হাসপাতালে ৩ দিনের শিশুকে রেখে লাপাত্তা মা, সন্তানকে বাঁচাতে বাবার আকুতি

খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২২, ০০: ০৭
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২২, ১১: ০২

মাত্র তিন দিনের নবজাতককে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিছানায় রেখে মা চলে গেছেন তাঁর বাবার বাড়ি। আর সেই সন্তানকে বাঁচাতে মাকে ফিরিয়ে আনতে জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বাবা মোকছেদ আলী। এতেও সেই মা সন্তানের কাছে না আসায় বাধ্য হয়ে দিনাজপুর কোতোয়ালি থানায় জিডি করেছেন বাবা।

সাধারণ ডায়েরি সূত্রে এবং নবজাতকের বাবার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার পাকেরহাট গুন্দুশাহ্পাড়ার মোকছেদ আলী (২৫) ও গোয়ালডিহির সাঁকোরপাড় এলাকার আব্দুস সাত্তারের মেয়ে আয়শা সিদ্দিকার (২০) বিয়ের পর থেকে ঝগড়া লেগে থাকত। এর পরও সংসারজীবনে গত ২ নভেম্বর (বুধবার) সন্ধ্যায় দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুত্রসন্তানের জন্ম হয়। এরপর শনিবার (৫ নভেম্বর) হাসপাতালে নবজাতকের বাবার সঙ্গে তাঁর স্ত্রী ও শ্বশুর-শাশুড়ির তর্কবিতর্ক হয়। এরই জেরে সন্তানকে হাসপাতালের বিছানায় রেখে নবজাতকের মা ও নানা-নানি কাউকে কোনো কিছু না বলে গোপনে বাড়ি চলে যান।

এরপর সন্তানের বাবা তার মাকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। এদিকে সন্তান মায়ের দুধের অভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে আত্মীয়দের মাধ্যমে বাড়ি চলে যাওয়ার খবর জানতে পেরে রোববার (৬ নভেম্বর) সকালে নবজাতকের বাবা রাগ-অভিমান ভুলে স্ত্রীকে হাসপাতালে ফিরিয়ে আনতে শ্বশুরবাড়িতে গেলেও স্ত্রী ফিরে আসেননি। অন্যদিকে সন্তানের অবস্থাও সংকটাপন্ন হওয়ায় গত রোববার থেকে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে আসতে পারেনি বাবা।

নবজাতকের বাবা মোকছেদ আলী বলেন, ‘আমার নবজাতক সন্তানের অবস্থা ভালো না। তার মায়ের দুধের প্রয়োজন। আমার স্ত্রী যদি আমার সঙ্গে সংসার না করে, তবু সন্তানকে বাঁচানোর জন্য তাঁকে হাসপাতালে আনার অনেক চেষ্টা করছি। সে আসতেছে না, বরং আমাকে ফোনে মামলা-হামলার হুমকি দিচ্ছে।’ সন্তানকে বাঁচাতে তার মাকে নিয়ে আসার জন্য প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রতিনিধিদের প্রতি আকুতি জানান তিনি।

এ বিষয়ে নবজাতকের মা আয়শা সিদ্দিকা মোবাইল ফোনে হাসপাতালে ঝগড়ার বিষয়টি জানান। পরে নবজাতকের নানির সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ে খুব অসুস্থ। আর ওখানে আমার মেয়ে সংসার করবে না। নবজাতক সন্তানকে তার বাবা বাঁচাবে! আর আমরা আমাদের মেয়েকে সুস্থ করি।’

এ বিষয়ে গোয়ালডিহি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন লিটন বলেন, ‘আমি মেয়ের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে হাসপাতালে যাওয়ার কথা বলেছি। কিন্তু কেন গেল না তা ঠিক জানি না। এখন আবার খোঁজ-খবর নিয়ে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত