রাজবাড়ীতে এক কলেজছাত্রের পকেটে ইয়াবা দিয়ে টাকা আদায়ের চেষ্টা ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের এক উপপরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থী গতকাল সোমবার পুলিশ সুপারের (এসপি) কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। 

অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি আজ মঙ্গলবার দুপুরে নিশ্চিত করেছেন রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার জিএম আবুল কালাম আজাদ। 

অভিযোগকারী ওই শিক্ষার্থীর নাম রিফায়াত ইবনে রইস আরাফ। তিনি পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের নূরপুর এলাকার মো. রইচ উদ্দিন বাবুর ছেলে। তিনি এবার রাজবাড়ী সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। 

রিফায়াত ইবনে রইস আরাফ বলেন, ‘গত রোববার রাত ১২টা ৪০ মিনিটে শিক্ষা সফর শেষে তাঁর বড় ভাই রিয়াসাত ইবনে রইস সামিট শহরের মুরগির ফার্ম বাসস্ট্যান্ড আসেন। তিনি তাঁর সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে নুরপুরের বাড়িতে যান। পরে বাসায় এসে তাঁর ভাই বলেন, তাঁর ল্যাপটপ ও একটি ব্যাগ বাসস্ট্যান্ডে ফেলে এসেছেন।’

‘তখন তিনি মোটরসাইকেল নিয়ে বাসস্ট্যান্ড থেকে ব্যাগ নিয়ে ফিরছিলেন। পথে রাজবাড়ী ইয়াসিন স্কুল সংলগ্ন ২নং রেল গেটে পৌঁছালে পুলিশ কর্মকর্তারা তাঁর গতিরোধ করেন। এ সময় এসআই আসিফ আহমেদ, কনস্টেবল জাহাঙ্গীর, কনস্টেবল সুকান্ত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন।’

একপর্যায়ে এসআই আসিফ আহমেদ তাঁর শার্টের কলার ধরে ইয়াবা ব্যবসায়ী বলে সম্বোধন করে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। পরে এসআই আসিফ আহমেদ তাঁর পকেটে কিছু ঢোকানোর চেষ্টা করেন। ব্যর্থ হয়ে তাঁকে বাসায় কল দিয়ে টাকা আনতে বলেন। তাঁর পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

রিফায়াত দাবি করেন, ভোর ৫টার দিকে এসআই আসিফ আহমেদ তাঁদের বাড়িতে গিয়ে ঘটনার দায় স্বীকার করেন এবং পরবর্তী কোনো পদক্ষেপ না নিতে অনুরোধ জানান। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিলে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেন। 

এদিকে কলেজছাত্রকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টার ঘটনার রাতে এসআই আসিফ আহমেদের হাত জোড় করে ক্ষমা চাওয়ার একটি ভিডিও আজকের পত্রিকার হাতে এসেছে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ভোর ৫টার সময় এসআই আসিফ আহমেদ ওই কলেজছাত্রের বাসায় এসেছেন। কলেজছাত্রের বড় ভাই রিয়াসাত ইবনে রইস সামিট বলছেন, ‘কেন আপনি এত রাতে বাসায় এসেছেন?’ উত্তরে ওই এসআই বলেন, ‘সরি বলার জন‍্য এসেছি।’ সে সময় রিয়াসাত ইবনে রইস সামিট বলছেন, যে ঘটনা ঘটিয়েছেন সেটার জন্য। এর উত্তরে এসআই কোনো কথা না বলে হাত জোড় করে ক্ষমা চাইছেন। 

এ বিষয়ে শহরের বিনোদপুর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আসিফ আহমেদ মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে সেটা মিথ্যা। এমনকি হাত জোড় করে ক্ষমা চাওয়াটাও মিথ্যা।’ 

রাজবাড়ী পুলিশ সুপার জিএম আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।’