আনিসুল ইসলাম নাঈম
রাশেদ হোসেন রনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন বদলে একসময় বিদেশে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন বোনা শুরু করেন তিনি। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে রনি সফলও হয়েছেন। ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন জার্মানির ইউনিভার্সিটি অব বনে। স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামে পড়ছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির স্লেভারি স্টাডিজে। তাঁর সাফল্যের গল্প শুনেছেন আনিসুল ইসলাম নাঈম।
শৈশব ও পড়াশোনা
রনির জন্ম কুমিল্লার কালীবাজার ইউনিয়নের হাতীগাড়া গ্রামে। রনির প্রাথমিকের পাঠ শুরু গ্রামের হাতীগাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। কুমিল্লার গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুল থেকে এসএসসি ও কুমিল্লা সিটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন তিনি। এরপর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেন।
সহশিক্ষা কার্যক্রম
পড়ালেখার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন রনি। ছেলেবেলায় ফুটবল, ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন, ভলিবলসহ গ্রামীণ খেলায় আগ্রহ ছিল তাঁর। কলেজে থাকাকালীন সামাজিক সংগঠন ‘বন্ধু সমাজ’ ও ‘হ্যান্ডস ফর হিউমিনিটি’ নামের দুটি সংগঠনের সভাপতি ছিলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইটি সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটি ও কুমিল্লা জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে
দায়িত্ব পালন করেন।
স্বপ্নযাত্রা
রনির স্বপ্ন ছিল ক্রিকেটার হওয়ার। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেও স্বপ্নের পিছু ছাড়েননি তিনি। ভর্তির জন্য গিয়েছিলেন ধানমন্ডির আবাহনী ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে। কিন্তু আবাসিক হলবিহীন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রনির ক্রিকেট অ্যাকাডেমির মাসিক খরচ ও প্র্যাকটিসের শিডিউল ঠিক রাখা কঠিন ছিল। তাই তখনই শেষ হয়ে যায় রনির ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে পড়ালেখায়ও মন বসছিল না তাঁর। নতুন ভাবনা ধরা দেয় বিদেশে উচ্চশিক্ষার। মনস্থির করেন যেকোনোভাবে হোক বিদেশ পাড়ি জমাবেন তিনি।
সিদ্ধান্ত নিলেন জার্মানিতে ব্যাচেলরের জন্য আবেদন করবেন। তিন-চার মাসের আইএলটিএস প্রিপারেশন নিয়ে স্কোর ওঠালেন ৫.৫। এরপর জার্মানিতে ব্যাচেলরের জন্য আবেদন শুরু করেন। রনির আবেদন জার্নির সাথি ছিলেন তাঁর বিভাগের বন্ধু আরিফ। তাঁর সায়েন্স ব্যাকগ্রাউন্ড ও আইএলটিএস স্কোর ৬.০ থাকায় রনির আগেই জার্মানি থেকে অফার লেটার চলে আসে।
রনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত আমি কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফার লেটার না পেয়ে জার্মানির আশা ছেড়ে দিই। আরিফ চলে যায় জার্মানিতে। শেষে বাংলা বিভাগ থেকেই ব্যাচেলর শেষ করার সিদ্ধান্ত নিলাম। তবে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা থেমে থাকেনি। পড়ালেখার পাশাপাশি চলে আইইএলটিএস পরীক্ষার প্রিপারেশন। পড়াশোনার খরচ জোগাড়ে পার্টটাইম চাকরি করি। নিজের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। এর মাঝেই চলত বিদেশের প্রস্তুতি।’
যেভাবে ইউনিভার্সিটি অব বনে
