‘জলের গান’ নামের গানের দলটি যখন গড়ে ওঠে, তার প্রথম দিকের অনেক গল্প আমাদের জানা ছিল ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে। আমরা কখনো দলবেঁধে কনক আদিত্যের স্টুডিওতে হামলে পড়তাম অপ্রকাশিত কিংবা খালি কণ্ঠের গান শুনতে। সেখানে অবধারিতভাবে থাকতেন রাহুল আনন্দ এবং জলের গানের অন্য সদস্যরা। সেসব চন্দ্রাহত রাত ছিল বছর বারো আগের।
শিল্পী ধ্রুব এষের লেখা এবং কনক ও কার্তিকের গাওয়া ‘একটু বসিয়া থাক’ শিরোনামের গানটি যখন প্রথম শুনি, এক ধরনের আবেশ তৈরি হয়েছিল। বাংলা গানে সহজিয়া কথা ও সুরের চর্চা অনেক প্রাচীন বিষয়। আধুনিক গানের আবহে আমরা যে গান শুনে বড় হয়েছি, রুচি তৈরি করেছি, সে ধারায় কনক আদিত্যের এই গানটির একটি ভিন্ন মাত্রা আছে। ‘লিলুয়া বাতাসে’র চিত্রকল্পও একটা দারুণ তন্ময়তা তৈরি করে। ‘আপনারা কি লোকসংগীত বা সে ঘরানার গান করবেন বলে ভেবে নিয়েছিলেন?’ গানের দল জলের গান থেকে কনক আদিত্যের শিল্পী সত্তাকে আলাদা করা যায় না বলে জানতে চাইলাম। তিনি বললেন, ‘সে রকম নয়। কিন্তু সহজ কথায়, সহজ সুরে গান করার একটা ইচ্ছা ছিল। ভাবনায় ছিল, যে ছেলেটি গিটারে টুংটাং করে, সে-ও যেন আমাদের গানগুলো গাইতে পারে। লোকসংগীত নিয়ে অনেক কিছু করে ফেলব, সে রকম ভাবনা ছিল না। ততদিনে রাহুলের হাত ধরে সে রকম কিছু মৌলিক গানও তৈরি হয়েছে।’ জলের গান সে জায়গায় সফল হয়েছে—সেটা বলাই যায়।
জলের গান এবং সংগীতশিল্পী কনক আদিত্যকে নিয়ে বহু কিছু বলা যায়। কিন্তু আমাকে যে বিষয়টি টানে, সেটি তাঁর বহুমুখীনতা। গান, ব্যবসা, দেশ-বিদেশ ভ্রমণ, ক্র্যাকের মতো একটি অলাভজনক শিল্পপ্রচেষ্টার ট্রাস্টি, পরিবেশ ও প্লাস্টিক পণ্যের পুনর্ব্যবহার বিষয়ে সচেতনতা তৈরি, স্কুল পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত থাকা ইত্যাদি মিলিয়ে যে বর্ণিল ও বহুরৈখিক যাপন–সেটা খুব কম মানুষের আছে। স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে বললাম, ক্যামনে সম্ভব! জানালেন, জীবন তো ছোট। যতটুকু পারা যায় এক জীবনে।
অভিজ্ঞরা বলেন, মানুষ স্মৃতিময় প্রাণী। স্মৃতি তৈরি করে করে চলাই তার কাজ। এক জীবনে আরও স্মৃতি তৈরি হোক। যাপনে বৈচিত্র্য আরও বাড়ুক। শুভ জন্মদিন।
নতুন গানের লিংক:
গান, ব্যবসা, ভ্রমণ, শিল্পচর্চা—এই সব মিলিয়ে গত এক যুগ যদি ফিরে দেখেন, কী মনে হয়? এমন একটা প্রশ্ন দিয়ে আজকের সকাল শুরু হয়েছিল। আজ কণ্ঠশিল্পী, উদ্যোক্তা এবং পর্যটক কনক আদিত্যের জন্মদিন। শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি প্রাসঙ্গিকভাবে প্রশ্নটা তাঁকেই করা, সকাল বেলা। ফোনের ও-প্রান্ত থেকে উত্তর এল, ‘জীবনটাকে নিংড়ে উপভোগ করার সময় ছিল সেটা। গোল্ডেন টাইম যাকে বলে।’
কনক আদিত্যের কথা বললে ব্যক্তিগতভাবে আমি ফিরে যাই প্রায় বারো বছর আগে। আমার তখন বাড়বাড়ন্ত বেলা, স্ট্রাগল পিরিয়ড। এই ঢাকা শহরে আম কিংবা খাজা কাঁঠালের বিলাসিতা তো নয়ই, দু-বেলা কী খাব তারও ঠিকঠিকানা নেই। এক অনির্দিষ্ট ভবিষ্যৎ। কিন্তু কেমন যেন একটা বোহিমিয়ান স্বভাবে পেয়ে বসেছিল। পকেটে পাঁচ টাকা নিয়ে ঘোরাটা ঠিক বিপ্লব নয়, একটা অন্যরকম ব্যাপার মনে হতো। জগৎ-সংসার আমাদের দিয়ে উপকৃত হবে, সে রকম কোনো আশা নেই। আবার আমরা যেসব কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম, সেগুলো যে এক সময় জাতির উপকারে লাগবে (!), সে রকম একটা হাস্যকর ভাবনাও কাজ করত। সব মিলিয়ে সে সময়টাকে একটু ‘অন্যরকম ব্যাপার’ বলা চলে। প্রায় এক যুগ আগের কথা ভেবে এখন সে রকমই মনে হয় বটে।
২০০৭ সালের একেবারে শেষের দিকে ‘বাংলাদেশের তাঁত শিল্প’ নামের একটি প্রকল্পে আমি সহকারী হিসেবে যোগ দিই শিল্পী ও গবেষক শাওন আকন্দের সঙ্গে। উদ্দাম সময় কাটাব, টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া ঘুরব, তাঁতের মতো একটি আদি শিল্পের সঙ্গে যোগাযোগ হবে—সেটাই ছিল আমার কাছে মূল বিষয়। আমি তখনো জানতাম না, প্রকল্পটির পেছনে আছেন কনক আদিত্য এবং তাঁর প্রতিষ্ঠান দেশাল। কিন্তু ততদিনে আমরা রাহুল-কনকের কণ্ঠে ‘বকুল ফুল বকুল ফুল’ শুনছি আর দুলে উঠছি। আমাদের ভালো লেগেছিল ‘বকুল ফুলে’র ছন্দোবদ্ধ দুলে ওঠা। আমাদের ভালো লেগেছিল ‘জলের গান’ নামের নতুন একটি গানের দলের পারফরম্যান্স।
২০০৬ সালে ‘জলের গান’ নামের গানের দলটি যখন গড়ে ওঠে, তার প্রথম দিকের অনেক গল্প আমাদের জানা ছিল ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে। আমরা কখনো দলবেঁধে কনক আদিত্যের স্টুডিওতে হামলে পড়তাম অপ্রকাশিত কিংবা খালি কণ্ঠের গান শুনতে। সেখানে অবধারিতভাবে থাকতেন রাহুল আনন্দ এবং জলের গানের অন্য সদস্যরা। সেসব চন্দ্রাহত রাত ছিল বছর বারো আগের।
শিল্পী ধ্রুব এষের লেখা এবং কনক ও কার্তিকের গাওয়া ‘একটু বসিয়া থাক’ শিরোনামের গানটি যখন প্রথম শুনি, এক ধরনের আবেশ তৈরি হয়েছিল। বাংলা গানে সহজিয়া কথা ও সুরের চর্চা অনেক প্রাচীন বিষয়। আধুনিক গানের আবহে আমরা যে গান শুনে বড় হয়েছি, রুচি তৈরি করেছি, সে ধারায় কনক আদিত্যের এই গানটির একটি ভিন্ন মাত্রা আছে। ‘লিলুয়া বাতাসে’র চিত্রকল্পও একটা দারুণ তন্ময়তা তৈরি করে। ‘আপনারা কি লোকসংগীত বা সে ঘরানার গান করবেন বলে ভেবে নিয়েছিলেন?’ গানের দল জলের গান থেকে কনক আদিত্যের শিল্পী সত্তাকে আলাদা করা যায় না বলে জানতে চাইলাম। তিনি বললেন, ‘সে রকম নয়। কিন্তু সহজ কথায়, সহজ সুরে গান করার একটা ইচ্ছা ছিল। ভাবনায় ছিল, যে ছেলেটি গিটারে টুংটাং করে, সে-ও যেন আমাদের গানগুলো গাইতে পারে। লোকসংগীত নিয়ে অনেক কিছু করে ফেলব, সে রকম ভাবনা ছিল না। ততদিনে রাহুলের হাত ধরে সে রকম কিছু মৌলিক গানও তৈরি হয়েছে।’ জলের গান সে জায়গায় সফল হয়েছে—সেটা বলাই যায়।
