আজমাল হোসেন মামুন
দেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর একটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ। ভারতের সঙ্গে রয়েছে স্থলবন্দরও। জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় থাকা এই সোনামসজিদ স্থলবন্দর তার সম্ভাবনার সবটুকু এখনো কাজে লাগাতে পারেনি। এই বন্দর দিয়ে সারা বছরই ফল, কয়লা, পাথর, মসলা, কৃষিপণ্য ইত্যাদি আমদানি হয়। এই আমদানিকে ঘিরে এখানে গড়ে উঠেছে বাজার। কিন্তু আমদানিনির্ভর এই বাজার জাতীয় পরিসরে স্বাভাবিকভাবে তেমন গুরুত্ব তৈরি করতে পারছে না। অথচ রপ্তানির সম্ভাবনাগুলো কাজে লাগানো গেলে এটি নিঃসন্দেহে বড় জায়গা নিতে পারত।
এই জেলায় রয়েছে ঐতিহ্যবাহী কাঁসা ও পিতলের তৈজসপত্র তৈরির কারখানা। বহু বছর ধরে এই খাতকে ঘিরে তৈরি হওয়া দক্ষ জনশক্তি এই ব্যবসা সম্প্রসারণের বড় সম্ভাবনা তৈরি করেছে। রয়েছে আম, লিচুসহ মৌসুমি ফলের বড় বাজার। তবে সবকিছু ছাড়িয়ে এই সময়ে সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে, তা হলো লাক্ষা।
শিবগঞ্জ ও সদর উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে কয়েক বছর আগে লাক্ষা চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়। চাষিরা বেশ সাফল্যও পান। তিন–চার বছর আগে পতিত জমি ও ফসলি জমিতে সাথি ফসল হিসেবে অনেকে লাক্ষা চাষ শুরু করেন। লাভজনক হওয়ায় দ্রুত এটি রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলাসহ প্রত্যন্ত এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।
লাক্ষা একধরনের অতি ক্ষুদ্র পোকা, ক্যারিয়া ল্যাক্কা নিঃসৃত রজনজাতীয় পদার্থ। দেখতে অনেকটা উকুনের মতো। এটা প্রাণিজাত বহুমুখী একধরনের রজন। এ পোকার ত্বকের নিচে থাকে একধরনের গ্রন্থি, যা থেকে নিঃসৃত হয় একধরনের আঠালো রস, যা ক্রমেই শক্ত ও পুরু হয়ে পোষক গাছের ডালকে আচ্ছাদিত করে। এই আবরণকেই ‘লাক্ষা’ বলে। তবে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষের কাছে এটি ‘লাহা’ হিসেবে পরিচিত।
এই শক্ত আবরণ ছাড়িয়ে ও শোধিত করে তা বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। প্রায় ১০০ প্রজাতির গাছে লাক্ষা জন্মালেও মাত্র কিছু প্রজাতিতে লাক্ষা পোকা ভালোভাবে বংশবৃদ্ধি করে। বাংলাদেশে বরই, শিরীষ (কড়ই), বট, পাকুড়, পলাশ, খয়ের, বাবলা, ডুমুর, অড়হর, কুসুম প্রভৃতি গাছে লাক্ষা ভালো জন্মে। তবে আবাদি জমির মধ্যে বরইজাতীয় পোষক গাছ লাগালে লাভজনকভাবে বিভিন্ন ফসলের চাষ করা সম্ভব। মূলত সাথি ফসল হিসেবে চাষ করলেই এটি বেশি লাভজনক। এ ক্ষেত্রে গম, কচু ও হলুদ সাথি ফসল হিসেবে সবচেয়ে ভালো। কিন্তু এত সবের পরেও এই লাক্ষা চাষ নিয়ে নানা ধরনের সংকটের মুখে এখন কৃষকেরা। লাক্ষার উপাদান কাঠের আসবাবপত্র বার্নিশ করা, বিভিন্ন ধরনের বার্নিশ পেইন্ট, পারফিউম, অস্ত্র কারখানা, রেলওয়ে কারখানা, লবণাক্ত পানি থেকে জাহাজের তলদেশ রক্ষার কাজে বার্নিশ, ওষুধ, স্বর্ণালংকারের ফাঁপা অংশ পূরণ, চামড়া ও বৈদ্যুতিক শিল্পসহ বিভিন্ন শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া ডাকঘরের চিঠি, পার্সেল সিলমোহর, পুতুল, খেলনা, আলতা, নখরঞ্জন, শুকনো মাউন্টিং টিস্যু পেপার ইত্যাদি তৈরির কাজেও লাক্ষা ব্যবহৃত হয়। ইদানীং এর উপাদান চকলেট, চুইংগাম ও লেবুজাতীয় ফলের সংরক্ষণ ও এর গুণ বৃদ্ধির জন্য কোটিন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
