মো. রওশন আলী
সামাজিক উন্নয়নের প্রচলিত প্রবাহে নড়াইল জেলায়ও সর্বক্ষেত্রে সমৃদ্ধি এসেছে। বিশেষ করে ক্রীড়াক্ষেত্রে বাংলার আইকন সাংসদ মাশরাফি বিন মর্তুজা কৌশিকের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আরও কিছু অভাবিত উন্নয়ন নড়াইলে হয়েছে।
সংঘাতপূর্ণ বিশ্বে বাংলাদেশ যেমন শান্তি ও অগ্রগতির রোল মডেল, তেমনি বাংলাদেশের অস্থিতিশীল রাজনৈতিক ধারাপথে সামাজিক সম্প্রীতির বলিষ্ঠ উদাহরণ নড়াইল জেলা। এই ধারা বজায় রাখা সম্ভব হয়েছে সংস্কৃতির নির্মল চর্চার মাধ্যমে সমাজে সব ধর্মানুসারী নারী-পুরুষকে এক সুতায় যুক্ত করা সম্ভব হয়েছে বলেই। সুতরাং নড়াইলের অর্জন নিয়ে বলার ক্ষেত্রে নড়াইলের সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য, সংস্কৃতিজনদের জীবন, কর্মকথা, বর্তমান অনুসারীদের বাস্তবিক অবস্থা প্রভৃতি বিষয় আলোচনায় আসবে।
কোনো স্থানের মানুষের আচার–ব্যবহার, জীবিকার উপায়, সংগীত, নৃত্য, সাহিত্য, নাট্যকলা, সামাজিক সম্পর্ক, ধর্মীয় নীতিনৈতিকতা, শিক্ষা-দীক্ষা ইত্যাদির সামগ্রিক রূপ সংস্কৃতি।
মানুষ ছাড়া সৃষ্টিকুলের অন্য প্রাণীর সংস্কৃতি নেই। কারণ, সৃষ্টিকুলের অপরাপর প্রাণীর মতো মানুষ কেবল বেঁচে থাকে না, সে কিছু বাঁচিয়েও রাখে। আর এই বাঁচিয়ে রাখার উৎসাহে মানুষ শিলাখণ্ডপূর্ণ পাহাড়কে মনের মাধুরী মিশিয়ে অষণ্ড শিল্পসৌন্দর্যে পরিণত করে। এভাবে সংস্কৃতি বিকশিত হয়ে মানুষের ব্যবহারিক জীবনে, চিন্তার জগতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচিত করে। একটি ভূখণ্ডের বিশেষ জনগোষ্ঠীর নিজস্ব জীবনাচার, জীবিকাপদ্ধতি ও ব্যবহারিক বস্তু উপকরণের আলোকে প্রতিনিয়ত যা ঘটে; তা-ই সংস্কৃতির অবয়ব। অর্থাৎ, সংস্কৃতি জীবনসম্পৃক্ত, বস্তুসংলগ্ন ও মানসসম্ভূত।
সাংস্কৃতিক উপাদানের ভিত্তিতে নড়াইল জেলাকে সংস্কৃতির প্রাচীনতম সূতিকাগার বললেও অত্যুক্তি হয় না। কারণ, সমগ্র বাংলাদেশ পললসমৃদ্ধ মাটিতে সৃষ্টি হলেও বৃহত্তর যশোর ও ফরিদপুরের অংশবিশেষ প্রাচীনতম জনপদ হিসেবে বহুমাত্রিক সংস্কৃতির মিলনে স্বকীয় সত্তায় স্বতন্ত্র সংস্কৃতি বিনির্মাণে অগ্রজ ভূমিকার দাবিদার। তৎকালীন বৃহত্তর যশোর জেলার অন্তর্গত নড়াইল অঞ্চল এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। ভূতাত্ত্বিকদের মতানুযায়ী প্রায় ১০ লাখ বছর আগে গঙ্গা নদীর পলিমাটি দিয়ে যেসব গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ সৃষ্টি হয়েছিল, সেগুলোর অন্তর্গত নড়াইল অঞ্চল বা আজকের নড়াইল।
