আসাদুজ্জামান নূর
আমরা গর্ব করে বলি আমরা বাঙালি। বাঙালিত্ব আমার অহংকার। এ কথা আমরা বলি বটে, কিন্তু আমরা কি সেটা উপলব্ধি করি? বাঙালির একটি নৃতাত্ত্বিক পরিচয় রয়েছে। সে তো অন্য জাতিসত্তারও আছে। বাঙালির একটি ভাষা আছে। সে তো অন্য জাতিসত্তারও আছে। বাঙালির একটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য আছে। সে তো অন্যদেরও আছে। বাঙালির একটি অর্থনৈতিক জীবনযাপন রয়েছে। অন্যদেরও তো সেটা রয়েছে। তাহলে বাঙালির ক্ষেত্রে আলাদাভাবে বা বিশেষভাবে বলার কী আছে? বলার আছে বলেই তো আমরা বাঙালি।
তার আগে আমরা একটু বুঝে নিই বাঙালি কারা। ১৯৩৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দীনেশচন্দ্র সেন এক বক্তৃতায় প্রশ্ন করেছিলেন, ‘বাঙ্গালার জনসাধারণ বলিতে কাহাদিগকে বুঝিতে হইবে?’ সেই বক্তৃতায় তিনি নিজেই এর উত্তর দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘ইহারা জৈন নহেন, খ্রিষ্টান নহেন, হিন্দু নহেন, মুসলমান নহেন—ইহারা বাঙ্গালী।’
তার মানে, বাঙালিত্ব নিছক একটি জাতিসত্তার পরিচয় নয়। অনেক গভীরে প্রোথিত এর শেকড়। বাঙালি জাতির গৌরবময় পথচলায় সেই কথা বারবার উঠে এসেছে। বাঙালি হচ্ছে এমন একটি জাতি, যার রক্তে স্বাধীনতা, মজ্জায় দ্রোহ আর বোধে রয়েছে মানবিকতা। বাঙালি হচ্ছে এমন একটি জাতি, যারা নিজেদের নিয়ে স্বপ্ন দেখে এবং স্বপ্ন দেখেই বসে থাকে না, সেই স্বপ্ন পূরণ করে নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ রাখে। বাঙালি হচ্ছে এমন একটি জাতি, যারা অধিকার আদায়ের জন্য হাসতে হাসতে ‘একবার বিদায় দে মা’ বলে ফাঁসির দড়ি গলায় পরে নিতে দ্বিধা করে না। বাঙালি হচ্ছে এমন একটি জাতি, যারা যেকোনো অন্যায় ও অশুভর বিরুদ্ধে লড়াই করে সমাজে ন্যায় ও শুভবোধ প্রতিষ্ঠা করতে চায়। বাঙালি হচ্ছে এমনি একটি জাতি, যারা মায়ের ভাষায় কথা বলার জন্য অকাতরে প্রাণ দেয়।
বাঙালি হচ্ছে এমন একটি জাতি, যার ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও জীবনাচার সব ধরনের ভেদবুদ্ধি এবং ধর্মীয় উগ্রবাদের বিরুদ্ধে সুদৃঢ় ও দ্ব্যর্থহীন অবস্থান ঘোষণা করে। বাঙালি হচ্ছে এমন একটি জাতি, যার বহুমাত্রিক সৃজনশীলতা যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে তাকে ঘুরে দাঁড়াতে উদ্বুদ্ধ করে এবং সাহস জোগায়।সে জন্যই বলছি, শুধু নৃতাত্ত্বিক পরিচয় দিয়ে বাঙালিকে তুলে ধরা যায় না। জন্ম নিলেই শুধু বাঙালি হওয়া যায় না, বাঙালি হতেও হয়। এখানে আমি গুরুসদয় দত্তের সেই অমিয়বাণী স্মরণ করতে চাই, ‘বিশ্বমানব হবি যদি কায়মনে বাঙ্গালী হ’।
এ কথার মধ্যেই রয়েছে বাঙালিত্বের নির্যাস। ‘কায়মনে বাঙালি’ হওয়ার মধ্যেই নিহিত রয়েছে বাঙালিত্বের নিগূঢ় তত্ত্ব। আর এটি খুব ভালোভাবেই উপলব্ধি করেছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।ধর্মের ভিত্তিতে ১৯৪৭ সালে দেশভাগ হয়ে দুটি রাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানের জন্ম হলো। তখন ধর্মের দোহাই দিয়ে পাকিস্তানপন্থী নেতারাও বাঙালি মুসলমানদের নিজস্ব পরিচয়টি সাময়িকভাবে ভুলিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিলেন। আমরা বাঙালি মুসলমান, পূর্ব বাংলার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ, আত্মপরিচয় ভুলে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেই বোধের জড়তা আমরা কাটিয়ে উঠলাম ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। ভাষাশহীদদের আত্মদান আমাদের বোধের জায়গাটিতে প্রচণ্ড নাড়া দিল। গোটা বাঙালি জাতি জেগে উঠল। উপলব্ধি করল ধর্মে আমরা মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান হতে পারি; কিন্তু আমাদের পরিচয়, আমাদের স্বকীয়তা, সভ্যতা, ইতিহাস হাজার বছরের। হাজার বছর ধরে বাংলার জল, মাটি, হাওয়ায়, পলি মাটি গায়ে মেখে ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালি, আউল–বাউলের সুরের আস্বাদে এক মানবিক অথচ বিদ্রোহ বিপ্লবের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠেছে বাঙালি জাতি। সে জাতি সাময়িকভাবে হলেও পথ হারিয়েছিল। পথ খুঁজে পেল ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির এই আত্মানুসন্ধানের বিপুল ব্যগ্রতা অনুধাবন করেছিলেন এবং বাঙালির বাঙালিত্বকে মূল উপাদান করে তাঁর মেধা, সাহস, সংগ্রাম আর আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে তিল তিল করে এগিয়ে নিয়ে গেলেন এক মহান মুক্তিযুদ্ধে। রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম, লাখো শহীদের রক্তদান আর নির্যাতিত মা-বোনদের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেলাম মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশ।
যে মানুষটি ৫৬ হাজার বর্গমাইলের ক্যানভাসজুড়ে এঁকেছেন স্বাধীন স্বদেশের ছবি, যে মানুষটি হাজার বছরের বাঙালি জাতির স্বপ্ন নিয়ে স্বাধীনতার অমর কাব্য রচনা করেছেন, যে মানুষটির ভাবনায় খেলা করে বাঙালির মুক্তির কথা, যে মানুষটি নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে বারবার ঝাঁপিয়ে পড়েছেন মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে, যে মানুষটির পথচলার নিরন্তর প্রেরণা জোগায় রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল, যে মানুষটির আজীবনের লক্ষ্য ছিল দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো—নিঃসন্দেহে তিনিই তো সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি।
আর তাই পাকিস্তানের কারাগারে যখন তাঁর ফাঁসির হুকুম হয়েছিল, সেদিন তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছিলেন, ‘আমি বাঙালি, বাংলা আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা। জয় বাংলা।’ আর এভাবেই ‘কায়মনে বাঙালি’ হওয়ার মধ্য দিয়েই তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন অনন্য এই ঈর্ষণীয় উচ্চতায়।
আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালন করেছি। এখন পালন করছি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। আজ বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতার স্বপ্নকে সার্থক করার লক্ষ্যে আরেক যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন। দারিদ্র্য, বৈষম্যকে পরাজিত করে শিক্ষা, কৃষি, শিল্প, বিদ্যুৎ সর্বক্ষেত্রে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে তাঁর নেতৃত্বে। আমাদের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা সারা বিশ্বের মানুষের ঈর্ষা আর গবেষণার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এই অগ্রগতির ধারায় বাঙালি সংস্কৃতির চর্চা গতিশীল হোক, আরও ব্যাপ্তি লাভ করুক–এটাই আমাদের কাম্য। আমাদের নতুন প্রজন্ম, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বাঙালি সংস্কৃতি চেতনায় অবগাহন করে বিশ্বমানব হয়ে উঠবে–সেই বিশ্বাসে আমরা এগিয়ে চলেছি।
আসাদুজ্জামান নূর
সংসদ সদস্য এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব
আমরা গর্ব করে বলি আমরা বাঙালি। বাঙালিত্ব আমার অহংকার। এ কথা আমরা বলি বটে, কিন্তু আমরা কি সেটা উপলব্ধি করি? বাঙালির একটি নৃতাত্ত্বিক পরিচয় রয়েছে। সে তো অন্য জাতিসত্তারও আছে। বাঙালির একটি ভাষা আছে। সে তো অন্য জাতিসত্তারও আছে। বাঙালির একটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য আছে। সে তো অন্যদেরও আছে। বাঙালির একটি অর্থনৈতিক জীবনযাপন রয়েছে। অন্যদেরও তো সেটা রয়েছে। তাহলে বাঙালির ক্ষেত্রে আলাদাভাবে বা বিশেষভাবে বলার কী আছে? বলার আছে বলেই তো আমরা বাঙালি।
তার আগে আমরা একটু বুঝে নিই বাঙালি কারা। ১৯৩৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দীনেশচন্দ্র সেন এক বক্তৃতায় প্রশ্ন করেছিলেন, ‘বাঙ্গালার জনসাধারণ বলিতে কাহাদিগকে বুঝিতে হইবে?’ সেই বক্তৃতায় তিনি নিজেই এর উত্তর দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘ইহারা জৈন নহেন, খ্রিষ্টান নহেন, হিন্দু নহেন, মুসলমান নহেন—ইহারা বাঙ্গালী।’
