বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএফএমএমইউ) ভাইস-চ্যান্সেলর (ভিসি), ট্রেজারার ও রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে দ্রুত নতুন ভাইস-চ্যান্সেলর, ট্রেজারার ও রেজিস্ট্রার নিয়োগপূর্বক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালুর জোর দাবি জানানো হয়। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিএসএফএমএমইউর বৈষম্যবিরোধী কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মচারী পরিষদ।

আজ সোমবার বিএসএফএমএমইউর কর্মচারী পরিষদের সদস্যসচিব নাদিম সীমান্তের গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার কারণে ব্যাপক জনরোষের শিকার হয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ফলক, বঙ্গবন্ধু মুর‌্যাল, দুটি গাড়ি ও আসবাবপত্রের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়।

অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ভাইস চ্যান্সেলর, ট্রেজারার ও রেজিস্ট্রার বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ১ তারিখ থেকে আজ অবধি আসেননি। আবাসিক কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও নিয়োগের পর থেকে তিনি সপ্তাহে দুই দিনের বেশি অফিস করেননি। এমতাবস্থায় আমরা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার স্বার্থে প্রশাসনিক ভবনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে তালা লাগিয়ে দিই এবং নিরাপত্তা প্রদান করে যাচ্ছি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়- বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ও শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চোখের ডাক্তার প্রফেসর এনায়েত হোসেন, ট্রেজারার শাহ আলম ও রেজিস্ট্রার এ কে এম ফজলুর রহমান (অ্যাডহক) নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই নানা অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, স্বজনপ্রীতি, মাইম্যান, অযোগ্যতা, দুর্নীতি, অসদাচরণ, দলীয়করণ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে আসছেন।

তাঁরা দলীয় প্রভাব খাঁটিয়ে নিরীহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ন্যায্য দাবি-দাওয়া ও অধিকার থেকে বঞ্চিত করে আসছেন। রেজিস্ট্রার ফজলুর রহমান কথায় কথায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হুমকি দিয়ে আসছেন। তাঁর ভয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তটস্থ ছিলেন। কেউ অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে ভাইস-চ্যান্সেলরের মদদে এই রেজিস্ট্রার ফজলুর রহমান তার মালিকানাধীন সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজে তার নির্মিত আয়না ঘরে ডেকে নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত এবং গুম ও হত্যার হুমকি দিত। এ ছাড়াও ভিসি বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক আর্থিক অনিয়ম করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ডা. এনায়েত হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে বিএসএফএমএমইউর রেজিস্ট্রার এ কে এম ফজলুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যারা এসব দাবি করছে, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা না। অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগ ছিল, তাদের নিয়োগের মেয়াদ অনেক আগে শেষ হওয়ায় চাকরিও বাতিল। আয়নাঘরের অভিযোগ মিথ্যা, উদ্দ্যেশ্যেপ্রনোদিত, বানোয়াট। এরা আমাদের অফিসে লুটপাট করেছে। পুলিশ প্রশাসন মাঠে নামলে আমরা গিয়ে সেগুলোর চিত্র তুলে ধরবো। আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। মন্ত্রণালয়ের অর্ডার পেলে আমরা অফিস করবো।’