দিনাজপুর ও চিরিরবন্দর প্রতিনিধি
‘আমার বাবার যদি হাড্ডি দুই খানও থাকে তাও নিয়ে আসি দেন। এত দিন ধরি ঘুরোছি কেউ কোনো খোঁজ দিবার পারোছে না। ৪৫ দিন ধরে ঠাকুর ঘরে সন্ধ্যা প্রদীপ জালেবার পারি নাই। ভাইরা চুল দাঁড়ি কাটোর পারোছেনা। মাওর (মায়ের) শাখা সিঁদুর ভাঙা হয় নাই। মাও ঠিকমতো কথাও কহোচে নাই। হামাক খালি বাবার শ্রাদ্ধ করির সুযোগ করি দেন।’ আহাজারি করতে করতে কথাগুলো বলছিলেন পানিতে ডুবে যাওয়া অবিনাষ চন্দ্র দাসের মেয়ে তুলসি চন্দ্র দাস।
দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার ভিয়াইল ইউনিয়নের ঢাকইল ঘনপাড়া গ্রামের বাহাত্তর বছরের বৃদ্ধ অবিনাষ চন্দ্র দাস। গত ৩১ আগস্ট সকালে আত্রাই নদীর বৈদ্যনাথ ঘাটে ঝিনুক কুড়াতে নেমে ডুবে যায় তিনি। তাঁর মরদেহ ভেসে চলে যায় সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে। বিজিবি-বিএসএফ যোগাযোগ পতাকা বৈঠক হলেও দেড় মাসেও লাশ ফেরত পাওয়া যায়নি। স্বজনেরা মরদেহ ফেরত পাওয়ার আশায় ঘুরছেন সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ায়।
অবিনাষ চন্দ্র দাসের পরিবার জানায়, পরিবারের সদস্যদের নিষেধ উপেক্ষা করে বাড়ির পাশের আত্রাই নদীর বৈদ্যনাথ ঘাটে সকালে ঝিনুক কুড়াতে যান অবিনাষ। কিন্তু দুপুর পেরিয়ে গেলেও অবিনাষ বাড়িতে না ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু করেন স্বজনেরা। দিনভর না পাওয়ায় পরদিন রংপুর ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের একটি ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে খুঁজেও কোনো হদিস পাননি। দুই দিন পর স্বজনেরা ভারতে থাকা তাঁদের আত্মীয়ের মাধ্যমে জানতে পারেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুরের আমইল এলাকায় একটি মরদেহ পাওয়া গেছে। সেখান থেকে মরদেহের একটি ছবি পাঠানো হয়। ওই ছবি দেখেই সেটি অবিনাষের মরদেহ শনাক্ত করেন। গলায় তুলশির মালা, কোমরে পৈতা সবই আছে।
এদিকে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর থেকেই লাশের স্বজনেরা মরদেহ ফেরত পাওয়ার আশায় ঘুরছেন সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ায়। কখনো বা সীমান্ত সংলগ্ন বিজিবি ক্যাম্পে। কিন্তু মরদেহের অপেক্ষায় দেড় মাস কেটে গেলেও দেখা পাননি।
গত শনিবার সকালে ঢাকইল ঘনপাড়ায় অবিনাষের বাড়িতে গেলে কথা হয়ে এলাকাবাসী ও স্বজনদের সঙ্গে। গ্রামে ২ শতাধিক হিন্দু পরিবারের বসবাস। অবিনাষের দুই ছেলে জোগেন চন্দ্র দাস ও হরিপদ চন্দ্র দাস, মেয়ে তুলসী চন্দ্র দাস। কাঁদতে কাঁদতে চোখের জল শুকিয়ে ফেলেছে মৃতের স্ত্রী-সন্তান ও স্বজনেরা। লাশের অপেক্ষায় প্রতিবেশীরাও। কিন্তু অপেক্ষার প্রহর যেন শেষ হয় না।
ছেলে জোগেন চন্দ্র দাস বলেন, ‘এক মাস পনেরো দিন ধরে বাবার লাশের জন্য ঘুরতেছি। সীমান্ত এলাকায় বড়গ্রাম ক্যাম্পের পাশে ১৫ দিন বিছানা বালিশ নিয়ে পড়ে ছিলাম। সম্ভাব্য সবখানেই যোগাযোগ করেছি। কয়েকবার বিএসএফের সঙ্গে বৈঠকও করেছে বিজিবি। কিন্তু কোনো সুরাহা হয় নাই।’
