মো. গোলাম ফারুক, গবেষক
কৃষির কথা এলে প্রথমেই আসে এ জেলার জলবায়ুর কথা। কর্কটক্রান্তি রেখা কুমিল্লা জেলার ওপর দিয়ে যাওয়ায় এ জেলা সর্বতোভাবে ক্রান্তীয় অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত। ক্রান্তীয় মৌসুমি জলবায়ুর কারণে এ জেলায় বর্ষাকালে বৃষ্টিপাত হয়। শীতকালকে মোটামুটি শুষ্ক বলা যেতে পারে।
জলবায়ু কৃষির নিয়ামক শক্তি হলে মাটি ও পানি হলো এর মূল উপাদান। কুমিল্লা বা ত্রিপুরা জেলার নামের ইতিহাসের সঙ্গে এ দুই উপাদান অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। মহাস্থবির শিলভদ্র কুমিল্লার আদি কৃতী সন্তান। তিনি ছিলেন পৃথিবীর দ্বিতীয় প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয় নালন্দার সর্বাধ্যক্ষ বা উপাচার্য। তাঁর কাছে দীক্ষা নিয়ে ছয় বছর শিক্ষা গ্রহণ করেন চৈনিক পরিব্রাজক হিউ এন সাঙ। ভারতবর্ষ সম্পর্কে লেখা তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ সিউকি। হিউ এন সাঙ ভারত ভ্রমণকালে কুমিল্লা অঞ্চলও ভ্রমণ করেন। সিউকি গ্রন্থে এই অঞ্চলকে তিনি ‘কিয়ামলঙ্কিয়া’ বলে উল্লেখ করেছেন। পরে এই ‘কিয়ামলঙ্কিয়া’ থেকে কমলাঙ্ক, পরে কুমিল্লা শব্দের উৎপত্তি। কিয়ামলঙ্কিয়া শব্দের অর্থ সাগরতীরবর্তী দেশ। তাই কুমিল্লার নামের সঙ্গে পানির সম্পর্ক পাওয়া গেল।
এ জেলার খাদ্য উৎপাদন ও প্রাণিজ সম্পদের সঠিক উৎপাদনের জন্য কৃষকের মনোজগতের উন্নতি সাধন করলে প্রভূত ফল পাওয়া যাবে। বিষয়টি প্রথম অনুধাবন করেন ড. আখতার হামিদ খান। ভারতের উত্তর প্রদেশে জন্ম নেওয়া এই আইসিএস অফিসারের কৃষির সঙ্গে জড়ানোর ইতিহাস বড় চমকপ্রদ। ১৯৩৭ সালে তিনি কুমিল্লা জেলা প্রশাসনে যোগ দেন ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে। ১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে দুর্যোগ আক্রান্ত মানুষের বিষয়ে ব্রিটিশ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নীতিগত পার্থক্যের কারণে আইসিএসের চাকরিতে ইস্তফা দেন।
১৯৫০ সালে তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন। এই পদে থাকাকালে তিনি দেখেন বেশির ভাগ ছাত্র কৃষকের সন্তান। তারা কলেজের বেতন নিয়মিত দিতে না পারায় ড্রপ আউট হচ্ছে। এ বিষয়ে অনুসন্ধানে নামেন তিনি। সরাসরি চলে যান ছাত্রদের কৃষক পিতার কাছে। জানতে পারলেন এক ফসলি জমিতে বন্যা বা খরায় ফসল মার খেলে কৃষক পিতার জন্য সন্তান পড়ানো দূরের কথা জীবন বাঁচানো কঠিন। ১৯৫১ সালে তিনি দুর্ভিক্ষের কারণ অনুসন্ধান ও ত্রাণ বণ্টনের তদারকির সরকারি দায়িত্ব পান। ১৯৫৮ সালের ২৭ মে তিনি পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড), কুমিল্লা প্রতিষ্ঠা করেন এবং এর পরিচালক হন। তিনি তাঁর উদ্ভাবিত কুমিল্লা অ্যাপ্রোচের কার্যক্রম শুরু করেন।
অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ জেলা হওয়ায় কুমিল্লায় নির্ধারিত কৃষিজমি থেকে অধিক ফসলপ্রাপ্তিই লক্ষ্য। বর্ষা মৌসুমে এক ফসল তোলার পর বছরের বেশির ভাগ সময় জমি খালি পড়ে থাকত। তাই শুষ্ক মৌসুমি ফসল ফলানোর পূর্বশর্ত হলো পানি। ভূ-উপরিস্থ পানি শুকনো মৌসুমে শুকিয়ে যায়। সেচের মাধ্যমে এ পানি কৃষিকাজে ব্যবহারের কার্যক্রম শুরু করল বার্ড। বার্ড তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের জন্য ডিপটিউবওয়েল বসানোর সিদ্ধান্ত নিল। এতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়। কৃষকেরা প্রথমে রাজি না হলেও পরে কোতোয়ালি থানার দক্ষিণ রামপুর গ্রামের সেকান্দর আলী মজুমদার রাজি হন। ডিপটিউবওয়েল বসানোর পর উৎপাদিত ফসল আর তিনি বিক্রি করতে পারেন না। পরে সরকারি হস্তক্ষেপে তা দূর হয়। তারপর বার্ড কর্তৃপক্ষ কুমিল্লা কোতোয়ালি কৃষকের মাঝে বিতরণ করে উচ্চফলনশীল ধানের বীজ।
কৃষির যান্ত্রিকীকরণ: এর প্রথম পর্যায়ে দেখা দিল প্রধান সমস্যা নিড়ানি যন্ত্র ‘উইডার’ ব্যবহার, কৃষকেরা যেনতেনভাবে ধান লাগাতে অভ্যস্ত। আগাছা ধানখেতের শত্রু হলেও তা নিধনে উইডার ব্যবহার করা যাচ্ছে না। একমাত্র সমাধান হলো লাইন ধরে নির্ধারিত দূরত্বে সারিবদ্ধভাবে ধান রোপণ করা। এ ব্যাপারে কোতোয়ালি থানার পাইলট প্রজেক্টের অধীনের কৃষকদের মৌলিক ও হাতে–কলমে শিক্ষা দেওয়া হলো। আর কৃষকদের কুমিল্লা বার্ডের অধীনে নুনাবাদ কো-অপারেটিভ থেকে উইডার যন্ত্র সরবরাহ করা হলো। সাফল্যও এলো।
ধানমাড়াইতে থ্রেসার যন্ত্রের ব্যবহার: নুনাবাদ কো-অপারেটিভ কারখানায় তৈরি করা হলো থ্রেসার মেশিন। কৃষকেরা এর মাধ্যমে অল্প সময়ে কম পরিশ্রমে ধানমাড়াই করে ঘরে তুলতে সক্ষম হলো।
ট্রাক্টর দিয়ে চাষাবাদ: কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালিতেই পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম যান্ত্রিকভাবে জমি চাষ শুরু হয়। অধিক উৎপাদনের জন্য কুমিল্লায় শুরু হলো কৃষকদের নিয়ে সমবায় সমিতি গঠন কার্যক্রম। লক্ষ্য—কৃষকের সঞ্চয়ের টাকা দিয়ে কৃষককে ঋণ দেওয়া। এই ব্যবস্থার নাম হলো ‘ক্ষুদ্রঋণ’। এই ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থার উদ্ভাবক হলেন আখতার হামিদ খান। এখানেই সমিতি ক্ষান্ত হলো না। কার্যক্রম বর্ধিত করা হলো। সমিতির নারী-পুরুষ সদস্যদের জন্য বয়স্কশিক্ষা ও পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণে উৎসাহিত করার কার্যক্রম শুরু হলো।
এককথায় কৃষক সমাজের সঠিক উন্নতির সোপান হলো কুমিল্লা অ্যাপ্রোচ। এই পদ্ধতি এতটাই সফল যে, আখতার হামিদ খান এশিয়ার নোবেল বলে খ্যাত রেমন ম্যাগসেসাই পদকে ভূষিত হলেন। শুধু তা-ই নয়, কুমিল্লা কেটিসিসি লিমিটেডের অধীনে দিদার সমিতিকে রেমন ম্যাগসেসাই পদক ভূষিত করা হলো।
