জিয়াউল হক, যশোর
বিয়ের এক বছরের মাথায় স্বামী মারা যান নাজমা আক্তারের। এরপরই জীবনযুদ্ধে নামতে হয় নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান নাজমাকে। চাকরি নেন যশোর শহরতলির ধর্মতলা এলাকার পপুলার কিন্ডারগার্টেন স্কুলে। শুরু করেন শিক্ষকতা। সামান্য বেতনে তখন নিজের খরচটুকু চললেও মাথা গোঁজার ঠাঁই হয় বাপের বাড়ি।
নাজমা আক্তার বলেন, ‘কারও বোঝা হতে চাইনি। কিন্তু করোনা মহামারিতে এক বছরের বেশি সময় ধরে স্কুল বন্ধ রয়েছে। প্রথম দুই–তিন মাস কর্তৃপক্ষ কিছু টাকা দিয়েছিল। এরপর তা–ও বন্ধ করে দেয়। দেখছি, তাদেরই এখন আয় নেই। তাই লজ্জায় আর চাইতে পারিনি। একই অবস্থা বাবার পরিবারেও।’
শুধু নাজমা আক্তার নন, তাঁর মতো এ রকম জেলার ৩৩৭টি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের অন্তত দুই হাজার শিক্ষক–কর্মকর্তা ও কর্মচারী করোনার কারণে উপার্জনহীন হয়ে পড়েছেন। যদিও শিক্ষকদের সংখ্যা নিয়ে সঠিক কোনো তথ্য দিতে পারেনি যশোর প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়। নিবন্ধনহীন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হওয়ায় সরকারি কোনো অনুদান মেলেনি তাঁদের।
দীর্ঘ ১৬ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় জেলার আট উপজেলার এসব কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষককে দুর্বিষহ জীবন কাটাতে হচ্ছে। এমনকি ঈদ আনন্দ নেই তাঁদের পরিবারে। শুধু শিক্ষক–কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নন, স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠান ভাড়ার টাকা জোগাতে বিপাকে পড়েছে। কোনোটির ভাড়া বকেয়া পড়েছে দুই লাখ টাকারও বেশি।
জেলা সদর উপজেলা, কেশবপুর, মনিরামপুর, চৌগাছা, ঝিকরগাছা, অভয়নগর, শার্শা ও বাঘারপাড়ার সব কটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের একই চিত্র। এমনটি জানিয়েছেন আমাদের প্রতিনিধিরা।
যশোর প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা শেখ অহিদুল আলম জানান, যশোর জেলায় প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তালিকাভুক্ত এমন কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে ৩৩৭টি। ২০২০ সাল পর্যন্ত হালনাগাদ করা এ তালিকায় নেই শিক্ষকের সংখ্যা নেই। তবে সরকারি বই বিতরণের হিসাব অনুযায়ী, ৫০ হাজার ২৮০ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে এসব স্কুলে।
যশোর সদরের ভেকুটিয়া বি বি এল কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক এনামুল হক বলেন, ‘অনেক শিক্ষার্থীই এখন স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে না। দীর্ঘ সময় স্কুল বন্ধ থাকায় আমরা তাদের কাছ থেকে বেতন নিতে পারিনি। এতে আমাদেরও বেতন হয়নি। তা ছাড়া কয়েকজনকে প্রাইভেট পড়াতাম। সেটাও কমে গেছে; যা জমানো টাকা ছিল, তা–ও শেষের পথে। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে এখন।’
তুষার হোসেন, রাফেজা খাতুন, ইমদাদ হোসেনসহ অনেকেই এমন দুরবস্থার কথা জানিয়েছেন।
সদর উপজেলার পপুলার কিন্ডারগার্টেন স্কুলের পরিচালক আলী আহমেদ বলেন, ‘স্কুল খুলবে সে আশায় এখনো ভাড়া টেনে যাচ্ছি। ভাড়া বকেয়া পড়ে গেছে দুই লাখ টাকারও বেশি। শিক্ষকদেরও বেতন দিতে পারছি না। সব মিলিয়ে খুব বাজে সময় পার করছি।’
