জহির রায়হান
বাংলাদেশের স্থানীয় জাত ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল’ ছাগল মানের দিক থেকে বিশ্বসেরা হিসেবে স্বীকৃত। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষিবিষয়ক সংস্থা (এফএও) এবং আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইও) ২০১৫ সালের মূল্যায়ন অনুযায়ী ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল বিশ্বের অন্যতম সেরা জাত। আন্তর্জাতিক বাজারে এই ছাগল ‘কুষ্টিয়া গ্রেড’ হিসেবে পরিচিত। তবে বৃহত্তর কুষ্টিয়ার অংশ বর্তমান চুয়াডাঙ্গা জেলায় এই ছাগল বেশি পালন হওয়ায় জেলা প্রশাসন থেকে চুয়াডাঙ্গার ব্র্যান্ডিং হিসেবে ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল’ ঘোষণা করা হয়েছে।
গুণগত মানের চামড়া ও সুস্বাদু মাংসের জন্য সারা পৃথিবীতে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের খ্যাতি রয়েছে। এ ছাড়া যেকোনো পরিবেশে দ্রুত মানিয়ে নেওয়া এবং বছরে দুবারে তিন-চারটি বাচ্চা দেওয়ার কারণে দারিদ্র্যবিমোচনে এই ছাগলের বিরাট ভূমিকা রয়েছে।
তবে এফএওর একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের দুর্বল দিক হচ্ছে অন্য ছাগলের চেয়ে আকারে ছোট, ধীরে বাড়ে এবং ওজনে কম। আফ্রিকার মাসাই, ভারতের যমুনাপাড়ি বা চীনা জাতের ছাগল দ্রুত বাড়ে এবং মাংস ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ বেশি। তবে ওই তিন জাতের ২০ থেকে ৩৫ শতাংশ বাচ্চা জন্মের পরই মারা যায়। কিন্তু ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের বাচ্চার মৃত্যুহার ৫ থেকে ১০ শতাংশ। এ কারণে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের জীবনচক্রে মোট বংশবৃদ্ধির হার অনেক বেশি। তাই বিজ্ঞানীরা সামগ্রিক উৎপাদনশীলতার বিবেচনায় ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল সেরা জাত হিসেবে দেখছেন। আর দারিদ্র্যবিমোচনে সহায়ক হওয়ায় এ ছাগল ‘গরিবের গাভি’ হিসেবেও পরিচিত। এত সব বিবেচনায় নিয়ে ১৯৯৬ সালে সরকারি উদ্যোগে এবং ২০০০ সালে বেসরকারি সংস্থা স্থানীয় সম্পদ ব্যবহারের মাধ্যমে দারিদ্র্য-বিমোচনে ছাগলের খামার প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হয়।
দুঃখজনক হলেও সত্য, দেশি-বিদেশি সরকারি-বেসরকারি প্রকল্প ছাগল উন্নয়নের নামে ব্ল্যাক বেঙ্গলের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। ফলে চিন্তায়-চেতনায়, কর্মে, আচার-আচরণে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে অর্থসর্বস্ব উন্নয়ন সংস্কৃতিতে। তাৎক্ষণিক ও দ্রুত কিছু পয়সার নেশায় গ্রামের সাধারণ নারীদের বিদেশি জাতের প্রতি মোহগ্রস্ত করে ফেলা হয়েছে। কিন্তু এর জাত সংরক্ষণ, উৎপাদন ও বিপণনের ক্ষেত্রে তেমন কোনো ভূমিকা দীর্ঘকাল পালন করা হয়নি। তবে চুয়াডাঙ্গা সরকারি ছাগলের খামার নিরলসভাবে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের জাত সংরক্ষণ, উৎপাদন, বিপণন করে আসছে।
খামারি সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছর এই খামার থেকে খুলনা বিভাগসহ সারা দেশে পাঁঠা ও বাড়ন্ত ছাগি সরবরাহ করা হয়। প্রতিটি পাঁঠা ১ হাজার ২০০ টাকা এবং ছাগি ১ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি করা হয়। খামারে পাঁঠা-ছাগি মিলিয়ে ১ হাজার ছাগল পালন করে ব্ল্যাক বেঙ্গল জাত সম্প্রসারণ ও সংরক্ষণ করা হয়।
বাংলাদেশে ছাগল পালনে বেশ অগ্রগতি হয়েছে। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন-পিকেএসএফ সারা দেশে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালনের হার বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়। তাদের সহযোগী বেসরকারি সংস্থা ওয়েভ ফাউন্ডেশন ‘লিফট’ প্রকল্পের অভিজ্ঞতা বিনিময় ও হাতে–কলমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে। প্রায় ৫০টি ব্যাচে এ পর্যন্ত বিভিন্ন সংস্থার ২ হাজার কর্মী, কর্মকর্তা, সদস্য প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। পাশাপাশি তাঁরা মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, যশোর, রাজশাহী জেলায় পরিবার পর্যায়ে আধুনিক পদ্ধতিতে ছাগল পালনে কারিগরি ও ঋণসহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
উপরিউক্ত জেলাগুলোতে সরকারি ছাগলের খামার আছে। পাশাপাশি সারা দেশে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের জাত সংরক্ষণ, উৎপাদন ও বিপণনের মাধ্যমে কালো ছাগল পালন কার্যক্রম ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ওয়েভ ফাউন্ডেশন কোষাঘাটায় বাণিজ্যিকভাবে কালো ছাগলের খামার করার সুবিধার্থে ওয়েভ ব্ল্যাক বেঙ্গল মার্ট প্রতিষ্ঠা করেছে।
দারিদ্র্যবিমোচনে ছাগল পালন একটি কার্যকর হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। পাশাপাশি ক্ষুদ্র উদ্যোগ হিসেবে শিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত যুবকদের মধ্যেও ছাগল পালনে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। খামার করার লক্ষ্যে ছাগল কেনার জন্য প্রায় দিনই বিভিন্ন জেলা থেকে নানা সংগঠন ও ব্যক্তি এখানে আসছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন গ্রাম নিয়ে ২০টি ক্লাস্টারে (গুচ্ছ) বিভক্ত করে প্রতিটি ক্লাস্টারে ছাগল পালনে কারিগরি পরামর্শ দেওয়ার জন্য একজন করে কমিউনিটি বেইজ টেকনিক্যাল কর্মকর্তা রয়েছেন। আধুনিক মাচা পদ্ধতিতে ছাগল পালন নিশ্চিত করার পাশাপাশি প্রদর্শনী খামার ও বাক সেন্টার গড়ে তুলতে তাঁরা সহায়তা করছেন। তাঁরা নিয়মিত সরকারি প্রাণিসম্পদ বিভাগের সহায়তায় প্রশিক্ষণ, পরামর্শ ও চিকিৎসাসেবা এবং ক্যাম্প পরিচালনা করে আসছেন।
বর্তমানে ওয়েভ ফাউন্ডেশন চুয়াডাঙ্গা জেলার পাশাপাশি মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, যশোর ও রাজশাহী জেলায় ২০ হাজার খামারির সঙ্গে কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
পরিবার পর্যায়ে লাভজনক হলেও বাণিজ্যিকভাবে ব্ল্যাক বেঙ্গলের খামার লাভজনক বলা কঠিন। কারণ-
১. চারণভূমির সংকটের কারণে ঘাস ও দানাদার খাদ্য সম্পূর্ণ ক্রয় করতে হয়, ২. ইজারা নেওয়া জমিতে ঘাস উৎপাদনও ব্যয়বহুল, ৩. কেয়ারটেকার ও কারিগরি শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি, ৪. ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের মাংস ও চামড়ার দাম উৎপাদন ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, ৫. আন্তর্জাতিক বাজারে জোগান দেওয়ার মতো সক্ষম নয়, ৬. সংকরায়নের ফলে ছাগলের মাংস ও চামড়ার গুণগত মান হ্রাস ইত্যাদি।