নড়াইল জেলার প্রাচীন সভ্যতা নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। নড়াইলের সভ্যতা সৃষ্টিতে মধুমতী, চিত্রা, কাজলা, নলিয়া, নড়াগাতি, নবগঙ্গা, কালীগঙ্গা, আঠারোবাকি নদী এবং শিরোমণি শাখার গাল ও হ্যালিফ্যাক্স ক্যানেলের ভূমিকা অপরিসীম। অন্যদিকে সভ্যতার ক্রমবিকাশের ধারায় তুর্কি, পাঠান, পাল, গুপ্ত, সেন, মোগল, বর্গী, আফগান, নীলকর, ইংরেজ, পর্তুগিজসহ বহু জাতিগোষ্ঠীর আগমন-নির্গমনের মাধ্যমে মিশ্র ধর্মীয় মিথস্ক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে এবং বহুমাত্রিক সভ্যতা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মাধ্যমে নড়াইলে সম্পূর্ণ ভিন্ন মাত্রার সাংস্কৃতিক প্রবাহ সৃষ্টি হয়েছে। আবার পললসমৃদ্ধ সরস মাটির উর্বরতায় কোমল স্বভাবের ভাবুকমতিসম্পন্ন যুগস্রষ্টা মনীষীদের পদভারে নড়াইল সংস্কৃতির প্রকৃত বৈশিষ্ট্যে সৌকর্যমণ্ডিত হয়েছে। বহুধর্মীয় মানুষের পারস্পরিক সহাবস্থানে ধর্মীয় সম্প্রীতির বনিয়াদ বেশ শক্ত এবং স্থিত। লোকসংস্কৃতির প্রায় সব উপাদান নড়াইলে বর্তমান এবং এগুলোর চর্চা অব্যাহত আছে।
নড়াইল জেলার সাংস্কৃতিক জনপদের স্মরণীয় ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান (১৯২৪—১৯৯৪), পরিমার্জিত আধুনিক কবিগানের উদ্ভাবক চারণকবি বিজয়কৃষ্ণ অধিকারী বা বিজয় সরকার (১৯০৩—১৯৮৫)। চারণকবি মোসলেম উদ্দীন বা মোসলেম বয়াতি (১৯০৪—১৯৯০)। মাঠের জারিগানকে সমাজের গ্রহণযোগ্য ও নন্দিত অবস্থানে নিয়ে আসার পথিকৃ বা আধুনিক জারিগানের প্রবক্তা কমল দাসগুপ্ত (১৯১২—১৯৭৪)। একজন সার্থক সংগীতস্রষ্টা, উপমহাদেশের অন্যতম প্রথিতযশা সংগীতশিল্পী, প্রসিদ্ধ সুরকার ও সফল সংগীত পরিচালক উদয়শঙ্কর (১৯০০—১৯৭৭) ও রবিশঙ্কর (১৯২০—২০১২) পৈতৃক সূত্রে নড়াইলের মানুষ। ড. নীহার রঞ্জন গুপ্ত (১৯১১—১৯৮৬) পৈতৃক সূত্রে নড়াইলের মানুষ। বিপিন বিশ্বাস বা বিপিন সরকার (১৯২৩—২০১৫) স্বভাবকবি। মোবারক বয়াতি (১৯১৯—১৯৯১) ও গোলাম কিবরিয়া (১৯৪৩—২০১৬) খ্যাতিমান জারিগায়ক। তারক সরকার, বিনোদ সরকার, সুখদেব সরকার, রসময় সরকার কবিগানের শিল্পী। সাইফুল ইসলাম, আকরাম বয়াতি, ফজর বিশ্বাস, রাহাতুল্লাহ বয়াতি, মাছিম মোল্লা, রমজান বয়াতি জারিগায়ক।
