রিমন রহমান, রাজশাহী
এখন আমের মৌসুম। আমের রাজ্য চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাগানে বাগানে চলছে গাছের পরিচর্যা। আবার অনেক বাগানের গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে এই জেলায়।
বাগানমালিক ও আম গবেষকেরা জানান, বিশাল বিশাল আকারের এসব গাছে এখন আম ধরছে না। মাত্রাতিরিক্ত ‘কালটার’ (গাছের বৃদ্ধি রোধ করে ফলন বাড়াতে ব্যবহার করা রাসায়নিক) ব্যবহারে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
বাগানমালিকেরা বলেন, বাগান ইজারা নেওয়া চাষিরা গাছগুলোতে অতিরিক্ত এ রাসায়নিক ব্যবহার করেছেন। এখন এর মাশুল দিচ্ছেন তাঁরা। সম্প্রতি জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বাগানের পর বাগান কেটে সাবাড়ের দৃশ্য চোখে পড়ে।
বাগানমালিকেরা জানান, এসব গাছে কয়েক বছর ধরে ‘কালটার’ নামে একধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করেছেন চাষিরা। এটি ব্যবহারের ফলে কয়েক বছর গাছে ভালো আম ধরেছে। কিন্তু এখন আর আম আসছে না। তাই গাছ কেটে ফেলে কেউ অন্য ফসল আবাদে ঝুঁকছেন। কেউ আবার পুরোনো বড় গাছ কেটে নতুন জাতের ছোট ছোট আমগাছের বাগান করছেন। এতে ফজলি আমের গাছ কমে যাচ্ছে।
রাজশাহী ফল গবেষণাকেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুল ইসলাম আমগাছে রাসায়নিক ব্যবহারের প্রভাব নিয়ে পিএইচডি করেছেন। তাঁর গবেষণার প্রধান বিষয় ছিল ‘কালটার’।
ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যেসব গাছ ছায়ায় থাকে, মুকুল আসে না, সেসব গাছে কালটার ব্যবহারের ফলে প্রতিবছরই মুকুল আনা সম্ভব। কিন্তু এর খারাপ প্রভাব হলো, প্রতিবছর মুকুল আনার কারণে গাছে নতুন পাতা গজায় না। তখন গাছ দুর্বল হয়ে পড়ে। গাছে আঠা ধরে, পাতা ঝরতে শুরু করে। এভাবে গাছ মারা যায়।’
এদিকে গাছ কাটার কারণে কাঠ ফাড়াইয়ের জন্য জেলাজুড়ে বাগানের ভেতরে-ভেতরে গড়ে উঠেছে অসংখ্য স মিল। শিবগঞ্জ উপজেলার একাডেমি মোড় থেকে ভাঙা ব্রিজ পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার সড়কের দুপাশে এখন অন্তত ২০টি স মিল আছে। ভাঙা ব্রিজের স্টার স মিলের মালিক তরিকুল
মিয়া জানান, ২০-৩০ বিঘা আয়তনের বড় বড় বাগানের গাছগুলোও এখন কেটে ফেলা হচ্ছে। মাসে তিনি একাই প্রায় ৩০ লাখ টাকার আমগাছ কেনেন। কাঠ করে তা ঢাকায় পাঠান।
চাষিরা জানান, প্রায় ১৫ বছর আগে ভারত থেকে আসা ‘কালটার’ চাঁপাইনবাবগঞ্জের গাছে ব্যবহার শুরু হয়। মরতে শুরু করায় জেলায় পাঁচ-সাত বছর ধরে গাছ কাটা চলছেই।
শিবগঞ্জের লিচুটুমী এলাকায় দেখা গেল, এক বাগানের বিশাল বিশাল গাছ কাটার কাজ চলছে। এই বাগানের মালিক জেন্টু হাজি।
জিয়াউর রহমান নামের এক শ্রমিক বললেন, ‘অতিরিক্ত ওষুধ করার লাইগ্যা গাছ শেষ। গাছে একটা আম ঢুইড়্যা বাহির করেন তো। কাইটবে না তো কী করবে!’