সুতরাং, ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের জাত সংরক্ষণ, উৎপাদন ও বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক খামার গঠনে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে আরও বেশি বেশি গবেষণা, প্রণোদনা, প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা দরকার। অবিলম্বে সংকরায়ণ প্রতিরোধমূলক আইন করে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের বৈশিষ্ট্য বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করা দরকার। ওয়েভ ফাউন্ডেশন বিশ্বাস করে, দেশে বেসরকারিভাবে গড়ে ওঠা মাংস প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্রগুলো দেশে-বিদেশে যদি মানসম্মত ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের মাংস সরবরাহ করতে পারে, তাহলে দেশ পাবে বৈদেশিক মুদ্রা আর দরিদ্র মানুষের বাড়বে আয়। তবে এর জন্য প্রয়োজন প্রচুর পরিমাণে ও মানে নির্ভেজাল ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল উৎপাদন ও বিপণন।
জহির রায়হান
উপপরিচালক, ওয়েভ ফাউন্ডেশন
বাংলাদেশের স্থানীয় জাত ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল’ ছাগল মানের দিক থেকে বিশ্বসেরা হিসেবে স্বীকৃত। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষিবিষয়ক সংস্থা (এফএও) এবং আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইও) ২০১৫ সালের মূল্যায়ন অনুযায়ী ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল বিশ্বের অন্যতম সেরা জাত। আন্তর্জাতিক বাজারে এই ছাগল ‘কুষ্টিয়া গ্রেড’ হিসেবে পরিচিত। তবে বৃহত্তর কুষ্টিয়ার অংশ বর্তমান চুয়াডাঙ্গা জেলায় এই ছাগল বেশি পালন হওয়ায় জেলা প্রশাসন থেকে চুয়াডাঙ্গার ব্র্যান্ডিং হিসেবে ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল’ ঘোষণা করা হয়েছে।
গুণগত মানের চামড়া ও সুস্বাদু মাংসের জন্য সারা পৃথিবীতে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের খ্যাতি রয়েছে। এ ছাড়া যেকোনো পরিবেশে দ্রুত মানিয়ে নেওয়া এবং বছরে দুবারে তিন-চারটি বাচ্চা দেওয়ার কারণে দারিদ্র্যবিমোচনে এই ছাগলের বিরাট ভূমিকা রয়েছে।
তবে এফএওর একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের দুর্বল দিক হচ্ছে অন্য ছাগলের চেয়ে আকারে ছোট, ধীরে বাড়ে এবং ওজনে কম। আফ্রিকার মাসাই, ভারতের যমুনাপাড়ি বা চীনা জাতের ছাগল দ্রুত বাড়ে এবং মাংস ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ বেশি। তবে ওই তিন জাতের ২০ থেকে ৩৫ শতাংশ বাচ্চা জন্মের পরই মারা যায়। কিন্তু ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের বাচ্চার মৃত্যুহার ৫ থেকে ১০ শতাংশ। এ কারণে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের জীবনচক্রে মোট বংশবৃদ্ধির হার অনেক বেশি। তাই বিজ্ঞানীরা সামগ্রিক উৎপাদনশীলতার বিবেচনায় ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল সেরা জাত হিসেবে দেখছেন। আর দারিদ্র্যবিমোচনে সহায়ক হওয়ায় এ ছাগল ‘গরিবের গাভি’ হিসেবেও পরিচিত। এত সব বিবেচনায় নিয়ে ১৯৯৬ সালে সরকারি উদ্যোগে এবং ২০০০ সালে বেসরকারি সংস্থা স্থানীয় সম্পদ ব্যবহারের মাধ্যমে দারিদ্র্য-বিমোচনে ছাগলের খামার প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হয়।
