জয়দুল হোসেন
বাংলাদেশের মধ্য পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া অনেক কারণে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। কয়েক বছর আগে অর্থাৎ ২০১৭-১৮ সালে বাংলাদেশের ৬৪ জেলাকে ব্র্যান্ডিংয়ের আওতায় নিয়ে আসে সরকার। উন্নয়নের ক্ষেত্রে দেশের যে জেলা যে বিষয়ে বিশেষ অবদান রেখেছে, সে জেলাকে সে বিষয়ে ব্র্যান্ডিং করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ব্র্যান্ডিং হলো মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতি। এর স্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনাদীপ্ত সংস্কৃতির রাজধানী ব্রাহ্মণবাড়িয়া’।
বাংলাদেশে আজ উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে দেশ স্বাধীন হওয়ার জন্য। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের জনপ্রিয় অধ্যাপক এ কে এম হারুনুর রশিদ বলতেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্বাধীন না হলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না’। আসলেও তা–ই। মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। সম্মুখযুদ্ধ হয়েছে সবচেয়ে বেশি। সংগত কারণেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ব্র্যান্ডিংয়ে মুক্তিযুদ্ধ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ব্র্যান্ডিংয়ের অন্য একটি বিষয় হলো সংস্কৃতি। ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে কথায় কথায় সংস্কৃতির রাজধানী বলা হয়ে থাকে। এ দাবির পক্ষে যুক্তিসংগত কারণও রয়েছে। শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও রাজনীতির খ্যাতিমান অনেক ব্যক্তি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্মগ্রহণ করেছেন। তাঁদের অবদানকে মূল্যায়ন করেই ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে সংস্কৃতির রাজধানী বলা হয়েছে। সবার নাম উল্লেখ করার অবকাশ এখানে নেই। তাই সেদিকে যাচ্ছি না। প্রসঙ্গত বলে রাখা প্রয়োজন, সংস্কৃতি বলতে অনেকে কেবল গানবাজনাকে বুঝে থাকেন, কিন্তু না। সংস্কৃতি কেবল গানবাজনাই নয়, সংস্কৃতি হলো মানুষের সামগ্রিক জীবনাচার। মানুষের অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক নিরাপত্তাসহ সামগ্রিক জীবনযাত্রার মান যদি উন্নত হয়, তবেই তাকে সংস্কৃতিমান বলা যায়। গত ১০ বছরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এসব ক্ষেত্রে যে উন্নয়ন হয়েছে তার তুলনায় এর আগের ৫০ বছরেও তা হয়নি।
কেবল ব্রাহ্মণবাড়িয়াই নয়, সারা দেশেই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। তবে সারা দেশের তুলনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। শিক্ষার কথাই যদি ধরি, তবে এ কথা অবশ্যই মানতে হবে, গত ১০ বছরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১০ গুণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে। শিক্ষিতের হার বেড়েছে অনুরূপভাবেই। একটা সময় ছিল যখন কেবল জেলা শহরে একটি মাত্র কলেজ ছিল। বর্তমানে জেলায় কলেজের সংখ্যা অর্ধশতাধিক। ইতিমধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও একটি মেডিকেল কলেজ গড়ে উঠেছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার চাহিদা তৈরি হয়েছে। যথা শিগগির তাও হয়ে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
আগে জেলা সদরে একটি মাত্র সরকারি হাসপাতাল ছিল। বর্তমানে জেলার প্রতিটি ইউনিয়নে সরকারিভাবে একাধিক কমিউনিটি ক্লিনিক বা হাসপাতাল গড়ে উঠেছে। প্রতিটি উপজেলায় রয়েছে সরকারি হাসপাতাল। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে গুচ্ছগ্রাম। এই গুচ্ছগ্রামের মধ্য দিয়ে গৃহহীনকে গৃহ দেওয়া হচ্ছে। এ কাজগুলো সরকারিভাবে সারা দেশে করা হলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তুলনামূলক বেশি হচ্ছে। এখানে এখন আর গৃহহীন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। ভিক্ষুকের সংখ্যা কমেছে। জেলার অনেক অঞ্চলকে ভিক্ষুকমুক্ত বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
বলছিলাম, উন্নয়নের ধারাবাহিকতার কথা। বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল), আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেড, আশুগঞ্জ সার কারখানা, আশুগঞ্জ নৌবন্দর ও আখাউড়া স্থলবন্দর দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখছে।
এর মধ্যে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল) রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। বিজিএফসিএল দেশের মোট প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনের ৩১ শতাংশ গ্যাস উৎপাদন করে। গ্যাসের সঙ্গে উপজাত হিসেবে উৎপাদিত কনডেনসেট প্রক্রিয়াকরণ করে জ্বালানি তেলের চাহিদার একাংশ পূরণ করে।
দেশের অন্যতম বৃহত্তর সার উৎপাদন কেন্দ্র রয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে। এখানে উৎপাদিত সারের চাহিদা রয়েছে সারা দেশে। এখান থেকেই প্রায় সারা দেশে সার সরবরাহ করা হয়। কাজেই কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশেষ অবদান রয়েছে। দেশের সার্বিক উন্নয়নে প্রয়োজনীয় তিনটি উপাদান হলো গ্যাস, বিদ্যুৎ ও সার। এই তিনটি উপাদান উৎপাদনের কেন্দ্রস্থল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। ফলে দেশের উন্নয়নে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অবদান অনস্বীকার্য।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রয়েছে আন্তর্জাতিক মানের দুটি বন্দর। এর একটি আশুগঞ্জ নৌবন্দর এবং অন্যটি আখাউড়া স্থলবন্দর। আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের ত্রিপুরাসহ পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্যের সঙ্গে রয়েছে সরাসরি যোগাযোগ আর আশুগঞ্জ নৌবন্দরের মাধ্যমে সারা দেশে যেমন, তেমনি যোগাযোগ রয়েছে বহির্বিশ্বের সঙ্গেও। বিশেষ করে ভারতের কয়েকটি রাজ্যের সঙ্গে এর রয়েছে সরাসরি নৌ-যোগাযোগ। ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে নৌপথে পণ্যসামগ্রী বা মালামাল আশুগঞ্জ নিয়ে এসে এখান থেকে সড়কপথে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে পুনরায় ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পাঠানো সহজ। তাই আখাউড়া স্থলবন্দর ও আশুগঞ্জ নৌবন্দরের মধ্যে গড়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক যোগাযোগব্যবস্থা।
এই যোগাযোগব্যবস্থা সহজ করার লক্ষ্যে আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া পর্যন্ত প্রায় ৫০ কিলোমিটার সড়ক চার লেনে সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। ২০১০ সালের মার্চ মাসে আশুগঞ্জ নৌবন্দরকে এবং আগস্ট মাসে আখাউড়া স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। ২০১১ সালে প্রতিবেশী দেশ ভারত প্রথমবারের মতো আশুগঞ্জ নৌবন্দরটি ব্যবহার করে সড়কপথে আখাউড়া দিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভারী মালামাল ত্রিপুরায় নিয়ে গিয়েছে।
আখাউড়া স্থলবন্দরটি ব্যবহার করে ত্রিপুরা-ঢাকা-কলকাতা বাস চলাচল শুরু হয়েছে অনেক আগেই। এদিক দিয়ে রেল যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ভারতের ত্রিপুরা এবং বাংলাদেশের কসবা-আখাউড়া এলাকায় রেললাইন স্থাপন করা হচ্ছে। এসব কার্যক্রম সম্পন্ন হয়ে গেলে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যোগাযোগ সহজ হবে। প্রয়োজনীয় আমদানি-রপ্তানির পথ প্রশস্ত হবে। এ থেকে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পাবে।
জয়দুল হোসেন
কবি, গবেষক ও সংগঠক
বাংলাদেশের মধ্য পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া অনেক কারণে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। কয়েক বছর আগে অর্থাৎ ২০১৭-১৮ সালে বাংলাদেশের ৬৪ জেলাকে ব্র্যান্ডিংয়ের আওতায় নিয়ে আসে সরকার। উন্নয়নের ক্ষেত্রে দেশের যে জেলা যে বিষয়ে বিশেষ অবদান রেখেছে, সে জেলাকে সে বিষয়ে ব্র্যান্ডিং করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ব্র্যান্ডিং হলো মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতি। এর স্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনাদীপ্ত সংস্কৃতির রাজধানী ব্রাহ্মণবাড়িয়া’।