ব্যতিক্রমও আছে
বাগানমালিকেরা গাছ কেটে চাষিদের লোভের যখন মাশুল দিচ্ছেন, তখন বাগান নিয়ে সতর্ক তক্তিপুর গ্রামের বাসিন্দা কুশাল কুমার। তিনি তাঁদের পারিবারিক বাগান যখন ইজারা দেন, তখন চুক্তিপত্রের শর্তে উল্লেখ করেন যে বাগানে ওষুধ স্প্রে করতে হবে তাঁর উপস্থিতিতেই। সে অনুযায়ী, রাসায়নিক স্প্রে করার সময় তিনি নিজেই উপস্থিত থাকেন। গাছে ‘কালটার’ স্প্রে করতে দেন না। অন্য কোনো ওষুধ স্প্রে করলেও তা পরিমিত পরিমাণে। কুশাল নিজে উপস্থিত থেকেই তা নিশ্চিত করেন। তাঁর বাগান এখনো ভালো আছে।
কৃষি বিভাগের ভাষ্য
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. পলাশ সরকার বলেন, ‘পুরোনো বড় বড় গাছ চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঐতিহ্য। এই বড় গাছগুলোর বেশির ভাগই ফজলি জাতের। সেগুলো কমছে। গাছ কাটা পড়ছে বলে কিন্তু বাগান কমছে না। বড় গাছ কেটে এখন আধুনিক প্রযুক্তিতে ছোট ছোট গাছের বাগান হচ্ছে। পুরোনো বাগানে এক বিঘা জমিতে লাগানো ছিল ৭টি গাছ, এখন ১৭০-১৮০টি গাছ হচ্ছে। তবে কালটার ব্যবহারে সতর্কতা প্রয়োজন।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মাহমুদুল ফারুক বলেন, ‘কালটার যেন কেউ মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার না করেন, সে বিষয়ে অবশ্যই চাষিদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করব। সার ও বীজ মনিটরিং কমিটিকেও এ বিষয়ে কাজ করার আহ্বান জানাব।’
এখন আমের মৌসুম। আমের রাজ্য চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাগানে বাগানে চলছে গাছের পরিচর্যা। আবার অনেক বাগানের গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে এই জেলায়।
বাগানমালিক ও আম গবেষকেরা জানান, বিশাল বিশাল আকারের এসব গাছে এখন আম ধরছে না। মাত্রাতিরিক্ত ‘কালটার’ (গাছের বৃদ্ধি রোধ করে ফলন বাড়াতে ব্যবহার করা রাসায়নিক) ব্যবহারে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
বাগানমালিকেরা বলেন, বাগান ইজারা নেওয়া চাষিরা গাছগুলোতে অতিরিক্ত এ রাসায়নিক ব্যবহার করেছেন। এখন এর মাশুল দিচ্ছেন তাঁরা। সম্প্রতি জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বাগানের পর বাগান কেটে সাবাড়ের দৃশ্য চোখে পড়ে।
বাগানমালিকেরা জানান, এসব গাছে কয়েক বছর ধরে ‘কালটার’ নামে একধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করেছেন চাষিরা। এটি ব্যবহারের ফলে কয়েক বছর গাছে ভালো আম ধরেছে। কিন্তু এখন আর আম আসছে না। তাই গাছ কেটে ফেলে কেউ অন্য ফসল আবাদে ঝুঁকছেন। কেউ আবার পুরোনো বড় গাছ কেটে নতুন জাতের ছোট ছোট আমগাছের বাগান করছেন। এতে ফজলি আমের গাছ কমে যাচ্ছে।
রাজশাহী ফল গবেষণাকেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুল ইসলাম আমগাছে রাসায়নিক ব্যবহারের প্রভাব নিয়ে পিএইচডি করেছেন। তাঁর গবেষণার প্রধান বিষয় ছিল ‘কালটার’।
ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যেসব গাছ ছায়ায় থাকে, মুকুল আসে না, সেসব গাছে কালটার ব্যবহারের ফলে প্রতিবছরই মুকুল আনা সম্ভব। কিন্তু এর খারাপ প্রভাব হলো, প্রতিবছর মুকুল আনার কারণে গাছে নতুন পাতা গজায় না। তখন গাছ দুর্বল হয়ে পড়ে। গাছে আঠা ধরে, পাতা ঝরতে শুরু করে। এভাবে গাছ মারা যায়।’
এদিকে গাছ কাটার কারণে কাঠ ফাড়াইয়ের জন্য জেলাজুড়ে বাগানের ভেতরে-ভেতরে গড়ে উঠেছে অসংখ্য স মিল। শিবগঞ্জ উপজেলার একাডেমি মোড় থেকে ভাঙা ব্রিজ পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার সড়কের দুপাশে এখন অন্তত ২০টি স মিল আছে। ভাঙা ব্রিজের স্টার স মিলের মালিক তরিকুল
মিয়া জানান, ২০-৩০ বিঘা আয়তনের বড় বড় বাগানের গাছগুলোও এখন কেটে ফেলা হচ্ছে। মাসে তিনি একাই প্রায় ৩০ লাখ টাকার আমগাছ কেনেন। কাঠ করে তা ঢাকায় পাঠান।
চাষিরা জানান, প্রায় ১৫ বছর আগে ভারত থেকে আসা ‘কালটার’ চাঁপাইনবাবগঞ্জের গাছে ব্যবহার শুরু হয়। মরতে শুরু করায় জেলায় পাঁচ-সাত বছর ধরে গাছ কাটা চলছেই।
শিবগঞ্জের লিচুটুমী এলাকায় দেখা গেল, এক বাগানের বিশাল বিশাল গাছ কাটার কাজ চলছে। এই বাগানের মালিক জেন্টু হাজি।
জিয়াউর রহমান নামের এক শ্রমিক বললেন, ‘অতিরিক্ত ওষুধ করার লাইগ্যা গাছ শেষ। গাছে একটা আম ঢুইড়্যা বাহির করেন তো। কাইটবে না তো কী করবে!’