ভারত, চীনের দক্ষিণাঞ্চল, মিয়ানমার, পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশ, থাইল্যান্ড ও তাইওয়ানে বাণিজ্যিকভাবে লাক্ষা চাষ হয়। বিশ্বের মোট চাহিদার ৮০ শতাংশই আসে ভারত থেকে। ভারতের তুলনায় বাংলাদেশে লাক্ষা চাষ এখনো খুব ছোট অঞ্চলে সীমাবদ্ধ। সম্প্রতি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের এনএটিপির অর্থায়নে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এর আওতায় রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাশাপাশি নওগাঁ, নীলফামারী, রংপুর ও গাজীপুর অঞ্চলে লাক্ষা গ্রাম প্রতিষ্ঠা করা হয়। এসব অঞ্চলের প্রান্তিক ও ভূমিহীন জনগোষ্ঠীকে লাক্ষা চাষের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তারপরও বাংলাদেশের মাত্র ১২ হাজার হেক্টর এলাকায় এখন লাক্ষার চাষ হচ্ছে। উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ১ হাজার মেট্রিক টনের মতো। অথচ দেশে এর বার্ষিক চাহিদা ২০ হাজার মেট্রিক টনের বেশি।
লাক্ষা গবেষণাকেন্দ্রের তথ্যমতে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় বর্তমানে লাক্ষার যে পোষক রয়েছে, সেখান থেকে বছরে প্রায় ৫০০ টন লাক্ষা উৎপাদন সম্ভব, যার বর্তমান বাজারমূল্য ৪০ কোটি টাকার বেশি। এর মাধ্যমে প্রায় ২০ হাজার ভূমিহীন প্রান্তিক কৃষকের কর্মসংস্থান করাও সম্ভব।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ আমেরও এলাকা। আম উৎপাদনে দেশের যে কয়েকটি জেলার সুনাম রয়েছে, তার মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ একটি। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আম চাষের জন্য চাষিরা নানা কীটনাশক ব্যবহার করছেন। এতে লাক্ষা পোকা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আর এই ক্ষতির দায় চোকাতে হচ্ছে চাষিকে।
জেলায় যে লাক্ষা গবেষণাকেন্দ্র রয়েছে, তার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মোখলেসুর রহমানও বিষয়টি চিহ্নিত করেছেন। সঙ্গে এও জানিয়েছেন, দেশের চাষিদের দিকে না তাকিয়ে ভারত থেকে লাক্ষা আমদানি হচ্ছে। এতে দেখা যাচ্ছে নানা প্রতিকূলতা সয়ে যে কৃষকেরা লাক্ষা চাষ করলেন, তাঁরা শেষ পর্যন্ত বাজারে ন্যায্যমূল্য পেলেন না। বলা হচ্ছে, আমাদের এখানে উৎপাদিত লাক্ষার একটি বড় অংশেরই মান বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতার মতো নয়। ফলে গবেষণার মাধ্যমে এ ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার পথ বের করা জরুরি। কিন্তু এই গবেষণাকেন্দ্রে বিজ্ঞানী রয়েছেন মাত্র একজন।
