রাজশাহীর মোটর শ্রমিকেরা নিজেদের টাকায় নিজেদের জন্য একটি হাসপাতাল গড়ে তুলেছেন। দীর্ঘদিন ধরে বাস থেকে তোলা চাঁদার টাকা দিয়ে রাজশাহীর নওদাপাড়া আন্তজেলা বাস টার্মিনালে জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন ভবনে হাসপাতালটি চালু করা হয়েছে। 

আজ রোববার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে ১০ শয্যার এই হাসপাতালের উদ্বোধন করা হয়েছে। এদিন সকালে নওদাপাড়া বাস টার্মিনাল চত্বরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বাসশ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলী। বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক মাহতাব হোসেন চৌধুরী। 

এ ছাড়া অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর নিযাম-উল-আযিম, শাহাদাত হোসেন শাহু, রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক টিটো, জেলা ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম প্রমুখ। 

রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন শ্রমিক হাসপাতালের ব্যবস্থাপক রুবেল হোসেন জানান, হাসপাতালে ইনডোর ও আউটডোর সেবা দেওয়া হবে। রয়েছে অপারেশন থিয়েটার। এক্স-রে ও আলট্রাসনোগ্রাফির ব্যবস্থা করা হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষারও ব্যবস্থা করা হবে। হাসপাতালে মোট শয্যা রয়েছে ১০টি। এগুলোর মধ্যে একটি পোস্ট-অপারেটেড শয্যা। হাসপাতালে রোগীদের সমস্ত ওষুধ দেওয়া হবে বিনা মূল্যে। 

হাসপাতালে তিনজন চিকিৎসক, ছয়জন স্টাফ নার্স এবং অন্যান্য জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিক কিংবা অন্য যেকোনো কারণে অসুস্থ শ্রমিকেরা এখানে সার্বক্ষণিক সব ধরনের সেবা পাবেন। জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের প্রায় ছয় হাজার শ্রমিক এখানে সেবা নেবেন। তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও সেবা পাবেন বিনা মূল্যে। দূরদূরান্ত থেকে রাজশাহী এসে অসুস্থ হয়ে পড়লে বাস-ট্রাক-সিএনজির শ্রমিকদেরও সেবা দেওয়া হবে। 

জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহতাব হোসেন চৌধুরী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, এই হাসপাতাল আমাদের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন। ২০১৪ সালে এই হাসপাতাল উদ্বোধন করেছিলেন এখনকার সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। কিন্তু শ্রমিক ইউনিয়নের আগের কমিটির সভাপতি শ্রমিকদের টাকা তছরুপ করলে হাসপাতাল চালু হয়নি। এরপর তাঁরা দায়িত্বে এসে আবার হাসপাতাল চালুর উদ্যোগ নেন। 

মাহতাব হোসেন চৌধুরী আরও বলেন, ‘করোনার কারণে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে সমস্যা দেখা দেয়। করোনার পর অবশেষে হাসপাতালটি চালু করা সম্ভব হলো। এই হাসপাতাল শ্রমিকদের টাকাতেই গড়ে উঠল।’