প্রশ্ন উঠতে পারে, আখতার হামিদ খান তাঁর কার্যক্রমের জন্য কুমিল্লাকে বেছে নিলেন কেন? উত্তর হলো, কুমিল্লার মানুষ জিনগতভাবে মেধাবী। এ জেলায় হাজার বছর পূর্বেই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাব্যবস্থা ছিল। তাই কোনো নতুন ব্যবস্থা চালুর চিন্তা করতে হয়নি। পরে আখতার হামিদ খানের মানসপুত্র আজিজ উল হকের হাত ধরে কুমিল্লা অগ্রসর হলো মৎস্য, মুরগি, হাঁস, ডেইরি ও হর্টিকালচারে।
এটাই হচ্ছে কুমিল্লার অগ্রসরমাণ কৃষকের কৃষির ইতিহাস। সেই পথ ধরেই আজ আধুনিক বাংলাদেশ কৃষি এগিয়ে চলেছে।
কৃষির কথা এলে প্রথমেই আসে এ জেলার জলবায়ুর কথা। কর্কটক্রান্তি রেখা কুমিল্লা জেলার ওপর দিয়ে যাওয়ায় এ জেলা সর্বতোভাবে ক্রান্তীয় অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত। ক্রান্তীয় মৌসুমি জলবায়ুর কারণে এ জেলায় বর্ষাকালে বৃষ্টিপাত হয়। শীতকালকে মোটামুটি শুষ্ক বলা যেতে পারে।
জলবায়ু কৃষির নিয়ামক শক্তি হলে মাটি ও পানি হলো এর মূল উপাদান। কুমিল্লা বা ত্রিপুরা জেলার নামের ইতিহাসের সঙ্গে এ দুই উপাদান অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। মহাস্থবির শিলভদ্র কুমিল্লার আদি কৃতী সন্তান। তিনি ছিলেন পৃথিবীর দ্বিতীয় প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয় নালন্দার সর্বাধ্যক্ষ বা উপাচার্য। তাঁর কাছে দীক্ষা নিয়ে ছয় বছর শিক্ষা গ্রহণ করেন চৈনিক পরিব্রাজক হিউ এন সাঙ। ভারতবর্ষ সম্পর্কে লেখা তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ সিউকি। হিউ এন সাঙ ভারত ভ্রমণকালে কুমিল্লা অঞ্চলও ভ্রমণ করেন। সিউকি গ্রন্থে এই অঞ্চলকে তিনি ‘কিয়ামলঙ্কিয়া’ বলে উল্লেখ করেছেন। পরে এই ‘কিয়ামলঙ্কিয়া’ থেকে কমলাঙ্ক, পরে কুমিল্লা শব্দের উৎপত্তি। কিয়ামলঙ্কিয়া শব্দের অর্থ সাগরতীরবর্তী দেশ। তাই কুমিল্লার নামের সঙ্গে পানির সম্পর্ক পাওয়া গেল।
এ জেলার খাদ্য উৎপাদন ও প্রাণিজ সম্পদের সঠিক উৎপাদনের জন্য কৃষকের মনোজগতের উন্নতি সাধন করলে প্রভূত ফল পাওয়া যাবে। বিষয়টি প্রথম অনুধাবন করেন ড. আখতার হামিদ খান। ভারতের উত্তর প্রদেশে জন্ম নেওয়া এই আইসিএস অফিসারের কৃষির সঙ্গে জড়ানোর ইতিহাস বড় চমকপ্রদ। ১৯৩৭ সালে তিনি কুমিল্লা জেলা প্রশাসনে যোগ দেন ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে। ১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে দুর্যোগ আক্রান্ত মানুষের বিষয়ে ব্রিটিশ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নীতিগত পার্থক্যের কারণে আইসিএসের চাকরিতে ইস্তফা দেন।
