উচ্চমাধ্যমিকের শেষ দিকে আমি অনেকটা নিশ্চিত ছিলাম যে ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়েই পড়াশোনা করব। তাই এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার পরপরই ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করি। যেহেতু আমাদের সময় এইচএসসি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে হয়েছিল, তাই সায়েন্সের অনেক টপিকই একদম নতুন ছিল। এ জন্য এই নতুন বিষয়গুলোর থিওরি পড়ার পাশাপাশি অনুশীলনের জন্য বিভিন্ন মডেল টেস্ট দিতে থাকি।
গুচ্ছ ইঞ্জিনিয়ারিং মানবণ্টন
গুচ্ছ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রস্তুতি অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি থেকে একদম ভিন্ন। এখানে গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নের পাশাপাশি ইংরেজি থেকেও প্রশ্ন করা হয়। গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন থেকে ২৫টি করে ৭৫টি এমসিকিউ থাকে। প্রতিটি এমসিকিউ প্রশ্নের মান ৬ নম্বর। কিন্তু ইংরেজিতে প্রতি এমসিকিউর জন্য বরাদ্দ থাকে ২ নম্বর। এখানেও ২৫টি এমসিকিউ থাকে। এমসিকিউ হলেও এগুলো সাধারণ অঙ্কের মতোই; অর্থাৎ ১-২ মিনিটে সমাধান করার মতো প্রশ্ন আসে না। প্রতিটি এমসিকিউ প্রশ্ন সমাধান করতে গিয়ে ভালো পরিমাণ সময়ই প্রয়োজন।
যেভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে
যেকোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো প্রশ্নব্যাংক, অর্থাৎ বিগত বছরের প্রশ্নগুলো সমাধান করা। পাশাপাশি যেসব বিষয়ে ঘাটতি রয়েছে তা প্রথম দিকেই সমাধান করে ফেলা। যে অধ্যায়গুলোয় তোমাদের সমস্যা আছে, শেষ হয়নি, অথবা কঠিন মনে হয়, সেগুলোতে বেশি জোর দেবে। প্রশ্নব্যাংক সমাধান করার কোনো বিকল্প নেই। এখন শুধু বসে বসে প্রশ্নব্যাংক সমাধান করো। এটাই পরীক্ষার হলে সবচেয়ে বেশি কাজে আসবে। এরপর যে টপিকগুলো থেকে প্রায়ই প্রশ্ন আসে, সেগুলো ভালোমতো পড়া। প্রশ্নব্যাংক সমাধান করলেই প্রশ্নের ধরন সম্পর্কে ভালোমতো জানা যায়। যেসব বিষয় প্রথমে কঠিন মনে হয়, সেগুলোও নিয়মিত অনুশীলন করার পরে সহজ হয়ে যায়।
- নতুন নতুন অঙ্কগুলো একটা খাতায় নোট করে রাখতাম। যাতে প্রয়োজন পড়লেই চট করে চোখ বুলিয়ে নেওয়া যায়। এটা পরীক্ষার আগে বেশ কাজে দিয়েছিল।
- প্রথমে গণিত অংশ সমাধান না করে রসায়ন দিয়ে শুরু করতে পারো। এরপর পদার্থবিজ্ঞান, গণিত ও ইংরেজির উত্তর করতে পারো।
- কারণ রসায়ন ভালোমতো পারলে এইটা খুব তাড়াতাড়ি উত্তর করা যায়। আর বাকি সময়টা অঙ্ক করার পেছনে দেওয়া যায়।
- ইংরেজি অংশকে একদমই হেলাফেলা করা যাবে না।
- কারণ ৫০০ নম্বরের মধ্যে ইংরেজিতেই আছে ৫০ নম্বর। তবে এই অংশ নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করা লাগবে না। মোটামুটি কমন টপিক থেকেই প্রশ্ন আসে। তবে উত্তর ভুল করে এবং ছেড়েও আসা যাবে না।
- আর কোনো এমসিকিউ সমাধান করতে না পারলে সেটা বাদ দিয়ে আরেকটা সমাধান করো। একটার পেছনে খুব বেশি সময় দেওয়া যাবে না। একদম শেষ মুহূর্তে ইংরেজি দাগাবে। কারণ এর জন্য মাথা কম খাটাতে হয়। অনেক শিক্ষার্থী যে ভুলটা করে সেটা হলো, প্রশ্নব্যাংকে চোখ বুলিয়ে যাওয়া। এটা কখনোই করবে না। প্রতিটি প্রশ্ন লিখে লিখে সমাধান করবে।
অনুলিখন: মুসাররাত আবির