৪৫তম বিসিএস প্রিলির আর মাত্র দুদিন বাকি। এই দুদিন কোন বিষয়ে কীভাবে পড়বেন, কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন, তা নিয়ে থাকছে আজকের আলোচনা—
- এই দুদিন কয়েকটি মডেল টেস্ট দিয়ে আপনি কত নম্বর পাচ্ছেন এবং সময়মতো ২ ঘণ্টার মধ্যে শেষ করতে পারছেন কি না সেটি দেখতে পারেন।
- আপনার অ্যাডমিট, কলমসহ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুছিয়ে রাখবেন।
- বেশি পড়তে গিয়ে যেন অসুস্থ না হন, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পরীক্ষার আগের রাতে আগে ঘুমাতে যাবেন।
- পরীক্ষার হলে যাওয়ার জন্য হাতে সময় নিয়ে যেতে হবে। নয়তো রাস্তায় একটু জ্যাম দেখলেই আপনার টেনশন শুরু হয়ে যেতে পারে। আর ওই দিন আর অন্য দিনের চেয়ে স্বাভাবিকভাবেই রাস্তায় বেশি যানবাহন দেখা যাবে। আবার আপনি সময়মতো বাস বা রিকশা নাও পেতে পারেন।
- পিএসসির প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে পরীক্ষার হলে যা যা নেওয়ার অনুমতি আছে শুধু সেগুলোই নিয়ে যাবেন। অন্যথায় যা নিয়ে গেছেন সেগুলো কোথায় রাখবেন, এইটা নিয়ে আপনার টেনশন হতে পারে।
- পরীক্ষার হলে ঢুকেই প্রয়োজন হলে ওয়াশরুমে যেতে পারেন। কেননা পরীক্ষা শুরুর ১৫-২০ মিনিট আগে ওয়াশরুমেও সিরিয়াল ধরতে হয়। আবার পরীক্ষা চলাকালে ওয়াশরুমে যেতে হলে আপনার সময় নষ্ট হতে পারে।
- ওএমআর শিট হাতে পেলে একটু চেক করে নেবেন ঠিক আছে কি না। তারপর শান্তভাবে রেজিস্ট্রেশন নম্বর পূরণ করবেন এবং নাম, মাতার নাম, পিতার নাম (এসএসসির সনদে যেভাবে আছে সেভাবে), জেলা ইত্যাদি লিখবেন।
- প্রশ্ন হাতে পেলে ওএমআর শিটে আপনার যে সেট আছে, আপনি প্রশ্নও সেই সেটের পেয়েছেন কি না এবং ২০০টি প্রশ্ন আছে কি না দেখে নেবেন।
- তারপর প্রশ্নে অপশন কীভাবে আছে সেটি চেক করে নেবেন। সাধারণত প্রথমে ‘ক’ তার ডানে ‘খ’ এভাবে থাকে। কিন্তু ৩৫তম বিসিএসে অপশন ছিল প্রথমে ‘ক’ তার ডানে ‘গ’। আর ‘ক’ এর নিচে ছিল ‘খ’। তারপর ঝটপট ১-২ মিনিটে একনজর প্রশ্ন দেখে বোঝার চেষ্টা করতে পারেন যে প্রশ্ন সহজ না কঠিন হয়েছে। আবার নাও পড়তে পারেন।
- যেই বিষয় আপনার ভালো লাগে বা সহজ লাগে সেগুলো আগে উত্তর করবেন। কারও কাছে সাধারণ জ্ঞান ভালো লাগে, আবার কারও বাংলা ভালো লাগতে পারে। যে প্রশ্ন পারছেন না সেটির পেছনে সময় নষ্ট করবেন না। যেগুলো পারছেন না হালকা করে দাগ দিয়ে রাখা যেতে পারে। সব দাগানোর পরে সময় পেলে চেষ্টা করবেন।
- ওএমআর শিট পূরণ করার জন্য আগে ব্যবহার করা দু-তিনটি কলম নিয়ে যাবেন। নতুন কলম দিয়ে ওএমআর শিট পূরণ করতে বেশি সময় লাগে।
- সময় ব্যবস্থাপনা ঠিক না হওয়ার জন্য অনেকে প্রশ্ন কমন থাকার পরেও সময়ের অভাবে দাগিয়ে আসতে পারেন না। ৩০ মিনিট হাতে থাকতেই যেন দাগানো শেষ হয় সেদিকে নজর রাখবেন। ৩০ মিনিট হাতে রাখার কারণ যে প্রশ্নগুলো আপনি প্রথমবার পারেন নাই, সেগুলো চেষ্টা করা।
- মনে রাখতে হবে, প্রশ্ন কঠিন হলে সবার জন্যই কঠিন। তাই এ বছর তুলনামূলক কম নম্বর পেলেও প্রিলিতে টিকবেন। আর প্রশ্ন সহজ হলে বুঝতে হবে, সবার জন্যই সহজ হয়েছে। এবার সবাই ভালো পরীক্ষা দেবে বা দিচ্ছেন। তাই এ বছর তুলনামূলক বেশি নম্বর পেতে হবে প্রিলিতে টিকার জন্য।
- কোনো প্রশ্ন একদম জানেন না, এমন প্রশ্নের উত্তর করবেন না। যে প্রশ্নের উত্তর সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা ৫০ শতাংশ বা তার ওপরে সে প্রশ্ন বাদ রাখবেন না। অবশ্যই দাগিয়ে আসবেন। উদাহরণস্বরূপ, আপনার কাছে ১০টি আনকমন প্রশ্ন আছে। আপনার ধারণা ১০টি দাগালে অন্তত ৫টি সঠিক উত্তর হবে, তাহলে আপনি দাগাবেন। ১০টির মধ্যে আপনার ৫০ শতাংশ উত্তর সঠিক হলে বা ৫টি উত্তর সঠিক হলে আপনি পাবেন ৫ নম্বর। আর ৫টি ভুল হওয়ার জন্য ২.৫ নম্বর বাদ যাবে। ২.৫ নম্বর বাদ দিলেও আপনার আরও বোনাস নম্বর থাকল ২.৫ নম্বর।
- পরীক্ষা চলাকালে পরীক্ষক আপনার ওএমআর শিটে স্বাক্ষর করবেন এবং আপনাকেও হাজিরা খাতায় আপনার নাম এবং ছবির পাশে অ্যাডমিটে যে স্বাক্ষর দিয়েছেন সেই স্বাক্ষরটি দিতে হবে। স্বাক্ষর হলো কি না চেক করে নেবেন।
লেখক: ৩৬তম বিসিএস (কৃষি) ক্যাডার, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার, মোহনপুর, রাজশাহী।
অনুলিখন: আনিসুল ইসলাম নাঈম