প্রফুল্ল সরকার ও ইরফান উদ্দিন ভাবুকগানের শিল্পী। এ ছাড়া বর্তমান সময়ে দুই শতাধিক কবি ৪৫–৪৬টি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে; সমগ্র জেলায় প্রায় ৫০০ কণ্ঠ, যন্ত্র, আবৃত্তি ও নাট্যকর্মী; ৩০–৩৫ জন জারি ও কবিগানের মঞ্চশিল্পী নিজস্ব উদ্যোগে সংগীত ও যন্ত্র শিক্ষাদান কর্মে যুক্ত রয়েছেন। ২০ জন কীর্তনিয়া, ছয়টি গাজিরগানের দলীয় শিল্পী, নন্দনশিল্পের ক্ষেত্রে দারুশিল্পী, মৃৎশিল্পীরা নিদারুণ কষ্টে জীবন যাপন করছেন। তবু নিতান্ত প্রাণের টানে সংস্কৃতিসেবায় নিয়োজিত থেকে সামাজিক দায়িত্ববোধে সৌন্দর্যমণ্ডিত নতুন বিশ্ব গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছেন নড়াইলের গুণী সন্তানেরা।
মো. রওশন আলী, চারণকবি
সামাজিক উন্নয়নের প্রচলিত প্রবাহে নড়াইল জেলায়ও সর্বক্ষেত্রে সমৃদ্ধি এসেছে। বিশেষ করে ক্রীড়াক্ষেত্রে বাংলার আইকন সাংসদ মাশরাফি বিন মর্তুজা কৌশিকের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আরও কিছু অভাবিত উন্নয়ন নড়াইলে হয়েছে।
সংঘাতপূর্ণ বিশ্বে বাংলাদেশ যেমন শান্তি ও অগ্রগতির রোল মডেল, তেমনি বাংলাদেশের অস্থিতিশীল রাজনৈতিক ধারাপথে সামাজিক সম্প্রীতির বলিষ্ঠ উদাহরণ নড়াইল জেলা। এই ধারা বজায় রাখা সম্ভব হয়েছে সংস্কৃতির নির্মল চর্চার মাধ্যমে সমাজে সব ধর্মানুসারী নারী-পুরুষকে এক সুতায় যুক্ত করা সম্ভব হয়েছে বলেই। সুতরাং নড়াইলের অর্জন নিয়ে বলার ক্ষেত্রে নড়াইলের সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য, সংস্কৃতিজনদের জীবন, কর্মকথা, বর্তমান অনুসারীদের বাস্তবিক অবস্থা প্রভৃতি বিষয় আলোচনায় আসবে।
কোনো স্থানের মানুষের আচার–ব্যবহার, জীবিকার উপায়, সংগীত, নৃত্য, সাহিত্য, নাট্যকলা, সামাজিক সম্পর্ক, ধর্মীয় নীতিনৈতিকতা, শিক্ষা-দীক্ষা ইত্যাদির সামগ্রিক রূপ সংস্কৃতি।
মানুষ ছাড়া সৃষ্টিকুলের অন্য প্রাণীর সংস্কৃতি নেই। কারণ, সৃষ্টিকুলের অপরাপর প্রাণীর মতো মানুষ কেবল বেঁচে থাকে না, সে কিছু বাঁচিয়েও রাখে। আর এই বাঁচিয়ে রাখার উৎসাহে মানুষ শিলাখণ্ডপূর্ণ পাহাড়কে মনের মাধুরী মিশিয়ে অষণ্ড শিল্পসৌন্দর্যে পরিণত করে। এভাবে সংস্কৃতি বিকশিত হয়ে মানুষের ব্যবহারিক জীবনে, চিন্তার জগতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচিত করে। একটি ভূখণ্ডের বিশেষ জনগোষ্ঠীর নিজস্ব জীবনাচার, জীবিকাপদ্ধতি ও ব্যবহারিক বস্তু উপকরণের আলোকে প্রতিনিয়ত যা ঘটে; তা-ই সংস্কৃতির অবয়ব। অর্থাৎ, সংস্কৃতি জীবনসম্পৃক্ত, বস্তুসংলগ্ন ও মানসসম্ভূত।
