কুড়িগ্রামে জুনিয়রকে পিপি নিয়োগ দেওয়ায় সেরেস্তা ভাঙচুর

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি 
প্রকাশ : ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০১: ০৮

বিএনপিসমর্থিত কুড়িগ্রাম জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বজলুর রশিদকে জেলা দায়রা ও জজ আদালতের নতুন পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে দুপুরে আইনজীবী ভবনে (লাল ঘর) নবনিয়োগপ্রাপ্ত পিপি অ্যাডভোকেট বজলুর রশিদের সেরেস্তা ভাঙচুর করেছেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী পরিষদের সভাপতি ও নতুন পিপির একসময়ের সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. ফখরুল ইসলাম ও তাঁর সমর্থকেরা।

এর আগে গত সোমবার আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সলিসিটর অনুবিভাগের উপ-সলিসিটর সানা মো. মাহরুফ হোসাইন স্বাক্ষরিত আদেশে অ্যাডভোকেট মো. বজলুর রশিদকে কুড়িগ্রাম জেলা দায়রা ও জজ আদালতের পিপি এবং অ্যাডভোকেট মো. মিজানুর রহমান সরকারকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি নিয়োগ দেওয়া হয়। একই আদেশে অ্যাডভোকেট মো. ফখরুল ইসলামকে অতিরিক্ত পিপি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

একসময়ের জুনিয়রকে পিপি নিয়োগ করায় নবনিযুক্ত অতিরিক্ত পিপি ফখরুল ইসলাম গতকাল দুপুরে সমর্থকদের নিয়ে আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করেন। বেলা আড়াইটার দিকে তিনি তাঁর কয়েকজন সমর্থককে নিয়ে আইনজীবী ভবনে বজলুর রশিদের সেরেস্তা ভাঙচুর করেন। তাঁর টেবিল বাইরে ফেলে দেন।

এ ব্যাপারে নবনিযুক্ত পিপি বজলুর রশিদ বলেন, ‘আজ (মঙ্গলবার) নিয়োগ আদেশের কপি হাতে পেয়েছি। দুপুরে অ্যাডভোকেট ফখরুল ইসলাম কয়েকজন আইনজীবীকে সাথে নিয়ে আকস্মিক আমার ব্যক্তিগত সেরেস্তা ভাঙচুর করেন। তাঁর সাথে অ্যাডভোকেট সফিকুল ইসলাম, আশরাফ আলী, আলতাফুরসহ কয়েকজন ছিলেন। তাঁরা আমার টেবিল ভাঙচুর করে বাইরে ফেলে দেন। আমি এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

অ্যাডভোকেট ফখরুল ইসলাম তিনি বলেন, ‘এটা অনৈতিক নিয়োগ। অনেক মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন হয়েছে। আমরা তথাকথিত এই পিপি-জিপিদের আদালতপাড়ায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছি। একই সাথে আমরা এই নিয়োগ প্রত্যাখ্যান করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।’ নতুন পিপির যোগ্যতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ন্যূনতম যোগ্যতা নেই। সে দায়রা আদালতে একটা মামলা ট্রায়াল করেছে এমন কোনো নজির নেই।’

ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি কুড়িগ্রাম বারের দুইবারের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। আমি আইন কলেজের শিক্ষক। বজলু আমার জুনিয়র। আমার অধীনে সে প্র্যাকটিস শুরু করে। তাকে করছে পিপি, আর আমাকে করছে অতিরিক্ত পিপি। এটার চেয়ে লজ্জার, এটার চেয়ে অবিবেচনা আর কী হতে পারে!’

তবে অ্যাডভোকেট ফখরুল ইসলামের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আমীর উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘এটা হতে পারে না। উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করবে, লইয়ারদের ভাবমূর্তি নষ্ট করবে এটা হয় নাকি!’

জেলা বারের আরেক অ্যাডভোকেট রাকিব রহমান বলেন, ‘তিনি (ফখরুল ইসলাম) পিপি নিয়োগপ্রত্যাশী ছিলেন। সরকার যাঁকে যোগ্য মনে করেছে, তাঁকে নিয়োগ দিয়েছে। তিনি বঞ্চিত হওয়ায় নতুন পিপির সেরেস্তা ভাঙচুর করেছেন। কুড়িগ্রাম বারে এটি নজিরবিহীন। আমরা এ ধরনের আচরণের তীব্র নিন্দা জানাই।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত