মুরাদ হোসেন মুন্সী
আজকের শরীয়তপুর এক দিনে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এর পেছনে রয়েছে দীর্ঘ ইতিহাস। সুদীর্ঘ পথপরিক্রমায় সেদিনের পালং থেকে আজকের শরীয়তপুরের উত্থান। পালং ছিল সর্বযুগের সর্বকালের একটি ঐতিহ্যবাহী স্থান। বিভিন্ন দলিল–দস্তাবেজে পালংয়ের কথা উল্লেখ রয়েছে। এই পালং যে একদিন শরীয়তপুর জেলা শহরের হৃৎপিণ্ডে পরিণত হবে, সে কথা কে জানত?
সব যুগে, সব ক্ষেত্রে পালং সমৃদ্ধ ও আলোচিত হলেও ভৌগোলিকভাবে এর অবস্থান জেলা শহরের সহায়ক ছিল না।
যে আশা ও আকাঙ্ক্ষা নিয়ে অনেক পরে শরীয়তপুর জেলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তার সুফল এই অঞ্চলের মানুষ পাচ্ছিল না। তখনকার যাতায়াতব্যবস্থা ছিল মান্ধাতা আমলের। সড়কপথে যোগাযোগব্যবস্থার কোনো অস্তিত্ব এই অঞ্চলে ছিল না। পদ্মা, মেঘনা, কীর্তনখোলা ও আড়িয়ালবেষ্টিত শরীয়তপুর নামীয় জনপদের মানুষের প্রধান বাহন ছিল পা। বর্ষা মৌসুমে নৌকার ব্যবহার ছিল লক্ষণীয়। সেই অবস্থা আজ আর নেই। শরীয়তপুরের চেহারা ইতিমধ্যে পাল্টে গেছে এবং ক্রমাগত পাল্টে যাচ্ছে। বিশেষ করে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনায় তৎকালীন পানিসম্পদমন্ত্রী প্রয়াত আব্দুর রাজ্জাকের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে শরীয়তপুরের সার্বিক উন্নয়ন গতি পায়।
বাংলাদেশের মানচিত্রের দিকে ভালোভাবে নজর দিলে দেখা যায় যে দেশের দক্ষিণাঞ্চল, পশ্চিমাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের মধ্যবর্তী জেলা শরীয়তপুর এবং এ জেলা চারপাশে চারটি নদী দ্বারা বেষ্টিত। যার উত্তরে প্রমত্তা পদ্মা, দক্ষিণে কীর্তনখোলা, পূর্বে মেঘনা ও পশ্চিমে আড়িয়াল খাঁ। যেহেতু পূর্বে এখানে নৌপথই ছিল যোগাযোগব্যবস্থার একমাত্র ভরসা, সেহেতু যোগাযোগব্যবস্থায় শরীয়তপুর ছিল ভৌগোলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ জেলা। শরীয়তপুর জেলায় যে কটি বন্দর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সব কটিই নদীপথে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তির আশীর্বাদে যোগাযোগব্যবস্থায় সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে, অসংখ্য সড়ক অবকাঠামো তৈরি হয়েছে। সেই সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে শরীয়তপুর জেলার যোগাযোগের ভাগ্যের চাকা। সড়ক যোগাযোগব্যবস্থায় টার্নিং পয়েন্ট হতে যাচ্ছে শরীয়তপুর জেলা।