১৯৫০ সালে তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন। এই পদে থাকাকালে তিনি দেখেন বেশির ভাগ ছাত্র কৃষকের সন্তান। তারা কলেজের বেতন নিয়মিত দিতে না পারায় ড্রপ আউট হচ্ছে। এ বিষয়ে অনুসন্ধানে নামেন তিনি। সরাসরি চলে যান ছাত্রদের কৃষক পিতার কাছে। জানতে পারলেন এক ফসলি জমিতে বন্যা বা খরায় ফসল মার খেলে কৃষক পিতার জন্য সন্তান পড়ানো দূরের কথা জীবন বাঁচানো কঠিন। ১৯৫১ সালে তিনি দুর্ভিক্ষের কারণ অনুসন্ধান ও ত্রাণ বণ্টনের তদারকির সরকারি দায়িত্ব পান। ১৯৫৮ সালের ২৭ মে তিনি পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড), কুমিল্লা প্রতিষ্ঠা করেন এবং এর পরিচালক হন। তিনি তাঁর উদ্ভাবিত কুমিল্লা অ্যাপ্রোচের কার্যক্রম শুরু করেন।
অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ জেলা হওয়ায় কুমিল্লায় নির্ধারিত কৃষিজমি থেকে অধিক ফসলপ্রাপ্তিই লক্ষ্য। বর্ষা মৌসুমে এক ফসল তোলার পর বছরের বেশির ভাগ সময় জমি খালি পড়ে থাকত। তাই শুষ্ক মৌসুমি ফসল ফলানোর পূর্বশর্ত হলো পানি। ভূ-উপরিস্থ পানি শুকনো মৌসুমে শুকিয়ে যায়। সেচের মাধ্যমে এ পানি কৃষিকাজে ব্যবহারের কার্যক্রম শুরু করল বার্ড। বার্ড তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের জন্য ডিপটিউবওয়েল বসানোর সিদ্ধান্ত নিল। এতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়। কৃষকেরা প্রথমে রাজি না হলেও পরে কোতোয়ালি থানার দক্ষিণ রামপুর গ্রামের সেকান্দর আলী মজুমদার রাজি হন। ডিপটিউবওয়েল বসানোর পর উৎপাদিত ফসল আর তিনি বিক্রি করতে পারেন না। পরে সরকারি হস্তক্ষেপে তা দূর হয়। তারপর বার্ড কর্তৃপক্ষ কুমিল্লা কোতোয়ালি কৃষকের মাঝে বিতরণ করে উচ্চফলনশীল ধানের বীজ।
কৃষির যান্ত্রিকীকরণ: এর প্রথম পর্যায়ে দেখা দিল প্রধান সমস্যা নিড়ানি যন্ত্র ‘উইডার’ ব্যবহার, কৃষকেরা যেনতেনভাবে ধান লাগাতে অভ্যস্ত। আগাছা ধানখেতের শত্রু হলেও তা নিধনে উইডার ব্যবহার করা যাচ্ছে না। একমাত্র সমাধান হলো লাইন ধরে নির্ধারিত দূরত্বে সারিবদ্ধভাবে ধান রোপণ করা। এ ব্যাপারে কোতোয়ালি থানার পাইলট প্রজেক্টের অধীনের কৃষকদের মৌলিক ও হাতে–কলমে শিক্ষা দেওয়া হলো। আর কৃষকদের কুমিল্লা বার্ডের অধীনে নুনাবাদ কো-অপারেটিভ থেকে উইডার যন্ত্র সরবরাহ করা হলো। সাফল্যও এলো।
ধানমাড়াইতে থ্রেসার যন্ত্রের ব্যবহার: নুনাবাদ কো-অপারেটিভ কারখানায় তৈরি করা হলো থ্রেসার মেশিন। কৃষকেরা এর মাধ্যমে অল্প সময়ে কম পরিশ্রমে ধানমাড়াই করে ঘরে তুলতে সক্ষম হলো।
ট্রাক্টর দিয়ে চাষাবাদ: কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালিতেই পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম যান্ত্রিকভাবে জমি চাষ শুরু হয়। অধিক উৎপাদনের জন্য কুমিল্লায় শুরু হলো কৃষকদের নিয়ে সমবায় সমিতি গঠন কার্যক্রম। লক্ষ্য—কৃষকের সঞ্চয়ের টাকা দিয়ে কৃষককে ঋণ দেওয়া। এই ব্যবস্থার নাম হলো ‘ক্ষুদ্রঋণ’। এই ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থার উদ্ভাবক হলেন আখতার হামিদ খান। এখানেই সমিতি ক্ষান্ত হলো না। কার্যক্রম বর্ধিত করা হলো। সমিতির নারী-পুরুষ সদস্যদের জন্য বয়স্কশিক্ষা ও পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণে উৎসাহিত করার কার্যক্রম শুরু হলো।