ব্যতিক্রমও আছে
বাগানমালিকেরা গাছ কেটে চাষিদের লোভের যখন মাশুল দিচ্ছেন, তখন বাগান নিয়ে সতর্ক তক্তিপুর গ্রামের বাসিন্দা কুশাল কুমার। তিনি তাঁদের পারিবারিক বাগান যখন ইজারা দেন, তখন চুক্তিপত্রের শর্তে উল্লেখ করেন যে বাগানে ওষুধ স্প্রে করতে হবে তাঁর উপস্থিতিতেই। সে অনুযায়ী, রাসায়নিক স্প্রে করার সময় তিনি নিজেই উপস্থিত থাকেন। গাছে ‘কালটার’ স্প্রে করতে দেন না। অন্য কোনো ওষুধ স্প্রে করলেও তা পরিমিত পরিমাণে। কুশাল নিজে উপস্থিত থেকেই তা নিশ্চিত করেন। তাঁর বাগান এখনো ভালো আছে।
কৃষি বিভাগের ভাষ্য
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. পলাশ সরকার বলেন, ‘পুরোনো বড় বড় গাছ চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঐতিহ্য। এই বড় গাছগুলোর বেশির ভাগই ফজলি জাতের। সেগুলো কমছে। গাছ কাটা পড়ছে বলে কিন্তু বাগান কমছে না। বড় গাছ কেটে এখন আধুনিক প্রযুক্তিতে ছোট ছোট গাছের বাগান হচ্ছে। পুরোনো বাগানে এক বিঘা জমিতে লাগানো ছিল ৭টি গাছ, এখন ১৭০-১৮০টি গাছ হচ্ছে। তবে কালটার ব্যবহারে সতর্কতা প্রয়োজন।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মাহমুদুল ফারুক বলেন, ‘কালটার যেন কেউ মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার না করেন, সে বিষয়ে অবশ্যই চাষিদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করব। সার ও বীজ মনিটরিং কমিটিকেও এ বিষয়ে কাজ করার আহ্বান জানাব।’
বেতন পেয়ে কারখানার এক শ্রমিক আলমগীর বলেন, আগামী রোববারের মধ্যে বেতন দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু আমরা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিকাশ অ্যাকাউন্টে বেতন পেয়ে গেছি। আমাদের মালিকপক্ষ কথা দিয়ে কথা রেখেছেন। আমরা সবাই খুশি।
৩ মিনিট আগেগাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী পূর্ব থানার হাজতখানার ভেতরে আপসের শর্তে বাদী ও আসামির টাকা লেনদেনের ভিডিও নিয়ে মহানগর পুলিশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া দায়িত্বে অবহেলার কারণে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে শোকজ ও বদলি এবং ডিউটি অফিসারকে শোকজ করা হয়েছ
৩৮ মিনিট আগেরাজধানীর হাজারীবাগের ট্যানারিগুলোকে সাভারের হেমায়েতপুরের চামড়া শিল্পনগরে স্থানান্তর করা হয়েছে প্রায় সাত বছর আগে। কিন্তু ট্যানারির দূষণ এখনো রয়ে গেছে হাজারীবাগে। ওই এলাকায় চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে ব্যবহৃত রাসায়নিকের উৎকট গন্ধ আর খালে প্রবাহিত ট্যানারি বর্জ্য জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে।
৩৮ মিনিট আগেপিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার ভিটাবাড়িয়া ইউনিয়নের শিয়ালকাঠী গ্রামে লোকালয়ে গড়ে ওঠা একটি খামারের কারণে হুমকিতে পড়েছে জনস্বাস্থ্য। গরু, ছাগল ও মুরগির সমন্বয়ে খামারটি করেছেন পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক অ্যাডভোকেট শহীদুল হক খান পান্না।
৩৮ মিনিট আগে