ঢাকা: বিদেশি শিল্পীদের দিয়ে বিজ্ঞাপন বানালে প্রতি শিল্পীর জন্য দুই লাখ টাকা করে ফি সরকারকে দিতে হবে। দেশীয় শিল্পীদের স্বার্থ রক্ষায় এমন নিয়ম এ–সংক্রান্ত নীতিমালায় সংযোজন করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ রোববার সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে এই তথ্য জানান। এ ছাড়া তিনি বলেন, ‘যে টেলিভিশন এই বিজ্ঞাপন প্রচার করবে, সেই টেলিভিশনকেও এককালীন ২০ হাজার টাকা করে দিতে হবে। এটি করে কেউ বিজ্ঞাপন বানাতে চাইলে বানাক। দেশীয় শিল্পী ও শিল্প রক্ষায় এটি করা হয়েছে।’

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির নেতাদের সঙ্গে সচিবালয়ে বৈঠক করেন তথ্যমন্ত্রী।

চলচ্চিত্রে বরাদ্দ বাড়ানোর বিষয় নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য আগে প্রতিবছর আমাদের বরাদ্দ ছিল ৫ কোটি টাকা। সেটিকে ১০ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে।’ এখন অনুদানের চলচ্চিত্রের সংখ্যা বাড়বে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিবছর ১০টা সিনেমায় অনুদান দেওয়া হতো। আমরা গত বছর ১৬টি সিনেমা অনুদান দিয়েছি।’

অনুদানের ছবি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দেওয়া প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘আগে অনুদানের ছবি হলে মুক্তি পেত না। আমরা এখন হলে মুক্তি দেওয়ার বাধ্যবাধকতা দিয়েছি। গত বছর ১০টা হলে মুক্তি দেওয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল, এ বছর থেকে ২০টি হলে মুক্তি দেওয়ার বাধ্যবাধকতা দিয়েছি।’

এ সময় চলচ্চিত্র নির্মাণে ঋণ দিতে এবং নতুন মুখের সন্ধান করার জন্য চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনকে (বিএফডিসি) থোক বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানান পরিচালক সমিতি। দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, ‘এটি একটি ভালো প্রস্তাব। বিষয়টি আমরা বিবেচনা করে দেখব।’

এ ছাড়া চলচ্চিত্রকে বাঁচাতে হল নির্মাণ ও সংস্কারে ১ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করা হয়েছে বলেও জানান তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী। তিনি বলেন ‘এই তহবিল থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামে কেউ হল নির্মাণ বা সংস্কার করতে চাইলে ৫ শতাংশ সুদে এবং বাকি জেলাগুলোতে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ সুদে ঋণ নিতে পারবে। এটি ১০ বছর মেয়াদি ঋণ।’

গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু ফিল্ম সিটির অগ্রগতি নিয়ে এক প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, ইতিমধ্যে টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। সেটা ইভল্যুশন হচ্ছে। খুব সহসাই কাজ শুরু হবে। সাড়ে ৩০০ কোটি টাকার প্রজেক্ট। সেখানে বেশ কয়েকটি ফ্লোর থাকবে। আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা থাকবে।

এ ছাড়া এফডিসির উন্নয়নে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামে এফডিসির একটি আউটলেট করার জন্য এক একর জায়গা এফডিসিকে দেওয়া হয়েছে। এফডিসির উন্নয়নের জন্য অনেক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।

চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমান সোহানের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট সমস্যার কথা তথ্যমন্ত্রীকে জানান। তথ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও সমিতির নেতাদের নিয়ে একটি কমিটি করে চলচ্চিত্রের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান, সেন্সর বোর্ডে সমিতির সভাপতি বা মহাসচিবকে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্তের দাবি জানান তাঁরা।