এটা সত্য যে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে লাক্ষাই একমাত্র সম্ভাবনা নয়, আরও অনেক সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র রয়েছে। কিন্তু প্রান্তিক কৃষক থেকে শুরু করে তরুণ উদ্যোক্তা পর্যায়ের সহায় হওয়ার মতো একটি খাতের কথা যদি উল্লেখ করতে হয়, তবে তা লাক্ষাই। সরকারিভাবে ভারত থেকে উন্নত জাতের লাক্ষা পোষক আনার কথা চলছে বলে শোনা যাচ্ছে। এটি হলে নিঃসন্দেহে তা হবে এই জেলা ও এর আশপাশের জন্য আশীর্বাদ।
আজমাল হোসেন মামুন
সহকারী শিক্ষক, হরিমোহন সরকারি উচ্চবিদ্যালয়
দেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর একটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ। ভারতের সঙ্গে রয়েছে স্থলবন্দরও। জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় থাকা এই সোনামসজিদ স্থলবন্দর তার সম্ভাবনার সবটুকু এখনো কাজে লাগাতে পারেনি। এই বন্দর দিয়ে সারা বছরই ফল, কয়লা, পাথর, মসলা, কৃষিপণ্য ইত্যাদি আমদানি হয়। এই আমদানিকে ঘিরে এখানে গড়ে উঠেছে বাজার। কিন্তু আমদানিনির্ভর এই বাজার জাতীয় পরিসরে স্বাভাবিকভাবে তেমন গুরুত্ব তৈরি করতে পারছে না। অথচ রপ্তানির সম্ভাবনাগুলো কাজে লাগানো গেলে এটি নিঃসন্দেহে বড় জায়গা নিতে পারত।
এই জেলায় রয়েছে ঐতিহ্যবাহী কাঁসা ও পিতলের তৈজসপত্র তৈরির কারখানা। বহু বছর ধরে এই খাতকে ঘিরে তৈরি হওয়া দক্ষ জনশক্তি এই ব্যবসা সম্প্রসারণের বড় সম্ভাবনা তৈরি করেছে। রয়েছে আম, লিচুসহ মৌসুমি ফলের বড় বাজার। তবে সবকিছু ছাড়িয়ে এই সময়ে সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে, তা হলো লাক্ষা।
শিবগঞ্জ ও সদর উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে কয়েক বছর আগে লাক্ষা চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়। চাষিরা বেশ সাফল্যও পান। তিন–চার বছর আগে পতিত জমি ও ফসলি জমিতে সাথি ফসল হিসেবে অনেকে লাক্ষা চাষ শুরু করেন। লাভজনক হওয়ায় দ্রুত এটি রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলাসহ প্রত্যন্ত এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।
লাক্ষা একধরনের অতি ক্ষুদ্র পোকা, ক্যারিয়া ল্যাক্কা নিঃসৃত রজনজাতীয় পদার্থ। দেখতে অনেকটা উকুনের মতো। এটা প্রাণিজাত বহুমুখী একধরনের রজন। এ পোকার ত্বকের নিচে থাকে একধরনের গ্রন্থি, যা থেকে নিঃসৃত হয় একধরনের আঠালো রস, যা ক্রমেই শক্ত ও পুরু হয়ে পোষক গাছের ডালকে আচ্ছাদিত করে। এই আবরণকেই ‘লাক্ষা’ বলে। তবে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষের কাছে এটি ‘লাহা’ হিসেবে পরিচিত।
