মো. ফজলুল হক
কৃষিপ্রধান বাংলাদেশের অগ্রগতি ও সার্বিক উন্নয়নের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রয়োগ অপরিহার্য। প্রকৃতির অপার রহস্যের অন্তর্নিহিত তথ্য আহরণ ও উদ্ঘাটন করে তা মানবকল্যাণে প্রয়োগ করার কৌশলই হলো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি। কৃষিসহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিভিন্ন শাখায় উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে একটি উৎকর্ষের কেন্দ্র হিসেবে বাংলাদেশের উত্তর জনপদ দিনাজপুরের প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশে গড়ে ওঠে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি)। উত্তরবঙ্গের কৃষি খাত (কৃষি, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ ও কৃষি প্রকৌশল) উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৯৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তৎকালীন ও বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
কৃষকদের স্বার্থে ঐতিহাসিক তেভাগা আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব হাজী মোহাম্মদ দানেশের নামে নামকরণ করা হয় এ বিশ্ববিদ্যালয়টির। বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে আটটি অনুষদ ও একটি পোস্ট গ্র্যাজুয়েট অনুষদের তত্ত্বাবধানে ৪৫টি শিক্ষা বিভাগের মাধ্যমে যথাক্রমে ২৩টি স্নাতক ও ৩২টি স্নাতকোত্তর (এমএস, পিএইচডি) ডিগ্রি দেওয়া হয়। এখানে সেমিস্টার পদ্ধতিতে চার বছর মেয়াদি স্নাতক এবং পাঁচ বছর মেয়াদি ডিভিএম ডিগ্রি দেওয়া হয়।
বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ১২ হাজার এবং প্রতিবছর ২ হাজার ২০০–র মতো শিক্ষার্থী ভর্তি হন। এখানে অধ্যয়নরত বিদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা প্রায় ১৮০। এঁদের বেশির ভাগই নেপাল, ভুটান, নাইজেরিয়া, ইথিওপিয়া, সোমালিয়া ও ভারত থেকে আগত।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি সোমালিয়ার এক শিক্ষার্থী হাবিপ্রবি থেকে পাস করে নিজ দেশে ফিরে গিয়ে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন এবং আরও অনেকেই নিজ দেশে গিয়ে ভালো ভালো জায়গায় কর্মরত আছেন। তা ছাড়া এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী দেশ-বিদেশের অনেক স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন।
শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য এ বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ৩২০ জন শিক্ষক আছেন। আরও ৬০ জন শিক্ষক নিয়োগের অপেক্ষায় রয়েছেন। এ ছাড়া ৬০০ জনের মতো কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন।
দিনাজপুর শহর থেকে ১০ কিলোমিটার উত্তরে এবং দিনাজপুর-রংপুর-ঢাকা মহাসড়কসংলগ্ন পশ্চিম পাশে ফলদ ও বনজ সবুজ বৃক্ষঘেরা দৃষ্টিনন্দন এই ক্যাম্পাস অবস্থিত। ৮৫ একর সমতল ভূমির ওপর অবস্থিত এ ক্যাম্পাসে রয়েছে লাল-সাদা ইটের দৃষ্টিনন্দন সুবিশাল ভবন। আছে শহীদ মিনার, শরীর চর্চার জন্য ব্যায়ামাগার, অবসর সময় কাটানোর জন্য রয়েছে টিএসসি ও ক্যাফেটেরিয়া। অবকাঠামোর মধ্যে আরও রয়েছে বৃহৎ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, পাঁচটি অ্যাকাডেমিক ভবন (নির্মাণাধীন একটি), একটি প্রশাসনিক ভবন, পাঁচটি ছাত্র হোস্টেল, চারটি ছাত্রী হোস্টেল (নির্মাণাধীন একটি), আধুনিক সাজসজ্জার ১০০ আসনের একটি ভিআইপি সেমিনার কক্ষ, ৬০০ ও ২৫০ আসনের (শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত) দুটি অডিটরিয়াম।