তৎকালীন পূর্ব মাদারীপুরের ছয়টি থানা নিয়ে ১৯৭৭ সালের ৩ নভেম্বর বিশিষ্ট সমাজসেবক মাদারীপুরের হাজি শরীয়তউল্লাহর নামানুসারে শরীয়তপুর নামে একটি নতুন মহকুমা সৃষ্টি হয়। মাদারীপুর থেকে বিভক্ত হয়ে শরীয়তপুর জেলা প্রতিষ্ঠার মূলে ছিল পিছিয়ে পড়া এই অঞ্চলের আর্থসামাজিক উন্নয়ন। কারণ তৎকালীন পূর্ব মাদারীপুর তথা আজকের শরীয়তপুরে কোনো রাস্তাঘাট, ব্রিজ–কালভার্ট ইত্যাদি অবকাঠামো ছিল না বললেই চলে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইন-আদালতসহ অন্যান্য সরকারি সুযোগ–সুবিধা থেকেও এই অঞ্চলের মানুষ বঞ্চিত ছিল। সেই সময় আন্তজেলা সড়কযোগাযোগ তো দূরের কথা, এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। আরো স্পষ্ট করে বলতে হয়, এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়িতে যাওয়ার সুষ্ঠু কোনো ব্যবস্থা তখন ছিল না। পাকা রাস্তা ছিল তখনকার অলীক স্বপ্ন। কাঁচা রাস্তারও কোনো অস্তিত্ব ছিল না। যোগাযোগের একমাত্র বাহন ছিল নৌকা। তা–ও সীমিত আকারে এবং বর্ষা মৌসুমে। পায়ে হেঁটেই মানুষ দৈনন্দিন কাজে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেত। এই যাওয়া–আসার পথে দুই–তিন দিন সময় অতিবাহিত হতো। মামলা, মোকদ্দমা, শিক্ষা, চিকিৎসা ইত্যাদি কাজে মহকুমা সদর মাদারীপুরে যাতায়াত ছিল কঠিন কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এই অঞ্চল নদীবিশিষ্ট হওয়ার ফলে এখান থেকে উত্তর-দক্ষিণ-পূর্ব-পশ্চিমে যাওয়া ছিল কঠিন ও দুঃসাধ্য ব্যাপার। রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র বাহন ছিল গয়না নৌকা।
পরবর্তীকালে গয়না নৌকার সঙ্গে ছোট লঞ্চ যুক্ত হয়। কিন্তু এসব যানবাহনের অবস্থান ছিল ডামুড্যা, সুরেশ্বর, ওয়াপদা কিংবা দুলারচরে। সেখানে পৌঁছাতে হতো পায়ে হেঁটে। মাঝরাতে ঘুম থেকে উঠে পায়ে হেঁটে উল্লেখিত স্থানে গিয়ে ঢাকায় যাওয়ার নৌকা বা লঞ্চ ধরতে হতো। কখনো কখনো নির্দিষ্ট সময়ে ঘাটে পৌঁছাতে না পারলে পরের দিন পর্যন্ত ঘাটে বসে থাকতে হতো। ঐ সব নৌকা ও ছোট লঞ্চে প্রমত্তা পদ্মা পাড়ি দেওয়া ছিল জীবন-মৃত্যুর মধ্যে যুদ্ধ। ১৯৮৪ সালের ১মার্চ শরীয়তপুর মহকুমা জেলায় উন্নীত হয়। ধীরে ধীরে শিশু শরীয়তপুর বেড়ে উঠতে থাকে।
১৯৯৬ সালে ২১ বছর পর জাতির জনকের কন্যা আজকের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। এরপর শুরু হয় শরীয়তপুরের উন্নয়ন। ’৯৬ সালে সরকার গঠন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পিছিয়ে পড়া উন্নয়নবঞ্চিত জেলাসমূহকে উন্নয়নে অগ্রাধিকারের আওতায় আনেন। তৎকালীন সরকারের নীতিনির্ধারক, মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক প্রয়াত জননেতা মরহুম আব্দুর রাজ্জাক পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়ে অবহেলিত শরীয়তপুরকে ঢেলে সাজানোর কাজে আত্মনিয়োগ করেন। তাঁর পরিকল্পনা, চিন্তা-চেতনা ও সহযোগিতায় আজকের শরীয়তপুর আধুনিকায়নের অগ্রযাত্রায় শামিল হয়।