মনিরামপুর প্রতিনিধি আনোয়ার হোসেন জানান, উপজেলাটিতে ৩৩টি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে প্রায় চার হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রায় ২০০ শিক্ষক–কর্মকর্তা ও কর্মচারী রয়েছে এসব প্রতিষ্ঠানে। এক বছরের বেশি সময় ধরে বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তাঁরা।
মনিরামপুর বাজারের প্রতিভা বিদ্যানিকেতনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আসাদুজ্জামান মিন্টু বলেন, এখানে ১৩–১৪ জন শিক্ষক রয়েছেন। করোনার মাত্র তিন মাসের বেতন দিতে পেরেছি। প্রতি মাসে এক লাখ টাকা বেতন দিতে হতো। এক বছর ধরে ১২ হাজার টাকা করে ঘর ভাড়া গুনে যাচ্ছি। কত দিন টেনে যেতে পারব, জানি না।’
মনিরামপুর উপজেলার সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা জহির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষকদের জন্য কিছু করতে পারিনি।’
কেশবপুর প্রতিনিধি কামরুজ্জামান রাজু জানান, উপজেলায় কিন্ডারগার্টেন রয়েছে ১৮টি। এসব প্রতিষ্ঠানে নার্সারি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ত প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থী। দুই শতাধিক শিক্ষক–কর্মকর্তা এসব প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। এসব শিক্ষকের মধ্যে অনেকেই পেশা বদল করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তবে লকডাউনের কারণে সেটাও থমকে গেছে।
উপজেলার পাঁজিয়া এডাস স্কুলের শিক্ষক জয় মিত্র বলেন, ‘চার সদস্যের পরিবার আমার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ধার-দেনা করে সংসার চালাতে হচ্ছে। ইতিমধ্যে স্কুলের তিনজন কর্মচারী খেতে দিনমজুরের কাজ করছেন।
কেশবপুরের সূচনা কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষক তৈয়বুর রহমান বলেন, ‘স্কুল বন্ধ থাকায় পরিবার নিয়ে খুবই দুরবস্থায় আছি। কয়েকটি টিউশন পড়াচ্ছিলাম, সেটাও লকডাউনে বন্ধ হয়ে গেছে।’
উপজেলার কিন্ডার স্কলারশিপ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বিশ্বাস বলেন, ‘কেশবপুরের ১৮টি কিন্ডারগার্টেনের দুই শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী কোনো সহযোগিতা না পেয়ে দিশেহারা অবস্থায় আছেন।’
অভয়নগর প্রতিনিধি রবিউল ইসলাম জানান, উপজেলাটিতে শিক্ষক–কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন দিতে না পারায় এবং ঘর ভাড়া টানতে না পেরে চরম বিপাকে আছে কিন্ডারগার্টেনগুলোর কর্তৃপক্ষ। কোনোটির কর্তৃপক্ষ স্কুল বন্ধ করে দিয়েছে। এমনই একটি প্রতিষ্ঠান এম এ আজিজ মেমোরিয়াল কিন্ডারগার্টেন।
এর স্বত্বাধিকারী মো. জহির রায়হান বলেন, ‘স্বপ্ন ছিল শিক্ষার আলো সর্বত্র ছড়িয়ে দেব। কিন্তু ভয়াবহ করোনার গ্রাসে আজ স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। এক বছরের বেশি সময় ধরে স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষক, কর্মচারীর বেতন এবং বাড়ি ভাড়া দিতে গিয়ে আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। বাধ্য হয়ে স্কুলের বাড়ি ছেড়ে দিয়েছি। শিক্ষক, কর্মচারীদের অন্যত্র কিছু করার জন্য বলা হয়েছে।’
বাঘারপাড়া প্রতিনিধি সুমন পারভেজ জানান, উপজেলাটিতে ৩৩টি কিন্ডারগার্টেন রয়েছে। বাঘারপাড়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান বলেন, ৩৩টি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষার্থী রয়েছে দুই হাজারের কাছাকাছি। আর শিক্ষক রয়েছেন দুই শতাধিক।