এ ছাড়া রয়েছে শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ক্লাব, ২টি মসজিদ, ১৩৬টি আবাসিক ইউনিট/ভবন, ১টি শিশুপার্ক, ডাকঘর, রূপালী ব্যাংক ও মেঘনা ব্যাংকের শাখা, এটিএম বুথ, শ্রমিক ব্যারাক, ইন্টারনেট–সুবিধা, নিজস্ব বিদ্যুৎ লাইন, বৃহৎ খেলার মাঠ, ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ এবং ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহনব্যবস্থা।
গবেষণা ও প্রশিক্ষণের সমন্বয় ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য আছে ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার (আইআরটি)। শিক্ষার মানোন্নয়নে আছে ইনস্টিটিউট অব কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেল (আইকিউএসি)। এ ছাড়া রয়েছে দুটি ভিআইপি গেস্ট হাউস, হাবিপ্রবি স্কুল ও ১২ শয্যার একটি মেডিকেল সেন্টার। গবেষণালব্ধ থিসিস, রিপোর্ট এবং ৯০ শিরোনামের জার্নালের পাশাপাশি রয়েছে ৩৫ হাজার বইসমৃদ্ধ লাইব্রেরি ও ২২ হাজারের মতো ই-বুক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকাসহ কৃষিজীবী সব মানুষের মাঝে কৃষিসেবা পৌঁছে দিতে গড়ে উঠেছে কৃষক সেবা কেন্দ্র, গবাদিপশুর চিকিৎসাসেবার জন্য রয়েছে মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক, গবেষণাকাজ সমৃদ্ধ করতে স্থাপন করা হয়েছে কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ গবেষণা কমপ্লেক্স। শিক্ষার্থীদের মননশীলতা ও সৃজনশীলতা বাড়ানোর জন্য আছে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। পড়াশোনার পাশাপাশি কর্মজীবন নিয়ে ভাবনা/পরামর্শের জন্য স্থাপন করা হয়েছে ক্যারিয়ার অ্যাডভাইজারি সার্ভিস সেন্টার।
বিশ্ববিদ্যালয়টির গবেষণা কার্যক্রম দুটি প্রধান ধারায় চালিত হয়ে থাকে। একটি ডিগ্রি গবেষণা ও অন্যটি প্রকল্প গবেষণা। এমএস ও পিএইচডি শিক্ষার্থীদের ডিগ্রি চাহিদার অংশ হিসেবে ডিগ্রি গবেষণা শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়ে থাকে। পক্ষান্তরে, বিশ্ববিদ্যালয় অথবা কোনো বাইরের সংস্থার অর্থানুকূল্যে প্রকল্প গবেষণার কাজ পরিচালিত হয়।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে একটি উৎকর্ষ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠার প্রত্যয়ে দেশবাসীর প্রত্যাশা, অমিত সম্ভাবনা নিয়ে ২১ বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়টির যাত্রা শুরু হয়েছিল। গত দুই দশকের সাফল্যের ধারা অব্যাহত রেখে ছাত্র-শিক্ষকের নিরলস প্রচেষ্টা ও সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সর্বশেষ উদ্ভাবিত জ্ঞান, প্রযুক্তি ও তথ্যভান্ডার ব্যাপকভাবে আত্তীকরণ, চর্চা ও প্রয়োগের মাধ্যমে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হবে।
খাদ্যশস্য বিশেষ করে গম ও ভুট্টার পচন রোধে সরকারের কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন (কেজিএফ) প্রকল্পের অর্থায়নে হাবিপ্রবির ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাজ্জাত হোসেন সরকারের উদ্ভাবিত টু স্টেজ গ্রেইন ড্রায়ারের মাধ্যমে স্বল্প সময়ে ও স্বল্প খরচে ধান, গম ও ভুট্টা শুকানো যাচ্ছে। এটি কৃষক ও কৃষি খাতের জন্য আশার আলো। এর ফলে উত্তরাঞ্চলসহ দেশে উৎপাদিত হাজার হাজার টন খাদ্যশস্য পচন থেকে রক্ষা পাবে। একবিংশ শতাব্দীর বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পাশাপাশি জাতি গঠনে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। সেই সঙ্গে বর্তমান সরকারের ভিশন ২০৪১ তথা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত বাংলাদেশ গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়কে তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে যেতে হবে আরও অনেক দূর।
মো. ফজলুল হক
বীর মুক্তিযোদ্ধা, অধ্যাপক ও রেজিস্ট্রার (অ.দা.)