জার্মানিতে টিউশন ফি না থাকলেও জার্মান অ্যাম্বাসি ফেস করার প্রক্রিয়া দীর্ঘ। ২০২২ সালে জার্মান অ্যাম্বাসিতে মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য একটা অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে রাখেন রনি। এর মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে মাস্টার্স শেষ হয় তাঁর। জার্মানিতে রনির দ্বিতীয় মাস্টার্স করার পরিকল্পনা আগে থেকে ছিল। তবে জবিতে বাংলায় পড়ার কারণে জার্মানিতে মাস্টার্সে আবেদনের জন্য রিলেটেড সাবজেক্ট পাওয়া কঠিন হয়ে ওঠে। তা ছাড়া তাঁর সিজিপিএ ছিল ২.৯৭। আবার আইইএলটিএস পরীক্ষা দিয়ে আশানুরূপ স্কোর তুলতে পারেনি।
জানতে চাইলে রনি বলেন, ‘সিজিপিএ ২.৯৭ ও আইইএলটিএস ৬.০ দিয়ে জার্মানির ৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদন করি। এর মধ্যে শুধু ইউনিভার্সিটি অব বন থেকে শেষ মুহূর্তে এসে অফার লেটার পাই। পুরো আবেদন প্রক্রিয়ায় এক বড় ভাই সব সময় পাশে ছিলেন। অফার লেটার পাওয়ার পর তিনি অনেক খুশি হন। আমার তখনকার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো ছিল না।’
পাহাড়সম বাধা
বন ইউনিভার্সিটিতে চান্স পাওয়ার পর ব্লক অ্যাকাউন্টের টাকা জোগাড় নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন রনি। টিউশন ফি না থাকলেও ১১,৯০৪ ইউরো জার্মানিতে পাঠিয়ে দিতে হয়। পরবর্তী সময়ে জার্মানি পৌঁছালে ধাপে ধাপে তা ফেরত দেওয়া হয়। তবে কারও ভিসা না হলে, সেই টাকা দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ব্লক অ্যাকাউন্টের টাকার জন্য তিনি প্রথমে তাঁর পরিবারকে জানান। রনি বলেন, ‘বাড়িতে তখন লাখ খানেক টাকাও নেই। অথচ প্রয়োজন প্রায় ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এমতাবস্থায় পরিবারের জমি বিক্রির কথাও ওঠে। আম্মা আমাদের আত্মীয়দের কাছে টাকা ধার চাওয়া শুরু করেন। আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও পরিচিতজনদের থেকে ধার করে শেষ পর্যন্ত টাকা জোগাড় করতে সক্ষম হই।’
তিনি বলেন, ‘আবেদনের ২৪ মাস পর ২০২৪ সালের ৩১ আগস্ট জার্মান অ্যাম্বাসি ডকুমেন্টস সাবমিট করতে বলে। কয়েক দিন পর অ্যাম্বাসিতে ইন্টারভিউর জন্য ডাক আসে। ইন্টারভিউ খুব স্বাভাবিক ছিল। সাধারণ বিষয় ছাড়া জটিল কোনো প্রশ্ন করেনি। ৩ সেপ্টেম্বর ইন্টারভিউয়ের পর ২৯ সেপ্টেম্বরে গিয়ে পাসপোর্ট কালেকশন করি এবং আলহামদুলিল্লাহ জার্মান ভিসা পাই।’
যেভাবে আবেদন
জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের আগে নিজের স্টাডি ফিল্ড-সংশ্লিষ্ট সাবজেক্ট ও বিশ্ববিদ্যালয় খুঁজে বের করা জরুরি। এ জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েবসাইট হলো DAAD.DE। এ ছাড়া mygermanuniversity ওয়েবসাইটিও রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ও সাবজেক্ট খোঁজার পর দেখতে হবে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি আবেদন করা যায়, নাকি UniAssist এর মাধ্যমে আবেদন করতে হয়। UniAssist হলো একটি মাধ্যম। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীর ডকুমেন্টস যাচাই-বাছাই করে দেশটির বিশ্ববিদ্যালয় আবেদন গ্রহণ করে। জার্মানিতে সামার ও উইন্টার মৌসুমে আবেদন করা যায়।
সুযোগ-সুবিধা