নিহতের চাচাতো ভাই বুধু চন্দ্র দাশ বলেন, ‘ভারতে আমাদের আত্মীয়রা আছেন। তাঁরা ছবি পাঠিয়েছে। সব রকম চেষ্টা করছি কিন্তু লাশ পাচ্ছি না। লাশের শ্রাদ্ধ করতে না পারায় দুর্গাপূজায় আমার অছুত হয়ে আছি। পুজোর দিন ঘনিয়ে এলেও উৎসবে অংশ নেওয়া দূরে থাক পুজোর কার্যকলাপে অংশ নিতে পারছি না। এমনকি বাড়িতে জ্বলছেনা সন্ধ্যাবাতিও। লাশের সৎকার করতে না পারায় দেড় মাস ধরে সকলে নিরামিষ ভোজন করছেন।’
অবিনাষের পুত্রবধূ স্বপ্না রানী দাস বলেন, ওই দিন শ্বশুর ঝিনুক কুড়াতে যেতে নিষেধ করেছিলাম। উনি কহিল বেলে তাড়াতাড়ি চলে আসমো। বস্তা আর লুঙ্গি নিয়ে নদীর ঘাটে গেল। কিন্তু বেলা গড়াইল গেলেও আর ফিরি আসিলো না।
স্থানীয় ভিয়াইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক শাহ বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের এক লোক আত্রাই নদীতে ঝিনুক কুড়াতে গিয়ে নদীর পানিতে ডুবে মারা যায়। নদীতে তার মরদেহ অনেক খোঁজাখুঁজির পরও পাওয়া যায়নি। পরে জানা গেছে মরদেহ ভেসে ভারতে চলে গেছে। আমরা স্থানীয় বিজিবি ক্যাম্পে যোগাযোগ করি। পরে তার বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠক করে। বিজিবি ক্যাম্প থেকে আমাদের জানায় মরদেহটি বাংলাদেশের এটি শনাক্ত করা হলেও মরদেহটি যে ওই পরিবারের তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। তাই বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।
এ বিষয়ে দিনাজপুর ২৯-বিজিবি সেক্টরের আওতাধীন বড় গ্রাম ক্যাম্পের দায়িত্বরত কর্মকর্তা সুবেদার সফিকুল ইসলাম জানান, বিষয়টি তারা অবগত আছেন। কয়েকবার বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠক করেছেন। দ্রুতই বিষয়টির সুরাহা করার চেষ্টা চলছে।
চিরিরবন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ কে এম শরীফুল হক বলেন, ‘লাশ যেহেতু ভাসতে ভাসতে ভারতীয় সীমান্তের অভ্যন্তরে চলে গেছে। একটু সময় লাগছে। বিজিবির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। তারাও চেষ্টা করছে। খুব কম সময়ের মধ্যে একটা সুরাহা হয়তো হয়ে যাবে।’
‘আমার বাবার যদি হাড্ডি দুই খানও থাকে তাও নিয়ে আসি দেন। এত দিন ধরি ঘুরোছি কেউ কোনো খোঁজ দিবার পারোছে না। ৪৫ দিন ধরে ঠাকুর ঘরে সন্ধ্যা প্রদীপ জালেবার পারি নাই। ভাইরা চুল দাঁড়ি কাটোর পারোছেনা। মাওর (মায়ের) শাখা সিঁদুর ভাঙা হয় নাই। মাও ঠিকমতো কথাও কহোচে নাই। হামাক খালি বাবার শ্রাদ্ধ করির সুযোগ করি দেন।’ আহাজারি করতে করতে কথাগুলো বলছিলেন পানিতে ডুবে যাওয়া অবিনাষ চন্দ্র দাসের মেয়ে তুলসি চন্দ্র দাস।
দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার ভিয়াইল ইউনিয়নের ঢাকইল ঘনপাড়া গ্রামের বাহাত্তর বছরের বৃদ্ধ অবিনাষ চন্দ্র দাস। গত ৩১ আগস্ট সকালে আত্রাই নদীর বৈদ্যনাথ ঘাটে ঝিনুক কুড়াতে নেমে ডুবে যায় তিনি। তাঁর মরদেহ ভেসে চলে যায় সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে। বিজিবি-বিএসএফ যোগাযোগ পতাকা বৈঠক হলেও দেড় মাসেও লাশ ফেরত পাওয়া যায়নি। স্বজনেরা মরদেহ ফেরত পাওয়ার আশায় ঘুরছেন সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ায়।
অবিনাষ চন্দ্র দাসের পরিবার জানায়, পরিবারের সদস্যদের নিষেধ উপেক্ষা করে বাড়ির পাশের আত্রাই নদীর বৈদ্যনাথ ঘাটে সকালে ঝিনুক কুড়াতে যান অবিনাষ। কিন্তু দুপুর পেরিয়ে গেলেও অবিনাষ বাড়িতে না ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু করেন স্বজনেরা। দিনভর না পাওয়ায় পরদিন রংপুর ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের একটি ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে খুঁজেও কোনো হদিস পাননি। দুই দিন পর স্বজনেরা ভারতে থাকা তাঁদের আত্মীয়ের মাধ্যমে জানতে পারেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুরের আমইল এলাকায় একটি মরদেহ পাওয়া গেছে। সেখান থেকে মরদেহের একটি ছবি পাঠানো হয়। ওই ছবি দেখেই সেটি অবিনাষের মরদেহ শনাক্ত করেন। গলায় তুলশির মালা, কোমরে পৈতা সবই আছে।
এদিকে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর থেকেই লাশের স্বজনেরা মরদেহ ফেরত পাওয়ার আশায় ঘুরছেন সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ায়। কখনো বা সীমান্ত সংলগ্ন বিজিবি ক্যাম্পে। কিন্তু মরদেহের অপেক্ষায় দেড় মাস কেটে গেলেও দেখা পাননি।
গত শনিবার সকালে ঢাকইল ঘনপাড়ায় অবিনাষের বাড়িতে গেলে কথা হয়ে এলাকাবাসী ও স্বজনদের সঙ্গে। গ্রামে ২ শতাধিক হিন্দু পরিবারের বসবাস। অবিনাষের দুই ছেলে জোগেন চন্দ্র দাস ও হরিপদ চন্দ্র দাস, মেয়ে তুলসী চন্দ্র দাস। কাঁদতে কাঁদতে চোখের জল শুকিয়ে ফেলেছে মৃতের স্ত্রী-সন্তান ও স্বজনেরা। লাশের অপেক্ষায় প্রতিবেশীরাও। কিন্তু অপেক্ষার প্রহর যেন শেষ হয় না।
ছেলে জোগেন চন্দ্র দাস বলেন, ‘এক মাস পনেরো দিন ধরে বাবার লাশের জন্য ঘুরতেছি। সীমান্ত এলাকায় বড়গ্রাম ক্যাম্পের পাশে ১৫ দিন বিছানা বালিশ নিয়ে পড়ে ছিলাম। সম্ভাব্য সবখানেই যোগাযোগ করেছি। কয়েকবার বিএসএফের সঙ্গে বৈঠকও করেছে বিজিবি। কিন্তু কোনো সুরাহা হয় নাই।’
নিহতের চাচাতো ভাই বুধু চন্দ্র দাশ বলেন, ‘ভারতে আমাদের আত্মীয়রা আছেন। তাঁরা ছবি পাঠিয়েছে। সব রকম চেষ্টা করছি কিন্তু লাশ পাচ্ছি না। লাশের শ্রাদ্ধ করতে না পারায় দুর্গাপূজায় আমার অছুত হয়ে আছি। পুজোর দিন ঘনিয়ে এলেও উৎসবে অংশ নেওয়া দূরে থাক পুজোর কার্যকলাপে অংশ নিতে পারছি না। এমনকি বাড়িতে জ্বলছেনা সন্ধ্যাবাতিও। লাশের সৎকার করতে না পারায় দেড় মাস ধরে সকলে নিরামিষ ভোজন করছেন।’
