কাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা
ইউটিউবের শর্টস, ফেসবুকের রিলস এবং টিকটকের মতো শর্ট ভিডিও প্ল্যাটফর্মগুলো এখন মেতে আছে ‘ম্যাকেইবা’ নিয়ে। জেন নামে পরিচিত ফ্রান্সের সংগীতশিল্পী ও গীতিকার জেন লুই গ্যালিসের গাওয়া ‘ম্যাকেইবা’ গানটি এখন রীতিমতো ট্রেন্ড। ইউটিউবে জেনের মূল গানের ভিউ এখন ২০ কোটির বেশি! আর এই গানটিকে নিয়ে বানানো বিচিত্র ভিডিওগুলোর ভিউও মিলিয়নের ঘরে।
গানটির কিছু লাইনে ম্যাকেইবাকে উদ্দেশ করে বলা হয়েছে, ‘আই ওয়ান্ট টু হেয়ার ইওর ব্রেথ জাস্ট নেক্সট টু মাই সোল/আই ওয়ান্ট টু ফিল অপ্রেস উইদাউট এনি রেস্ট/আই ওয়ান্ট টু সি ইউ সিং, আই ওয়ান্ট টু সি ইউ ফাইট/বিকজ ইউ আর দ্য রিয়েল বিউটি অব হিউম্যান রাইট। …’
স্বাভাবিক ভাবে প্রশ্ন জাগে, কে এই ম্যাকেইবা? মজার বিষয় হলো, ম্যাকেইবা নিজেও একজন সংগীতশিল্পী।
বর্ণবৈষম্য বা জাতিবিদ্বেষের মতো ঘটনাগুলোতে থাকে বিচ্ছিন্নতা ও নৃশংসতার কদর্য রূপ। ১৯৪৮ সাল থেকে নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশ্বকে ‘কালোদের’ এই অবস্থা সম্পর্কে জানানোর জন্য নিজের কণ্ঠ ব্যবহার করেছিলেন মিরিয়াম ম্যাকেইবা। তাঁর পুরো নাম জেনজিল মিরিয়াম ম্যাকেইবা আর ডাকনাম ‘মামা ম্যাকেইবা’।
ম্যাকেইবা সম্পর্কে বলা হয়, আফ্রিকান সংগীতশিল্পীদের মধ্যে তিনিই প্রথম বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি অর্জন করেছিলেন। ম্যাকেইবা পশ্চিমা শ্রোতাদের সামনে আফ্রিকান সংগীত নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন। তিনি বিশ্বসংগীতের ভুবনে আফ্রোপপ ঘরানার সংগীতের জন্য জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। ম্যাকেইবা শুধু সংগীতশিল্পী ছিলেন না; ছিলেন একজন মানবাধিকারকর্মী। জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকার সময় দক্ষিণ আফ্রিকা ও পশ্চিমা বিশ্বে তাঁকে স্টাইল আইকন হিসেবে দেখা হতো। ম্যাকেইবা তাঁর বর্ণবৈষম্যবিরোধী গানের কারণে আফ্রিকায় বৈষম্য বিরোধিতার প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন।
জোহানেসবার্গের কাছের একটি ছোট শহরে ১৯৩২ সালের ৪ মার্চ জন্মেছিলেন মিরিয়াম ম্যাকেইবা। জন্মের পর প্রথম ছয় মাস তিনি মায়ের সঙ্গে জেলে কাটিয়েছেন! বেআইনিভাবে বিয়ার বিক্রির অপরাধে তাঁর মা ক্রিস্টিনা ম্যাকেইবাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। বাবা ক্যাসওয়েল ম্যাকেইবা পেশায় ছিলেন শিক্ষক। নিজের ছয় বছর বয়সে বাবাকে হারান মিরিয়াম। ফলে ছোটবেলা থেকে আর্থিক কষ্টের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল তাঁর পরিবারকে।
তবে মিরিয়ামকে বাঁচিয়ে দিয়েছিল তাঁর গানের গলা। সেই প্রতিভাবলে ছোটবেলা থেকে মিরিয়াম বিভিন্ন গানের দলে গাওয়া শুরু করেন। কোয়ালা ও মারাবির মতো আফ্রিকান সংগীত এবং বিগ ব্যান্ড, গসপেল ও জ্যাজের মতো পশ্চিমা শৈলীর সংগীতে পূর্ণ একটি জনপদে বেড়ে উঠেছিলেন তিনি। ১৩ বছর বয়সে একটি গানের প্রতিযোগিতায় জিতে যান মিরিয়াম। এরপর থেকে বিয়ের অনুষ্ঠানে গান গাওয়া শুরু করেন।
গানের ক্ষেত্রে মিরিয়াম পেয়েছিলেন তাঁর পরিবারের সংগীত রুচি। তাঁর মা বেশ কিছু ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারতেন। তাঁর বাবা পিয়ানো বাজাতেন এবং দ্য মিসিসিপি ১২ নামে একটি দলে গান গাইতেন। বিখ্যাত সংগীতশিল্পী ডিউক এলিংটন ও এল্লা ফিটজেরাল্ডসহ অনেকের গানের রেকর্ড সংগ্রহ করে দিতেন ম্যাকেইবার বড় ভাই। সেসব রেকর্ড শুনে শুনেই তিনি গান শিখেছিলেন।
বিভিন্ন গানের দলের সঙ্গে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন মিরিয়াম ম্যাকেইবা। তাঁর পেশাদার সংগীতজীবন শুরু হয় কিউবান ব্রাদার্স নামে একটি ব্যান্ডে। এই ব্যান্ডটি বিভিন্ন ইংরেজি গানের কভার করত। মজার বিষয় হলো, এই দলের একমাত্র নারী সদস্য ছিলেন মিরিয়াম। এরপর একে একে তাঁর প্রায় ৩০টি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়। বিভিন্ন দেশের বরেণ্য শিল্পীদের সঙ্গেও যৌথ ভাবে গান করেছেন ম্যাকেইবা।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ জীবনে নিজের সংগীতের ধারা বদল হয়েছিল তাঁর, বদল এসেছিল বাদ্যযন্ত্রেও। মিরিয়ামের গানের কথা ছিল আবেগময়, সুর ও গায়কিতে ছিল অন্য রকম এক আবেদন। তাঁর কণ্ঠের দৃঢ়তা মানুষকে স্পর্শ করত। গানের মধ্য দিয়ে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার ‘কালো মানুষ’দের রাজনৈতিক বক্তব্য তুলে ধরতেন তাঁর দর্শকদের সামনে। ম্যাকেইবা বলেছিলেন, তিনি রাজনৈতিক সংগীত পরিবেশন করেননি। তিনি বলেন, ‘লোকে বলে, আমি রাজনীতি করি। কিন্তু আমি যা গাই, তা রাজনীতি নয়, সত্য।’
১৯৫৯ সালে একটি বর্ণবাদবিরোধী চলচ্চিত্রের ছোট্ট চরিত্রে অভিনয় করে পুরস্কার জিতেছিলেন মিরিয়াম ম্যাকেইবা। পুরস্কার গ্রহণ করতে ইতালির ভেনিসে গেলে দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ হয়। দেশে ফেরার সময় মিরিয়াম জানতে পারেন, দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার তাঁর পাসপোর্ট বাতিল করেছে। তাঁর আর ফেরা হয়নি নিজ জন্মভূমিতে। দীর্ঘ সময় প্রবাসে থাকতে হয় তাঁকে। কিন্তু সে সময়েও সংগীত পরিবেশনকালে নিজের সংস্কৃতির কথা বিবেচনা করে পোশাক বেছে নিতেন। মিরিয়াম একবার জাতিসংঘে বলেছিলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার নারী এবং শিশুদের বিরুদ্ধে বন্দুক ও গুলি ব্যবহার করা হচ্ছে।’ বর্ণবাদ সম্পর্কে তাঁর এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকায় তাঁর গান নিষিদ্ধ করা হয়। বাতিল করে দেওয়া হয় তাঁর নাগরিকত্ব।
১৯৯০ সাল। কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা। মুক্তি পেয়ে তিনি মিরিয়ামকে নিজ দেশে ফেরার আহ্বান জানান। মিরিয়াম ফিরলেন জন্মভূমিতে। সাধারণ মানুষ তাঁকে বরণ করে নিল ‘মামা আফ্রিকা’ বলে। দেশে ফেরার পর ১৮ বছর বেঁচে ছিলেন তিনি। এ সময় বিভিন্ন দেশে কনসার্টে অংশ নিয়েছেন। বলে গেছেন মানুষের মুক্তির কথা, বৈষম্যহীন সমাজের কথা। প্রায় ৭৬ বছর বয়সে ২০০৮ সালের ১০ নভেম্বর ইতালিতে মারা যান ‘মামা আফ্রিকা’ মিরিয়াম ম্যাকেইবা। তাঁর মৃত্যুতে ম্যান্ডেলা বলেছিলেন, ‘মিরিয়ামের সংগীত আমাদের সবার মধ্যে আশার অনুভূতি জাগিয়েছিল।’