উপজেলার বর্ণময় কিন্ডারগার্টেনের প্রধান শিক্ষক মোশারেফ হোসেন বলেন, ‘সরকারের উচিত আমাদের পাশে দাঁড়ানো। কারণ আমাদের মতো শিক্ষকেরা লজ্জায় কারও কাছে সাহায্য চাইতে পারছি না।’
যশোরের চৌগাছায়ও কষ্টে দিন কাটছে কিন্ডারগার্টেন স্কুলের দুই শতাধিক শিক্ষক–কর্মচারীর। পৌর সদরসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অন্তত ২০টি কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে দুই শতাধিক শিক্ষক–কর্মচারী চাকরি করেন।
যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ অহিদুল আলম বলেন, ‘যশোরে কয়েকটি মাত্র কিন্ডারগার্টেন স্কুলের রেজিস্ট্রেশন আছে। তারা ব্যক্তিমালিকানাধীন থাকায় আমাদের সঙ্গে যোগাযোগও করে না কখনো। তারপরও শিক্ষার্থীদের স্বার্থে আমরা তাঁদের একটি তালিকা তৈরি করেছি। সরকার আমাদের নির্দেশনা দিয়েছে, কোনো শিক্ষার্থী যাতে সমস্যায় না পড়ে। আমরা সেদিকটি খেয়াল রাখছি।’
শেখ অহিদুল আলম বলেন, ‘অনেকেই কিন্ডারগার্টেন ছেড়ে মূল ধারায় ফিরে এসেছে। আমরা তাদের ভর্তি করে নিচ্ছি। তবে শিক্ষক বা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে আপাতত আমাদের করণীয় কিছু নেই।’
বিয়ের এক বছরের মাথায় স্বামী মারা যান নাজমা আক্তারের। এরপরই জীবনযুদ্ধে নামতে হয় নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান নাজমাকে। চাকরি নেন যশোর শহরতলির ধর্মতলা এলাকার পপুলার কিন্ডারগার্টেন স্কুলে। শুরু করেন শিক্ষকতা। সামান্য বেতনে তখন নিজের খরচটুকু চললেও মাথা গোঁজার ঠাঁই হয় বাপের বাড়ি।
নাজমা আক্তার বলেন, ‘কারও বোঝা হতে চাইনি। কিন্তু করোনা মহামারিতে এক বছরের বেশি সময় ধরে স্কুল বন্ধ রয়েছে। প্রথম দুই–তিন মাস কর্তৃপক্ষ কিছু টাকা দিয়েছিল। এরপর তা–ও বন্ধ করে দেয়। দেখছি, তাদেরই এখন আয় নেই। তাই লজ্জায় আর চাইতে পারিনি। একই অবস্থা বাবার পরিবারেও।’
শুধু নাজমা আক্তার নন, তাঁর মতো এ রকম জেলার ৩৩৭টি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের অন্তত দুই হাজার শিক্ষক–কর্মকর্তা ও কর্মচারী করোনার কারণে উপার্জনহীন হয়ে পড়েছেন। যদিও শিক্ষকদের সংখ্যা নিয়ে সঠিক কোনো তথ্য দিতে পারেনি যশোর প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়। নিবন্ধনহীন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হওয়ায় সরকারি কোনো অনুদান মেলেনি তাঁদের।
দীর্ঘ ১৬ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় জেলার আট উপজেলার এসব কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষককে দুর্বিষহ জীবন কাটাতে হচ্ছে। এমনকি ঈদ আনন্দ নেই তাঁদের পরিবারে। শুধু শিক্ষক–কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নন, স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠান ভাড়ার টাকা জোগাতে বিপাকে পড়েছে। কোনোটির ভাড়া বকেয়া পড়েছে দুই লাখ টাকারও বেশি।
জেলা সদর উপজেলা, কেশবপুর, মনিরামপুর, চৌগাছা, ঝিকরগাছা, অভয়নগর, শার্শা ও বাঘারপাড়ার সব কটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের একই চিত্র। এমনটি জানিয়েছেন আমাদের প্রতিনিধিরা।
যশোর প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা শেখ অহিদুল আলম জানান, যশোর জেলায় প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তালিকাভুক্ত এমন কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে ৩৩৭টি। ২০২০ সাল পর্যন্ত হালনাগাদ করা এ তালিকায় নেই শিক্ষকের সংখ্যা নেই। তবে সরকারি বই বিতরণের হিসাব অনুযায়ী, ৫০ হাজার ২৮০ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে এসব স্কুলে।