অবিনাষের পুত্রবধূ স্বপ্না রানী দাস বলেন, ওই দিন শ্বশুর ঝিনুক কুড়াতে যেতে নিষেধ করেছিলাম। উনি কহিল বেলে তাড়াতাড়ি চলে আসমো। বস্তা আর লুঙ্গি নিয়ে নদীর ঘাটে গেল। কিন্তু বেলা গড়াইল গেলেও আর ফিরি আসিলো না।
স্থানীয় ভিয়াইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক শাহ বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের এক লোক আত্রাই নদীতে ঝিনুক কুড়াতে গিয়ে নদীর পানিতে ডুবে মারা যায়। নদীতে তার মরদেহ অনেক খোঁজাখুঁজির পরও পাওয়া যায়নি। পরে জানা গেছে মরদেহ ভেসে ভারতে চলে গেছে। আমরা স্থানীয় বিজিবি ক্যাম্পে যোগাযোগ করি। পরে তার বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠক করে। বিজিবি ক্যাম্প থেকে আমাদের জানায় মরদেহটি বাংলাদেশের এটি শনাক্ত করা হলেও মরদেহটি যে ওই পরিবারের তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। তাই বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।
এ বিষয়ে দিনাজপুর ২৯-বিজিবি সেক্টরের আওতাধীন বড় গ্রাম ক্যাম্পের দায়িত্বরত কর্মকর্তা সুবেদার সফিকুল ইসলাম জানান, বিষয়টি তারা অবগত আছেন। কয়েকবার বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠক করেছেন। দ্রুতই বিষয়টির সুরাহা করার চেষ্টা চলছে।
চিরিরবন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ কে এম শরীফুল হক বলেন, ‘লাশ যেহেতু ভাসতে ভাসতে ভারতীয় সীমান্তের অভ্যন্তরে চলে গেছে। একটু সময় লাগছে। বিজিবির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। তারাও চেষ্টা করছে। খুব কম সময়ের মধ্যে একটা সুরাহা হয়তো হয়ে যাবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিহত আবদুল্লাহকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় বেনাপোল পৌর বল ফিল্ড মাঠে গার্ড অব অনার শেষে পাশের বড় আঁচড়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর লাশ দাফন করা হয়।
১৬ মিনিট আগেপাবনার চাটমোহরে নিখোঁজের ২৪ ঘণ্টা পর গোলজার হোসেন (৫৩) নামের এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের খলিশাগাড়ী বিলের কাজীর নালা থেকে ভাসমান অবস্থায় তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
২১ মিনিট আগেঘন কুয়াশার কারণে নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ ওঠানামায় বিঘ্ন ঘটছে। আজ শুক্রবার ভোর থেকে ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়ে রানওয়ে।
২৩ মিনিট আগেবৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে কলেজছাত্র ইমন হত্যা মামলায় সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. আব্দুর রাজ্জাককে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে আনা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে তাঁকে টাঙ্গাইল কারাগার থেকে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
৩০ মিনিট আগে