এই শক্ত আবরণ ছাড়িয়ে ও শোধিত করে তা বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। প্রায় ১০০ প্রজাতির গাছে লাক্ষা জন্মালেও মাত্র কিছু প্রজাতিতে লাক্ষা পোকা ভালোভাবে বংশবৃদ্ধি করে। বাংলাদেশে বরই, শিরীষ (কড়ই), বট, পাকুড়, পলাশ, খয়ের, বাবলা, ডুমুর, অড়হর, কুসুম প্রভৃতি গাছে লাক্ষা ভালো জন্মে। তবে আবাদি জমির মধ্যে বরইজাতীয় পোষক গাছ লাগালে লাভজনকভাবে বিভিন্ন ফসলের চাষ করা সম্ভব। মূলত সাথি ফসল হিসেবে চাষ করলেই এটি বেশি লাভজনক। এ ক্ষেত্রে গম, কচু ও হলুদ সাথি ফসল হিসেবে সবচেয়ে ভালো। কিন্তু এত সবের পরেও এই লাক্ষা চাষ নিয়ে নানা ধরনের সংকটের মুখে এখন কৃষকেরা। লাক্ষার উপাদান কাঠের আসবাবপত্র বার্নিশ করা, বিভিন্ন ধরনের বার্নিশ পেইন্ট, পারফিউম, অস্ত্র কারখানা, রেলওয়ে কারখানা, লবণাক্ত পানি থেকে জাহাজের তলদেশ রক্ষার কাজে বার্নিশ, ওষুধ, স্বর্ণালংকারের ফাঁপা অংশ পূরণ, চামড়া ও বৈদ্যুতিক শিল্পসহ বিভিন্ন শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া ডাকঘরের চিঠি, পার্সেল সিলমোহর, পুতুল, খেলনা, আলতা, নখরঞ্জন, শুকনো মাউন্টিং টিস্যু পেপার ইত্যাদি তৈরির কাজেও লাক্ষা ব্যবহৃত হয়। ইদানীং এর উপাদান চকলেট, চুইংগাম ও লেবুজাতীয় ফলের সংরক্ষণ ও এর গুণ বৃদ্ধির জন্য কোটিন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
ভারত, চীনের দক্ষিণাঞ্চল, মিয়ানমার, পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশ, থাইল্যান্ড ও তাইওয়ানে বাণিজ্যিকভাবে লাক্ষা চাষ হয়। বিশ্বের মোট চাহিদার ৮০ শতাংশই আসে ভারত থেকে। ভারতের তুলনায় বাংলাদেশে লাক্ষা চাষ এখনো খুব ছোট অঞ্চলে সীমাবদ্ধ। সম্প্রতি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের এনএটিপির অর্থায়নে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এর আওতায় রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাশাপাশি নওগাঁ, নীলফামারী, রংপুর ও গাজীপুর অঞ্চলে লাক্ষা গ্রাম প্রতিষ্ঠা করা হয়। এসব অঞ্চলের প্রান্তিক ও ভূমিহীন জনগোষ্ঠীকে লাক্ষা চাষের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তারপরও বাংলাদেশের মাত্র ১২ হাজার হেক্টর এলাকায় এখন লাক্ষার চাষ হচ্ছে। উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ১ হাজার মেট্রিক টনের মতো। অথচ দেশে এর বার্ষিক চাহিদা ২০ হাজার মেট্রিক টনের বেশি।
লাক্ষা গবেষণাকেন্দ্রের তথ্যমতে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় বর্তমানে লাক্ষার যে পোষক রয়েছে, সেখান থেকে বছরে প্রায় ৫০০ টন লাক্ষা উৎপাদন সম্ভব, যার বর্তমান বাজারমূল্য ৪০ কোটি টাকার বেশি। এর মাধ্যমে প্রায় ২০ হাজার ভূমিহীন প্রান্তিক কৃষকের কর্মসংস্থান করাও সম্ভব।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ আমেরও এলাকা। আম উৎপাদনে দেশের যে কয়েকটি জেলার সুনাম রয়েছে, তার মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ একটি। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আম চাষের জন্য চাষিরা নানা কীটনাশক ব্যবহার করছেন। এতে লাক্ষা পোকা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আর এই ক্ষতির দায় চোকাতে হচ্ছে চাষিকে।