বাংলাদেশে আজ উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে দেশ স্বাধীন হওয়ার জন্য। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের জনপ্রিয় অধ্যাপক এ কে এম হারুনুর রশিদ বলতেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্বাধীন না হলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না’। আসলেও তা–ই। মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। সম্মুখযুদ্ধ হয়েছে সবচেয়ে বেশি। সংগত কারণেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ব্র্যান্ডিংয়ে মুক্তিযুদ্ধ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ব্র্যান্ডিংয়ের অন্য একটি বিষয় হলো সংস্কৃতি। ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে কথায় কথায় সংস্কৃতির রাজধানী বলা হয়ে থাকে। এ দাবির পক্ষে যুক্তিসংগত কারণও রয়েছে। শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও রাজনীতির খ্যাতিমান অনেক ব্যক্তি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্মগ্রহণ করেছেন। তাঁদের অবদানকে মূল্যায়ন করেই ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে সংস্কৃতির রাজধানী বলা হয়েছে। সবার নাম উল্লেখ করার অবকাশ এখানে নেই। তাই সেদিকে যাচ্ছি না। প্রসঙ্গত বলে রাখা প্রয়োজন, সংস্কৃতি বলতে অনেকে কেবল গানবাজনাকে বুঝে থাকেন, কিন্তু না। সংস্কৃতি কেবল গানবাজনাই নয়, সংস্কৃতি হলো মানুষের সামগ্রিক জীবনাচার। মানুষের অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক নিরাপত্তাসহ সামগ্রিক জীবনযাত্রার মান যদি উন্নত হয়, তবেই তাকে সংস্কৃতিমান বলা যায়। গত ১০ বছরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এসব ক্ষেত্রে যে উন্নয়ন হয়েছে তার তুলনায় এর আগের ৫০ বছরেও তা হয়নি।
কেবল ব্রাহ্মণবাড়িয়াই নয়, সারা দেশেই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। তবে সারা দেশের তুলনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। শিক্ষার কথাই যদি ধরি, তবে এ কথা অবশ্যই মানতে হবে, গত ১০ বছরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১০ গুণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে। শিক্ষিতের হার বেড়েছে অনুরূপভাবেই। একটা সময় ছিল যখন কেবল জেলা শহরে একটি মাত্র কলেজ ছিল। বর্তমানে জেলায় কলেজের সংখ্যা অর্ধশতাধিক। ইতিমধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও একটি মেডিকেল কলেজ গড়ে উঠেছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার চাহিদা তৈরি হয়েছে। যথা শিগগির তাও হয়ে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
আগে জেলা সদরে একটি মাত্র সরকারি হাসপাতাল ছিল। বর্তমানে জেলার প্রতিটি ইউনিয়নে সরকারিভাবে একাধিক কমিউনিটি ক্লিনিক বা হাসপাতাল গড়ে উঠেছে। প্রতিটি উপজেলায় রয়েছে সরকারি হাসপাতাল। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে গুচ্ছগ্রাম। এই গুচ্ছগ্রামের মধ্য দিয়ে গৃহহীনকে গৃহ দেওয়া হচ্ছে। এ কাজগুলো সরকারিভাবে সারা দেশে করা হলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তুলনামূলক বেশি হচ্ছে। এখানে এখন আর গৃহহীন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। ভিক্ষুকের সংখ্যা কমেছে। জেলার অনেক অঞ্চলকে ভিক্ষুকমুক্ত বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
বলছিলাম, উন্নয়নের ধারাবাহিকতার কথা। বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল), আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেড, আশুগঞ্জ সার কারখানা, আশুগঞ্জ নৌবন্দর ও আখাউড়া স্থলবন্দর দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখছে।
এর মধ্যে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল) রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। বিজিএফসিএল দেশের মোট প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনের ৩১ শতাংশ গ্যাস উৎপাদন করে। গ্যাসের সঙ্গে উপজাত হিসেবে উৎপাদিত কনডেনসেট প্রক্রিয়াকরণ করে জ্বালানি তেলের চাহিদার একাংশ পূরণ করে।
