কুশিয়ারার বাঁধ ভেঙে হু-হু করে পানি ঢুকছে জকিগঞ্জে 

জকিগঞ্জ (সিলেট) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৮ মে ২০২২, ১৪: ৪৩

জকিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। কুশিয়ারা নদীর ডাইক ভেঙে জকিগঞ্জ ইউনিয়নের রারাই ও বীরশ্রী ইউনিয়নের সুপ্রাকান্দি গ্রাম দিয়ে হু-হু করে পানি ঢুকছে। ফলে শুধু জকিগঞ্জ নয়, গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, কানাইঘাট, দক্ষিণ সুরমা, সিলেট শহরসহ গোটা ভাটি অঞ্চলে হানা দিয়েছে বন্যা। 

সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৪৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নতুন নতুন এলাকা ও নিম্নাঞ্চল বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। টানা বৃষ্টি আর গত এক সপ্তাহ থেকে ভারতের উজান থেক নেমে আসা ঢলে বারহাল, মানিকপুর, কাজলসার, বিরশ্রী ইউপিসহ বিভিন্ন স্থানে ডাইক উপচে ও ভেঙে লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ঘরের বাইরে অনেকে মাচা বানিয়ে রাত যাপন করছেন। 

পানি বেড়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও বাড়ছে। চালু করা হয়েছে বেশ কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র। প্লাবিত হয়েছে বেশ কয়েকটি গ্রাম। কৃষি ও মৎস্য খাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। বন্ধ হয়ে পড়েছে বিভিন্ন এলাকার গ্রামীণ রাস্তাঘাট। মসজিদ, মাদ্রাসাসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি উঠেছে। 

জকিগঞ্জের ৬ নম্বর সুলতানপুর ইউনিয়নের রহিমপুরে ১০০ ফুট, ভক্তিপুরে ৩০০ ফুট ও সহিদাবাদ গ্রামের সামনে ৫০ ফুট কুশিয়ারা ডাইকের ওপর প্রায় ৩ ফুট পর্যন্ত পানি বিদ্যমান। বারঠাকুরী ইউপির অলিঘড়, দীঘালিগ্রাম, সালেহপুর, জকিগঞ্জ সদর ইউপির রারাই, মানিকপুর ও ছবড়িয়া, পৌর এলাকার হাইদ্রাবন্দ, খলাছড়া রয়েছে মারাত্মক ঝুঁকিতে। 

মসজিদ, মাদ্রাসাসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি উঠেছে। জকিগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত প্রায় ২০ হেক্টর জমির সবজি, ১০ হেক্টর জমির বীজতলা নষ্ট হয়েছে বলে তথ্য এসেছে। বিভিন্ন পুকুর ও ফিশারির মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। কাঁচা ও আধা কাঁচা অনেক ঘরের ক্ষতি হয়েছে। ভেঙে গেছে গ্রামীণ রাস্তাঘাট। বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র। লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে আসার জন্য প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। পানিবন্দী মানুষের জন্য সরকার ১৮ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ করেছে। ৫ ইউপিতে ১২ মেট্রিকটন চাল বণ্টন করা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সুরমা-কুশিয়ারার একাধিক স্থানের ঝুঁকিপূর্ণ ডাইকে পাউবো কাজ করছে।  

বারহাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ জানান, নোয়াগ্রাম, উত্তর খিলোগ্রাম, চকবারাকুলি, শরীফাবাদ, শাহগলী বাজার ও কচুয়া এলাকায় সুরমা ডাইক ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে, তলিয়ে গেছে বোরো ধান। বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। 

বিরশ্রী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার জানান, সুপ্রাকান্দি ও বড়চালিয়া গ্রামের বেঁড়িবাঁধ মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে যেকোনো সময় বাঁধ ভেঙে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া মানিকপুর ইউনিয়নের বাল্লা, দাপনিয়া এলাকা দিয়েও সুরমা নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। হাওরের পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে জকিগঞ্জে ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরাসরি সমুদ্রপথে বাণিজ্য সম্পর্কের ঐতিহাসিক যুগে বাংলাদেশ–পাকিস্তান, শঙ্কায় ভারত

হাসিনা ক্ষমতা ছাড়ার পর দেশ ‘মবের মুল্লুক’: সামিনা লুৎফা

অধিকৃত অঞ্চলে প্রাকৃতিক সম্পদের সার্বভৌম মালিকানা ফিলিস্তিনিদের, জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস

গাজীপুরে বেতন পেলেন ৫ কারখানার সাড়ে ৩ হাজার শ্রমিক, কাজে যোগ দেবে কাল

বিসিএস নিয়োগ: নিজেই রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার তথ্য দিয়ে ফেঁসে যাচ্ছেন অনেকে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত