বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আইয়ুব বাচ্চুর মতো একজন অসাধারণ গিটার প্রতিভা পেয়েছিলাম আমরা। তাঁর কতটা কদর আমরা করতে পেরেছি আর তাঁর কাছ থেকে কতটা নিতে পেরেছি, সেটা সময়ই বলে দেবে। একটা ইনস্টিটিউট গড়ার স্বপ্ন ছিল আইয়ুব বাচ্চুর। আজ তাঁর জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে সেই স্বপ্নের কথা লিখেছেন এম এস রানা।
২০০৩ সালের কথা। একটি পাক্ষিক পত্রিকায় গিটার শেখার নতুন বিভাগ শুরুর পরিকল্পনা করছি। এক সন্ধ্যায় তাই আইয়ুব বাচ্চুর ‘রান্নাঘরে’ মিটিং। আইয়ুব বাচ্চুর নিজস্ব স্টুডিওর নাম ছিল ‘এবি কিচেন’। পুরো পরিকল্পনাটা শুনে তিনি চরম উচ্ছ্বসিত। বললেন, ‘দারুণ একটা ব্যাপার হবে তো! আমার দেশের তরুণেরা ব্যান্ডের গান শুনছে, নিজে নিজে গিটার বাজানোর চেষ্টা করছে, শেখানোর কেউ নেই। তেমন কোনো প্রতিষ্ঠানও গড়ে উঠছে না। তোর উদ্যোগটাকে আমি স্যালুট জানাই। আমার শতভাগ শুভকামনা আর সহযোগিতা থাকবে।’
বললাম, ‘লেসনগুলো তো আপনাকেই দিতে হবে! গিটার তো আপনি শেখাবেন!’ স্বভাবসুলভ একটা হাসি দিয়ে বললেন, ‘আমাকে মাফ করে দে। আমি নিজের নামে লেসন দিতে চাই না। আমি ছোটখাটো গিটারবাদক! আরও কত কত শিল্পী আছেন তাঁদের নিয়ে কর।’ বললাম, ‘রাগ করে বলছেন? নাকি অভিমান? আপনি যা জানেন, সেটা নতুন প্রজন্মকে শিখিয়ে যাবেন না?’ একটু গম্ভীর হয়ে গেলেন তিনি, ‘একটা বাস্তব কথা বলি, পত্রিকার প্রতিটা কলাম ইঞ্চির দাম আছে। সেখানে বিনা টাকায় কত দিন গিটার শেখানোর মতো একটা অপ্রচলিত কাজ মালিকপক্ষ চালিয়ে যাবেন, সেটা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। মাঝপথে হুট করে বন্ধ করে দিলে বদনামটা আমার হবে। কষ্টটা আমি পাব।’
আইয়ুব বাচ্চুর চোখ দুটো কেমন ছলছল হয়ে উঠল। দুজনই চুপচাপ। পরিবেশটা কেমন গুমোট হয়ে উঠল। আনমনে কিছু একটা ভাবলেন। বললেন, ‘আমার একটা পরিকল্পনা আছে। আমি একটা ইনস্টিটিউট গড়তে চাই। এখানে মানুষ গিটার শিখবে, গিটার চিনবে, গিটার জানবে। প্র্যাকটিস করবে, মিউজিক নিয়ে গবেষণা করবে, দেশ-বিদেশের বড় বড় শিল্পীর সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় হবে। আমি নিজেও কষ্ট করে গিটার শিখেছি। তাই নতুনদের জন্য গিটার শেখার একটা প্ল্যাটফর্ম করে দিতে চাই।’ বললাম, ‘এ তো ভালো কথা। কিন্তু পরিকল্পনা কত দূর এগিয়েছে?’ তিনি বললেন, ‘এখনো পরিকল্পনা গোছাচ্ছি। ভালো ইনভেস্টর পেলেই শুরু করব। টেনশন কেবল ইনভেস্টর নিয়েই।’
এরপর ২০০৯ সাল। একটি দৈনিক পত্রিকার জন্য ফিচার করতে গিয়ে আবারও প্রসঙ্গটা তুললাম। কত দূর এগোল ইনস্টিটিউটের কাজ? জানালেন, ‘ইনভেস্টর পাইনি। আর আমি নিজেও জীবিকার তাগিদে নানান কাজে ব্যস্ত। তাই বেশি দূর এগোয়নি।’
২০১৭ সালে বিটিভির একটা অনুষ্ঠানের কাজ করতে গিয়ে আড্ডার ছলে আবারও কথাটা পাড়লাম। আইয়ুব বাচ্চু হাসলেন। বললেন, ‘এখনো হয়নি রে। তবে বেঁচে থাকলে একদিন না একদিন হয়ে যাবে। আসলে এ দেশের মানুষ ভাতের হোটেলে ইনভেস্ট করতে চায়; কিন্তু গিটার শেখানোর জন্য না। তরুণদের নিয়ে একটা প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে চেয়েও তো করতে পারলাম না। সেই দুঃখে তো গিটারগুলোই নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নিলাম!’
২০১৮ সাল। আইয়ুব বাচ্চু চলে গেলেন। ইনস্টিটিউট আর হলো না।
এখনো এই শহরে সন্ধ্যা নেমে এলে কিংবা ঘুমভাঙা শহরে বেজে ওঠে তাঁর রুপালি গিটারের সুর। এই সুর হারিয়ে যাওয়া সম্ভব কোনো দিন? নিশ্চয়ই না। নিশ্চয়ই এখনো সম্ভব আইয়ুব বাচ্চুর স্বপ্নটাকে পূরণ করা। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় কিংবা ব্যক্তি উদ্যোগে দেশে আইয়ুব বাচ্চুর নামে একটি ইনস্টিটিউট গড়ে উঠতেই পারে। নিশ্চয়ই এমন সংগীতানুরাগী রয়েছেন এ দেশে।
আইয়ুব বাচ্চুর মতো একজন অসাধারণ গিটার প্রতিভা পেয়েছিলাম আমরা। তাঁর কতটা কদর আমরা করতে পেরেছি আর তাঁর কাছ থেকে কতটা নিতে পেরেছি, সেটা সময়ই বলে দেবে। একটা ইনস্টিটিউট গড়ার স্বপ্ন ছিল আইয়ুব বাচ্চুর। আজ তাঁর জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে সেই স্বপ্নের কথা লিখেছেন এম এস রানা।
২০০৩ সালের কথা। একটি পাক্ষিক পত্রিকায় গিটার শেখার নতুন বিভাগ শুরুর পরিকল্পনা করছি। এক সন্ধ্যায় তাই আইয়ুব বাচ্চুর ‘রান্নাঘরে’ মিটিং। আইয়ুব বাচ্চুর নিজস্ব স্টুডিওর নাম ছিল ‘এবি কিচেন’। পুরো পরিকল্পনাটা শুনে তিনি চরম উচ্ছ্বসিত। বললেন, ‘দারুণ একটা ব্যাপার হবে তো! আমার দেশের তরুণেরা ব্যান্ডের গান শুনছে, নিজে নিজে গিটার বাজানোর চেষ্টা করছে, শেখানোর কেউ নেই। তেমন কোনো প্রতিষ্ঠানও গড়ে উঠছে না। তোর উদ্যোগটাকে আমি স্যালুট জানাই। আমার শতভাগ শুভকামনা আর সহযোগিতা থাকবে।’
বললাম, ‘লেসনগুলো তো আপনাকেই দিতে হবে! গিটার তো আপনি শেখাবেন!’ স্বভাবসুলভ একটা হাসি দিয়ে বললেন, ‘আমাকে মাফ করে দে। আমি নিজের নামে লেসন দিতে চাই না। আমি ছোটখাটো গিটারবাদক! আরও কত কত শিল্পী আছেন তাঁদের নিয়ে কর।’ বললাম, ‘রাগ করে বলছেন? নাকি অভিমান? আপনি যা জানেন, সেটা নতুন প্রজন্মকে শিখিয়ে যাবেন না?’ একটু গম্ভীর হয়ে গেলেন তিনি, ‘একটা বাস্তব কথা বলি, পত্রিকার প্রতিটা কলাম ইঞ্চির দাম আছে। সেখানে বিনা টাকায় কত দিন গিটার শেখানোর মতো একটা অপ্রচলিত কাজ মালিকপক্ষ চালিয়ে যাবেন, সেটা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। মাঝপথে হুট করে বন্ধ করে দিলে বদনামটা আমার হবে। কষ্টটা আমি পাব।’
আইয়ুব বাচ্চুর চোখ দুটো কেমন ছলছল হয়ে উঠল। দুজনই চুপচাপ। পরিবেশটা কেমন গুমোট হয়ে উঠল। আনমনে কিছু একটা ভাবলেন। বললেন, ‘আমার একটা পরিকল্পনা আছে। আমি একটা ইনস্টিটিউট গড়তে চাই। এখানে মানুষ গিটার শিখবে, গিটার চিনবে, গিটার জানবে। প্র্যাকটিস করবে, মিউজিক নিয়ে গবেষণা করবে, দেশ-বিদেশের বড় বড় শিল্পীর সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় হবে। আমি নিজেও কষ্ট করে গিটার শিখেছি। তাই নতুনদের জন্য গিটার শেখার একটা প্ল্যাটফর্ম করে দিতে চাই।’ বললাম, ‘এ তো ভালো কথা। কিন্তু পরিকল্পনা কত দূর এগিয়েছে?’ তিনি বললেন, ‘এখনো পরিকল্পনা গোছাচ্ছি। ভালো ইনভেস্টর পেলেই শুরু করব। টেনশন কেবল ইনভেস্টর নিয়েই।’
এরপর ২০০৯ সাল। একটি দৈনিক পত্রিকার জন্য ফিচার করতে গিয়ে আবারও প্রসঙ্গটা তুললাম। কত দূর এগোল ইনস্টিটিউটের কাজ? জানালেন, ‘ইনভেস্টর পাইনি। আর আমি নিজেও জীবিকার তাগিদে নানান কাজে ব্যস্ত। তাই বেশি দূর এগোয়নি।’
২০১৭ সালে বিটিভির একটা অনুষ্ঠানের কাজ করতে গিয়ে আড্ডার ছলে আবারও কথাটা পাড়লাম। আইয়ুব বাচ্চু হাসলেন। বললেন, ‘এখনো হয়নি রে। তবে বেঁচে থাকলে একদিন না একদিন হয়ে যাবে। আসলে এ দেশের মানুষ ভাতের হোটেলে ইনভেস্ট করতে চায়; কিন্তু গিটার শেখানোর জন্য না। তরুণদের নিয়ে একটা প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে চেয়েও তো করতে পারলাম না। সেই দুঃখে তো গিটারগুলোই নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নিলাম!’
২০১৮ সাল। আইয়ুব বাচ্চু চলে গেলেন। ইনস্টিটিউট আর হলো না।
এখনো এই শহরে সন্ধ্যা নেমে এলে কিংবা ঘুমভাঙা শহরে বেজে ওঠে তাঁর রুপালি গিটারের সুর। এই সুর হারিয়ে যাওয়া সম্ভব কোনো দিন? নিশ্চয়ই না। নিশ্চয়ই এখনো সম্ভব আইয়ুব বাচ্চুর স্বপ্নটাকে পূরণ করা। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় কিংবা ব্যক্তি উদ্যোগে দেশে আইয়ুব বাচ্চুর নামে একটি ইনস্টিটিউট গড়ে উঠতেই পারে। নিশ্চয়ই এমন সংগীতানুরাগী রয়েছেন এ দেশে।
ভারতে এক জুনিয়র আইনজীবীর ওভারটাইম কাজের পরদিন অফিসে দেরিতে হবে জানিয়ে একটি বার্তা পাঠান সিনিয়র আইনজীবীকে। বার্তাটি সহজভাবে নেননি সিনিয়র আইনজীবী। তিনি প্রকাশ্য জুনিয়র আইনজীবীর সমালোচনা করেছেন। এতে দেশটিতে কর্মস্থলের সংস্কৃতি নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগেচলতি মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত সিডনি, মেলবোর্ন ও অ্যাডিলেডে কয়েকটি কনসার্ট করেছেন। ফিরেই ব্যস্ত হয়েছেন দেশের মঞ্চে। ১৫ নভেম্বর সেনা প্রাঙ্গণে গেয়েছেন ‘ঢাকা রেট্রো’ কনসার্টে। এবার জেমস জানালেন নতুন খবর।
৮ ঘণ্টা আগেচার দশকের বেশি সময় ধরে সিনেমার সঙ্গে জড়িয়ে আছেন আমির খান। মনপ্রাণ দিয়ে এত দিন শুধু কাজই করে গেছেন মিস্টার পারফেকশনিস্ট। কাজের ব্যস্ততায় পরিবারের দিকে খেয়াল রাখার তেমন সুযোগ পাননি। ফলে সন্তানদের সঙ্গে তাঁর এক ধরনের দূরত্ব রয়ে গেছে। এই দূরত্ব দূর করতে উদ্যোগী হয়েছেন আমিরকন্যা ইরা খান। বাবাকে নিয়ে মানস
৮ ঘণ্টা আগেসত্যজিৎ রায়, ‘পথের পাঁচালী’, অপু ও দুর্গা—যেন ইতিহাসের একই সুতোয় বাঁধা। সত্যজিৎ রায় যেমন মনে গেঁথে আছে সিনেমাপ্রেমী মানুষের মনে, তেমনি আছে কিশোরী দুর্গা। সেই কিশোরী চরিত্রটিতে যিনি অভিনয় করেছিলেন তিনি উমা। পুরো নাম উমা দাশগুপ্ত। ওই একটি মাত্র সিনেমাতেই অভিনয় করেছিলেন তিনি, আর তাতেই পেয়েছেন জগৎজোড়া..
১১ ঘণ্টা আগে