জলের গান এবং সংগীতশিল্পী কনক আদিত্যকে নিয়ে বহু কিছু বলা যায়। কিন্তু আমাকে যে বিষয়টি টানে, সেটি তাঁর বহুমুখীনতা। গান, ব্যবসা, দেশ-বিদেশ ভ্রমণ, ক্র্যাকের মতো একটি অলাভজনক শিল্পপ্রচেষ্টার ট্রাস্টি, পরিবেশ ও প্লাস্টিক পণ্যের পুনর্ব্যবহার বিষয়ে সচেতনতা তৈরি, স্কুল পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত থাকা ইত্যাদি মিলিয়ে যে বর্ণিল ও বহুরৈখিক যাপন–সেটা খুব কম মানুষের আছে। স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে বললাম, ক্যামনে সম্ভব! জানালেন, জীবন তো ছোট। যতটুকু পারা যায় এক জীবনে।
অভিজ্ঞরা বলেন, মানুষ স্মৃতিময় প্রাণী। স্মৃতি তৈরি করে করে চলাই তার কাজ। এক জীবনে আরও স্মৃতি তৈরি হোক। যাপনে বৈচিত্র্য আরও বাড়ুক। শুভ জন্মদিন।
নতুন গানের লিংক:
গত বছর এপ্রিলে ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি অব ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়ার উদ্যোগে আয়োজিত ‘ইকো ফিল্ম ল্যাব: ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম রেসিডেন্সি’র অংশ হিসেবে সুব্রত সরকার ও অভিনেতা মনোজ প্রামাণিক নির্মাণ করেছেন স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা ‘হইতে সুরমা’।
৩ ঘণ্টা আগেভারতে এক জুনিয়র আইনজীবীর ওভারটাইম কাজের পরদিন অফিসে দেরিতে হবে জানিয়ে একটি বার্তা পাঠান সিনিয়র আইনজীবীকে। বার্তাটি সহজভাবে নেননি সিনিয়র আইনজীবী। তিনি প্রকাশ্য জুনিয়র আইনজীবীর সমালোচনা করেছেন। এতে দেশটিতে কর্মস্থলের সংস্কৃতি নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে।
১২ ঘণ্টা আগেচলতি মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত সিডনি, মেলবোর্ন ও অ্যাডিলেডে কয়েকটি কনসার্ট করেছেন। ফিরেই ব্যস্ত হয়েছেন দেশের মঞ্চে। ১৫ নভেম্বর সেনা প্রাঙ্গণে গেয়েছেন ‘ঢাকা রেট্রো’ কনসার্টে। এবার জেমস জানালেন নতুন খবর।
১৫ ঘণ্টা আগেচার দশকের বেশি সময় ধরে সিনেমার সঙ্গে জড়িয়ে আছেন আমির খান। মনপ্রাণ দিয়ে এত দিন শুধু কাজই করে গেছেন মিস্টার পারফেকশনিস্ট। কাজের ব্যস্ততায় পরিবারের দিকে খেয়াল রাখার তেমন সুযোগ পাননি। ফলে সন্তানদের সঙ্গে তাঁর এক ধরনের দূরত্ব রয়ে গেছে। এই দূরত্ব দূর করতে উদ্যোগী হয়েছেন আমিরকন্যা ইরা খান। বাবাকে নিয়ে মানস
১৫ ঘণ্টা আগে