ইউনিভার্সিটি অব বন থেকে শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বড় সুবিধাটি হলো ট্রান্সপোর্টেশন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ড দিয়ে যেকোনো শিক্ষার্থী পুরো জার্মানি ঘুরতে পারবেন। শুধু বন বিশ্ববিদ্যালয় নয়, জার্মানির সব শিক্ষার্থীর জন্য এ সুযোগটি রয়েছে। তা ছাড়া জিমনেসিয়াম, খেলাধুলা কিংবা জার্মান ভাষা শেখানোসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেওয়া হয়। জার্মানিতে যেকোনো শিক্ষার্থীর পড়ালেখার পাশাপাশি সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা কাজের সুযোগ রয়েছে।
নতুনদের পরামর্শ
ইউনিভার্সিটি অব বনে পড়াশোনা করতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ভালোভাবে রিসার্চ করতে হবে। নিজের স্টাডি ফিল্ডের সঙ্গে মিল আছে এমন কোনো সাবজেক্ট পেলে সে সাবজেক্টে পড়তে হলে কী কী শর্ত পূরণ করা প্রয়োজন সেগুলো দেখে নিতে হবে। সেভাবে নিজের অ্যাকাডেমিক প্রোফাইলটি সাজাতে হবে। প্রোফাইল সাজানো হলে শুধু ইউনিভার্সিটি অব বন নয়, আরও ভালো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েও চান্স পাওয়া সম্ভব।
রাশেদ হোসেন রনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন বদলে একসময় বিদেশে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন বোনা শুরু করেন তিনি। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে রনি সফলও হয়েছেন। ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন জার্মানির ইউনিভার্সিটি অব বনে। স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামে পড়ছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির স্লেভারি স্টাডিজে। তাঁর সাফল্যের গল্প শুনেছেন আনিসুল ইসলাম নাঈম।
শৈশব ও পড়াশোনা
রনির জন্ম কুমিল্লার কালীবাজার ইউনিয়নের হাতীগাড়া গ্রামে। রনির প্রাথমিকের পাঠ শুরু গ্রামের হাতীগাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। কুমিল্লার গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুল থেকে এসএসসি ও কুমিল্লা সিটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন তিনি। এরপর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেন।
সহশিক্ষা কার্যক্রম
পড়ালেখার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন রনি। ছেলেবেলায় ফুটবল, ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন, ভলিবলসহ গ্রামীণ খেলায় আগ্রহ ছিল তাঁর। কলেজে থাকাকালীন সামাজিক সংগঠন ‘বন্ধু সমাজ’ ও ‘হ্যান্ডস ফর হিউমিনিটি’ নামের দুটি সংগঠনের সভাপতি ছিলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইটি সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটি ও কুমিল্লা জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে
দায়িত্ব পালন করেন।
স্বপ্নযাত্রা
রনির স্বপ্ন ছিল ক্রিকেটার হওয়ার। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেও স্বপ্নের পিছু ছাড়েননি তিনি। ভর্তির জন্য গিয়েছিলেন ধানমন্ডির আবাহনী ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে। কিন্তু আবাসিক হলবিহীন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রনির ক্রিকেট অ্যাকাডেমির মাসিক খরচ ও প্র্যাকটিসের শিডিউল ঠিক রাখা কঠিন ছিল। তাই তখনই শেষ হয়ে যায় রনির ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে পড়ালেখায়ও মন বসছিল না তাঁর। নতুন ভাবনা ধরা দেয় বিদেশে উচ্চশিক্ষার। মনস্থির করেন যেকোনোভাবে হোক বিদেশ পাড়ি জমাবেন তিনি।
সিদ্ধান্ত নিলেন জার্মানিতে ব্যাচেলরের জন্য আবেদন করবেন। তিন-চার মাসের আইএলটিএস প্রিপারেশন নিয়ে স্কোর ওঠালেন ৫.৫। এরপর জার্মানিতে ব্যাচেলরের জন্য আবেদন শুরু করেন। রনির আবেদন জার্নির সাথি ছিলেন তাঁর বিভাগের বন্ধু আরিফ। তাঁর সায়েন্স ব্যাকগ্রাউন্ড ও আইএলটিএস স্কোর ৬.০ থাকায় রনির আগেই জার্মানি থেকে অফার লেটার চলে আসে।
রনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত আমি কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফার লেটার না পেয়ে জার্মানির আশা ছেড়ে দিই। আরিফ চলে যায় জার্মানিতে। শেষে বাংলা বিভাগ থেকেই ব্যাচেলর শেষ করার সিদ্ধান্ত নিলাম। তবে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা থেমে থাকেনি। পড়ালেখার পাশাপাশি চলে আইইএলটিএস পরীক্ষার প্রিপারেশন। পড়াশোনার খরচ জোগাড়ে পার্টটাইম চাকরি করি। নিজের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। এর মাঝেই চলত বিদেশের প্রস্তুতি।’
যেভাবে ইউনিভার্সিটি অব বনে
জার্মানিতে টিউশন ফি না থাকলেও জার্মান অ্যাম্বাসি ফেস করার প্রক্রিয়া দীর্ঘ। ২০২২ সালে জার্মান অ্যাম্বাসিতে মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য একটা অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে রাখেন রনি। এর মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে মাস্টার্স শেষ হয় তাঁর। জার্মানিতে রনির দ্বিতীয় মাস্টার্স করার পরিকল্পনা আগে থেকে ছিল। তবে জবিতে বাংলায় পড়ার কারণে জার্মানিতে মাস্টার্সে আবেদনের জন্য রিলেটেড সাবজেক্ট পাওয়া কঠিন হয়ে ওঠে। তা ছাড়া তাঁর সিজিপিএ ছিল ২.৯৭। আবার আইইএলটিএস পরীক্ষা দিয়ে আশানুরূপ স্কোর তুলতে পারেনি।
জানতে চাইলে রনি বলেন, ‘সিজিপিএ ২.৯৭ ও আইইএলটিএস ৬.০ দিয়ে জার্মানির ৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদন করি। এর মধ্যে শুধু ইউনিভার্সিটি অব বন থেকে শেষ মুহূর্তে এসে অফার লেটার পাই। পুরো আবেদন প্রক্রিয়ায় এক বড় ভাই সব সময় পাশে ছিলেন। অফার লেটার পাওয়ার পর তিনি অনেক খুশি হন। আমার তখনকার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো ছিল না।’
পাহাড়সম বাধা
বন ইউনিভার্সিটিতে চান্স পাওয়ার পর ব্লক অ্যাকাউন্টের টাকা জোগাড় নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন রনি। টিউশন ফি না থাকলেও ১১,৯০৪ ইউরো জার্মানিতে পাঠিয়ে দিতে হয়। পরবর্তী সময়ে জার্মানি পৌঁছালে ধাপে ধাপে তা ফেরত দেওয়া হয়। তবে কারও ভিসা না হলে, সেই টাকা দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ব্লক অ্যাকাউন্টের টাকার জন্য তিনি প্রথমে তাঁর পরিবারকে জানান। রনি বলেন, ‘বাড়িতে তখন লাখ খানেক টাকাও নেই। অথচ প্রয়োজন প্রায় ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এমতাবস্থায় পরিবারের জমি বিক্রির কথাও ওঠে। আম্মা আমাদের আত্মীয়দের কাছে টাকা ধার চাওয়া শুরু করেন। আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও পরিচিতজনদের থেকে ধার করে শেষ পর্যন্ত টাকা জোগাড় করতে সক্ষম হই।’
তিনি বলেন, ‘আবেদনের ২৪ মাস পর ২০২৪ সালের ৩১ আগস্ট জার্মান অ্যাম্বাসি ডকুমেন্টস সাবমিট করতে বলে। কয়েক দিন পর অ্যাম্বাসিতে ইন্টারভিউর জন্য ডাক আসে। ইন্টারভিউ খুব স্বাভাবিক ছিল। সাধারণ বিষয় ছাড়া জটিল কোনো প্রশ্ন করেনি। ৩ সেপ্টেম্বর ইন্টারভিউয়ের পর ২৯ সেপ্টেম্বরে গিয়ে পাসপোর্ট কালেকশন করি এবং আলহামদুলিল্লাহ জার্মান ভিসা পাই।’