দুঃখজনক হলেও সত্য, দেশি-বিদেশি সরকারি-বেসরকারি প্রকল্প ছাগল উন্নয়নের নামে ব্ল্যাক বেঙ্গলের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। ফলে চিন্তায়-চেতনায়, কর্মে, আচার-আচরণে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে অর্থসর্বস্ব উন্নয়ন সংস্কৃতিতে। তাৎক্ষণিক ও দ্রুত কিছু পয়সার নেশায় গ্রামের সাধারণ নারীদের বিদেশি জাতের প্রতি মোহগ্রস্ত করে ফেলা হয়েছে। কিন্তু এর জাত সংরক্ষণ, উৎপাদন ও বিপণনের ক্ষেত্রে তেমন কোনো ভূমিকা দীর্ঘকাল পালন করা হয়নি। তবে চুয়াডাঙ্গা সরকারি ছাগলের খামার নিরলসভাবে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের জাত সংরক্ষণ, উৎপাদন, বিপণন করে আসছে।
খামারি সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছর এই খামার থেকে খুলনা বিভাগসহ সারা দেশে পাঁঠা ও বাড়ন্ত ছাগি সরবরাহ করা হয়। প্রতিটি পাঁঠা ১ হাজার ২০০ টাকা এবং ছাগি ১ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি করা হয়। খামারে পাঁঠা-ছাগি মিলিয়ে ১ হাজার ছাগল পালন করে ব্ল্যাক বেঙ্গল জাত সম্প্রসারণ ও সংরক্ষণ করা হয়।
বাংলাদেশে ছাগল পালনে বেশ অগ্রগতি হয়েছে। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন-পিকেএসএফ সারা দেশে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালনের হার বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়। তাদের সহযোগী বেসরকারি সংস্থা ওয়েভ ফাউন্ডেশন ‘লিফট’ প্রকল্পের অভিজ্ঞতা বিনিময় ও হাতে–কলমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে। প্রায় ৫০টি ব্যাচে এ পর্যন্ত বিভিন্ন সংস্থার ২ হাজার কর্মী, কর্মকর্তা, সদস্য প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। পাশাপাশি তাঁরা মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, যশোর, রাজশাহী জেলায় পরিবার পর্যায়ে আধুনিক পদ্ধতিতে ছাগল পালনে কারিগরি ও ঋণসহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
উপরিউক্ত জেলাগুলোতে সরকারি ছাগলের খামার আছে। পাশাপাশি সারা দেশে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের জাত সংরক্ষণ, উৎপাদন ও বিপণনের মাধ্যমে কালো ছাগল পালন কার্যক্রম ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ওয়েভ ফাউন্ডেশন কোষাঘাটায় বাণিজ্যিকভাবে কালো ছাগলের খামার করার সুবিধার্থে ওয়েভ ব্ল্যাক বেঙ্গল মার্ট প্রতিষ্ঠা করেছে।
দারিদ্র্যবিমোচনে ছাগল পালন একটি কার্যকর হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। পাশাপাশি ক্ষুদ্র উদ্যোগ হিসেবে শিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত যুবকদের মধ্যেও ছাগল পালনে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। খামার করার লক্ষ্যে ছাগল কেনার জন্য প্রায় দিনই বিভিন্ন জেলা থেকে নানা সংগঠন ও ব্যক্তি এখানে আসছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন গ্রাম নিয়ে ২০টি ক্লাস্টারে (গুচ্ছ) বিভক্ত করে প্রতিটি ক্লাস্টারে ছাগল পালনে কারিগরি পরামর্শ দেওয়ার জন্য একজন করে কমিউনিটি বেইজ টেকনিক্যাল কর্মকর্তা রয়েছেন। আধুনিক মাচা পদ্ধতিতে ছাগল পালন নিশ্চিত করার পাশাপাশি প্রদর্শনী খামার ও বাক সেন্টার গড়ে তুলতে তাঁরা সহায়তা করছেন। তাঁরা নিয়মিত সরকারি প্রাণিসম্পদ বিভাগের সহায়তায় প্রশিক্ষণ, পরামর্শ ও চিকিৎসাসেবা এবং ক্যাম্প পরিচালনা করে আসছেন।
বর্তমানে ওয়েভ ফাউন্ডেশন চুয়াডাঙ্গা জেলার পাশাপাশি মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, যশোর ও রাজশাহী জেলায় ২০ হাজার খামারির সঙ্গে কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
পরিবার পর্যায়ে লাভজনক হলেও বাণিজ্যিকভাবে ব্ল্যাক বেঙ্গলের খামার লাভজনক বলা কঠিন। কারণ-