জেলায় যে লাক্ষা গবেষণাকেন্দ্র রয়েছে, তার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মোখলেসুর রহমানও বিষয়টি চিহ্নিত করেছেন। সঙ্গে এও জানিয়েছেন, দেশের চাষিদের দিকে না তাকিয়ে ভারত থেকে লাক্ষা আমদানি হচ্ছে। এতে দেখা যাচ্ছে নানা প্রতিকূলতা সয়ে যে কৃষকেরা লাক্ষা চাষ করলেন, তাঁরা শেষ পর্যন্ত বাজারে ন্যায্যমূল্য পেলেন না। বলা হচ্ছে, আমাদের এখানে উৎপাদিত লাক্ষার একটি বড় অংশেরই মান বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতার মতো নয়। ফলে গবেষণার মাধ্যমে এ ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার পথ বের করা জরুরি। কিন্তু এই গবেষণাকেন্দ্রে বিজ্ঞানী রয়েছেন মাত্র একজন।
এটা সত্য যে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে লাক্ষাই একমাত্র সম্ভাবনা নয়, আরও অনেক সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র রয়েছে। কিন্তু প্রান্তিক কৃষক থেকে শুরু করে তরুণ উদ্যোক্তা পর্যায়ের সহায় হওয়ার মতো একটি খাতের কথা যদি উল্লেখ করতে হয়, তবে তা লাক্ষাই। সরকারিভাবে ভারত থেকে উন্নত জাতের লাক্ষা পোষক আনার কথা চলছে বলে শোনা যাচ্ছে। এটি হলে নিঃসন্দেহে তা হবে এই জেলা ও এর আশপাশের জন্য আশীর্বাদ।
আজমাল হোসেন মামুন
সহকারী শিক্ষক, হরিমোহন সরকারি উচ্চবিদ্যালয়
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে লন্ডন এবং দিল্লি হয়ে ঢাকায় ফিরলেন। সেদিন অপরাহ্ণে রেসকোর্সে অলিখিত স্বতঃস্ফূর্ত ভাষণ দিয়েছিলেন। যে ভাষণটি আমি শুনেছিলাম—১৭ মিনিটের। ভাষণে একটি জায়গায় তিনি বলেছিলেন, একটা কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, বাংলাদেশ একটি আদর্শ রাষ্ট্র হবে,
২৬ মার্চ ২০২৪১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানে যে চার রাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করা হয়েছিল তার একটি সমাজতন্ত্র। সমাজতন্ত্র মানে বৈষম্যের অবসান। সমাজতন্ত্র মানে ন্যায্যতা। সমাজতন্ত্র মানে সবার শিক্ষা, চিকিৎসা, মাথাগোঁজার ঠাঁই, কাজের সুযোগ। সমাজতন্ত্র মানে যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ, প্রয়োজন অনুয
২৬ মার্চ ২০২৪স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্র পরিচালনার চালিকা শক্তি হিসেবে চারটি মৌলনীতি গ্রহণ করেছিলেন। এগুলো হলো: জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র। আজ ৫২ বছর পর দেখছি, এই মৌলনীতিগুলোর প্রতিটির সূচক এত নিচে নেমে গেছে যে, বলা চলে রাষ্ট্র পরিচালনার মৌলনীতি বলে এখন আর কিছু নেই। জাতীয়তা দুই ভাগে বি
২৬ মার্চ ২০২৪বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা যেতে পারে, রাষ্ট্র হিসেবে নবীন, কিন্তু এর সভ্যতা সুপ্রাচীন। নদীবেষ্টিত গাঙেয় উপত্যকায় পলিবাহিত উর্বর ভূমি যেমন উপচে পড়া শস্যসম্ভারে জীবনকে সমৃদ্ধ করেছে, তেমনি নদীর ভাঙনের খেলায় রাতারাতি বিলুপ্ত হয়েছে বহু জনপদ। এরপরও সভ্যতার নানা চিহ্ন এখানে খুঁজে পাওয়া যায় এবং বাঙালিত্বের বৈশিষ
২৬ মার্চ ২০২৪