যশোর সদরের ভেকুটিয়া বি বি এল কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক এনামুল হক বলেন, ‘অনেক শিক্ষার্থীই এখন স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে না। দীর্ঘ সময় স্কুল বন্ধ থাকায় আমরা তাদের কাছ থেকে বেতন নিতে পারিনি। এতে আমাদেরও বেতন হয়নি। তা ছাড়া কয়েকজনকে প্রাইভেট পড়াতাম। সেটাও কমে গেছে; যা জমানো টাকা ছিল, তা–ও শেষের পথে। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে এখন।’
তুষার হোসেন, রাফেজা খাতুন, ইমদাদ হোসেনসহ অনেকেই এমন দুরবস্থার কথা জানিয়েছেন।
সদর উপজেলার পপুলার কিন্ডারগার্টেন স্কুলের পরিচালক আলী আহমেদ বলেন, ‘স্কুল খুলবে সে আশায় এখনো ভাড়া টেনে যাচ্ছি। ভাড়া বকেয়া পড়ে গেছে দুই লাখ টাকারও বেশি। শিক্ষকদেরও বেতন দিতে পারছি না। সব মিলিয়ে খুব বাজে সময় পার করছি।’
মনিরামপুর প্রতিনিধি আনোয়ার হোসেন জানান, উপজেলাটিতে ৩৩টি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে প্রায় চার হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রায় ২০০ শিক্ষক–কর্মকর্তা ও কর্মচারী রয়েছে এসব প্রতিষ্ঠানে। এক বছরের বেশি সময় ধরে বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তাঁরা।
মনিরামপুর বাজারের প্রতিভা বিদ্যানিকেতনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আসাদুজ্জামান মিন্টু বলেন, এখানে ১৩–১৪ জন শিক্ষক রয়েছেন। করোনার মাত্র তিন মাসের বেতন দিতে পেরেছি। প্রতি মাসে এক লাখ টাকা বেতন দিতে হতো। এক বছর ধরে ১২ হাজার টাকা করে ঘর ভাড়া গুনে যাচ্ছি। কত দিন টেনে যেতে পারব, জানি না।’
মনিরামপুর উপজেলার সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা জহির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষকদের জন্য কিছু করতে পারিনি।’
কেশবপুর প্রতিনিধি কামরুজ্জামান রাজু জানান, উপজেলায় কিন্ডারগার্টেন রয়েছে ১৮টি। এসব প্রতিষ্ঠানে নার্সারি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ত প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থী। দুই শতাধিক শিক্ষক–কর্মকর্তা এসব প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। এসব শিক্ষকের মধ্যে অনেকেই পেশা বদল করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তবে লকডাউনের কারণে সেটাও থমকে গেছে।
উপজেলার পাঁজিয়া এডাস স্কুলের শিক্ষক জয় মিত্র বলেন, ‘চার সদস্যের পরিবার আমার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ধার-দেনা করে সংসার চালাতে হচ্ছে। ইতিমধ্যে স্কুলের তিনজন কর্মচারী খেতে দিনমজুরের কাজ করছেন।
কেশবপুরের সূচনা কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষক তৈয়বুর রহমান বলেন, ‘স্কুল বন্ধ থাকায় পরিবার নিয়ে খুবই দুরবস্থায় আছি। কয়েকটি টিউশন পড়াচ্ছিলাম, সেটাও লকডাউনে বন্ধ হয়ে গেছে।’
উপজেলার কিন্ডার স্কলারশিপ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বিশ্বাস বলেন, ‘কেশবপুরের ১৮টি কিন্ডারগার্টেনের দুই শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী কোনো সহযোগিতা না পেয়ে দিশেহারা অবস্থায় আছেন।’
অভয়নগর প্রতিনিধি রবিউল ইসলাম জানান, উপজেলাটিতে শিক্ষক–কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন দিতে না পারায় এবং ঘর ভাড়া টানতে না পেরে চরম বিপাকে আছে কিন্ডারগার্টেনগুলোর কর্তৃপক্ষ। কোনোটির কর্তৃপক্ষ স্কুল বন্ধ করে দিয়েছে। এমনই একটি প্রতিষ্ঠান এম এ আজিজ মেমোরিয়াল কিন্ডারগার্টেন।