১. চারণভূমির সংকটের কারণে ঘাস ও দানাদার খাদ্য সম্পূর্ণ ক্রয় করতে হয়, ২. ইজারা নেওয়া জমিতে ঘাস উৎপাদনও ব্যয়বহুল, ৩. কেয়ারটেকার ও কারিগরি শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি, ৪. ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের মাংস ও চামড়ার দাম উৎপাদন ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, ৫. আন্তর্জাতিক বাজারে জোগান দেওয়ার মতো সক্ষম নয়, ৬. সংকরায়নের ফলে ছাগলের মাংস ও চামড়ার গুণগত মান হ্রাস ইত্যাদি।
সুতরাং, ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের জাত সংরক্ষণ, উৎপাদন ও বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক খামার গঠনে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে আরও বেশি বেশি গবেষণা, প্রণোদনা, প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা দরকার। অবিলম্বে সংকরায়ণ প্রতিরোধমূলক আইন করে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের বৈশিষ্ট্য বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করা দরকার। ওয়েভ ফাউন্ডেশন বিশ্বাস করে, দেশে বেসরকারিভাবে গড়ে ওঠা মাংস প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্রগুলো দেশে-বিদেশে যদি মানসম্মত ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের মাংস সরবরাহ করতে পারে, তাহলে দেশ পাবে বৈদেশিক মুদ্রা আর দরিদ্র মানুষের বাড়বে আয়। তবে এর জন্য প্রয়োজন প্রচুর পরিমাণে ও মানে নির্ভেজাল ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল উৎপাদন ও বিপণন।
জহির রায়হান
উপপরিচালক, ওয়েভ ফাউন্ডেশন
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে লন্ডন এবং দিল্লি হয়ে ঢাকায় ফিরলেন। সেদিন অপরাহ্ণে রেসকোর্সে অলিখিত স্বতঃস্ফূর্ত ভাষণ দিয়েছিলেন। যে ভাষণটি আমি শুনেছিলাম—১৭ মিনিটের। ভাষণে একটি জায়গায় তিনি বলেছিলেন, একটা কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, বাংলাদেশ একটি আদর্শ রাষ্ট্র হবে,
২৬ মার্চ ২০২৪১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানে যে চার রাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করা হয়েছিল তার একটি সমাজতন্ত্র। সমাজতন্ত্র মানে বৈষম্যের অবসান। সমাজতন্ত্র মানে ন্যায্যতা। সমাজতন্ত্র মানে সবার শিক্ষা, চিকিৎসা, মাথাগোঁজার ঠাঁই, কাজের সুযোগ। সমাজতন্ত্র মানে যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ, প্রয়োজন অনুয
২৬ মার্চ ২০২৪স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্র পরিচালনার চালিকা শক্তি হিসেবে চারটি মৌলনীতি গ্রহণ করেছিলেন। এগুলো হলো: জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র। আজ ৫২ বছর পর দেখছি, এই মৌলনীতিগুলোর প্রতিটির সূচক এত নিচে নেমে গেছে যে, বলা চলে রাষ্ট্র পরিচালনার মৌলনীতি বলে এখন আর কিছু নেই। জাতীয়তা দুই ভাগে বি
২৬ মার্চ ২০২৪বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা যেতে পারে, রাষ্ট্র হিসেবে নবীন, কিন্তু এর সভ্যতা সুপ্রাচীন। নদীবেষ্টিত গাঙেয় উপত্যকায় পলিবাহিত উর্বর ভূমি যেমন উপচে পড়া শস্যসম্ভারে জীবনকে সমৃদ্ধ করেছে, তেমনি নদীর ভাঙনের খেলায় রাতারাতি বিলুপ্ত হয়েছে বহু জনপদ। এরপরও সভ্যতার নানা চিহ্ন এখানে খুঁজে পাওয়া যায় এবং বাঙালিত্বের বৈশিষ
২৬ মার্চ ২০২৪