আল মামুন, জকিগঞ্জ (সিলেট)
চোখে ভারী চশমা। মাথায় লম্বা চুল। গায়ে পাঞ্জাবি। হাতে বেহালা। জীবন চলে মানুষের গান গেয়েই। লোক চেনেন কণ্ঠ শুনে। এলাকার সবাই তাঁকে চেনে বাউলশিল্পী হিসেবে।
সিলেটের পূর্বাঞ্চলের গুণী এই শিল্পীর নাম মিরা বিশ্বাস। জন্মান্ধ না হলেও জন্মের মাত্র পাঁচ মাস বয়সে টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়ে চিরদিনের জন্য অন্ধ হয়ে যান মিরা।
দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মিরার ওপরই পাঁচ সদস্যের সংসারের ভার। টাকা পয়সা গোনা, নিত্যদিনের বাজার সদাই, পথচলা সবই পারেন, এমনকি ফোনও চালাতে পারেন তিনি। কীভাবে সংসার চলে এমন প্রশ্নে মিরা বলেন ‘দয়ালে চালায়। শিল্পীরা তো এমনই। তাঁদের চালচুলো থাকে না।’
গানই তাঁর প্রাণ। গানই তাঁর নেশা। গানই তাঁর পেশা। গানেই বাঁধা জীবন। গানই তাঁর ধ্যানজ্ঞান। জীবন জীবিকার একমাত্র অবলম্বন গান। গান শুনে খুশি হয়ে যে যা বকশিস দেয় তা দিয়েই কোনো মতে চলে তাঁর সংসার। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘সীমান্তি’-এর দেওয়া একটি বেহালাই তাঁর বড় সম্বল।
আত্মসম্মানবোধের কারণে কখনো কারও কাছে হাত পাতেননি তিনি। বাদ্যযন্ত্র ছাড়াও গান করে শ্রোতা টানার অসাধারণ ক্ষমতা আছে তাঁর। হাতের কাছে যখন যা পান আঙুল দিয়ে তাতে টুং টাং শব্দ তুলে গাইতে থাকেন। গানের টানে ছুটে আসে মানুষ, জমে ওঠে আসর। সীমান্ত এলাকার যে কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মিরা বাউলের উপস্থিতি ছাড়া অনুষ্ঠান পূর্ণতা পায় না! মাঝেমধ্যে দূর-দুরান্তে গান পরিবেশনের ডাকও পান মিরা বিশ্বাস।
গান কীভাবে শিখলেন? জিজ্ঞেস করলে মিরা বলেন, ‘আমার পৈতৃক বাড়ি বালাগঞ্জে। সেখানে সচি চন্দের কাছে তবলার তালিম নিই সেই ছোট বেলায়। দূরবীন শাহের ছাত্র ওয়ারিশ বাউল আমার গানের উস্তাদ। সাড়ে তিন বছর ক্বারী আমির উদ্দীনের সাথে কাটিয়েছি।’ গর্ব করে মিরা বলেন, ‘গণি সরকার, আকলিমা, আরিফ দেওয়ান সবাই তাঁকে চেনেন।’
বাউল সংগীত, দেহ তত্ত্ব, মালজোড়া, নবী ও কৃষ্ণের জীবনী মিরার গানের বিষয়। শীতালং শাহ, দূরবীণ শাহ, আরকুম শাহ, করিম শাহের গান বরাবরই মিরার প্রিয়। বেশ কয়েকটি গানের গীতিকারও তিনি। তিন দশক ধরে গানের জগতে বিচরণ মিরার।
মিরার গানের জাদুতে আকৃষ্ট হয়ে তাঁর সঙ্গে ঘর বাঁধেন জ্যোৎস্না রাণী বিশ্বাস। ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে জকিগঞ্জ উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের হামিন্দপুর গ্রামে শ্বশুরালয়ে বাস করছেন এই গুণী শিল্পী। এক সময় কুশিয়ারা শিল্পী গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ততা ছিল তাঁর। বর্তমানে বড় কষ্টে আছেন জকিগঞ্জের সকলের প্রিয় দৃষ্টিহীন মিরা বাউল। গ্রামাঞ্চলে এক সময় বাউল গানের আসর বসলেও বর্তমানে প্রযুক্তির যুগে বাউল গানের আসর তেমন বসে না।