তার মানে, বাঙালিত্ব নিছক একটি জাতিসত্তার পরিচয় নয়। অনেক গভীরে প্রোথিত এর শেকড়। বাঙালি জাতির গৌরবময় পথচলায় সেই কথা বারবার উঠে এসেছে। বাঙালি হচ্ছে এমন একটি জাতি, যার রক্তে স্বাধীনতা, মজ্জায় দ্রোহ আর বোধে রয়েছে মানবিকতা। বাঙালি হচ্ছে এমন একটি জাতি, যারা নিজেদের নিয়ে স্বপ্ন দেখে এবং স্বপ্ন দেখেই বসে থাকে না, সেই স্বপ্ন পূরণ করে নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ রাখে। বাঙালি হচ্ছে এমন একটি জাতি, যারা অধিকার আদায়ের জন্য হাসতে হাসতে ‘একবার বিদায় দে মা’ বলে ফাঁসির দড়ি গলায় পরে নিতে দ্বিধা করে না। বাঙালি হচ্ছে এমন একটি জাতি, যারা যেকোনো অন্যায় ও অশুভর বিরুদ্ধে লড়াই করে সমাজে ন্যায় ও শুভবোধ প্রতিষ্ঠা করতে চায়। বাঙালি হচ্ছে এমনি একটি জাতি, যারা মায়ের ভাষায় কথা বলার জন্য অকাতরে প্রাণ দেয়।
বাঙালি হচ্ছে এমন একটি জাতি, যার ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও জীবনাচার সব ধরনের ভেদবুদ্ধি এবং ধর্মীয় উগ্রবাদের বিরুদ্ধে সুদৃঢ় ও দ্ব্যর্থহীন অবস্থান ঘোষণা করে। বাঙালি হচ্ছে এমন একটি জাতি, যার বহুমাত্রিক সৃজনশীলতা যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে তাকে ঘুরে দাঁড়াতে উদ্বুদ্ধ করে এবং সাহস জোগায়।সে জন্যই বলছি, শুধু নৃতাত্ত্বিক পরিচয় দিয়ে বাঙালিকে তুলে ধরা যায় না। জন্ম নিলেই শুধু বাঙালি হওয়া যায় না, বাঙালি হতেও হয়। এখানে আমি গুরুসদয় দত্তের সেই অমিয়বাণী স্মরণ করতে চাই, ‘বিশ্বমানব হবি যদি কায়মনে বাঙ্গালী হ’।
এ কথার মধ্যেই রয়েছে বাঙালিত্বের নির্যাস। ‘কায়মনে বাঙালি’ হওয়ার মধ্যেই নিহিত রয়েছে বাঙালিত্বের নিগূঢ় তত্ত্ব। আর এটি খুব ভালোভাবেই উপলব্ধি করেছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।ধর্মের ভিত্তিতে ১৯৪৭ সালে দেশভাগ হয়ে দুটি রাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানের জন্ম হলো। তখন ধর্মের দোহাই দিয়ে পাকিস্তানপন্থী নেতারাও বাঙালি মুসলমানদের নিজস্ব পরিচয়টি সাময়িকভাবে ভুলিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিলেন। আমরা বাঙালি মুসলমান, পূর্ব বাংলার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ, আত্মপরিচয় ভুলে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেই বোধের জড়তা আমরা কাটিয়ে উঠলাম ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। ভাষাশহীদদের আত্মদান আমাদের বোধের জায়গাটিতে প্রচণ্ড নাড়া দিল। গোটা বাঙালি জাতি জেগে উঠল। উপলব্ধি করল ধর্মে আমরা মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান হতে পারি; কিন্তু আমাদের পরিচয়, আমাদের স্বকীয়তা, সভ্যতা, ইতিহাস হাজার বছরের। হাজার বছর ধরে বাংলার জল, মাটি, হাওয়ায়, পলি মাটি গায়ে মেখে ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালি, আউল–বাউলের সুরের আস্বাদে এক মানবিক অথচ বিদ্রোহ বিপ্লবের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠেছে বাঙালি জাতি। সে জাতি সাময়িকভাবে হলেও পথ হারিয়েছিল। পথ খুঁজে পেল ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির এই আত্মানুসন্ধানের বিপুল ব্যগ্রতা অনুধাবন করেছিলেন এবং বাঙালির বাঙালিত্বকে মূল উপাদান করে তাঁর মেধা, সাহস, সংগ্রাম আর আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে তিল তিল করে এগিয়ে নিয়ে গেলেন এক মহান মুক্তিযুদ্ধে। রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম, লাখো শহীদের রক্তদান আর নির্যাতিত মা-বোনদের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেলাম মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশ।
