বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করাই বিএনপির মূল কাজ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘এখন আমাদের একটাই কাজ, নিজেদের দলকে সুসংগঠিত করা। নিজেদের ভেতরে বিভেদ তৈরি না করা। ঐক্যের মধ্য দিয়ে জনগণকে সম্পৃক্ত করে ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের বিজয়কে সুসংহত করতে হবে। যেকোনো চক্রান্তকে ব্যর্থ করে দিতে হবে। তাই এই বর্তমান সরকারকে সহযোগিতা করাই আমাদের মূল কাজ।’
আজ বুধবার বেলা ২টার দিকে রংপুরের পীরগঞ্জের জাফরপাড়ার কোটা আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত আবু সাঈদের বাড়িতে যান বিএনপির মহাসচিব।
তিনি কবর জিয়ারত করে আবু সাঈদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। এরপর তিনি স্থানীয় জাফরপাড়া দারুল উলুম বহুমুখী কামিল মাদ্রাসায় গিয়ে এক সম্প্রীতি সমাবেশে যোগ। সেখানে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আবু সাঈদ বুকের রক্ত দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। যে ইতিহাস হচ্ছে, তরুণদের আত্মত্যাগের ইতিহাস। ফ্যাসিবাদী, খুনি সরকারের পতনের দাবিতে শত শত মানুষ বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছেন। লাখ লাখ মানুষ যখন গণভবনের দিকে যাচ্ছিল তখন হাসিনা ভয়ে পালিয়ে গেলেন। পালিয়ে গেলেও চুপ করে বসে নেই। ভারতে বসে ষড়যন্ত্র করছে। আমরা সম্প্রীতির সমাবেশ করছি। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান একসঙ্গে নতুন স্বাধীনতাকে সুসংহত করতে সম্প্রীতির সমাবেশ করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ছয় বছর কারাগারে রেখেছিল। তিনি এখন মুক্ত হয়েছেন। সারা দেশের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধেও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে। এখনো খুনি শেখ হাসিনা দিল্লিতে গিয়ে বসে নতুন করে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এখন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হচ্ছে। এই ঝড় তুলে ছড়িয়ে দিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশকে ছোট করার চেষ্টা করছে।’
নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শান্তি মিছিল করতে হবে, দেশে সম্প্রতি বজায় রাখতে হবে। ১৪ ও ১৫ তারিখে আপনাদের অবস্থান নিতে হবে। সেই অবস্থান নেবেন সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে।’
বেলা ২টার দিকে সৈয়দপুর থেকে গাড়িযোগে পীরগঞ্জের বাবনপুর জাফরপাড়া গ্রামে আসেন মির্জা ফখরুল। সেখানে আবু সাঈদের কবর জিয়ারত শেষে তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করে জাফরপাড়া দাখিল মাদ্রাসা মাঠে সম্প্রতি জনসমাবেশে যোগ দেন।
এরপর বেলা ৩টার দিকে রংপুরে রওনা দেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, সাবেক সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ ও নাজিম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।