শেখ হাসিনা প্রথমেই শরীয়তপুরকে আধুনিক যোগাযোগ নেটওয়ার্কে সম্পৃক্ত করেন। কারণ তাঁর জানা ছিল, নদীবেষ্টিত শরীয়তপুরকে আধুনিকভাবে গড়ে তুলতে হলে যোগাযোগ নেটওয়ার্কে যুক্ত করা জরুরি। তাই তিনি সময়ক্ষেপণ না করে চাঁদপুরের পশ্চিম পাশে এবং শরীয়তপুরে পূর্ব পাশে প্রবহমান মেঘনা নদীর দুই তীরে হরিনা ঘাট ও নরসিংহপুর ঘাটে ফেরি সার্ভিস চালু করে মোংলা-চট্টগ্রাম দুই বন্দরের মহাসড়কের সঙ্গে শরীয়তপুরকে সম্পৃক্ত করেন। এতে করে দেশের পূর্বাঞ্চলীয় চট্টগ্রাম, সিলেট ও কুমিল্লা বিভাগ এবং বরিশাল, খুলনা বিভাগ ও প্রস্তাবিত ফরিদপুর বিভাগসমূহের জেলাগুলোর সঙ্গে আন্তজেলা যোগাযোগ নেটওয়ার্কের আওতায় এসে যায় শরীয়তপুর। শুধু পূর্বাঞ্চল নয়, এর ফলে দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের জেলাসমূহের সঙ্গে যোগাযোগ নেটওয়ার্কের সেতুবন্ধ স্থাপিত হয়। মুন্সীগঞ্জ জেলার দক্ষিণ পাশে ও শরীয়তপুরের উত্তর পাশে প্রবহমান উত্তাল পদ্মার দুই প্রান্তে মাওয়া-মাঝির ঘাট ফেরি সার্ভিস চালু করে রাজধানী ঢাকাকে শরীয়তপুরের দোরগোড়ায় নিয়ে এসে এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি পূরণ করা হয়েছে। এখন ইচ্ছা করলে যেকোনো সময় শরীয়তপুর থেকে ঢাকায় যাতায়াত করা যায়, যা ’৯৬-এর আগে কল্পনাও করা যেত না।
শরীয়তপুরে একে একে গড়ে ওঠে অসংখ্য রাস্তাঘাট, স্কুল–কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির। তৈরি হয় সড়ক যোগাযোগ অবকাঠামো, অসংখ্য ব্রিজ–কালভার্ট, মহাসড়ক, সড়ক, আঞ্চলিক সড়ক, গ্রামীণ সড়ক। এই এলাকায় গড়ে ওঠে সরকারি স্থাপনা, যার ফলে শরীয়তপুর আধুনিকায়নের পথ পরিক্রমায় অনেক দূর এগিয়ে যায়।
সম্প্রতি শরীয়তপুরের পশ্চিম পাশে প্রবহমান আড়িয়াল খাঁ নদীর ওপর আচমত আলী খান চিন-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু স্থাপিত হওয়ায় সড়কপথে একসময়ের দুর্গম মাদারীপুরে যাওয়া এখন মাত্র ৩০ মিনিট সময়ের ব্যাপার। পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের দাবি সর্বপ্রথম শরীয়তপুর থেকেই উঠেছিল। বর্তমানে শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছাবেদুর রহমান খোকা সিকদার ছিলেন পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন পরিষদের সভাপতি। তিনি এর জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। তাঁর এই দাবি একসময় গণমানুষের দাবিতে রূপান্তরিত হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনা কঠিন দুঃসময়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন। এই সেতু চালু হলে শরীয়তপুর জেলা রাজধানী ঢাকা শহরের সন্নিকটে এসে যাবে। শরীয়তপুর–১ আসনের সাংসদ ইকবাল হোসেন অপুর প্রচেষ্টায় পদ্মা সেতুর জাজিরা পয়েন্ট থেকে শরীয়তপুর শহর পর্যন্ত চার লেনবিশিষ্ট রাস্তার কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। ফলে এখানকার আর্থসামাজিক অবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে। ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
মেঘনা সেতু সফলভাবে বাস্তবায়নের কাজ চলছে। মেঘনা নদীর নিচ দিয়ে ট্যানেল নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে এবং মাদারীপুর থেকে নরসিংহপুর ঘাট পর্যন্ত চার লেন রাস্তার কাজও এগিয়ে চলেছে। জাজিরা থেকে নড়িয়া, সখীপুর হয়ে নরসিংহপুর ঘাট পর্যন্ত রাস্তাটি প্রশস্ত হচ্ছে।
শরীয়তপুর জেলার উত্তর-পশ্চিমে পদ্মা সেতুর অবস্থান। দক্ষিণে আবুপুরে কীর্তনখোলা নদীতে ফেরি সার্ভিস চালু হওয়ায় বরিশালের সঙ্গে শরীয়তপুরের সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে।
শরীয়তপুর শহর থেকে আবুপুর পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ চলছে। কীর্তনখোলা নদীতে ব্রিজের প্রস্তুতি চলছে। খাসেরহাট হয়ে কালকিনী সড়কটিতেও গাড়ি চলছে। এর ফলে শরীয়তপুর হবে বাংলাদেশের যোগাযোগ নেটওয়ার্কের কেন্দ্রবিন্দু। পদ্মা সেতু , প্রস্তাবিত মেঘনা সেতু, ভবিষ্যৎ কীর্তনখোলা সেতু ও আড়িয়াল খাঁ সেতুর সংযোগস্থলে মহাসড়ক, আঞ্চলিক সড়ক, পল্লি সড়ক নির্মাণ করতে হবে। তার সঙ্গে মিল করে হাট-বাজার, স্কুল-কলেজ, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা জরুরি।
পদ্মার পারে বিমানবন্দর, আধুনিক মার্কেট, অলিম্পিক ভিলেজ, ক্যান্টনমেন্ট, পর্যটনকেন্দ্র, তাঁতপল্লি, বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, গার্মেন্টসপল্লি, অত্যাধুনিক হোটেল-মোটেল ইত্যাদি নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা উঁকি দিচ্ছে।
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলাধীন সখীপুর থানার অন্তর্গত নরসিংহপুর নৌঘাটে একটি আধুনিক নৌবন্দর, পদ্মা নদীর হৃৎপিণ্ডের ওপর কাঁচিকাটা এলাকায় দেশের তৃতীয় বৃহত্তম নৌবন্দর করা সম্ভব। এখানে পদ্মা নদীতে বিদেশ থেকে আসা মালবাহী জাহাজ নোঙর করে পণ্য খালাস করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এবং পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় পৌঁছানো যেতে পারে।
পদ্মার ডান পাড়ে একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ করা সম্ভব। মুন্সিগঞ্জের আড়িয়ল বিলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তৈরির প্রস্তাব উত্থাপিত হয়েছিল। মুন্সিগঞ্জে যা সম্ভব হয়নি, শরীয়তপুরে তা অনায়াসে সম্ভব। এ-সংক্রান্ত কাজে শরীয়তপুরে দল-মতনির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ আন্তরিকতার সঙ্গে সহযোগিতা করবে বলে আমার বিশ্বাস।
মুরাদ হোসেন মুন্সী
আইনজীবী
আজকের শরীয়তপুর এক দিনে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এর পেছনে রয়েছে দীর্ঘ ইতিহাস। সুদীর্ঘ পথপরিক্রমায় সেদিনের পালং থেকে আজকের শরীয়তপুরের উত্থান। পালং ছিল সর্বযুগের সর্বকালের একটি ঐতিহ্যবাহী স্থান। বিভিন্ন দলিল–দস্তাবেজে পালংয়ের কথা উল্লেখ রয়েছে। এই পালং যে একদিন শরীয়তপুর জেলা শহরের হৃৎপিণ্ডে পরিণত হবে, সে কথা কে জানত?
সব যুগে, সব ক্ষেত্রে পালং সমৃদ্ধ ও আলোচিত হলেও ভৌগোলিকভাবে এর অবস্থান জেলা শহরের সহায়ক ছিল না।
যে আশা ও আকাঙ্ক্ষা নিয়ে অনেক পরে শরীয়তপুর জেলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তার সুফল এই অঞ্চলের মানুষ পাচ্ছিল না। তখনকার যাতায়াতব্যবস্থা ছিল মান্ধাতা আমলের। সড়কপথে যোগাযোগব্যবস্থার কোনো অস্তিত্ব এই অঞ্চলে ছিল না। পদ্মা, মেঘনা, কীর্তনখোলা ও আড়িয়ালবেষ্টিত শরীয়তপুর নামীয় জনপদের মানুষের প্রধান বাহন ছিল পা। বর্ষা মৌসুমে নৌকার ব্যবহার ছিল লক্ষণীয়। সেই অবস্থা আজ আর নেই। শরীয়তপুরের চেহারা ইতিমধ্যে পাল্টে গেছে এবং ক্রমাগত পাল্টে যাচ্ছে। বিশেষ করে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনায় তৎকালীন পানিসম্পদমন্ত্রী প্রয়াত আব্দুর রাজ্জাকের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে শরীয়তপুরের সার্বিক উন্নয়ন গতি পায়।
বাংলাদেশের মানচিত্রের দিকে ভালোভাবে নজর দিলে দেখা যায় যে দেশের দক্ষিণাঞ্চল, পশ্চিমাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের মধ্যবর্তী জেলা শরীয়তপুর এবং এ জেলা চারপাশে চারটি নদী দ্বারা বেষ্টিত। যার উত্তরে প্রমত্তা পদ্মা, দক্ষিণে কীর্তনখোলা, পূর্বে মেঘনা ও পশ্চিমে আড়িয়াল খাঁ। যেহেতু পূর্বে এখানে নৌপথই ছিল যোগাযোগব্যবস্থার একমাত্র ভরসা, সেহেতু যোগাযোগব্যবস্থায় শরীয়তপুর ছিল ভৌগোলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ জেলা। শরীয়তপুর জেলায় যে কটি বন্দর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সব কটিই নদীপথে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তির আশীর্বাদে যোগাযোগব্যবস্থায় সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে, অসংখ্য সড়ক অবকাঠামো তৈরি হয়েছে। সেই সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে শরীয়তপুর জেলার যোগাযোগের ভাগ্যের চাকা। সড়ক যোগাযোগব্যবস্থায় টার্নিং পয়েন্ট হতে যাচ্ছে শরীয়তপুর জেলা।
তৎকালীন পূর্ব মাদারীপুরের ছয়টি থানা নিয়ে ১৯৭৭ সালের ৩ নভেম্বর বিশিষ্ট সমাজসেবক মাদারীপুরের হাজি শরীয়তউল্লাহর নামানুসারে শরীয়তপুর নামে একটি নতুন মহকুমা সৃষ্টি হয়। মাদারীপুর থেকে বিভক্ত হয়ে শরীয়তপুর জেলা প্রতিষ্ঠার মূলে ছিল পিছিয়ে পড়া এই অঞ্চলের আর্থসামাজিক উন্নয়ন। কারণ তৎকালীন পূর্ব মাদারীপুর তথা আজকের শরীয়তপুরে কোনো রাস্তাঘাট, ব্রিজ–কালভার্ট ইত্যাদি অবকাঠামো ছিল না বললেই চলে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইন-আদালতসহ অন্যান্য সরকারি সুযোগ–সুবিধা থেকেও এই অঞ্চলের মানুষ বঞ্চিত ছিল। সেই সময় আন্তজেলা সড়কযোগাযোগ তো দূরের কথা, এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। আরো স্পষ্ট করে বলতে হয়, এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়িতে যাওয়ার সুষ্ঠু কোনো ব্যবস্থা তখন ছিল না। পাকা রাস্তা ছিল তখনকার অলীক স্বপ্ন। কাঁচা রাস্তারও কোনো অস্তিত্ব ছিল না। যোগাযোগের একমাত্র বাহন ছিল নৌকা। তা–ও সীমিত আকারে