এক সময় তাঁর যথেষ্ট কদর ছিল। এখন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে তাঁর সংসার। কেমন আছেন? জিজ্ঞেস করলে মিরা বাউল বলেন, ‘বড়ই কষ্টে আছি।’ তিন সন্তান রয়েছে মিরার। নিজে পড়াশোনা না করলেও সন্তানদের পড়াতে খুবই আগ্রহী তিনি। বড় মেয়ে মিতা বিশ্বাস এইচএসসি পাস করেছে। ছেলে মৃদুল বিশ্বাসকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করার পর পেটের দায়ে লেখাপড়া ছাড়াতে বাধ্য হয়েছেন। ছোট ছেলে চয়ন বিশ্বাস একাদশ শ্রেণিতে পড়ে।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শ্রীকান্ত পাল বলেন, সুযোগ-সুবিধার অভাবে হারিয়ে যাচ্ছেন এই অসাধারণ প্রতিভাবান শিল্পী। এই গুণী শিল্পীর প্রতিভা বিকাশে সরকারি বেসরকারি সহায়তা প্রয়োজন।
মিরার ভক্ত জকিগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি আবুল খায়ের চৌধুরী বলেন, মিরা এক অসাধারণ প্রতিভার নাম। সুযোগ পেলে মিরা প্রতিভার প্রমাণ দিতে পারত।
গীতিকার ও সুরকার মিরা বলেন, ‘আমি অন্ধ হলেও আমার মনের চোখ খোলা। সেই চোখ দিয়েই আলো ছড়াতে চাই সর্বত্র।’
চোখে ভারী চশমা। মাথায় লম্বা চুল। গায়ে পাঞ্জাবি। হাতে বেহালা। জীবন চলে মানুষের গান গেয়েই। লোক চেনেন কণ্ঠ শুনে। এলাকার সবাই তাঁকে চেনে বাউলশিল্পী হিসেবে।
সিলেটের পূর্বাঞ্চলের গুণী এই শিল্পীর নাম মিরা বিশ্বাস। জন্মান্ধ না হলেও জন্মের মাত্র পাঁচ মাস বয়সে টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়ে চিরদিনের জন্য অন্ধ হয়ে যান মিরা।
দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মিরার ওপরই পাঁচ সদস্যের সংসারের ভার। টাকা পয়সা গোনা, নিত্যদিনের বাজার সদাই, পথচলা সবই পারেন, এমনকি ফোনও চালাতে পারেন তিনি। কীভাবে সংসার চলে এমন প্রশ্নে মিরা বলেন ‘দয়ালে চালায়। শিল্পীরা তো এমনই। তাঁদের চালচুলো থাকে না।’
গানই তাঁর প্রাণ। গানই তাঁর নেশা। গানই তাঁর পেশা। গানেই বাঁধা জীবন। গানই তাঁর ধ্যানজ্ঞান। জীবন জীবিকার একমাত্র অবলম্বন গান। গান শুনে খুশি হয়ে যে যা বকশিস দেয় তা দিয়েই কোনো মতে চলে তাঁর সংসার। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘সীমান্তি’-এর দেওয়া একটি বেহালাই তাঁর বড় সম্বল।
আত্মসম্মানবোধের কারণে কখনো কারও কাছে হাত পাতেননি তিনি। বাদ্যযন্ত্র ছাড়াও গান করে শ্রোতা টানার অসাধারণ ক্ষমতা আছে তাঁর। হাতের কাছে যখন যা পান আঙুল দিয়ে তাতে টুং টাং শব্দ তুলে গাইতে থাকেন। গানের টানে ছুটে আসে মানুষ, জমে ওঠে আসর। সীমান্ত এলাকার যে কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মিরা বাউলের উপস্থিতি ছাড়া অনুষ্ঠান পূর্ণতা পায় না! মাঝেমধ্যে দূর-দুরান্তে গান পরিবেশনের ডাকও পান মিরা বিশ্বাস।
গান কীভাবে শিখলেন? জিজ্ঞেস করলে মিরা বলেন, ‘আমার পৈতৃক বাড়ি বালাগঞ্জে। সেখানে সচি চন্দের কাছে তবলার তালিম নিই সেই ছোট বেলায়। দূরবীন শাহের ছাত্র ওয়ারিশ বাউল আমার গানের উস্তাদ। সাড়ে তিন বছর ক্বারী আমির উদ্দীনের সাথে কাটিয়েছি।’ গর্ব করে মিরা বলেন, ‘গণি সরকার, আকলিমা, আরিফ দেওয়ান সবাই তাঁকে চেনেন।’
বাউল সংগীত, দেহ তত্ত্ব, মালজোড়া, নবী ও কৃষ্ণের জীবনী মিরার গানের বিষয়। শীতালং শাহ, দূরবীণ শাহ, আরকুম শাহ, করিম শাহের গান বরাবরই মিরার প্রিয়। বেশ কয়েকটি গানের গীতিকারও তিনি। তিন দশক ধরে গানের জগতে বিচরণ মিরার।
মিরার গানের জাদুতে আকৃষ্ট হয়ে তাঁর সঙ্গে ঘর বাঁধেন জ্যোৎস্না রাণী বিশ্বাস। ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে জকিগঞ্জ উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের হামিন্দপুর গ্রামে শ্বশুরালয়ে বাস করছেন এই গুণী শিল্পী। এক সময় কুশিয়ারা শিল্পী গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ততা ছিল তাঁর। বর্তমানে বড় কষ্টে আছেন জকিগঞ্জের সকলের প্রিয় দৃষ্টিহীন মিরা বাউল। গ্রামাঞ্চলে এক সময় বাউল গানের আসর বসলেও বর্তমানে প্রযুক্তির যুগে বাউল গানের আসর তেমন বসে না।
এক সময় তাঁর যথেষ্ট কদর ছিল। এখন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে তাঁর সংসার। কেমন আছেন? জিজ্ঞেস করলে মিরা বাউল বলেন, ‘বড়ই কষ্টে আছি।’ তিন সন্তান রয়েছে মিরার। নিজে পড়াশোনা না করলেও সন্তানদের পড়াতে খুবই আগ্রহী তিনি। বড় মেয়ে মিতা বিশ্বাস এইচএসসি পাস করেছে। ছেলে মৃদুল বিশ্বাসকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করার পর পেটের দায়ে লেখাপড়া ছাড়াতে বাধ্য হয়েছেন। ছোট ছেলে চয়ন বিশ্বাস একাদশ শ্রেণিতে পড়ে।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শ্রীকান্ত পাল বলেন, সুযোগ-সুবিধার অভাবে হারিয়ে যাচ্ছেন এই অসাধারণ প্রতিভাবান শিল্পী। এই গুণী শিল্পীর প্রতিভা বিকাশে সরকারি বেসরকারি সহায়তা প্রয়োজন।
মিরার ভক্ত জকিগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি আবুল খায়ের চৌধুরী বলেন, মিরা এক অসাধারণ প্রতিভার নাম। সুযোগ পেলে মিরা প্রতিভার প্রমাণ দিতে পারত।
গীতিকার ও সুরকার মিরা বলেন, ‘আমি অন্ধ হলেও আমার মনের চোখ খোলা। সেই চোখ দিয়েই আলো ছড়াতে চাই সর্বত্র।’
প্রতি সপ্তাহেই নতুন সিনেমা বা ওয়েব সিরিজের জন্য দর্শকের নজর থাকে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে। সপ্তাহজুড়ে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পাবে নানা দেশের, নানা ভাষার কনটেন্ট। বাছাই করা এমন কিছু কনটেন্টের খবর থাকছে এই প্রতিবেদনে।
১ মিনিট আগেকয়েক বছর ধরে দুই ঈদে বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে সিনেমা মুক্তির হিড়িক দেখা গেলেও বছরের বাকি সময়ে সেই রেশ থাকে না। নির্মাতা ও প্রযোজকদের দাবি, অন্য সময়ে ছবি মুক্তি দিলে ব্যবসা দূরের কথা, হলের খরচ তুলতে নাকানি-চুবানি খেতে হয়।
৭ মিনিট আগে‘গ্লাডিয়েটর’ মুক্তির দুই যুগ পর আসছে ‘গ্লাডিয়েটর টু’। ২২ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি পাবে সিনেমাটি। তার আগেই বাংলাদেশের দর্শকেরা হলে বসে দেখার সুযোগ পাচ্ছেন।
১৫ ঘণ্টা আগেসার্টিফিকেশন বোর্ড চালু হওয়ার পর দেশের প্রথম প্রাপ্তবয়স্কদের সিনেমা হিসেবে এ গ্রেডে ছাড়পত্র পেয়েছে ‘ভয়াল’। ২৯ নভেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে বিপ্লব হায়দার পরিচালিত সিনেমাটি।
১৭ ঘণ্টা আগে