এর স্বত্বাধিকারী মো. জহির রায়হান বলেন, ‘স্বপ্ন ছিল শিক্ষার আলো সর্বত্র ছড়িয়ে দেব। কিন্তু ভয়াবহ করোনার গ্রাসে আজ স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। এক বছরের বেশি সময় ধরে স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষক, কর্মচারীর বেতন এবং বাড়ি ভাড়া দিতে গিয়ে আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। বাধ্য হয়ে স্কুলের বাড়ি ছেড়ে দিয়েছি। শিক্ষক, কর্মচারীদের অন্যত্র কিছু করার জন্য বলা হয়েছে।’
বাঘারপাড়া প্রতিনিধি সুমন পারভেজ জানান, উপজেলাটিতে ৩৩টি কিন্ডারগার্টেন রয়েছে। বাঘারপাড়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান বলেন, ৩৩টি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষার্থী রয়েছে দুই হাজারের কাছাকাছি। আর শিক্ষক রয়েছেন দুই শতাধিক।
উপজেলার বর্ণময় কিন্ডারগার্টেনের প্রধান শিক্ষক মোশারেফ হোসেন বলেন, ‘সরকারের উচিত আমাদের পাশে দাঁড়ানো। কারণ আমাদের মতো শিক্ষকেরা লজ্জায় কারও কাছে সাহায্য চাইতে পারছি না।’
যশোরের চৌগাছায়ও কষ্টে দিন কাটছে কিন্ডারগার্টেন স্কুলের দুই শতাধিক শিক্ষক–কর্মচারীর। পৌর সদরসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অন্তত ২০টি কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে দুই শতাধিক শিক্ষক–কর্মচারী চাকরি করেন।
যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ অহিদুল আলম বলেন, ‘যশোরে কয়েকটি মাত্র কিন্ডারগার্টেন স্কুলের রেজিস্ট্রেশন আছে। তারা ব্যক্তিমালিকানাধীন থাকায় আমাদের সঙ্গে যোগাযোগও করে না কখনো। তারপরও শিক্ষার্থীদের স্বার্থে আমরা তাঁদের একটি তালিকা তৈরি করেছি। সরকার আমাদের নির্দেশনা দিয়েছে, কোনো শিক্ষার্থী যাতে সমস্যায় না পড়ে। আমরা সেদিকটি খেয়াল রাখছি।’
শেখ অহিদুল আলম বলেন, ‘অনেকেই কিন্ডারগার্টেন ছেড়ে মূল ধারায় ফিরে এসেছে। আমরা তাদের ভর্তি করে নিচ্ছি। তবে শিক্ষক বা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে আপাতত আমাদের করণীয় কিছু নেই।’
শেরপুরের নকলায় পরিত্যক্ত একটি ডোবা থেকে এক দরজির গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে গৌড়দ্বার ইউনিয়নের রুণীগাঁও মধ্যপাড়া গ্রামের এক ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। মরদেহের মুখ ও গলায় একাধিক ক্ষতের চিহ্ন রয়েছে।
৫ মিনিট আগেরাজশাহীতে বাসের ধাক্কায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কে উপজেলার অভয়া-কামারপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
১৬ মিনিট আগেপ্রায় তিন মাস পর গাজীপুরের শ্রীপুরের সাফারি পার্কটি সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। পুরোনো নাম বদলে নতুন নাম ধারণ করা সাফারি পার্ক গাজীপুরে আজ শুক্রবার ছুটির দিনে ছিল উপচে পড়া ভিড়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ব্যাপক ভাঙচুরের পর পার্কটি বন্ধ রাখা হয়।
২৭ মিনিট আগেপটুয়াখালীর কুয়াকাটায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ২০০ বছর ধরে চলে আসা রাস উৎসবে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকেই তীর্থযাত্রীদের ঢল নেমেছে। পুণ্যার্থীদের আগমনে ভরপুর কুয়াকাটার রাধাকৃষ্ণ মন্দিরের প্রাঙ্গণসহ কুয়াকাটার আশপাশ।
১ ঘণ্টা আগে