বছরের পর বছর বর্ণবৈষম্য বিরোধী আলোচনায় ‘মামা আফ্রিকা’ ঘুরেফিরে আসবেন, এটাই স্বাভাবিক। এই একুশ শতকে বিশ্বে যখন বিভিন্ন ভাবে বাড়ছে বৈষম্য, নারীদের ওপর বহুবিচিত্র্য উপায়ে নেমে আসছে নিপীড়ন, সেই সময় ফ্রান্সের শিল্পী জেন বেছে নেন ম্যাকেইবার মতো এক শক্তিশালী চরিত্রকে, নিজের গানের বিষয় হিসেবে। এ যেন এক অদ্ভুত সমাপতন।
মিরিয়াম ম্যাকেইবা যেসব পুরস্কার পেয়েছিলেন:
গ্র্যামি, ১৯৬৬
অটো হ্যান্স পিস স্বর্ণপদক, ২০০১
পোলার মিউজিক প্রাইজ, ২০০২
এমটিভি আফ্রিকা মিউজিক লিজেন্ড অ্যাওয়ার্ড, ২০১০ (মরণোত্তর)
ইউটিউবের শর্টস, ফেসবুকের রিলস এবং টিকটকের মতো শর্ট ভিডিও প্ল্যাটফর্মগুলো এখন মেতে আছে ‘ম্যাকেইবা’ নিয়ে। জেন নামে পরিচিত ফ্রান্সের সংগীতশিল্পী ও গীতিকার জেন লুই গ্যালিসের গাওয়া ‘ম্যাকেইবা’ গানটি এখন রীতিমতো ট্রেন্ড। ইউটিউবে জেনের মূল গানের ভিউ এখন ২০ কোটির বেশি! আর এই গানটিকে নিয়ে বানানো বিচিত্র ভিডিওগুলোর ভিউও মিলিয়নের ঘরে।
গানটির কিছু লাইনে ম্যাকেইবাকে উদ্দেশ করে বলা হয়েছে, ‘আই ওয়ান্ট টু হেয়ার ইওর ব্রেথ জাস্ট নেক্সট টু মাই সোল/আই ওয়ান্ট টু ফিল অপ্রেস উইদাউট এনি রেস্ট/আই ওয়ান্ট টু সি ইউ সিং, আই ওয়ান্ট টু সি ইউ ফাইট/বিকজ ইউ আর দ্য রিয়েল বিউটি অব হিউম্যান রাইট। …’
স্বাভাবিক ভাবে প্রশ্ন জাগে, কে এই ম্যাকেইবা? মজার বিষয় হলো, ম্যাকেইবা নিজেও একজন সংগীতশিল্পী।
বর্ণবৈষম্য বা জাতিবিদ্বেষের মতো ঘটনাগুলোতে থাকে বিচ্ছিন্নতা ও নৃশংসতার কদর্য রূপ। ১৯৪৮ সাল থেকে নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশ্বকে ‘কালোদের’ এই অবস্থা সম্পর্কে জানানোর জন্য নিজের কণ্ঠ ব্যবহার করেছিলেন মিরিয়াম ম্যাকেইবা। তাঁর পুরো নাম জেনজিল মিরিয়াম ম্যাকেইবা আর ডাকনাম ‘মামা ম্যাকেইবা’।
ম্যাকেইবা সম্পর্কে বলা হয়, আফ্রিকান সংগীতশিল্পীদের মধ্যে তিনিই প্রথম বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি অর্জন করেছিলেন। ম্যাকেইবা পশ্চিমা শ্রোতাদের সামনে আফ্রিকান সংগীত নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন। তিনি বিশ্বসংগীতের ভুবনে আফ্রোপপ ঘরানার সংগীতের জন্য জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। ম্যাকেইবা শুধু সংগীতশিল্পী ছিলেন না; ছিলেন একজন মানবাধিকারকর্মী। জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকার সময় দক্ষিণ আফ্রিকা ও পশ্চিমা বিশ্বে তাঁকে স্টাইল আইকন হিসেবে দেখা হতো। ম্যাকেইবা তাঁর বর্ণবৈষম্যবিরোধী গানের কারণে আফ্রিকায় বৈষম্য বিরোধিতার প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন।
জোহানেসবার্গের কাছের একটি ছোট শহরে ১৯৩২ সালের ৪ মার্চ জন্মেছিলেন মিরিয়াম ম্যাকেইবা। জন্মের পর প্রথম ছয় মাস তিনি মায়ের সঙ্গে জেলে কাটিয়েছেন! বেআইনিভাবে বিয়ার বিক্রির অপরাধে তাঁর মা ক্রিস্টিনা ম্যাকেইবাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। বাবা ক্যাসওয়েল ম্যাকেইবা পেশায় ছিলেন শিক্ষক। নিজের ছয় বছর বয়সে বাবাকে হারান মিরিয়াম। ফলে ছোটবেলা থেকে আর্থিক কষ্টের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল তাঁর পরিবারকে।
তবে মিরিয়ামকে বাঁচিয়ে দিয়েছিল তাঁর গানের গলা। সেই প্রতিভাবলে ছোটবেলা থেকে মিরিয়াম বিভিন্ন গানের দলে গাওয়া শুরু করেন। কোয়ালা ও মারাবির মতো আফ্রিকান সংগীত এবং বিগ ব্যান্ড, গসপেল ও জ্যাজের মতো পশ্চিমা শৈলীর সংগীতে পূর্ণ একটি জনপদে বেড়ে উঠেছিলেন তিনি। ১৩ বছর বয়সে একটি গানের প্রতিযোগিতায় জিতে যান মিরিয়াম। এরপর থেকে বিয়ের অনুষ্ঠানে গান গাওয়া শুরু করেন।
গানের ক্ষেত্রে মিরিয়াম পেয়েছিলেন তাঁর পরিবারের সংগীত রুচি। তাঁর মা বেশ কিছু ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারতেন। তাঁর বাবা পিয়ানো বাজাতেন এবং দ্য মিসিসিপি ১২ নামে একটি দলে গান গাইতেন। বিখ্যাত সংগীতশিল্পী ডিউক এলিংটন ও এল্লা ফিটজেরাল্ডসহ অনেকের গানের রেকর্ড সংগ্রহ করে দিতেন ম্যাকেইবার বড় ভাই। সেসব রেকর্ড শুনে শুনেই তিনি গান শিখেছিলেন।
বিভিন্ন গানের দলের সঙ্গে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন মিরিয়াম ম্যাকেইবা। তাঁর পেশাদার সংগীতজীবন শুরু হয় কিউবান ব্রাদার্স নামে একটি ব্যান্ডে। এই ব্যান্ডটি বিভিন্ন ইংরেজি গানের কভার করত। মজার বিষয় হলো, এই দলের একমাত্র নারী সদস্য ছিলেন মিরিয়াম। এরপর একে একে তাঁর প্রায় ৩০টি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়। বিভিন্ন দেশের বরেণ্য শিল্পীদের সঙ্গেও যৌথ ভাবে গান করেছেন ম্যাকেইবা।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ জীবনে নিজের সংগীতের ধারা বদল হয়েছিল তাঁর, বদল এসেছিল বাদ্যযন্ত্রেও। মিরিয়ামের গানের কথা ছিল আবেগময়, সুর ও গায়কিতে ছিল অন্য রকম এক আবেদন। তাঁর কণ্ঠের দৃঢ়তা মানুষকে স্পর্শ করত। গানের মধ্য দিয়ে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার ‘কালো মানুষ’দের রাজনৈতিক বক্তব্য তুলে ধরতেন তাঁর দর্শকদের সামনে। ম্যাকেইবা বলেছিলেন, তিনি রাজনৈতিক সংগীত পরিবেশন করেননি। তিনি বলেন, ‘লোকে বলে, আমি রাজনীতি করি। কিন্তু আমি যা গাই, তা রাজনীতি নয়, সত্য।’