এবং বর্ষা মৌসুমে। পায়ে হেঁটেই মানুষ দৈনন্দিন কাজে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেত। এই যাওয়া–আসার পথে দুই–তিন দিন সময় অতিবাহিত হতো। মামলা, মোকদ্দমা, শিক্ষা, চিকিৎসা ইত্যাদি কাজে মহকুমা সদর মাদারীপুরে যাতায়াত ছিল কঠিন কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এই অঞ্চল নদীবিশিষ্ট হওয়ার ফলে এখান থেকে উত্তর-দক্ষিণ-পূর্ব-পশ্চিমে যাওয়া ছিল কঠিন ও দুঃসাধ্য ব্যাপার। রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র বাহন ছিল গয়না নৌকা।
পরবর্তীকালে গয়না নৌকার সঙ্গে ছোট লঞ্চ যুক্ত হয়। কিন্তু এসব যানবাহনের অবস্থান ছিল ডামুড্যা, সুরেশ্বর, ওয়াপদা কিংবা দুলারচরে। সেখানে পৌঁছাতে হতো পায়ে হেঁটে। মাঝরাতে ঘুম থেকে উঠে পায়ে হেঁটে উল্লেখিত স্থানে গিয়ে ঢাকায় যাওয়ার নৌকা বা লঞ্চ ধরতে হতো। কখনো কখনো নির্দিষ্ট সময়ে ঘাটে পৌঁছাতে না পারলে পরের দিন পর্যন্ত ঘাটে বসে থাকতে হতো। ঐ সব নৌকা ও ছোট লঞ্চে প্রমত্তা পদ্মা পাড়ি দেওয়া ছিল জীবন-মৃত্যুর মধ্যে যুদ্ধ। ১৯৮৪ সালের ১মার্চ শরীয়তপুর মহকুমা জেলায় উন্নীত হয়। ধীরে ধীরে শিশু শরীয়তপুর বেড়ে উঠতে থাকে।
১৯৯৬ সালে ২১ বছর পর জাতির জনকের কন্যা আজকের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। এরপর শুরু হয় শরীয়তপুরের উন্নয়ন। ’৯৬ সালে সরকার গঠন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পিছিয়ে পড়া উন্নয়নবঞ্চিত জেলাসমূহকে উন্নয়নে অগ্রাধিকারের আওতায় আনেন। তৎকালীন সরকারের নীতিনির্ধারক, মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক প্রয়াত জননেতা মরহুম আব্দুর রাজ্জাক পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়ে অবহেলিত শরীয়তপুরকে ঢেলে সাজানোর কাজে আত্মনিয়োগ করেন। তাঁর পরিকল্পনা, চিন্তা-চেতনা ও সহযোগিতায় আজকের শরীয়তপুর আধুনিকায়নের অগ্রযাত্রায় শামিল হয়।
শেখ হাসিনা প্রথমেই শরীয়তপুরকে আধুনিক যোগাযোগ নেটওয়ার্কে সম্পৃক্ত করেন। কারণ তাঁর জানা ছিল, নদীবেষ্টিত শরীয়তপুরকে আধুনিকভাবে গড়ে তুলতে হলে যোগাযোগ নেটওয়ার্কে যুক্ত করা জরুরি। তাই তিনি সময়ক্ষেপণ না করে চাঁদপুরের পশ্চিম পাশে এবং শরীয়তপুরে পূর্ব পাশে প্রবহমান মেঘনা নদীর দুই তীরে হরিনা ঘাট ও নরসিংহপুর ঘাটে ফেরি সার্ভিস চালু করে মোংলা-চট্টগ্রাম দুই বন্দরের মহাসড়কের সঙ্গে শরীয়তপুরকে সম্পৃক্ত করেন। এতে করে দেশের পূর্বাঞ্চলীয় চট্টগ্রাম, সিলেট ও কুমিল্লা বিভাগ এবং বরিশাল, খুলনা বিভাগ ও প্রস্তাবিত ফরিদপুর বিভাগসমূহের জেলাগুলোর সঙ্গে আন্তজেলা যোগাযোগ নেটওয়ার্কের আওতায় এসে যায় শরীয়তপুর। শুধু পূর্বাঞ্চল নয়, এর ফলে দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের জেলাসমূহের সঙ্গে যোগাযোগ নেটওয়ার্কের সেতুবন্ধ স্থাপিত হয়। মুন্সীগঞ্জ জেলার দক্ষিণ পাশে ও শরীয়তপুরের উত্তর পাশে প্রবহমান উত্তাল পদ্মার দুই প্রান্তে মাওয়া-মাঝির ঘাট ফেরি সার্ভিস চালু করে রাজধানী ঢাকাকে শরীয়তপুরের দোরগোড়ায় নিয়ে এসে এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি পূরণ করা হয়েছে। এখন ইচ্ছা করলে যেকোনো সময় শরীয়তপুর থেকে ঢাকায় যাতায়াত করা যায়, যা ’৯৬-এর আগে কল্পনাও করা যেত না।