যেভাবে আবেদন
জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের আগে নিজের স্টাডি ফিল্ড-সংশ্লিষ্ট সাবজেক্ট ও বিশ্ববিদ্যালয় খুঁজে বের করা জরুরি। এ জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েবসাইট হলো DAAD.DE। এ ছাড়া mygermanuniversity ওয়েবসাইটিও রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ও সাবজেক্ট খোঁজার পর দেখতে হবে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি আবেদন করা যায়, নাকি UniAssist এর মাধ্যমে আবেদন করতে হয়। UniAssist হলো একটি মাধ্যম। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীর ডকুমেন্টস যাচাই-বাছাই করে দেশটির বিশ্ববিদ্যালয় আবেদন গ্রহণ করে। জার্মানিতে সামার ও উইন্টার মৌসুমে আবেদন করা যায়।
সুযোগ-সুবিধা
ইউনিভার্সিটি অব বন থেকে শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বড় সুবিধাটি হলো ট্রান্সপোর্টেশন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ড দিয়ে যেকোনো শিক্ষার্থী পুরো জার্মানি ঘুরতে পারবেন। শুধু বন বিশ্ববিদ্যালয় নয়, জার্মানির সব শিক্ষার্থীর জন্য এ সুযোগটি রয়েছে। তা ছাড়া জিমনেসিয়াম, খেলাধুলা কিংবা জার্মান ভাষা শেখানোসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেওয়া হয়। জার্মানিতে যেকোনো শিক্ষার্থীর পড়ালেখার পাশাপাশি সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা কাজের সুযোগ রয়েছে।
নতুনদের পরামর্শ
ইউনিভার্সিটি অব বনে পড়াশোনা করতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ভালোভাবে রিসার্চ করতে হবে। নিজের স্টাডি ফিল্ডের সঙ্গে মিল আছে এমন কোনো সাবজেক্ট পেলে সে সাবজেক্টে পড়তে হলে কী কী শর্ত পূরণ করা প্রয়োজন সেগুলো দেখে নিতে হবে। সেভাবে নিজের অ্যাকাডেমিক প্রোফাইলটি সাজাতে হবে। প্রোফাইল সাজানো হলে শুধু ইউনিভার্সিটি অব বন নয়, আরও ভালো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েও চান্স পাওয়া সম্ভব।
বিগত কয়েক বছর ধরে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য অফুরন্ত সম্ভাবনার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে হাঙ্গেরি। দেশটিতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা আধুনিক শিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি ক্যারিয়ার গঠনেরও সুযোগ পাচ্ছেন।
৩ ঘণ্টা আগেসংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ আয়োজন হলো বিতর্ক। ক্রমেই এটি জনপ্রিয় হচ্ছে। সব প্রতিযোগিতায় জয়-পরাজয় রয়েছে। বিতর্কও এর ব্যতিক্রম নয়। একজন উঁচুমানের বিতার্কিকও পরাজয়ের সম্মুখীন হতে পারেন।
৩ ঘণ্টা আগেআমেরিকান ব্যবসায়ী এবং লেখক রবার্ট তোরু কিয়োসাকির লেখা ‘রিচ ড্যাড পুওর ড্যাড’ বইটি ১৯৯৭ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। বইটি প্রকাশ হওয়ার পর থেকে ব্যক্তিগত আর্থিক উন্নতির বইয়ের ক্যাটাগরিতে বিশ্বের সর্বাধিক বিক্রীত হিসেবে স্বীকৃত।
৩ ঘণ্টা আগেবেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল-কলেজ) শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ইলেকট্রিক ফান্ড ট্রান্সফারের (ইএফটি) মাধ্যমে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে শিক্ষক-কর্মচারীরা স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে বেতন-ভাতা ব্যাংক হিসাব থেকে উত্তোলন করতে পারবেন
১৫ ঘণ্টা আগে