১৯৫৯ সালে একটি বর্ণবাদবিরোধী চলচ্চিত্রের ছোট্ট চরিত্রে অভিনয় করে পুরস্কার জিতেছিলেন মিরিয়াম ম্যাকেইবা। পুরস্কার গ্রহণ করতে ইতালির ভেনিসে গেলে দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ হয়। দেশে ফেরার সময় মিরিয়াম জানতে পারেন, দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার তাঁর পাসপোর্ট বাতিল করেছে। তাঁর আর ফেরা হয়নি নিজ জন্মভূমিতে। দীর্ঘ সময় প্রবাসে থাকতে হয় তাঁকে। কিন্তু সে সময়েও সংগীত পরিবেশনকালে নিজের সংস্কৃতির কথা বিবেচনা করে পোশাক বেছে নিতেন। মিরিয়াম একবার জাতিসংঘে বলেছিলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার নারী এবং শিশুদের বিরুদ্ধে বন্দুক ও গুলি ব্যবহার করা হচ্ছে।’ বর্ণবাদ সম্পর্কে তাঁর এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকায় তাঁর গান নিষিদ্ধ করা হয়। বাতিল করে দেওয়া হয় তাঁর নাগরিকত্ব।
১৯৯০ সাল। কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা। মুক্তি পেয়ে তিনি মিরিয়ামকে নিজ দেশে ফেরার আহ্বান জানান। মিরিয়াম ফিরলেন জন্মভূমিতে। সাধারণ মানুষ তাঁকে বরণ করে নিল ‘মামা আফ্রিকা’ বলে। দেশে ফেরার পর ১৮ বছর বেঁচে ছিলেন তিনি। এ সময় বিভিন্ন দেশে কনসার্টে অংশ নিয়েছেন। বলে গেছেন মানুষের মুক্তির কথা, বৈষম্যহীন সমাজের কথা। প্রায় ৭৬ বছর বয়সে ২০০৮ সালের ১০ নভেম্বর ইতালিতে মারা যান ‘মামা আফ্রিকা’ মিরিয়াম ম্যাকেইবা। তাঁর মৃত্যুতে ম্যান্ডেলা বলেছিলেন, ‘মিরিয়ামের সংগীত আমাদের সবার মধ্যে আশার অনুভূতি জাগিয়েছিল।’
বছরের পর বছর বর্ণবৈষম্য বিরোধী আলোচনায় ‘মামা আফ্রিকা’ ঘুরেফিরে আসবেন, এটাই স্বাভাবিক। এই একুশ শতকে বিশ্বে যখন বিভিন্ন ভাবে বাড়ছে বৈষম্য, নারীদের ওপর বহুবিচিত্র্য উপায়ে নেমে আসছে নিপীড়ন, সেই সময় ফ্রান্সের শিল্পী জেন বেছে নেন ম্যাকেইবার মতো এক শক্তিশালী চরিত্রকে, নিজের গানের বিষয় হিসেবে। এ যেন এক অদ্ভুত সমাপতন।
মিরিয়াম ম্যাকেইবা যেসব পুরস্কার পেয়েছিলেন:
গ্র্যামি, ১৯৬৬
অটো হ্যান্স পিস স্বর্ণপদক, ২০০১
পোলার মিউজিক প্রাইজ, ২০০২
এমটিভি আফ্রিকা মিউজিক লিজেন্ড অ্যাওয়ার্ড, ২০১০ (মরণোত্তর)
সিনেমার গল্প চুড়ান্ত হওয়ার পর প্রথমে মান্নাকেই ভেবেছিলেন কাজী হায়াৎ। তবে প্রযোজক ডিপজলের সঙ্গে সে সময় মান্নার দূরত্ব চলছিল। তাই মান্নাকে নিতে রাজি ছিলেন না ডিপজল। ভাবা হচ্ছিল, রুবেল কিংবা হুমায়ূন ফরীদির কথা।
৫ ঘণ্টা আগেপুরোনো ভিডিও এডিট করে মিথ্যা ক্যাপশন জুড়ে দেওয়ায় বিব্রত অভিনেত্রী। মিম বলেন, ‘জুয়েলারি শোরুমের ভিডিওটি জোড়াতালি দিয়ে অনেকেই লিখছেন, আমি মবের শিকার হয়েছি। আমাকে উদ্বোধনে বাধা দেওয়া হয়েছে। আসলে তেমন কোনো কিছু আমার সঙ্গে ঘটেনি।’
৫ ঘণ্টা আগেবিদেশে তুমুল অভ্যর্থনা পেলেও নিজের দেশ ভারতেই কনসার্ট করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়লেন দিলজিৎ। তেলেঙ্গানা সরকার নোটিশ পাঠিয়ে তাঁকে সতর্ক করেছে, মাদকদ্রব্যের প্রচার করা হয়, এমন কোনো গান তিনি যেন কনসার্টে না করেন।
৬ ঘণ্টা আগেচার দশকের ক্যারিয়ার আমির খানের। বলিউডের মাসালা সিনেমার ভিড়ে খানিকটা অন্য ধরনের কাজের কথা উঠলেই আসে তাঁর নাম। নিজের কাজ নিয়ে এতটাই খুঁতখুঁতে থাকেন যে আমিরের আরেক নাম হয়ে গেছে মিস্টার পারফেকশনিস্ট। তবে তাঁর এই সাফল্যের পালে বেশ বড়সড় ধাক্কা লাগে ‘লাল সিং চাড্ডা’র সময়।
৮ ঘণ্টা আগে