শরীয়তপুরে একে একে গড়ে ওঠে অসংখ্য রাস্তাঘাট, স্কুল–কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির। তৈরি হয় সড়ক যোগাযোগ অবকাঠামো, অসংখ্য ব্রিজ–কালভার্ট, মহাসড়ক, সড়ক, আঞ্চলিক সড়ক, গ্রামীণ সড়ক। এই এলাকায় গড়ে ওঠে সরকারি স্থাপনা, যার ফলে শরীয়তপুর আধুনিকায়নের পথ পরিক্রমায় অনেক দূর এগিয়ে যায়।
সম্প্রতি শরীয়তপুরের পশ্চিম পাশে প্রবহমান আড়িয়াল খাঁ নদীর ওপর আচমত আলী খান চিন-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু স্থাপিত হওয়ায় সড়কপথে একসময়ের দুর্গম মাদারীপুরে যাওয়া এখন মাত্র ৩০ মিনিট সময়ের ব্যাপার। পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের দাবি সর্বপ্রথম শরীয়তপুর থেকেই উঠেছিল। বর্তমানে শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছাবেদুর রহমান খোকা সিকদার ছিলেন পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন পরিষদের সভাপতি। তিনি এর জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। তাঁর এই দাবি একসময় গণমানুষের দাবিতে রূপান্তরিত হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনা কঠিন দুঃসময়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন। এই সেতু চালু হলে শরীয়তপুর জেলা রাজধানী ঢাকা শহরের সন্নিকটে এসে যাবে। শরীয়তপুর–১ আসনের সাংসদ ইকবাল হোসেন অপুর প্রচেষ্টায় পদ্মা সেতুর জাজিরা পয়েন্ট থেকে শরীয়তপুর শহর পর্যন্ত চার লেনবিশিষ্ট রাস্তার কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। ফলে এখানকার আর্থসামাজিক অবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে। ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
মেঘনা সেতু সফলভাবে বাস্তবায়নের কাজ চলছে। মেঘনা নদীর নিচ দিয়ে ট্যানেল নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে এবং মাদারীপুর থেকে নরসিংহপুর ঘাট পর্যন্ত চার লেন রাস্তার কাজও এগিয়ে চলেছে। জাজিরা থেকে নড়িয়া, সখীপুর হয়ে নরসিংহপুর ঘাট পর্যন্ত রাস্তাটি প্রশস্ত হচ্ছে।
শরীয়তপুর জেলার উত্তর-পশ্চিমে পদ্মা সেতুর অবস্থান। দক্ষিণে আবুপুরে কীর্তনখোলা নদীতে ফেরি সার্ভিস চালু হওয়ায় বরিশালের সঙ্গে শরীয়তপুরের সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে।
শরীয়তপুর শহর থেকে আবুপুর পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ চলছে। কীর্তনখোলা নদীতে ব্রিজের প্রস্তুতি চলছে। খাসেরহাট হয়ে কালকিনী সড়কটিতেও গাড়ি চলছে। এর ফলে শরীয়তপুর হবে বাংলাদেশের যোগাযোগ নেটওয়ার্কের কেন্দ্রবিন্দু। পদ্মা সেতু , প্রস্তাবিত মেঘনা সেতু, ভবিষ্যৎ কীর্তনখোলা সেতু ও আড়িয়াল খাঁ সেতুর সংযোগস্থলে মহাসড়ক, আঞ্চলিক সড়ক, পল্লি সড়ক নির্মাণ করতে হবে। তার সঙ্গে মিল করে হাট-বাজার, স্কুল-কলেজ, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা জরুরি।