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
কৃষিপ্রধান বাংলাদেশের অগ্রগতি ও সার্বিক উন্নয়নের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রয়োগ অপরিহার্য। প্রকৃতির অপার রহস্যের অন্তর্নিহিত তথ্য আহরণ ও উদ্ঘাটন করে তা মানবকল্যাণে প্রয়োগ করার কৌশলই হলো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি। কৃষিসহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিভিন্ন শাখায় উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে একটি উৎকর্ষের কেন্দ্র হিসেবে বাংলাদেশের উত্তর জনপদ দিনাজপুরের প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশে গড়ে ওঠে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি)। উত্তরবঙ্গের কৃষি খাত (কৃষি, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ ও কৃষি প্রকৌশল) উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৯৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তৎকালীন ও বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
কৃষকদের স্বার্থে ঐতিহাসিক তেভাগা আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব হাজী মোহাম্মদ দানেশের নামে নামকরণ করা হয় এ বিশ্ববিদ্যালয়টির। বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে আটটি অনুষদ ও একটি পোস্ট গ্র্যাজুয়েট অনুষদের তত্ত্বাবধানে ৪৫টি শিক্ষা বিভাগের মাধ্যমে যথাক্রমে ২৩টি স্নাতক ও ৩২টি স্নাতকোত্তর (এমএস, পিএইচডি) ডিগ্রি দেওয়া হয়। এখানে সেমিস্টার পদ্ধতিতে চার বছর মেয়াদি স্নাতক এবং পাঁচ বছর মেয়াদি ডিভিএম ডিগ্রি দেওয়া হয়।
বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ১২ হাজার এবং প্রতিবছর ২ হাজার ২০০–র মতো শিক্ষার্থী ভর্তি হন। এখানে অধ্যয়নরত বিদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা প্রায় ১৮০। এঁদের বেশির ভাগই নেপাল, ভুটান, নাইজেরিয়া, ইথিওপিয়া, সোমালিয়া ও ভারত থেকে আগত।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি সোমালিয়ার এক শিক্ষার্থী হাবিপ্রবি থেকে পাস করে নিজ দেশে ফিরে গিয়ে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন এবং আরও অনেকেই নিজ দেশে গিয়ে ভালো ভালো জায়গায় কর্মরত আছেন। তা ছাড়া এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী দেশ-বিদেশের অনেক স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন।
শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য এ বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ৩২০ জন শিক্ষক আছেন। আরও ৬০ জন শিক্ষক নিয়োগের অপেক্ষায় রয়েছেন। এ ছাড়া ৬০০ জনের মতো কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন।
দিনাজপুর শহর থেকে ১০ কিলোমিটার উত্তরে এবং দিনাজপুর-রংপুর-ঢাকা মহাসড়কসংলগ্ন পশ্চিম পাশে ফলদ ও বনজ সবুজ বৃক্ষঘেরা দৃষ্টিনন্দন এই ক্যাম্পাস অবস্থিত। ৮৫ একর সমতল ভূমির ওপর অবস্থিত এ ক্যাম্পাসে রয়েছে লাল-সাদা ইটের দৃষ্টিনন্দন সুবিশাল ভবন। আছে শহীদ মিনার, শরীর চর্চার জন্য ব্যায়ামাগার, অবসর সময় কাটানোর জন্য রয়েছে টিএসসি ও ক্যাফেটেরিয়া। অবকাঠামোর মধ্যে আরও রয়েছে বৃহৎ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, পাঁচটি অ্যাকাডেমিক ভবন (নির্মাণাধীন একটি), একটি প্রশাসনিক ভবন, পাঁচটি ছাত্র হোস্টেল, চারটি ছাত্রী হোস্টেল (নির্মাণাধীন একটি), আধুনিক সাজসজ্জার ১০০ আসনের একটি ভিআইপি সেমিনার কক্ষ, ৬০০ ও ২৫০ আসনের (শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত) দুটি অডিটরিয়াম।
এ ছাড়া রয়েছে শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ক্লাব, ২টি মসজিদ, ১৩৬টি আবাসিক ইউনিট/ভবন, ১টি শিশুপার্ক, ডাকঘর, রূপালী ব্যাংক ও মেঘনা ব্যাংকের শাখা, এটিএম বুথ, শ্রমিক ব্যারাক, ইন্টারনেট–সুবিধা, নিজস্ব বিদ্যুৎ লাইন, বৃহৎ খেলার মাঠ, ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ এবং ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহনব্যবস্থা।