যে মানুষটি ৫৬ হাজার বর্গমাইলের ক্যানভাসজুড়ে এঁকেছেন স্বাধীন স্বদেশের ছবি, যে মানুষটি হাজার বছরের বাঙালি জাতির স্বপ্ন নিয়ে স্বাধীনতার অমর কাব্য রচনা করেছেন, যে মানুষটির ভাবনায় খেলা করে বাঙালির মুক্তির কথা, যে মানুষটি নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে বারবার ঝাঁপিয়ে পড়েছেন মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে, যে মানুষটির পথচলার নিরন্তর প্রেরণা জোগায় রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল, যে মানুষটির আজীবনের লক্ষ্য ছিল দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো—নিঃসন্দেহে তিনিই তো সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি।
আর তাই পাকিস্তানের কারাগারে যখন তাঁর ফাঁসির হুকুম হয়েছিল, সেদিন তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছিলেন, ‘আমি বাঙালি, বাংলা আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা। জয় বাংলা।’ আর এভাবেই ‘কায়মনে বাঙালি’ হওয়ার মধ্য দিয়েই তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন অনন্য এই ঈর্ষণীয় উচ্চতায়।
আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালন করেছি। এখন পালন করছি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। আজ বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতার স্বপ্নকে সার্থক করার লক্ষ্যে আরেক যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন। দারিদ্র্য, বৈষম্যকে পরাজিত করে শিক্ষা, কৃষি, শিল্প, বিদ্যুৎ সর্বক্ষেত্রে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে তাঁর নেতৃত্বে। আমাদের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা সারা বিশ্বের মানুষের ঈর্ষা আর গবেষণার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এই অগ্রগতির ধারায় বাঙালি সংস্কৃতির চর্চা গতিশীল হোক, আরও ব্যাপ্তি লাভ করুক–এটাই আমাদের কাম্য। আমাদের নতুন প্রজন্ম, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বাঙালি সংস্কৃতি চেতনায় অবগাহন করে বিশ্বমানব হয়ে উঠবে–সেই বিশ্বাসে আমরা এগিয়ে চলেছি।
আসাদুজ্জামান নূর
সংসদ সদস্য এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে লন্ডন এবং দিল্লি হয়ে ঢাকায় ফিরলেন। সেদিন অপরাহ্ণে রেসকোর্সে অলিখিত স্বতঃস্ফূর্ত ভাষণ দিয়েছিলেন। যে ভাষণটি আমি শুনেছিলাম—১৭ মিনিটের। ভাষণে একটি জায়গায় তিনি বলেছিলেন, একটা কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, বাংলাদেশ একটি আদর্শ রাষ্ট্র হবে,
২৬ মার্চ ২০২৪১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানে যে চার রাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করা হয়েছিল তার একটি সমাজতন্ত্র। সমাজতন্ত্র মানে বৈষম্যের অবসান। সমাজতন্ত্র মানে ন্যায্যতা। সমাজতন্ত্র মানে সবার শিক্ষা, চিকিৎসা, মাথাগোঁজার ঠাঁই, কাজের সুযোগ। সমাজতন্ত্র মানে যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ, প্রয়োজন অনুয
২৬ মার্চ ২০২৪স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্র পরিচালনার চালিকা শক্তি হিসেবে চারটি মৌলনীতি গ্রহণ করেছিলেন। এগুলো হলো: জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র। আজ ৫২ বছর পর দেখছি, এই মৌলনীতিগুলোর প্রতিটির সূচক এত নিচে নেমে গেছে যে, বলা চলে রাষ্ট্র পরিচালনার মৌলনীতি বলে এখন আর কিছু নেই। জাতীয়তা দুই ভাগে বি
২৬ মার্চ ২০২৪বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা যেতে পারে, রাষ্ট্র হিসেবে নবীন, কিন্তু এর সভ্যতা সুপ্রাচীন। নদীবেষ্টিত গাঙেয় উপত্যকায় পলিবাহিত উর্বর ভূমি যেমন উপচে পড়া শস্যসম্ভারে জীবনকে সমৃদ্ধ করেছে, তেমনি নদীর ভাঙনের খেলায় রাতারাতি বিলুপ্ত হয়েছে বহু জনপদ। এরপরও সভ্যতার নানা চিহ্ন এখানে খুঁজে পাওয়া যায় এবং বাঙালিত্বের বৈশিষ
২৬ মার্চ ২০২৪