দেশের অন্যতম বৃহত্তর সার উৎপাদন কেন্দ্র রয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে। এখানে উৎপাদিত সারের চাহিদা রয়েছে সারা দেশে। এখান থেকেই প্রায় সারা দেশে সার সরবরাহ করা হয়। কাজেই কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশেষ অবদান রয়েছে। দেশের সার্বিক উন্নয়নে প্রয়োজনীয় তিনটি উপাদান হলো গ্যাস, বিদ্যুৎ ও সার। এই তিনটি উপাদান উৎপাদনের কেন্দ্রস্থল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। ফলে দেশের উন্নয়নে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অবদান অনস্বীকার্য।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রয়েছে আন্তর্জাতিক মানের দুটি বন্দর। এর একটি আশুগঞ্জ নৌবন্দর এবং অন্যটি আখাউড়া স্থলবন্দর। আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের ত্রিপুরাসহ পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্যের সঙ্গে রয়েছে সরাসরি যোগাযোগ আর আশুগঞ্জ নৌবন্দরের মাধ্যমে সারা দেশে যেমন, তেমনি যোগাযোগ রয়েছে বহির্বিশ্বের সঙ্গেও। বিশেষ করে ভারতের কয়েকটি রাজ্যের সঙ্গে এর রয়েছে সরাসরি নৌ-যোগাযোগ। ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে নৌপথে পণ্যসামগ্রী বা মালামাল আশুগঞ্জ নিয়ে এসে এখান থেকে সড়কপথে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে পুনরায় ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পাঠানো সহজ। তাই আখাউড়া স্থলবন্দর ও আশুগঞ্জ নৌবন্দরের মধ্যে গড়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক যোগাযোগব্যবস্থা।
এই যোগাযোগব্যবস্থা সহজ করার লক্ষ্যে আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া পর্যন্ত প্রায় ৫০ কিলোমিটার সড়ক চার লেনে সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। ২০১০ সালের মার্চ মাসে আশুগঞ্জ নৌবন্দরকে এবং আগস্ট মাসে আখাউড়া স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। ২০১১ সালে প্রতিবেশী দেশ ভারত প্রথমবারের মতো আশুগঞ্জ নৌবন্দরটি ব্যবহার করে সড়কপথে আখাউড়া দিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভারী মালামাল ত্রিপুরায় নিয়ে গিয়েছে।
আখাউড়া স্থলবন্দরটি ব্যবহার করে ত্রিপুরা-ঢাকা-কলকাতা বাস চলাচল শুরু হয়েছে অনেক আগেই। এদিক দিয়ে রেল যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ভারতের ত্রিপুরা এবং বাংলাদেশের কসবা-আখাউড়া এলাকায় রেললাইন স্থাপন করা হচ্ছে। এসব কার্যক্রম সম্পন্ন হয়ে গেলে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যোগাযোগ সহজ হবে। প্রয়োজনীয় আমদানি-রপ্তানির পথ প্রশস্ত হবে। এ থেকে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পাবে।
জয়দুল হোসেন
কবি, গবেষক ও সংগঠক
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে লন্ডন এবং দিল্লি হয়ে ঢাকায় ফিরলেন। সেদিন অপরাহ্ণে রেসকোর্সে অলিখিত স্বতঃস্ফূর্ত ভাষণ দিয়েছিলেন। যে ভাষণটি আমি শুনেছিলাম—১৭ মিনিটের। ভাষণে একটি জায়গায় তিনি বলেছিলেন, একটা কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, বাংলাদেশ একটি আদর্শ রাষ্ট্র হবে,
২৬ মার্চ ২০২৪১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানে যে চার রাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করা হয়েছিল তার একটি সমাজতন্ত্র। সমাজতন্ত্র মানে বৈষম্যের অবসান। সমাজতন্ত্র মানে ন্যায্যতা। সমাজতন্ত্র মানে সবার শিক্ষা, চিকিৎসা, মাথাগোঁজার ঠাঁই, কাজের সুযোগ। সমাজতন্ত্র মানে যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ, প্রয়োজন অনুয
২৬ মার্চ ২০২৪স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্র পরিচালনার চালিকা শক্তি হিসেবে চারটি মৌলনীতি গ্রহণ করেছিলেন। এগুলো হলো: জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র। আজ ৫২ বছর পর দেখছি, এই মৌলনীতিগুলোর প্রতিটির সূচক এত নিচে নেমে গেছে যে, বলা চলে রাষ্ট্র পরিচালনার মৌলনীতি বলে এখন আর কিছু নেই। জাতীয়তা দুই ভাগে বি
২৬ মার্চ ২০২৪বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা যেতে পারে, রাষ্ট্র হিসেবে নবীন, কিন্তু এর সভ্যতা সুপ্রাচীন। নদীবেষ্টিত গাঙেয় উপত্যকায় পলিবাহিত উর্বর ভূমি যেমন উপচে পড়া শস্যসম্ভারে জীবনকে সমৃদ্ধ করেছে, তেমনি নদীর ভাঙনের খেলায় রাতারাতি বিলুপ্ত হয়েছে বহু জনপদ। এরপরও সভ্যতার নানা চিহ্ন এখানে খুঁজে পাওয়া যায় এবং বাঙালিত্বের বৈশিষ
২৬ মার্চ ২০২৪