এককথায় কৃষক সমাজের সঠিক উন্নতির সোপান হলো কুমিল্লা অ্যাপ্রোচ। এই পদ্ধতি এতটাই সফল যে, আখতার হামিদ খান এশিয়ার নোবেল বলে খ্যাত রেমন ম্যাগসেসাই পদকে ভূষিত হলেন। শুধু তা-ই নয়, কুমিল্লা কেটিসিসি লিমিটেডের অধীনে দিদার সমিতিকে রেমন ম্যাগসেসাই পদক ভূষিত করা হলো।
প্রশ্ন উঠতে পারে, আখতার হামিদ খান তাঁর কার্যক্রমের জন্য কুমিল্লাকে বেছে নিলেন কেন? উত্তর হলো, কুমিল্লার মানুষ জিনগতভাবে মেধাবী। এ জেলায় হাজার বছর পূর্বেই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাব্যবস্থা ছিল। তাই কোনো নতুন ব্যবস্থা চালুর চিন্তা করতে হয়নি। পরে আখতার হামিদ খানের মানসপুত্র আজিজ উল হকের হাত ধরে কুমিল্লা অগ্রসর হলো মৎস্য, মুরগি, হাঁস, ডেইরি ও হর্টিকালচারে।
এটাই হচ্ছে কুমিল্লার অগ্রসরমাণ কৃষকের কৃষির ইতিহাস। সেই পথ ধরেই আজ আধুনিক বাংলাদেশ কৃষি এগিয়ে চলেছে।
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে লন্ডন এবং দিল্লি হয়ে ঢাকায় ফিরলেন। সেদিন অপরাহ্ণে রেসকোর্সে অলিখিত স্বতঃস্ফূর্ত ভাষণ দিয়েছিলেন। যে ভাষণটি আমি শুনেছিলাম—১৭ মিনিটের। ভাষণে একটি জায়গায় তিনি বলেছিলেন, একটা কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, বাংলাদেশ একটি আদর্শ রাষ্ট্র হবে,
২৬ মার্চ ২০২৪১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানে যে চার রাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করা হয়েছিল তার একটি সমাজতন্ত্র। সমাজতন্ত্র মানে বৈষম্যের অবসান। সমাজতন্ত্র মানে ন্যায্যতা। সমাজতন্ত্র মানে সবার শিক্ষা, চিকিৎসা, মাথাগোঁজার ঠাঁই, কাজের সুযোগ। সমাজতন্ত্র মানে যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ, প্রয়োজন অনুয
২৬ মার্চ ২০২৪স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্র পরিচালনার চালিকা শক্তি হিসেবে চারটি মৌলনীতি গ্রহণ করেছিলেন। এগুলো হলো: জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র। আজ ৫২ বছর পর দেখছি, এই মৌলনীতিগুলোর প্রতিটির সূচক এত নিচে নেমে গেছে যে, বলা চলে রাষ্ট্র পরিচালনার মৌলনীতি বলে এখন আর কিছু নেই। জাতীয়তা দুই ভাগে বি
২৬ মার্চ ২০২৪বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা যেতে পারে, রাষ্ট্র হিসেবে নবীন, কিন্তু এর সভ্যতা সুপ্রাচীন। নদীবেষ্টিত গাঙেয় উপত্যকায় পলিবাহিত উর্বর ভূমি যেমন উপচে পড়া শস্যসম্ভারে জীবনকে সমৃদ্ধ করেছে, তেমনি নদীর ভাঙনের খেলায় রাতারাতি বিলুপ্ত হয়েছে বহু জনপদ। এরপরও সভ্যতার নানা চিহ্ন এখানে খুঁজে পাওয়া যায় এবং বাঙালিত্বের বৈশিষ
২৬ মার্চ ২০২৪