সাংস্কৃতিক উপাদানের ভিত্তিতে নড়াইল জেলাকে সংস্কৃতির প্রাচীনতম সূতিকাগার বললেও অত্যুক্তি হয় না। কারণ, সমগ্র বাংলাদেশ পললসমৃদ্ধ মাটিতে সৃষ্টি হলেও বৃহত্তর যশোর ও ফরিদপুরের অংশবিশেষ প্রাচীনতম জনপদ হিসেবে বহুমাত্রিক সংস্কৃতির মিলনে স্বকীয় সত্তায় স্বতন্ত্র সংস্কৃতি বিনির্মাণে অগ্রজ ভূমিকার দাবিদার। তৎকালীন বৃহত্তর যশোর জেলার অন্তর্গত নড়াইল অঞ্চল এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। ভূতাত্ত্বিকদের মতানুযায়ী প্রায় ১০ লাখ বছর আগে গঙ্গা নদীর পলিমাটি দিয়ে যেসব গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ সৃষ্টি হয়েছিল, সেগুলোর অন্তর্গত নড়াইল অঞ্চল বা আজকের নড়াইল।
নড়াইল জেলার প্রাচীন সভ্যতা নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। নড়াইলের সভ্যতা সৃষ্টিতে মধুমতী, চিত্রা, কাজলা, নলিয়া, নড়াগাতি, নবগঙ্গা, কালীগঙ্গা, আঠারোবাকি নদী এবং শিরোমণি শাখার গাল ও হ্যালিফ্যাক্স ক্যানেলের ভূমিকা অপরিসীম। অন্যদিকে সভ্যতার ক্রমবিকাশের ধারায় তুর্কি, পাঠান, পাল, গুপ্ত, সেন, মোগল, বর্গী, আফগান, নীলকর, ইংরেজ, পর্তুগিজসহ বহু জাতিগোষ্ঠীর আগমন-নির্গমনের মাধ্যমে মিশ্র ধর্মীয় মিথস্ক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে এবং বহুমাত্রিক সভ্যতা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মাধ্যমে নড়াইলে সম্পূর্ণ ভিন্ন মাত্রার সাংস্কৃতিক প্রবাহ সৃষ্টি হয়েছে। আবার পললসমৃদ্ধ সরস মাটির উর্বরতায় কোমল স্বভাবের ভাবুকমতিসম্পন্ন যুগস্রষ্টা মনীষীদের পদভারে নড়াইল সংস্কৃতির প্রকৃত বৈশিষ্ট্যে সৌকর্যমণ্ডিত হয়েছে। বহুধর্মীয় মানুষের পারস্পরিক সহাবস্থানে ধর্মীয় সম্প্রীতির বনিয়াদ বেশ শক্ত এবং স্থিত। লোকসংস্কৃতির প্রায় সব উপাদান নড়াইলে বর্তমান এবং এগুলোর চর্চা অব্যাহত আছে।
নড়াইল জেলার সাংস্কৃতিক জনপদের স্মরণীয় ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান (১৯২৪—১৯৯৪), পরিমার্জিত আধুনিক কবিগানের উদ্ভাবক চারণকবি বিজয়কৃষ্ণ অধিকারী বা বিজয় সরকার (১৯০৩—১৯৮৫)। চারণকবি মোসলেম উদ্দীন বা মোসলেম বয়াতি (১৯০৪—১৯৯০)। মাঠের জারিগানকে সমাজের গ্রহণযোগ্য ও নন্দিত অবস্থানে নিয়ে আসার পথিকৃ বা আধুনিক জারিগানের প্রবক্তা কমল দাসগুপ্ত (১৯১২—১৯৭৪)। একজন সার্থক সংগীতস্রষ্টা, উপমহাদেশের অন্যতম প্রথিতযশা সংগীতশিল্পী, প্রসিদ্ধ সুরকার ও সফল সংগীত পরিচালক উদয়শঙ্কর (১৯০০—১৯৭৭) ও রবিশঙ্কর (১৯২০—২০১২) পৈতৃক সূত্রে নড়াইলের মানুষ। ড. নীহার রঞ্জন গুপ্ত (১৯১১—১৯৮৬) পৈতৃক সূত্রে নড়াইলের মানুষ। বিপিন বিশ্বাস বা বিপিন সরকার (১৯২৩—২০১৫) স্বভাবকবি। মোবারক বয়াতি (১৯১৯—১৯৯১) ও গোলাম কিবরিয়া (১৯৪৩—২০১৬) খ্যাতিমান জারিগায়ক। তারক সরকার, বিনোদ সরকার, সুখদেব সরকার, রসময় সরকার কবিগানের শিল্পী। সাইফুল ইসলাম, আকরাম বয়াতি, ফজর বিশ্বাস, রাহাতুল্লাহ বয়াতি, মাছিম মোল্লা, রমজান বয়াতি জারিগায়ক।
প্রফুল্ল সরকার ও ইরফান উদ্দিন ভাবুকগানের শিল্পী। এ ছাড়া বর্তমান সময়ে দুই শতাধিক কবি ৪৫–৪৬টি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে; সমগ্র জেলায় প্রায় ৫০০ কণ্ঠ, যন্ত্র, আবৃত্তি ও নাট্যকর্মী; ৩০–৩৫ জন জারি ও কবিগানের মঞ্চশিল্পী নিজস্ব উদ্যোগে সংগীত ও যন্ত্র শিক্ষাদান কর্মে যুক্ত রয়েছেন। ২০ জন কীর্তনিয়া, ছয়টি গাজিরগানের দলীয় শিল্পী, নন্দনশিল্পের ক্ষেত্রে দারুশিল্পী, মৃৎশিল্পীরা নিদারুণ কষ্টে জীবন যাপন করছেন। তবু নিতান্ত প্রাণের টানে সংস্কৃতিসেবায় নিয়োজিত থেকে সামাজিক দায়িত্ববোধে সৌন্দর্যমণ্ডিত নতুন বিশ্ব গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছেন নড়াইলের গুণী সন্তানেরা।
মো. রওশন আলী, চারণকবি
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে লন্ডন এবং দিল্লি হয়ে ঢাকায় ফিরলেন। সেদিন অপরাহ্ণে রেসকোর্সে অলিখিত স্বতঃস্ফূর্ত ভাষণ দিয়েছিলেন। যে ভাষণটি আমি শুনেছিলাম—১৭ মিনিটের। ভাষণে একটি জায়গায় তিনি বলেছিলেন, একটা কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, বাংলাদেশ একটি আদর্শ রাষ্ট্র হবে,
২৬ মার্চ ২০২৪১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানে যে চার রাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করা হয়েছিল তার একটি সমাজতন্ত্র। সমাজতন্ত্র মানে বৈষম্যের অবসান। সমাজতন্ত্র মানে ন্যায্যতা। সমাজতন্ত্র মানে সবার শিক্ষা, চিকিৎসা, মাথাগোঁজার ঠাঁই, কাজের সুযোগ। সমাজতন্ত্র মানে যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ, প্রয়োজন অনুয
২৬ মার্চ ২০২৪স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্র পরিচালনার চালিকা শক্তি হিসেবে চারটি মৌলনীতি গ্রহণ করেছিলেন। এগুলো হলো: জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র। আজ ৫২ বছর পর দেখছি, এই মৌলনীতিগুলোর প্রতিটির সূচক এত নিচে নেমে গেছে যে, বলা চলে রাষ্ট্র পরিচালনার মৌলনীতি বলে এখন আর কিছু নেই। জাতীয়তা দুই ভাগে বি
২৬ মার্চ ২০২৪বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা যেতে পারে, রাষ্ট্র হিসেবে নবীন, কিন্তু এর সভ্যতা সুপ্রাচীন। নদীবেষ্টিত গাঙেয় উপত্যকায় পলিবাহিত উর্বর ভূমি যেমন উপচে পড়া শস্যসম্ভারে জীবনকে সমৃদ্ধ করেছে, তেমনি নদীর ভাঙনের খেলায় রাতারাতি বিলুপ্ত হয়েছে বহু জনপদ। এরপরও সভ্যতার নানা চিহ্ন এখানে খুঁজে পাওয়া যায় এবং বাঙালিত্বের বৈশিষ
২৬ মার্চ ২০২৪