পদ্মার পারে বিমানবন্দর, আধুনিক মার্কেট, অলিম্পিক ভিলেজ, ক্যান্টনমেন্ট, পর্যটনকেন্দ্র, তাঁতপল্লি, বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, গার্মেন্টসপল্লি, অত্যাধুনিক হোটেল-মোটেল ইত্যাদি নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা উঁকি দিচ্ছে।
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলাধীন সখীপুর থানার অন্তর্গত নরসিংহপুর নৌঘাটে একটি আধুনিক নৌবন্দর, পদ্মা নদীর হৃৎপিণ্ডের ওপর কাঁচিকাটা এলাকায় দেশের তৃতীয় বৃহত্তম নৌবন্দর করা সম্ভব। এখানে পদ্মা নদীতে বিদেশ থেকে আসা মালবাহী জাহাজ নোঙর করে পণ্য খালাস করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এবং পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় পৌঁছানো যেতে পারে।
পদ্মার ডান পাড়ে একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ করা সম্ভব। মুন্সিগঞ্জের আড়িয়ল বিলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তৈরির প্রস্তাব উত্থাপিত হয়েছিল। মুন্সিগঞ্জে যা সম্ভব হয়নি, শরীয়তপুরে তা অনায়াসে সম্ভব। এ-সংক্রান্ত কাজে শরীয়তপুরে দল-মতনির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ আন্তরিকতার সঙ্গে সহযোগিতা করবে বলে আমার বিশ্বাস।
মুরাদ হোসেন মুন্সী
আইনজীবী
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে লন্ডন এবং দিল্লি হয়ে ঢাকায় ফিরলেন। সেদিন অপরাহ্ণে রেসকোর্সে অলিখিত স্বতঃস্ফূর্ত ভাষণ দিয়েছিলেন। যে ভাষণটি আমি শুনেছিলাম—১৭ মিনিটের। ভাষণে একটি জায়গায় তিনি বলেছিলেন, একটা কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, বাংলাদেশ একটি আদর্শ রাষ্ট্র হবে,
২৬ মার্চ ২০২৪১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানে যে চার রাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করা হয়েছিল তার একটি সমাজতন্ত্র। সমাজতন্ত্র মানে বৈষম্যের অবসান। সমাজতন্ত্র মানে ন্যায্যতা। সমাজতন্ত্র মানে সবার শিক্ষা, চিকিৎসা, মাথাগোঁজার ঠাঁই, কাজের সুযোগ। সমাজতন্ত্র মানে যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ, প্রয়োজন অনুয
২৬ মার্চ ২০২৪স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্র পরিচালনার চালিকা শক্তি হিসেবে চারটি মৌলনীতি গ্রহণ করেছিলেন। এগুলো হলো: জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র। আজ ৫২ বছর পর দেখছি, এই মৌলনীতিগুলোর প্রতিটির সূচক এত নিচে নেমে গেছে যে, বলা চলে রাষ্ট্র পরিচালনার মৌলনীতি বলে এখন আর কিছু নেই। জাতীয়তা দুই ভাগে বি
২৬ মার্চ ২০২৪বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা যেতে পারে, রাষ্ট্র হিসেবে নবীন, কিন্তু এর সভ্যতা সুপ্রাচীন। নদীবেষ্টিত গাঙেয় উপত্যকায় পলিবাহিত উর্বর ভূমি যেমন উপচে পড়া শস্যসম্ভারে জীবনকে সমৃদ্ধ করেছে, তেমনি নদীর ভাঙনের খেলায় রাতারাতি বিলুপ্ত হয়েছে বহু জনপদ। এরপরও সভ্যতার নানা চিহ্ন এখানে খুঁজে পাওয়া যায় এবং বাঙালিত্বের বৈশিষ
২৬ মার্চ ২০২৪