গবেষণা ও প্রশিক্ষণের সমন্বয় ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য আছে ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার (আইআরটি)। শিক্ষার মানোন্নয়নে আছে ইনস্টিটিউট অব কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেল (আইকিউএসি)। এ ছাড়া রয়েছে দুটি ভিআইপি গেস্ট হাউস, হাবিপ্রবি স্কুল ও ১২ শয্যার একটি মেডিকেল সেন্টার। গবেষণালব্ধ থিসিস, রিপোর্ট এবং ৯০ শিরোনামের জার্নালের পাশাপাশি রয়েছে ৩৫ হাজার বইসমৃদ্ধ লাইব্রেরি ও ২২ হাজারের মতো ই-বুক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকাসহ কৃষিজীবী সব মানুষের মাঝে কৃষিসেবা পৌঁছে দিতে গড়ে উঠেছে কৃষক সেবা কেন্দ্র, গবাদিপশুর চিকিৎসাসেবার জন্য রয়েছে মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক, গবেষণাকাজ সমৃদ্ধ করতে স্থাপন করা হয়েছে কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ গবেষণা কমপ্লেক্স। শিক্ষার্থীদের মননশীলতা ও সৃজনশীলতা বাড়ানোর জন্য আছে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। পড়াশোনার পাশাপাশি কর্মজীবন নিয়ে ভাবনা/পরামর্শের জন্য স্থাপন করা হয়েছে ক্যারিয়ার অ্যাডভাইজারি সার্ভিস সেন্টার।
বিশ্ববিদ্যালয়টির গবেষণা কার্যক্রম দুটি প্রধান ধারায় চালিত হয়ে থাকে। একটি ডিগ্রি গবেষণা ও অন্যটি প্রকল্প গবেষণা। এমএস ও পিএইচডি শিক্ষার্থীদের ডিগ্রি চাহিদার অংশ হিসেবে ডিগ্রি গবেষণা শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়ে থাকে। পক্ষান্তরে, বিশ্ববিদ্যালয় অথবা কোনো বাইরের সংস্থার অর্থানুকূল্যে প্রকল্প গবেষণার কাজ পরিচালিত হয়।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে একটি উৎকর্ষ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠার প্রত্যয়ে দেশবাসীর প্রত্যাশা, অমিত সম্ভাবনা নিয়ে ২১ বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়টির যাত্রা শুরু হয়েছিল। গত দুই দশকের সাফল্যের ধারা অব্যাহত রেখে ছাত্র-শিক্ষকের নিরলস প্রচেষ্টা ও সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সর্বশেষ উদ্ভাবিত জ্ঞান, প্রযুক্তি ও তথ্যভান্ডার ব্যাপকভাবে আত্তীকরণ, চর্চা ও প্রয়োগের মাধ্যমে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হবে।
খাদ্যশস্য বিশেষ করে গম ও ভুট্টার পচন রোধে সরকারের কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন (কেজিএফ) প্রকল্পের অর্থায়নে হাবিপ্রবির ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাজ্জাত হোসেন সরকারের উদ্ভাবিত টু স্টেজ গ্রেইন ড্রায়ারের মাধ্যমে স্বল্প সময়ে ও স্বল্প খরচে ধান, গম ও ভুট্টা শুকানো যাচ্ছে। এটি কৃষক ও কৃষি খাতের জন্য আশার আলো। এর ফলে উত্তরাঞ্চলসহ দেশে উৎপাদিত হাজার হাজার টন খাদ্যশস্য পচন থেকে রক্ষা পাবে। একবিংশ শতাব্দীর বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পাশাপাশি জাতি গঠনে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। সেই সঙ্গে বর্তমান সরকারের ভিশন ২০৪১ তথা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত বাংলাদেশ গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়কে তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে যেতে হবে আরও অনেক দূর।
মো. ফজলুল হক
বীর মুক্তিযোদ্ধা, অধ্যাপক ও রেজিস্ট্রার (অ.দা.)
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে লন্ডন এবং দিল্লি হয়ে ঢাকায় ফিরলেন। সেদিন অপরাহ্ণে রেসকোর্সে অলিখিত স্বতঃস্ফূর্ত ভাষণ দিয়েছিলেন। যে ভাষণটি আমি শুনেছিলাম—১৭ মিনিটের। ভাষণে একটি জায়গায় তিনি বলেছিলেন, একটা কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, বাংলাদেশ একটি আদর্শ রাষ্ট্র হবে,
২৬ মার্চ ২০২৪১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানে যে চার রাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করা হয়েছিল তার একটি সমাজতন্ত্র। সমাজতন্ত্র মানে বৈষম্যের অবসান। সমাজতন্ত্র মানে ন্যায্যতা। সমাজতন্ত্র মানে সবার শিক্ষা, চিকিৎসা, মাথাগোঁজার ঠাঁই, কাজের সুযোগ। সমাজতন্ত্র মানে যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ, প্রয়োজন অনুয
২৬ মার্চ ২০২৪স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্র পরিচালনার চালিকা শক্তি হিসেবে চারটি মৌলনীতি গ্রহণ করেছিলেন। এগুলো হলো: জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র। আজ ৫২ বছর পর দেখছি, এই মৌলনীতিগুলোর প্রতিটির সূচক এত নিচে নেমে গেছে যে, বলা চলে রাষ্ট্র পরিচালনার মৌলনীতি বলে এখন আর কিছু নেই। জাতীয়তা দুই ভাগে বি
২৬ মার্চ ২০২৪বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা যেতে পারে, রাষ্ট্র হিসেবে নবীন, কিন্তু এর সভ্যতা সুপ্রাচীন। নদীবেষ্টিত গাঙেয় উপত্যকায় পলিবাহিত উর্বর ভূমি যেমন উপচে পড়া শস্যসম্ভারে জীবনকে সমৃদ্ধ করেছে, তেমনি নদীর ভাঙনের খেলায় রাতারাতি বিলুপ্ত হয়েছে বহু জনপদ। এরপরও সভ্যতার নানা চিহ্ন এখানে খুঁজে পাওয়া যায় এবং বাঙালিত্বের বৈশিষ
২৬ মার্চ ২০২৪