বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় ইংরেজিতে ভালো করতে হলে কৌশল করে পড়তে হবে। নিয়মিত ইংরেজি পত্রিকা পড়ার অভ্যাস থাকতে হবে। সম্পাদকীয় কলামের পাশাপাশি পত্রিকার অন্যান্য পাতাও পড়া উচিত। মৌলিক গ্রামার ও ফ্রি-হ্যান্ড রাইটিংইয়ে ভালো দখল থাকলে প্রস্তুতি অনেকটা সহজ হয়ে যায়। ৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য ইংরেজির পরামর্শ তুলে ধরা হলো। পর্ব-৩
পার্ট-এ: ১০০ নম্বর
- comprehension-এর Answer the following questions-এ সাধারণত সাম্প্রতিক বিষয় বা গুরুত্বপূর্ণ অন্য কোনো বিষয়ে একটি প্যাসেজ দেওয়া থাকে। প্রথমে প্যাসেজ না পড়ে প্রশ্নগুলো আগে পড়ে ফেলা উচিত। প্রশ্নে জানতে চাওয়া বিষয়টি প্যাসেজ পড়ে খুঁজে বের করতে হবে। কখনোই Comprehension থেকে কপি করে লেখা যাবে না। Comprehension ভালো করে পড়ে নিজের ভাষায় প্রশ্নের উত্তর করতে হবে। চেষ্টা করুন ৩ নম্বরের প্রতিটি উত্তর যেন ৩-৪ বাক্যে হয়। ■ Grammar usage-এর ওপর প্রশ্ন আসবে। ব্যাকরণ অংশে নতুন কিছু নেই। যা আপনি প্রিলিতে পড়েছেন, তা-ই। একবার চোখ বুলিয়ে নেবেন। Word Formation, parts of speech changing, sentence making, meaning of words, antonym, punctuation, run-on sentences, clause, joining sentences ইত্যাদি থেকেই প্রশ্ন আসবে। কয়েকটি বই থেকে প্রচুর অনুশীলন করুন। প্যাসেজের শব্দগুলোর contextual meaning সব সময় গুরুত্বপূর্ণ।
- Summary মাত্র ১০০ শব্দে লিখতে হবে। তাই কম্প্রিহেনশনটির মূল কথা দাগিয়ে ফেলুন। পুরো প্যাসেজটাকে ৩-৪টি ভাগে ভাগ করুন। এরপর প্রতিটি ভাগের কয়েকটি বাক্যকে একটি করে বাক্যে লিখুন। Summary করার সময় উদাহরণ, statical data, quotation, Bracket-এ দেওয়া elaborations, Apposition বাদ দিতে হবে। এই অংশের জন্য নিয়মিত পেপারের সম্পাদকীয় আর আর্টিকেলগুলোকে সামারাইজ করার চেষ্টা করুন।
- Letter to the Editor অংশের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য নিয়মিত পত্রিকার লেটার টু দ্য এডিটর অংশটি পড়ুন, সঙ্গে কিছু গাইড বই। লেটার অংশে নিয়মকানুনের ওপর মার্ক বরাদ্দ থাকে। লেটারের ভাষা হবে খুব ফরমাল। একটা ইংরেজি পত্রিকার সঠিক ঠিকানা শিখে রাখা ভালো। প্রশ্নে শিরোনাম উল্লেখ থাকলে তাই ব্যবহার করতে হবে। উল্লেখ না থাকলে thematic issue অনুযায়ী টাইটেল দিতে হবে। নিয়মকানুন মেনে লেখকের মতামত, নিজের মতামত, পরামর্শ, শেষ কথা ইত্যাদি ভালোভাবে লিখতে হবে।
পার্ট-বি: ১০০ নম্বর
- Essay Writing অংশে নির্দিষ্ট শব্দসংখ্যার মধ্যে একটি রচনা লিখতে হবে। বিগত কয়েক বিসিএসের রচনার টপিকগুলোতে সাম্প্রতিক ইস্যু বাদ যায়নি। সাম্প্রতিক ইস্যু এবং সমাজঘনিষ্ঠ বিষয়াদি সম্পর্কে নোট করে রাখলে তা কাজে আসবে। বাংলাদেশ সংবিধানের ব্যাখ্যা, বিভিন্ন সংস্থার অফিশিয়াল ওয়েবসাইট, উইকিপিডিয়া, বাংলাপিডিয়া, ন্যাশনাল ওয়েব পোর্টাল, কিছু আন্তর্জাতিক পত্রিকা ইত্যাদি সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজখবর রাখুন। প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় বিভিন্ন লেখকের রচনা, পত্রিকার কলাম ও সম্পাদকীয়, ইন্টারনেট, বিভিন্ন সংস্থার অফিশিয়াল ওয়েবসাইট, সংবিধানের সংশ্লিষ্ট ধারা, বিভিন্ন রেফারেন্স থেকে উদ্ধৃতি দিলে মার্ক বাড়বে। এই অংশগুলো লিখিত নীল কালি ব্যবহার করলে সহজে পরীক্ষকের চোখে পড়বে। কোটেশন ছাড়া রচনা লেখার চিন্তাও মাথায় আনবেন না। নিজের মতো করে সহজ ভাষায় বিভিন্ন টপিক নিয়ে ননস্টপ লেখার অনুশীলন করুন। পেপারের এডিটোরিয়াল আর বিভিন্ন আর্টিকেল নিজের ভাষায় সহজ করে লেখার চেষ্টা করুন।
- Translation-এর জন্য অর্থনীতি, মুক্তিযুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তনসহ অন্য গুরুত্বপূর্ণ টপিকের Keywords (যেমন Cogenial Academic Atmosphere-শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ, peaceful demonstration-শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ, Economic recession-অর্থনৈতিক মন্দা) শিখে ফেলুন। পাশাপাশি পত্রিকার গুরুত্বপূর্ণ টপিক অনুশীলন করুন। আক্ষরিক অর্থ না করে বাক্যের মাধুর্য বজায় রেখে ভাবানুবাদ করুন। আক্ষরিক অনুবাদে প্রতিটি শব্দের, প্রতিটি বাক্যের হুবহু অনুবাদ করা হয়, কিন্তু ভাবানুবাদে মূলভাবটি বজায় রেখে নতুনভাবে বাক্য গঠন করা হয়। তবে ভাবানুবাদ করার সময় খেয়াল রাখতে হবে, রচনার মূল বক্তব্য যেন বদলে না যায়। যেমন ‘Rain, rain, go away Come again some other day’ এই বাক্যের অনুবাদ করতে গিয়ে যদি লেখেন ‘বৃষ্টি, বৃষ্টি দূরে চলে যাও, অন্যদিন আবার এসো’, এটা কেমন হাস্যকর লাগে। কিন্তু এর অনুবাদে যদি লেখেন, ‘লেবুর পাতা করমচা, যাহ বৃষ্টি ঝরে যা’ এটাই ভাবানুবাদ। আবার ‘আজকে আমার মন ভালো নেই’ এই বাক্যের ইংরেজি অনুবাদে ‘my mood is off today’ না লিখে যদি লেখেন ‘Today, I am in low spirit’, তবে কোনটা ভালো শোনা যায়? ভালো অনুবাদ জ্ঞান আপনাকে অন্যদের থেকে অনেক বেশি এগিয়ে দিতে পারে। এ জন্য নিয়মিত অনুশীলনের বিকল্প নেই।
মো. মুহিবুর রহমান,পুলিশ ক্যাডার, ৪১তম বিসিএস।
অনুলিখন: আনিসুল ইসলাম নাঈম